মরীচিকার সন্ধানে
পর্ব – ৭
মুনিরা চলে যাবার পর নাজমা কিছুক্ষন সেই ফোন নাম্বার লেখা কাগজটা হাতে ধরে বসে থাকলো। ওর এখনো হাত কাঁপছে। কী করবে এটা ও? রেখে দিবে না ফেলে দিবে? ও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা। নাজমার হঠাৎ করেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। ভীষণ মন খারাপ। ওর আর এখানে বসে থাকতে ইচ্ছা করছেনা। কিন্তু আরো কিছুক্ষন বসে থাকলে হয়তোবা আরো দুই তিনজন কাস্টমার পাওয়া যেত। তিনজন কাস্টমার মানে কমপক্ষে ১৫ পাউনড। আর দুইহাতে মেন্দি লাগালে তো আরো একটু বেশি হবে। এতে করে নাজমার তিন চার বেলার খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যেত। নাহ, এতকিছু চিন্তা করতে ওর ভালো লাগছেনা এখন। নাজমা ওর মেন্দির জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে ফেললো। মুনিরার দেওয়া সেই কাগজটা টেবিলের উপর রেখে মোবাইল ফোন দিয়ে সেটার একটা ছবি তুলে নিলো। তারপর ছোট টেবিলটা আর বসার টুল দুইটা ফোল্ড করে হাতে নিয়ে মসজিদের ভিতর ঢুকে গেলো। মসজিদের মেয়েদের নামাজের বিশাল রুমটার পাশেই ছোট আরেকটা রুম আছে। সেটাকে মোটামুটি স্টোররুম হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সেই রুমের এক কোনায় টেবিল আর টুলদুটো রেখে নাজমা বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো। আসরের নামাজের সময় হয়ে গেছে। আজানও এইমাত্র হয়ে গেলো। আর মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই জামাত শুরু হয়ে যাবে। নাজমা জানে যে ওর এখন নামাজ পড়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু ওর ইচ্ছা করছেনা। ওর ভীষণ মন খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে কখন ও ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে একা একা একটু বসতে পারবে। একা হতে পারলে ওর যেন স্বস্তি হবে। মসজিদের এত মানুষ ওর ভালো লাগছেনা। নাজমা জামাত শুরু হবার আগেই দ্রুত গতিতে মসজিদ থেকে বেরিয়ে পড়লো।
নাজমার বাসায় পৌঁছতে একটুও সময় লাগলোনা। বাসাটা তো মাত্র মসজিদ থেকে দশ মিনিট হাঁটা দূরে। বাসা মানে এক বাড়ির অ্যাটিক বা চিলেকোঠার একফালি একটা রুম। সাথে লাগোয়া একটা ছোট্ট বাথরুম। সেই রুমের একপাশে কোনোরকমে একটা ডবল বেড রাখা। আরেকপাশে একটা ছোট আলমারি আর টেবিল। ব্যস এই। সেই টেবিলের উপর রান্না করার জন্য একটা ইলেকট্রিক হটপ্লেট আর ছোট একটা মাইক্রোওয়েভ রাখা। প্লেট বাটি, শাক সবজি ধোয়াধুয়ি করার জন্য বাথরুমের বেসিন ব্যবহার করতে হয়। বেডরুমের এই টেবিলের উপর রান্না করতে নাজমার খুব একটা খারাপ লাগেনা। আর রান্না তেমন ও কোথায় করে? কিন্তু বাথরুমের বেসিনে খাবারের জিনিস ধোয়াধুয়ির কাজ করতে ওর অসহ্য লাগে। কবে যে এই দমবন্ধ করা জায়গা থেকে ও বের হতে পারবে? এই রুমটারও নাকি এক মাসের ভাড়া বাকি পড়ে আছে। এই সেদিনও বাড়িওয়ালা এসে তাগাদা দিয়েছে। কিন্তু এই ভাড়ার ব্যাপার নাজমা তো কিছু জানেনা। ও চুপচাপ কথা শুনে গেছে। কিছু বলেনি। নাজমার মনে হয়েছে চুলোয় যাক এই রুমের ভাড়া। ও তো আর বেশিদিন এখানে থাকবেনা। আসলে তো ওর এতদিন এখানে থাকারও কথা ছিলোনা কিন্তু কেমন করে ও আটকে গেলো। একেই বলে ভাগ্য। পোড়াকপালি নাজমা। এখন ওর মনে হচ্ছে এই বন্ধ রুম থেকে বের হতে পারলেই বা কী? ওর ভাগ্যে কি আর কোনোদিন ভালো কিছু জুটবে? যেই জীবনের মোহে, যেই স্বপ্নের ঘোরে, নাজমা ওর ম্যানচেস্টারের জীবন ছেড়ে ইস্ট লন্ডনদের এই চিলেকোঠার ঘরটায় উঠে এসেছিলো, সেই স্বপ্নের ঘোর যেন এখন ধীরে ধীরে কেটে উঠছে। কিন্তু নাজমা জানে যে এই ঘোর কাটতে দেওয়া যাবেনা। এই স্বপ্নটুকু যদি না থাকে তাহলে কী নিয়ে ও বেঁচে থাকবে? হতাশা, অপরাধবোধ, আফসোস নিয়ে? এই ভাবতেই নাজমা মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা শুরু করে দিলো। হে আল্লাহ, আমি সব ছেড়ে ছুড়ে তোমার পথে রওনা করেছি। তুমি আমাকে সহজ পথ দেখাও।
কী ছেড়ে এই পথে এসেছে নাজমা? যা ছেড়ে এসেছে তার প্রতি কি নাজমার আদৌ কোনো মায়া ছিল? ভালোবাসা ছিল? এই ভাবতেই নাজমার মুনিরার কথা আবার মনে পড়ে গেলো। মুনিরাও তো একজন মা। ভিন্ন একজন মা। মায়ের মতো একজন মা। আর নাজমা? ও চোখদুটো বন্ধ করে দুটো প্রিয় মুখ মনে করার চেষ্টা করলো। ওর চোখ জলে ভরে যাচ্ছে, সবকিছু ঝাপসা হয়ে উঠছে। নাজমা কিছুতেই মুখদুটো মনে করতে পারছেনা।
——————————————–
ছয় মাস আগের কথা (ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের ঘটনা) ……
নাজমা জোরে কল ছেড়ে দিয়ে রান্নাঘরের বেসিনে স্তুপ হয়ে থাকা থালা বাসনগুলো আপনমনে ধুয়ে যাচ্ছে। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে। সারাদিনের কাজের ধকলে ওর শরীর ভীষণ ক্লান্ত। ঘুমে চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসছে। তারপরও সব কাজের মধ্যে নাজমার এই রাতের বেলার বাসনকোসন ধোয়ার কাজটা সবচেয়ে প্রিয়। এই একটামাত্র সময় ও রান্নাঘরটা নিজের মতো করে পায়, এই একটা সময় ও শুধু একটু একা হতে পারে। বাকিটা দিন তো একেরপর এক অনবরত চলতেই থাকে। রান্নাঘরের একপাশে রাখা খাবার টেবিলে বসে ওর শাশুড়ির টানা আদেশ উপদেশ, ঘর ভর্তি মানুষজনের আনাগোনা, তাদের হাজারটা ফুটফরমাস। অমুকের জন্য চা তো তমুকের জন্য নাস্তা, শশুরের চশমা, শাশুড়ির পানের ডিব্বা, দেবরের মোজা খুঁজে বের করা, ননদের নতুন হিজাব উধাও হয়ে যাওয়া, এসব তো সারাটাদিন ধরে চলতেই থাকে। এছাড়া ওয়াশিং মেশিনে একের পর এক কাপড়ের লোড দেওয়া, সেই কাপড় বাগানে রোদে শুকাতে দেওয়া, কার্পেট হুভার করা, বাচ্চাদের খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, ন্যাপি বদলানো, রান্না শেষে সবাইকে গরম গরম খাবার পরিবেশন করা আরো কত কী। এই এক রান্না আর খাবার পরিবেশনারই তো কোনো শেষ নাই। শশুর ডায়াবেটিসের রুগী। ঠিক দুপুর বারোটার মধ্যে তাকে খাবার দিতে হয়। শাশুড়ি খান বেলা একটা থেকে দুইটার মধ্যে। দেবর ননদ স্কুল থেকে ফিরে সাড়ে তিনটার দিকে। তখন তাদের হালকা কিছু খাবার চাই। এর মধ্যে তো বাড়িতে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব সমাগমের কোনো শেষ নেই। সবাইকে টেবিল ভরে খাবার পরিবেশন করো। নাজমা চেষ্টা করে হাসি মুখেই সব করতে। এই যে সব করতে পারছে এটা তো ওর ভাগ্য। ভাগ্য তো বটেই। নাজমা তা জানে, ভালোমতোই জানে। কিন্তু জানলে কী হবে, মন তো মানেনা। এই জীবন তো ওর ভালো লাগেনা।
নাজমা ওর স্বামীর লতায় পাতায় কেমন যেন আত্মীয় হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজারে নাজমাদের গ্রামে ওর শশুড়বাড়ির মহা নাম ডাক। সেখানে তাদের বিশাল রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি। নাজমার শাশুড়ি ইংল্যান্ডে একটু ঠান্ডা পড়লেই দলবল নিয়ে সিলেটে তাদের সেই প্রাসাদে গিয়ে হাজির হয়ে যায়। প্রায় সময়ই নাজমার ননদ খালেদাকেও সাথে নিয়ে যায়। এতে করে খালেদার প্রায় বছরই স্কুল কামাই হয়, পড়াশুনার ক্ষতি হয়। কিন্তু তা নিয়ে এই পরিবারের তেমন কোনো মাথাব্যথা নাই। ওর শ্বশুরবাড়ির মানুষদের ধারণা মেয়ে ইংল্যান্ডের স্কুলে পড়াশুনা করলে এদেশের মানুষের মতো হয়ে যাবে। ধর্ম, দেশ, পরিবার, বংশ, মান, ইজ্জত, পরিবারের ব্যবসা, ঘর, সংসার কোনো কিছুর প্রতি কোনো আগ্রহ থাকবেনা, বেপরোয়া হয়ে বড় হবে মেয়ে। তবে গতবছর ইয়ার টেনের মেয়েকে নিয়ে স্কুলের পুরো অটাম টার্ম গায়েব হয়ে যাওয়ায় স্কুল, লোকাল কাউন্সিল অনেক ঝামেলা করেছে। কিন্তু ওর শশুড়বাড়ির মানুষ মহা সেয়ানা। খালেদার দাদার অসুখ আর দেশে খালেদা ইংরেজি স্কুলে পড়াশুনা চালিয়ে গেছে এসব কী কী জানি বলে এই যাত্রা রক্ষা পেয়েছে। দুইটা ব্যাপারই বানোয়াট, ডাহা মিথ্যা কথা। না খালেদার দাদার অসুখ আর না খালেদা দেশে গিয়ে স্কুলে পড়েছে। সবাই এখন বসে আছে যে খালেদার ষোলো বছর হয়ে গেলেই দেশ থেকে একজন ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করিয়ে আনবে। যেমন তারা বড় ছেলের বাইশ বছর না হতেই গ্রামে গিয়ে নাজমার সাথে বিয়ে করিয়ে এনেছে। নাজমা যেমন এখন মুখ বুজে তাদের ঘরের সব কাজ করছে, ননদের জামাইও নিশ্চয়ই তেমন মুখ বুজে ওদের রেস্টুরেন্টের সব কাজ করবে। অবশ্য মেয়ের জামাইয়ের খাতির নিশ্চয়ই ছেলের বউয়ের থেকে অনেক বেশি হবে।
নাজমা জোরে কলের পানি ছেড়ে সারাদিনের জমে থাকা একের পর এক বাসন কোসন ধুয়ে যাচ্ছে। ওর চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। রোজ রাতেই এইসময় ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এই কারণে এই সময়টা, এই কাজটা নাজমার এত ভালো লাগে। নাজমা যে কেন কাঁদে তা ও নিজেই জানেনা। কাঁদার কোনো কারণ নেই ওর। ও তো অনেক ভালো আছে। সত্যিই ভালো আছে। ওর মতো পরিবারের মেয়ের বিয়ে হয়েছে বিলেতের এক ছেলের সাথে। শুধু তাই না গ্রামে ওর শ্বশুরবাড়ির বংশ, প্রতিপত্তির গল্প সবার মুখে মুখে। নাজমা তিন বোনের মধ্যে বড় বোন। ওর গরিব বাবার মেয়েকে এরকম পরিবারে বিয়ে দিতে একটা পয়সা তো খরচ করতে হয়ই নাই, বরঞ্চ নাজমার শশুর বাড়ি থেকেই ওদের অনেক কিছু দেওয়া হয়েছে, এখনো নিয়মিত দেওয়া হয়। যাতে করে নাজমার পরিবার ভালো থাকে। হাজার হলেও তাদের বড় ছেলের শশুরবাড়ি বলে কথা। তারা খারাপ থাকলে তো এই পরিবারেরই বদনাম। বলা যায়, নাজমার পরিবার এখন চলছে কিছুটা ওর শ্বশুরবাড়ির কৃপায়।
তবে এমনি এমনি দয়াপরবশ হয়ে নাজমার মতো মেয়েকে তারা বাড়ির বড় ছেলের বউ করে আনেনি। নাজমার মতো সুন্দরী মেয়ে সেই তল্লাটে কমই আছে। ওর বাবা মায়ের অর্থের কমতি থাকলে কী হবে, তাদের তিন মেয়ের রূপের কোনো কমতি নাই। আর তিন বোনের মধ্যে নাজমাই সবচেয়ে রূপবতী। তবে নাজমা যে শুধু রূপবতী তা না, ভীষণ শার্প এবং ইন্টেলিজেন্ট একটা মেয়ে। তবে গরিবের মেয়ের রূপের যতটা কদর, বুদ্ধির কি আর ততটা কদর আছে? তবে শুধু গরিবের কেন, মেয়েদের অতিরিক্ত বুদ্ধি তো অযথা বিড়ম্বনা। যে জিনিস ইস্তেমাল করার প্রয়োজন নেই, সেই জিনিস অকারণ পেয়ে বসে থাকার কোনো মানে আছে? শুধু শুধু অপচয়। তবে নাজমার রূপের জৌলুসে বুদ্ধি ঢাকা পড়ে গেছে। আর সেই রূপের জোরেই এরকম সুপাত্র পেতে নাজমার বাবা মায়ের কুটোটাও বাছতে হয়নি। আঠারোতে পড়তে না পড়তেই বিয়ে, বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই স্বর্গ রাজ্যে বিলেতে পাড়ি, বিয়ের তেরো মাসের মাথায় প্রথম ছেলের মা আর তিন বছরের মাথায় আরেক ছেলের মা। আজ এই সংসারের কাজে পটু বাইশ বছরের নাজমার মনেহয় ও আজন্ম এই সংসারের ঘানি টানছে।
এই সংসারের ঘানি টেনে টেনে মাত্র কয়বছরেই ও ক্লান্ত আর পরিশ্রান্ত। ওর আজকাল মনেহয় সারাজীবন এই বোঝা ও টানবে কেমন করে? স্বামীর প্রতি নাজমার কোনো আগ্রহ নাই, দুই সন্তানের প্রতি কোনো আগ্রহ নাই, দেশে গিয়ে বাবা মা বোনদের সাথে দেখা করার ব্যাপারেও ও কোনো আগ্রহ বোধ করেনা। এই যে সারাটাদিন ও সংসারের কাজ করে এতেও ওর কোনো আগ্রহ নাই, কিন্তু কোনো অনাগ্রহও নাই। ও যেন মানুষ না। ও যেন একটা রোবট। ওর মধ্যে কোনো অনুভূতি নাই, দুঃখ নাই, শোক নাই, আনন্দ নাই, প্রেম নাই, ভালোবাসা নাই। ও রোবটের মতো যা যা করা লাগে, একের পর এক সব করে যায়। শুধু এই রাতের বেলা বাসন ধোয়ার সময়টা একটু ওর ভালো লাগে। কলের পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ওর চোখ দিয়েও অনবরত পানি পড়তে থাকে। ওর ভীষণ ভালো লাগে। প্রথম প্রথম অবশ্য এতটা উদাসীন ছিলোনা নাজমা। দ্বিতীয় সন্তানটা হবার পর থেকেই যেন জীবনের প্রতি এক ধরণের অনীহা জন্মে গেছে নাজমার। এমন তো হবার কথা না। তাহলে কি নাজমা খারাপ মা?
——————————————–
“মা” কথাটা মাথায় আসতেই নাজমা যেন বাস্তবে ফিরে আসলো। ওর আবার মুনিরার কথা মনে পড়ে গেলো। ও কোনোরকমে আবায়া আর হিজাবটা খুলে বিছানার একপাশে ছুড়ে ফেলে ওর ল্যাপটপটা খুলে নিয়ে বিছানায় বসে পড়লো। প্রথমে ইমেইল চেক করলো। তৈফিকের কাছ থেকে প্রায় দশটার মতো ইমেইল এসেছে। সবগুলোই ফরওয়ার্ড করা ইমেইল। ওদের কাজ, কোয়ালিশন ফোর্স সিরিয়ার কেমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে , ধর্ম সংক্রান্ত মোটিভেশনাল স্পিচ এরকম সব ভিডিও ফরওয়ার্ড করেছে তৈফিক। নাজমা ভিডিওগুলো না দেখেই ডিলিট করে দিলো। এমনিতেই ওর আজ মন মেজাজ ভালো নাই। এখন আরো মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। এতগুলো ভিডিও ফরওয়ার্ড করার সময় পেলো তৈফিক কিন্তু এক লাইন লিখে নাজমা কেমন আছে সেটা জানার সময় হলোনা? নাকি ইচ্ছা হয়নি?
নাজমা ল্যাপটপটা বন্ধ করে দিয়ে ওর মোবাইলটা হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লো। হোয়াটসঅ্যাপে অনেক মেসেজ এসে ভরে আছে। এখানেও বেশিরভাগই ভিডিও। সিস্টারস গ্ৰুপে অনেক আলোচনা হচ্ছে। ওর এসব খুলে পড়তে ইচ্ছা করছেনা এখন। হঠাৎ একটা মেসেজে এসে নাজমার চোখ আটকে গেলো। সেখানে লেখা,
– আই নিড ইওর হেল্প। প্লিজ হেল্প মি। আই ক্যাননট ট্রাস্ট এনিওয়ান হিয়ার। ইউ নিড টু হেল্প মি, প্লিজ।
গত কয়েকদিন যাবৎ প্রতিদিন একটা করে এধরণের মেসেজ পাঠিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা। নাজমার মনেহলো এই মেয়েটা তো মহাযন্ত্রণা দিবে বলে মনে হচ্ছে। নাজমা ওকে কীভাবে হেল্প করবে? ও কি সেটা জানেনা?
(চলবে)
©আমিনা তাবাস্সুম