মরীচিকার সন্ধানে পর্ব – ৯

মরীচিকার সন্ধানে
পর্ব – ৯

“নিশ্চয়ই দুঃখের পরেই আছে সুখ, কষ্টের পরে আছে স্বস্তি” (সুরা ইনশিরাহ- ৫, ৬)

এটা নাজমার ভীষণ প্রিয় একটা কুরআনের আয়াত। এর প্রমান তো নাজমা নিজেই হাতেনাতে পেয়েছে। যেই জীবন থেকে ওর মুক্তির কোনো পথ ছিলোনা সেই জীবন থেকে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা ওকে মুক্তি দিয়েছেন। ওর চাইতেও হয়নি, এমনিতেই কেমন করে জানি সবকিছুর ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আর তারপরও আজকাল একটু এদিক ওদিক হলেই ও হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। এতো কাফিরদের চরিত্রের লক্ষণ। একজন প্রকৃত মুসলিম কখনো হতাশায় পর্যবাসিত হতে পারেনা। নাজমা ঠিক করেছে ও আর কখনো মন খারাপ করবেনা। হতাশ হবেনা। জীবনে দুঃখ কষ্ট তো থাকবেই। কিন্তু সেই কষ্টও আল্লাহর তরফ থেকে আসা। ও আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সব মোকাবেলা করবে। নিশ্চয়ই দুঃখের পরে সুখ, অবশ্যই দুঃখের পরে সুখ।

নাজমার আজ মনটা ভীষণ ভালো। কিছুদিন ধরে ও আর্থিকভাবে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো। তৌফিক যখন ছিল তখন ওর টাকাপয়সা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয়নি। যখন যা দরকার ছিল সব ওই ব্যবস্থা করে দিতো। মেন্দি লাগানোর কাজটাতো শুধু ও মেয়েগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করার জন্য করতো। পয়সা রোজগারের তো আর করতোনা। আর মসজিদের সামনে বসে সারাদিনে কয়েকজনের হাতে মেন্দি লাগিয়ে আর কতই বা রোজগার হয়? তা দিয়ে তো আর জীবন চালানো যায়না।

তৌফিক যাবার পর থেকে নানান ঝামেলার কারণে ও নাজমাকে সময়মতো টাকা পাঠাতে পারছেনা। ওদের সব কন্টাক্টের উপর এখন ইন্টেলিজেন্স ফোর্সের কড়া নজরদারি। সেইসব সোর্স থেকে নাজমাকে টাকা দেওয়া মানে নাজমাও তখন পুলিশের নজরে পড়ে যাবে। সিস্টারস ফোরাম যেহেতু ও কখনো অ্যাটেন্ড করেনি, সেকারণে নাজমা ভাগ্যক্রমে এই যাত্রা বেঁচে গেছে। পুলিশ ইনভেস্টিগেশনের সময় ও কারো নজরে পড়েনি। এখন শুধু শুধু টাকা পয়সার জন্য যারা ইনভেস্টিগেশনের আওতায় আছে বা ছিল তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করলে গায়ে পড়ে বিপদ ডেকে আনা হবে। এসব অবশ্য নাজমার কথা না। তৌফিকের কথা। তবে নাজমাও তৌফিকের সাথে এব্যাপারে পুরোপুরি একমত। তাছাড়া ওর তো আর তেমন টাকা পয়সার দরকার নাই। নাজমা একা মানুষ। নিজেরটা নিজেই ম্যানেজ করে নিতে পারবে। তৌফিককে নাজমা বলেছে এই নিয়ে অস্থির হতে না।

তবে তৌফিককে অস্থির হতে না বললেও নাজমা নিজে অস্থির হয়ে উঠছিলো। রুমের এই মাসের ভাড়া বাকি পড়ে আছে। এক নিজের খাওয়া দাওয়া, সেটাও ম্যানেজ করতে কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু আজকে নাজমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। মসজিদের পাশের কাপড়ের দোকানেই ও ফুলটাইম চাকরি পেয়ে গেলো। দোকানের মালিক চাচা নাজমাকে ভালোমতো চিনে। চিনবেনা কেন? নাজমা তো উনার দোকানের সামনেই সারাদিন মেন্দি লাগানোর জন্য বসে থাকে। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে সেই চাচা বা দোকানের অন্যরা নাজমার সাথে গল্প জুড়ে দেয়। ওদের দোকানে যেই মেয়েটা কাজ করতো ও চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে। ও নাকি বিয়ে করছে সামনে তাই এই দোকানে আর কাজ করবেনা। নাজমা এসব কিছুই জানতো না। কিন্তু সেই চাচা নিজে থেকে এসেই নাজমাকে জিজ্ঞেস করেছে যে ও এই কাজটা করতে চায় নাকি। চাচা খেয়াল করেছে যে সারাদিন বসে থেকে নাজমা খুবই সামান্য আয় করতে পারে। আশ্চর্য, আল্লাহ কীভাবে সবকিছুর ব্যবস্থা করে দেয়। ভাবতেও অবাক লাগে।

নতুন চাকরি পাবার খুশিতে নাজমা আজকে সকাল সকাল মেন্দির স্টল গুটিয়ে রেখে ঘরে ফিরে এসেছে। তবে ও জানতোনা যে ভালো লাগার এখানেই শেষ না। আরো অনেক ভালোলাগা আজ ওর অপেক্ষায় আছে। ঘরে ফিরে আবায়া আর হিজাব ছেড়ে একটু খোলামেলা হয়ে আরাম করে বসতেই হোয়াটস্যাপে তৌফিকের মেসেজ। ফরওয়ার্ড করা কোনো মেসেজ না। সোজা সাপ্টা ওকেই সালাম দিয়েছে দেখি।

নাজমা একটুও দেরি না করে জবাব দিয়ে দিলো,

– ওয়ালাইকুমসসালাম। এতদিনে আমার কথা মনে পড়লো?

– তোমার কথা তো সবসময় মনে পড়ে। শয়নে, স্বপনে, যুদ্ধে, গোপনে, তুমি শুধু তুমি।

– ইশ, চাপাবাজ।

তৌফিক কথা ঘুরালো। বললো,

– তুমি কোথায়?

– ঘরে।

– কেন? তোমার মেন্দি লাগাও না।

– নাহ, আমার মন বলছিলো তুমি মেসেজ করবে। তাই তাড়াতাড়ি চলে এসেছি।

– তুমি কী পরে আছো?

– কেন? কাপড়?

– কী কাপড়? খুব জানতে ইচ্ছা করছে। তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করছে। তোমাকে যে একবার জান ভরে দেখেছে সে কি তোমাকে শয়নে-স্বপনে না মনে করে থাকতে পারে? চাইলেও তো পারবেনা। কতদিন তোমাকে দেখিনা, তোমাকে আদর করিনা। আমার আর একটুও ভালো লাগছেনা।

নাজমারও কি একটুও ভালো লাগছে? ও উত্তর দিলো,

– তাহলে আমাকে এভাবে এখানে ফেলে রেখেছো কেন? নেবার ব্যবস্থা করছোনা কেন?

– তোমার কি মনেহয় আমি চেষ্টা করছিনা? তুমি তো আমার বউ। তুমি আমার কাছে থাকো আর দূরে থাকো আমি তো তোমারই। আল্লাহ তোমাকে আমার জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন আর আমাকে তোমার জন্য। এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু নাই। কিন্তু এখানে অনেক অনেক ফাইটাররা সব ছেড়ে ছুড়ে এসেছে। তারা তো আমার মতো ভাগ্যবান না। তাদের তো আর আমার মতো স্বর্গের অপ্সরা স্ত্রী নাই। তাদের জন্য আগে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে তো। তাই কুমারী মেয়েরা প্রাইয়োরিটি পাচ্ছে।

নাজমা কপট রাগ দেখানোর চেষ্টা করলো। লিখলো,

– ঠিক আছে তোমার ফাইটার ব্রাদারদের জন্য কুমারী মেয়েদেরই নিতে থাকো আর তুমি নিজেও একজন কুমারী মেয়ের গলায় ঝুলে পড়ো। আমাকে আর তোমার দরকার হবেনা।

তৌফিক নাজমার এই মেসেজে হা হা হাসির রিয়্যাক্ট দিয়ে বললো,

– তোমার ব্যবস্থা হচ্ছে ম্যাডাম। তোমাকে ছাড়া আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তবে আমার মাথা খারাপের জন্য না। আমি সবাইকে বলেছি তোমার কথা। তুমি কত স্ট্রং একজন মুসলিমাহ। এখানে অনেক মেয়েদের কন্ট্রোল করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তুমি আসলে অনেককেই সঠিক পথে গাইড করতে পারবে। এখানকার মেয়েরা তো শুধু মা বা স্ত্রী না। ইসলামে মেয়েদের সম্মান অনেক, ক্ষমতা অনেক। খিলাফত প্রাপ্তির ব্যাপারে মেয়েদের ভূমিকা অনেক। ওয়েস্টের মেয়েদের কে তো ওদের শরীর, রূপ, সৌন্দর্য্য এইসব খেলনা দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়। মেয়েরাও শুধু এসব নিয়েই মজে থাকে। ওদের কাছে নিজের শরীর স্বাধীন করতে পারাই একমাত্র স্বাধীনতা। কিন্তু শরীরের স্বাধীনতা তো আর আসল স্বাধীনতা না। এখানকার মেয়েরা তো প্রপার এম্পাওয়ার্ড উইমেন। তুমি এখানে আসলে যে কত কিছু করতে পারবে। আমি খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।

নাজমা কোনোরকমে লিখে উঠলো,

– ক্যান্ট ওয়েট (সাথে অনেকগুলো হার্ট ইমোজি)

তৌফিক লিখলো,

– হয়েছে। এখন আদরের কথা বলো। অনেক অনেক আদরের কথা।

কী ভীষণ এক অদ্ভুত ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে নাজমা। আজকের দিনটা এতো সুন্দর কেন। নাজমার বার বার মনে হচ্ছে; “নিশ্চয়ই দুঃখের পরেই আছে সুখ, অবশ্যই দুঃখের পরেই আছে সুখ”।

তবে শুধু আজকেই না তৌফিকের সান্নিধ্য সবসময়েই নাজমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। শুরুতে ওর ফেসবুকের পোস্টগুলো, এরপর লাইক লাভ ইমোজির আদান প্রদান, তারপর ওর শশুড়বাড়ির রান্নাঘরে হুটহাট তৌফিকের উপস্থিতি, সালামের আদান প্রদান, টুকটাক কথা বার্তা, ধীরে ধীরে আরেকটু কাছে আসা, ঘুম ঘুম চোখে সারারাত জেগে ফেসবুক মেসেঞ্জারে বিভিন্ন ভিডিও দেখা, মুসলিম উম্মাহ নিয়ে আলাপ আলোচনা, নিজেদের জীবন নিয়ে আলোচনা, কীভাবে দ্বীনের পথে জীপনযাপন করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা সবকিছুই নাজমার ভালো লাগতো। সবকিছুই নাজমাকে এক ধরণের ভালোলাগায় মোহাবিষ্ট করে রাখতো। নাজমার যেন মনেহত আল্লাহ ওকে নতুন জীবন বেছে নেবার সুযোগ করে দিচ্ছে। নিজ হাতে ধীরে ধীরে নাজমাকে তৈরি করে সেইপথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর সেইপথ সহজ করে দেবার জন্য তৌফিক যখন নাজমাকে ওর সাথে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব করলো তখন সেই সিদ্ধান্ত নিতে ওর একটুও বেগ পেতে হয়নি। এখানে তো ওর কোনো সিদ্ধান্ত নেবার ছিলোনা। আল্লাহই তো ওর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

ওর এই পথ বেছে নিতে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ওর দুই সন্তান। কিন্তু নাজমা জানে ওর শ্বশুর শাশুড়ি তাদের সর্বস্ব দিয়ে তাদের বড় ছেলের দুই পুত্র সন্তানকে আগলে রাখবে। ওরা দুইজন হলো সেই বংশের বাতি। ওদের অযত্ন, অবহেলা সেখানে হবেনা। মা হিসেবে ওখানে ওর এমনিতেই করণীয় কিছু ছিলোনা। সেই সংসার চলতো ওর শ্বশুর শাশুড়ির আঙ্গুলি হেলনায়। ওখানে বসে বসে ও দ্বীনের পথে ছেলেদের মানুষ করতে না পারার জন্য মন খারাপ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারতোনা। এই মনে করেই হয়তোবা এক রাতে, রান্নাঘরের সব বাসনকোসন ধোয়ার কাজ শেষ করে, ওর স্বামী ফাহাদের নিত্য টেক্সট মেসেজ অগ্রাহ্য করে, ছোট্ট একটা ব্যাগে কিছু জিনিসপত্র ভরে নিয়ে সেই বাসা থেকে চিরতরে বেরিয়ে আসতে নাজমার একটুও বাধেনি।

তবে এই পথে আসতে ও যতটুকু ত্যাগ করেছে তার চেয়ে অনেক বেশি ত্যাগ করেছে তৌফিক। ও বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র, আলালের ঘরের দুলাল সে, সহায় সম্পত্তি কোনোকিছুর অভাব নাই তার, দেখতেও সুদর্শন, শিক্ষিত, অল্পবয়স। চাইলেই সে রূপবতী, গুণবতী, বিদ্যাবতী স্ত্রী জোগাড় করতে পারতো। কিন্তু তৌফিক ওর জীবনের সব ত্যাগ করে ওর চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী, দুই সন্তানের মাকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। ও জানে এরপর সেই বাড়িতে ও আর কোনোদিন ফিরে যেতে পারবেনা। তারপরও সে কোনো দ্বিধাবোধ করেনি। তাহলে নাজমার দ্বিধা কিসের?

নাজমাকে নিয়ে তৌফিক সোজা ট্রেনে করে ম্যানচেস্টার ছেড়ে লন্ডনে চলে আসে। এসেই নাজমাকে এই চিলেকোঠার রুমটায় উঠিয়ে দেয়। নাজমার জন্য সবকিছু ছেড়েছুড়ে আসার পরও তৌফিক নাজমাকে পাওয়ার জন্য অধৈর্য্য হয়ে উঠেনি। অধৈর্য্য হবেই বা কেন? ধর্মের পথে চলে সে। সংযম সাধন কীভাবে করতে হয় তা তৌফিকের জানা আছে। তৌফিক কাছেই কোথাও আরেক বন্ধুর বাসায় উঠেছিল। তবে ও নিয়মিত নাজমার খোঁজ খবর নিতো, সুযোগ পেলেই এসে ওর সাথে গল্প করে যেত। ওকে সেই মসজিদে নিয়ে যেত, মেন্দির স্টলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো, হোয়াটস্যাপে সব মেয়েদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছিলো, কয়েকজন মহিলার সাথে সামনাসামনিও পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। ওরা ধর্মকর্ম নিয়েই নিজেদের ব্যস্ত রাখতো। এভাবেই প্রায় মাস চারেকের উপর কেটে গিয়েছিলো। লন্ডনে আসার পর থেকেই তৌফিকের পরিচিত এক লোক বা ইমাম ধর্মমতে নাজমার ডিভোর্সের ব্যাপারে কাজ করা শুরু করেছিল। নাজমা এর বিস্তারিত কিছু বুঝেনি বা বুঝার চেষ্টাও করেনি। কিন্তু সেই ইমাম যখন তৌফিককে জানায় যে ওদের বিয়েতে আর কোনো বাধা নেই তখনই দুজনে মিলে সেই মসজিদে গিয়ে বিয়ে করে ফেলে। আর নাজমা তৌফিকের স্ত্রী হিসেবে যেন পুনঃজন্ম লাভ করে।

বিয়ের পর তৌফিক আর ও কয়েক সপ্তাহের মতো এই চিলেকোঠার ঘরটায় একসাথে ছিল। এই কয় সপ্তাহ নাজমার মনেহয়েছে ও যেন স্বর্গে ছিলো। তৌফিকের সান্নিধ্যে ও এমনই মোহাবিষ্ট থাকতো যে সেই সময়ের কথা মনে করলে এখনো ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

এই মুহূর্তে অবশ্য নাজমা সেই একমাসের কথা মনে করে আচ্ছন্ন না। তৌফিকের আকর্ষণ এত প্রবল যে ওর সাথে হোয়াটস্যাপে কথা বলেই এখন ও আচ্ছন্ন। অনেক ভাব ভালোবাসার কথা বলার পর তৌফিক হঠাৎ করেই কথা পাল্টালো। বললো,

– মায়মুনা তোমার সাথে যোগাযোগ করে?

– হ্যাঁ করে তো। কেন?

– নাহ, ওর হাজবেন্ড বলছে ও নাকি ঝামেলা করছে। তোমাকে কিছু বলেছে।

নাজমা নিজের মনেই একটু সতর্ক হয়ে গেলো। বললো,

– সেরকম কিছু তো বলেনি। মেয়েদের গ্ৰুপে তো সবার সাথে ঠিকঠাকই কথা বলছে।

– তোমাকে আলাদা করে কিছু বলেনি?

নাজমার কেন যেন অস্থির লাগছে। তৌফিকের কাছে ওর কিছু লুকানোর নাই। ওর কাছ থেকে ও কিছু লুকাতেও চায়না। কিন্তু নিজের অজান্তেই কেন যেন ও সত্যি কথাটা বলে উঠতে পারলোনা। বললো,

– আমাকে শুধু বলেছে যে ওর প্রথম হাজবেন্ডকে ও খুব মিস করে।

– ওহ, ওকে বুঝিয়ে বোলো যে ও ভাগ্যবতী। ও একজন শহীদের স্ত্রী হতে পেরেছে। এখানে মিস করার কিছু নাই। ওর সেই হাসবেন্ড আরো ভালো স্থানে আছে। এখন যাতে ও এই হাসবেন্ডের কথামতো চলে।

নাজমার হঠাৎ করেই সেই ভালো লাগার আচ্ছন্নটা কেটে গেলো। কোনোরকমে লিখে দিলো,

– ওকে।

তৌফিকের সাথে মেসেজ চালাচালি শেষ হবার পর হঠাৎ করেই নাজমার সারাদিনের ভালোলাগার সেই অনুভুতিটা একেবারেই মুছে গেলো। সেই ভালোলাগার ছিটেফোঁটাও আর অবশিষ্ট নাই। হঠাৎ করেই ও ভীষণ বিষন্ন বোধ করছে।

(চলবে)
©আমিনা তাবাস্সুম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here