মেঘের আড়ালে চাঁদ পর্ব ১৩

0
471

মেঘের আড়ালে চাঁদ
(১৩)

নিলয় পুলিশের গাড়ি নিয়ে টাঙ্গাইল পৌঁছল প্রায় দুটোর দিকে, ঘুম আর ক্লান্তি নিমেষে উবে গেল , গাড়িটার চেহারা দেখে, টো ট্রাক দিয়ে পাশের খাল থেকে তোলা হয়েছে গাড়ি, একদম নতুন মডেলের গাড়িটা, কালো রঙের অডি হাইব্রিড ২০২১, আট কোটির উপর দাম হবে, গাড়ি এক সময় সে ভালোবাসত, কিন্তু এই মরার চাকরিতে বেতন থাকলেও শ্বাস ফেলার সুযোগ কই? বৌ, মেয়ে তার গাড়িতে চড়ে বেড়ালেও তার অফিসের গাড়িই ভরসা!

টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে, এক কন্সটেবল মাথার উপর ছাতা ধরে রেখেছে, বের হল নিলয় গাড়ি থেকে, এক তদন্তকারী অফিসার এসে স্যালুট করল,
•স্যার আসসালামু আলাইকুম,
•কি অবস্থা অফিসার? আমায় তলব?
•অফিসিয়াল ভাবে ডাকা সম্ভব না , কিন্তু আনঅফিশিয়ালি আপনি কেসে আছেন ভাবলাম, আপনার কাজ এগোবে, আপনি আগ্রহী!
•হুম নাহলে আসতাম না। গাড়িটার এই হাল করল কে?
•একটা ভারী লরি হবে যমুনা ব্রিজের সিসিটিভি ফুটেজে পেলাম,
•হুম বেশ তড়িৎ গতিতে কাজ করেছেন, আশরাফ শিকদার স্যারের ছেলে বলে কথা!
•হুম এদেশে নেতা, মন্ত্রী আর হাজার কোটিপতির ছেলে মেয়েরাই শুধু মানুষ….
•কি হয়েছিল বলুন তো
•বৃষ্টির ছাটে চাকার দাগ প্রায় নেই বললেই চলে, তবু ধারণা করা যাচ্ছে গাড়িটা তীব্র গতিতে ফারহান শিকদারের গাড়ির সামনে আঘাত করে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে খালে ফেলে দিয়ে চলে যায়,
•ফারহান শিকদার এখানে কি করছিল?
•সে রাজনৈতিক কাজে রাজশাহী যাচ্ছিল, ঢাকা থেকে।
•হুম ঢাকায় বসে কেসের শুনানিতে আসতে পারেনা! মৃত্যুর ডাকে ঠিক ঢাকার বাইরে চলে গেল!
•কিছু বলছেন স্যার
•না না, কিছুনা, খুন না অ্যাক্সিডেন্ট?
•ফরেনসিক খুব একটা সাহায্য করতে পারবে বলে মনে হয় না।
•ট্রাক ড্রাইভার কে পাওয়া গেছে?
•হ্যা সে আমাদের কাস্টডি তে!
•হুম খুন করে এত সহজে ধরা দিল?
•সেটাই তো প্রশ্ন স্যার। আবার এদিকে আপনাদের কেসটা….
•আরে আমাদের কেসের ঐ গোবেচারা ছেলে আর ঐ মহিলা লেখিকা খুন করেছে বলে মনে হচ্ছে?
•না স্যার তাহলে আপনাকে ডাকতাম না। উনারা শ্রীমঙ্গল থানায় আজই গিয়েছিলেন।
•কি? কেন?
•তা জানিনা স্যার কিন্তু আমার সোর্স জানালো ওখানে কোন অ্যাক্টিভিটি নেই, দুজন রিসোর্টেই আছেন।
•হুম। সে আমিও জানি। ট্রাক টা এস.এস কর্পোরেশনের না তো? ( শিশিরের বাবার কোম্পানি)
•না স্যার, সরকারি!
•ড্রাইভার সরকারি?
•জি স্যার!
•তাহলে তো খুনের মোটিভ নেই
•থাকার সম্ভাবনা কম
•মাত্র কয়েক ঘন্টায় আপনি চমৎকার কাজ করেছেন
•ধন্যবাদ স্যার
•আপনি অনেক দূর যাবেন। যদিও এদেশে এর মূল্য নেই!

নিলয় কথা সেরে গাড়ির কাছে গেল, পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে লরিটা। এখানে কোন ক্লু নাই। রাস্তার পাশে তেরপল টানিয়ে লাশ রাখা হয়েছে, এদেশে চেইন টানা লাশের ব্যাগ ও আছে? এই লাশ যদি ফারহান শিকদারের না হয়ে কোন সাধারণ ঘরের ছেলের হত তাহলে একটা চাদর জুটত কিনা কপালে…..
কাঁপা হাতে চেনটা খোলে নিলয়, ভেতরে একতাল মাংস ছাড়া কিছু নেই, তাও আবার ময়লা, কাঁদা মাখা, গাড়ির কাচ ভেঙে কাদামাটি ঢুকেছে….

অশরাফ শিকদার কি টাকা দিয়েও ছেলের অন্তিম যাত্রা সুখকর করে দিতে পারবে?
ফারহানের লাশ চেনার কোন উপায় নেই, পুরোপুরি এক তাল মাংস ছাড়া আর কিছুই না, আলতাফ হোসেনের মত কয়েক টুকরো না! কয়েক হাজার টুকরো হয়েছে , এটা কি আসলেই ফারহানের লাশ? কথাটা মাথায় আসতেই তদন্তকারী অফিসারকে ডাকে নিলয়, সে নিজে হাতে চা নিয়ে নিলয় কে দেয়,
•নিন স্যার চা, সিগারেট?
বৌ, মেয়ের মাথার দিব্বি ভুলে নিলয় সিগারেট ধরালো, উত্তরের ঠান্ডা বাতাস আসছে, তেমন কোন গরম কাপড় পরেনি, কিভাবে জানবে এখানে এত ঠান্ডা? বাসায় তো এসি চালিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে!
•ডি.এন.এ টেস্টের জন্য আশরাফ শিকদার রাজি?
•হ্যা স্যাম্পল পাঠিয়ে দিয়েছি
•এত কুইক কাজ অন্য কেসে করেন?
•করি স্যার, আপনি তো আছেন, দেখা হবে সামনে
•হুম, আপনার নামটা?
•গৌরব স্যার
•বাহ!
•গৌরব অধিকারী
•গৌরব অধিকার করুন! শুভকামনা রইল।

অফিসার কোন কাজে চলে গেল, কন্সটেবল এসে চেইন লাগিয়েছে ব্যাগের, নিলয় একা দাড়িয়ে চা আর সিগারেট খাচ্ছে, পাশে একটা লাশ! ওর মনে হচ্ছে, শুধু চা কেন? খিচুড়ি ইলিশ, নিদেনপক্ষে খিচুড়ি ডিম ভাজিও সে খেতে পারবে! রাতের খাবারের জঘন্য সবজির স্যুপ আর সালাদ পেটের এক কোণে হারিয়ে গেছে! আলতাফ হোসেনের লাশ সে চোখে দেখেনি, কিন্তু তার স্ত্রীর কন্ঠ শুনেছে, বাড়ি ওয়ালার চোখে ভয় দেখেছে, যারা এসব করে তাদের লাশের অবস্থা এমনই হওয়া উচিত, কিন্তু কোনভাবে ঐ মিজান পাগলটা জড়িয়ে না পড়ে….. আপুকে ফোন করি….. কিন্তু এত রাতে? আরে আপুর তো রাতই দিন!

#
মিতুর কথা,
বারান্দায় বসে গল্প করছিলাম,
আমি আর মিজান, মিজানের পরিবারের সাথে মিজান কথা বলবে তাই আমার মত চায়, আমি একবার বাবার (শিশিরের বাবা) সাথে কথা বলতে চাইলাম। ও রাজি হল। এত তাড়াহুড়ো করছে কেন বুঝলাম না, ফোন চার্জে ছিল, কয়েক বার রিং বেজেছে, বুঝিনি, মিজান চলে গেলে ফোন হাতে নিয়ে দেখি নিলয়ের কল, বুকের ভেতরটা হু হু করে ওঠে, কোন সুসংবাদ জানাতে সে এত রাতে কল দেয়নি নিশ্চয়ই!
কল ব্যাক করতেই,
•হ্যালো আপু একটা নিউজ আছে
•সে তো বুঝেছি, ভালো না খারাপ? টিপ টিপ শব্দ? বৃষ্টি পড়ছে ঢাকায়?
•না আপু আমি ঢাকা বগুড়া মহাসড়কে
•এত রাতে, কোন দুর্ঘটনা?
•হ্যা দুর্ঘটনা তো বটেই, ফারহান শিকদার এর ভয়ানক অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে
•বেঁচে আছে তো?
•না, ওর গাড়িকে একটা লরি মুখোমুখি চাপা দিয়ে রাস্তার পাশের খালে ফেলে চলে যায়,
•সেকি?
•ড্রাইভার ধরা পড়েছে, সে সহজেই স্বীকার করেছে যে ভয়ে সে পালিয়েছে
•হুম
•কোন সম্ভাবনা আছে? মিজান এর পেছনে?
•আ…..আমি কিছু ভাবতে পারছি না, হাত পা কাপতে শুরু করেছে আমার
•আমি সবদিক দিয়ে মিজান কে বাঁচানোর চেষ্টা করব, কিন্তু আমাকে সব সত্যি জানতে হবে। আপনারা থানায় গিয়েছিলেন কেন?
•লোকাল থানা থেকে অফিসার চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন বাসায়, আমরা গিয়ে দেখি উনি ফেরেননি, মিজান বলল, থানায় গেলেই দেখা হবে, আমিও ভাবলাম যাই, আর কিছু না!
•আমি তো ভাবলাম কি না কি….
•না তেমন কিছু না! ভদ্রলোক বলেই মনে হল, কোন সমস্যা হলে জানাতে বললেন
•নম্বর পেল কোথায়
•শিমুল ভাই দিয়েছেন বলল
•আচ্ছা, ঘুমান আপু। রাখছি
•আচ্ছা শুভ রাত্রি
•শুভ রাত্রি!
নিলয়ের রাত কি আর শুভ আছে? সবকিছু যেন তৈরি মিলে যাচ্ছে! আজকের দিনে নির্দ্বিধায় পুলিশের সাথে দেখা করে এসেছে মিজান! এসব কি প্ল্যানের অংশ? কেস কি এত সোজা? নাকি খুব বেশি কঠিন?

#
মিজান বাসায় কথা বলেছে, মা,বাবা,দুলাভাই কারো আপত্তি নেই, বরং তারা খুশি, কিন্তু মোহনা কিছুতেই তার সাথে কথা বলল না। হ্যামকে বসে দুলছে, ঠান্ডা বাতাস ছেড়েছে। এত রাতে এখানে কেউ থাকতে পারে এটা সে ভাবেনি, শোভন এসে সালাম দিল।
•স্যার কোন সমস্যা?
•না কোন সমস্যা নেই, তুমি এখানে এত রাতে?
•ঘুম আসছিল না স্যার।
•আবার স্যার স্যার করছ।
•জি ভাই। আপনি অভ্যাস খারাপ করে দিলে মুশকিল হবে। তা ছাড়া শিমুল স্যার এসব ব্যাপারে খুব কড়া।
•রিসোর্ট শিমুল ভাইয়ের?
•আসলে এটা শিশির ভাইয়ের, শিশির ভাই জায়গাটা কিনেছিলেন, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে করেছেন কাজটা, কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। তাই এই অর্ধ সমাপ্ত কাজই শিমুল ভাই শুধু ফিনিশিং দিয়েছেন, থাকার উপযোগী করেছেন।
•আচ্ছা! তাহলে তো এটা মিতুর!
•জি, ম্যাডামের।
•আচ্ছা!
•ধানমন্ডির ফ্ল্যাট ছাড়া তিনি আর কিছু নেননি!
•হুম, সম্পত্তির লোভ নেই, অধিকার ও ফলাতে চান না!
•ভাই আপনি রেস্ট করেন, আমি একটু ওদিকে সিকিউরিটি গার্ডদের দেখে আসি
•হ্যা যাও

এখানে কে কাজের লোক, আর কে যে গোয়েন্দা বোঝা দায়! পকেট থেকে ফোন বের করে সুইচ অন করে মিজান, একটা মেসেজ এসেছে লেখা ডান! হাসি ফুটে ওঠে মিজানের ঠোঁটের কোণে, তার প্রথম বিজয়! বাবার ধানের জমি বন্ধক রেখে টাকাটা নিয়েছে সে, সাফল্য আসতেই হত। শিহাব, অনুপম, রিফাতের ফোনে ডান লেখাটা ফরোয়ার্ড করে রুমে গেল মিজান। কাল থেকে শুরু হবে সেকেন্ড ফেজ, যদিও বাকিগুলো ফাউ, সে এতেই খুশি!

#
পুলিশের জেরায় অবস্থা খারাপ জালালের। কিন্তু সে ট্রেনিং প্রাপ্ত। পুলিশ শুধু এক প্রশ্ন বারবার করে যাচ্ছে, সেও টিয়া পাখির মত বারবার উত্তর দিয়ে যাচ্ছে এক চুল ভুল না করে। মারধর, অত্যাচার শুরু হলেও সমস্যা নেই, তার সাথে ড্রাগ আছে, আচ্ছন্নের মতন শুধু মার খাবে, ব্যাথা পাবেনা! কিন্তু বেফাঁস কথা বের হবেনা। নিলয় এসে কিছুক্ষণ প্রশ্ন উত্তর খেলে গেল! এর কথা আগেই জেনেছে, ব্যাটা ভদ্রলোক, কখনো মারধর করে না, কিন্তু প্রশ্নের জালে ফেলে দেয়, তাকে কোনরকম জালে ফেলল না, স্বাভাবিক প্রশ্ন উত্তর পর্ব শেষে বলল, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে,

এটা পুলিশের একটা চালাকি, সে জানে, সে কোথাও লুকাবে না, সোজা বাসায় যাবে, বৌ বাচ্চার সাথে সময় কাটাবে, দীর্ঘদিন ধরে বৌটা ঘ্যানঘ্যান করছিল, ভালোমন্দ বাজার সদাই করবে। দারোয়ানের চাকরিতে ভাত জোটানো কঠিন, তাও টুকটাক ফুট ফরমায়েশ খেটে সে ভালো রোজগার করে, বৌ ভালো বাসায় থাকতে চায়, মেয়েকে ভালো স্কুলে দিতে চায় এবার সব হবে, সে কখনো ভাবেনি, তার শিখে রাখা ড্রাইভিং টা এত কাজে দেবে! বিয়ের আগে সে ট্রাক চালাতো, বিয়ের পর ছেড়ে দিয়ে ঢাকায় একটা মেসে দারোয়ান কাম কেয়ার টেকারের কাজ নিয়েছে। সে কার হয়ে কাজ করছে কিছুই জানে না। কিন্তু শুধু এটুকু বলেছিল, যে এদের যদি খতম করা যায়, তাহলে দেশের মেয়েরা আবার হেসে খেলে নিরাপদে বেড়াতে পারবে, কাজ করতে পারবে, দিন রাত যখন খুশি, প্রয়োজনে বের হয়ে ধর্ষিতা হয়ে লাশ হবেনা, এই কথাতেই কিছুটা কাজ হয়েছিল, বাকিটা টাকার খেলা!
সত্যিই তাকে ছেড়ে দিল পুলিশ, কিন্তু তার নকল সরকারি ড্রাইভারের পরিচয়টা কতদিন টিকে এটা দেখার বিষয়, ওরা তো বলল, ওদের লোক আছে, কিছু হবেনা……
উহু জালাল! দুশ্চিন্তা একদম না। ভয় না অনুশোচনা! অনুশোচনার অভিনয় করতে হবে, আশরাফ শিকদার কি তাকে ছেড়ে দেবে? একমাত্র ছেলে ছিল…. আচ্ছা! আপাতত বাড়ি যাই, বাকিটা দেখা যাবে, তার ফোন ফেরত দেয়া হল, তার স্ত্রীর বাইশটা মিসড কল! বৌ মেয়েকে ইচ্ছে করেই না বলে বেরিয়েছে, ওরা এলাকায় খুজুক, কান্নাকাটি করুক তবেই এটা কোন প্ল্যান না শুধুই অ্যাক্সিডেন্ট প্রমাণিত হবে। ধীর পায়ে বাড়ির পথ ধরে জালাল, সে জানে তার প্রতিটি পদক্ষেপের উপর পুলিশের নজর….

•ফোনে কিছু পেলে? গৌরব জিজ্ঞেস করে, তার সহকারীকে
•না স্যার, বৌ বাইশটা কল দিয়েছে, বাড়ি থেকে ও কল এসেছে, মেসেজে মোবাইল কোম্পানির মেসেজ ছাড়া কিছু নাই, ব্যাংকের কোন মেসেজ নাই।
•তাহলে অন্য ফোন ব্যবহার করে, সেটা ফেলেও দিয়েছে হয়তো!
•ঘটনার আশেপাশে অ্যাক্টিভ সমস্ত মোবাইল নম্বর খোঁজ, তার মধ্যেই জালালের টাও পাবে
•আপনার কাছে খুনই মনে হচ্ছে
•হ্যা, কোন সংঘবদ্ধ গ্যাং এর কাজ মনে হচ্ছে
•হুম, আমি মোবাইল অপারেটর দের বলে দিচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব যেন এটা আমাদের জানানো হয়
•ওকে
•কিন্তু স্যার এটা খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মতো! এত এত নম্বরের মধ্যে কোনটা জালালের কিভাবে বুঝব?
• বায়োমেট্রিক করে সিম কিনতে হয়, আমাদের কপাল ভালো হলে জালাল বা তার কাছের কারো নামে সিম পাব, আর কপাল মন্দ হলে অ্যাক্সিডেন্টের এক কিলোমিটার রেডিয়াসে ঐ জায়গায় কোন কোন নম্বর এ্যাক্টিভ ছিল সেটা ধরে এগোতে হবে….

নিলয় বাসায় ফিরল সকাল নয়টায়, কি একটা সরকারি ছুটি আজ তাহিয়া তখনও ঘুমাচ্ছে, তাকে জাগিয়ে কফি করতে বলল, দুজন বসে সব ঘটনা আলোচনা করল, ইন্দোনেশিয়া ট্যুরে অনেক টাকা খরচ হয়েছে, এবার কোথায় যাবে? তাহিয়া, তোহফা?
তাহিয়া বলে,
•আমি আর পালাতে রাজি না
•যা হবার হবে
•জেদ করনা প্লিজ, তোহফা কত ভয় পাবে, ভেবেছ একবার?
•আবার তোমাকে ছেড়ে থাকা…
•তাহিয়া প্লিজ, আমি সবকিছু বলে দিয়েছি
•না, ততটুকু বলেছ, যতটুকু বললে আমি বাসা ছাড়ব
•আচ্ছা মানছি, তুমিও কি আমায় তোমার অফিসের টেন্ডার কোটেশন বল?
•আরে কিসে কি? হেসে দেয় তাহিয়া
•এইত আমার লক্ষী বৌ
•আমি আগেই ঢাকার বাইরে ট্রান্সফারের অ্যাপ্লাই করেছিলাম, আমার প্রমোশন আর বদলি দুটোই হয়েছে
•বাহ! অভিনন্দন! আমায় বলনি কেন?
• কাল সেলিব্রেট করতে চাইলাম…
•আচ্ছা ইয়ে….. তোহফা তো ঘুমায়….সেলিব্রেশনটা এখন করি?
•ছি ছি! কি কথা! খালা আসবে! কত কাজ পড়ে, তার উপর তুমি শাওয়ার নাওনি কতদিন?
•এইতো বছর খানেক!
•যাও হয়েছে….
নিলয় স্ত্রীকে নিয়ে শাওয়ারে যায়। নিলয়ের জানা হলনা পরবর্তী টার্গেট কনক হাসানের কপালে কি আছে! ফোন সুইচড অফ হয়ে প্যান্টের পকেটেই পড়ে রইল!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here