ভালোবাসি তোকে ❤ #লেখিকা: অনিমা কোতয়াল #স্পেশাল পার্ট 💞 .

#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#স্পেশাল পার্ট 💞
.
নতুন পরিবেশ সর্বদাই অন্যরকম হয়। অন্যরকম অনুভূতিটা হয় ভালো কিংবা খারাপ, সেটা ডিপেন্ড করে। আর জেনেভার এই রৌদ্রজ্জ্বল তার সাথে তার শীতল হালকা হাওয়া দুটোর মিশ্রণের এই ঝলমলে সকালটা সত্যিই মন কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশাল একটা ব্যালকনি আর এত উঁচু থেকে ঝকঝকে জেনেভা শহরটা দেখতে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন রং এর বিল্ডিং, সমতল সুন্দর রাস্তা, তারসাথে সকালের মৃদু আলো। সবমিলিয়ে দারুণ পরিবেশ।
অাজ সকালে আদ্রিয়ানের ডাকেই ঘুম থেকে উঠেছি। আমি। নিজে আগে উঠে একেবারে কফি ওর্ডার করে আমায় ডেকেছে। ফ্রেশ হয়ে এসে ফোন করে ইফাজ ভাইয়া আর আপির সাথে দুজনে কিছুক্ষণ কথা বলে এরপর দুজনেই ব্যালকনিতে চলে গেলাম। ধোয়া ওটা গরম কফির মগে চুমুক দিতে দিতে এই পরিবেশটা উপভোগ করছি। নিরবতা ভেঙ্গে আদ্রিয়ান বলল,

— ” কফি খেয়ে শাওয়ার নিয়ে একেবারে রেডি হয়ে নাও। একেবারে ব্রেকফাস্ট করে বেড়োবো আমরা।”

— ” কোথায় যাবো আজ?”

— ” যাওয়ার জায়গার অভাব নেই। খেতে খেতে ভাইয়া আর বউমনির সাথে আলাপ করে নেবো।”

— ” আচ্ছা।”

হঠাৎই ও আমার হাত ধরে একেবারে নিজের কাছে নিয়ে গেল। আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে? ও আমার চুলগুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে নিজের গালে আঙ্গুলের ইশারা করে বলল,

— ” একটা কিস?”

আমি একটু হকচকিয়ে গিয়ে কথাটা ইগনোর করে বললাম,

— ” লেট হয়ে যাচ্ছে শাওয়ারে যাবো। ছাড়ো।”

— ” প্লিজ।”

— ” সকাল সকাল কী শুরু করলে বলোতো? দেরী হয়ে যাচ্ছে, ছাড়োতো।”

ও এবার একটু অনুনয়ের সুরে বলল,

— ” আচ্ছা দেন আমিই করছি..”

বলে এগোতে নিলেই আমি হাত দিয়ে আটকে দিয়ে হতাশ কন্ঠে বললাম,

— ” আদ্রিয়ান..”

আদ্রিয়ান এবার মুখটা গম্ভীর করে ফেলল। আমাকে ছেড়ে দিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে রইল। আমি বুঝলাম যে বাবুসাহেব খুব রাগ করেছেন। কিন্তু হানিমুনে এসে আর যাই হোক ওর মন খারাপের কারণ হতে পারবোনা। তাই গিয়ে ওর হাত ধরে নিজের দিকে ঘোরালাম আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে বলল,

— ” যাও ফ্রেশ হয়ে যাবে লেট হয়ে যাচ্ছে তো।”

— ” চোখ বন্ধ করো।”

আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে রেখেই অবাক কন্ঠে বলল,

— ” কী? কেনো?”

আমি শক্ত গলায় বললাম,

— ” করবে না?”

হয়তো আমার শক্ত গলা শুনে একটু দমে গেলো। তাই বলল,

— ” করছিতো। কিন্তু কেনো?”

— ” তুমি করবে?”

— ” ওকে ফাইন। রেগে যাচ্ছো কেনো?”

বলে ও চোখ বন্ধ করে ফেলল। আমি ওর দুই কাধে হাত রেখে, হাত বলতে দুই হাতের কুনুই এর ভর ওর দুই কাধের ওপর দিয়ে দাঁড়ালাম। ও চোখ বন্ধ করে ভ্রু কুচকে আছে। আমি আমার ডান হাত ওর বা গালের ওপর রেখে পা উঁচু করে ওর ডান গালে আলতো করে একটা কিস করে দিলাম। আর একমুহূর্ত ওখানে না দাঁড়িয়ে সোজা ওয়াসরুমে চলে গেলাম। ওয়াসরুমের দরজা লক করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। অলমোস্ট অসাধ্য সাধন করে দিয়ে এসছি আমি। কীকরে কী করেছি জানিনা কিন্তু করে ফেলেছি। এখন ও কী করছে বা ওর রিঅ্যাকশন কেমন সেটা দেখার মতো সাহস এখন আমার নেই।

___________________

নিচে ব্রেকফাস্ট করতে করতে ঠিক করলাম যে আগে “লেক জেনেভা” তে যাবো। ওখানে দুপুর পর্যন্ত থাকার পর। বাইরে কোথাও লাঞ্চ করে। এসে রেস্ট করে সন্ধ্যার পর আশেপাশটা ঘুরে দেখবো। আছিতো বেশ কয়েকদিন তাই ধীরে ধীরে ঘোরাই ভালো। রুমের সেই ব্যাপারটা নিয়ে আমি বা আদ্রিয়ান কেউ আর কোনো কথা বলিনি।ব্রেকফাস্ট এর পর একটা গাড়ি বুক করে “লেক জেনেভা” এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেলাম আমরা। সারারাস্তা এই দুই ভাইয়ের টর্চার সহ্য করতে করতেই গিয়ে পৌছেছি।
লেক জেনেভা তে গিয়ে মনটাই ভালো হয়ে গেলো। ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক এটা। ওখানে বোর্ডে চরলাম, মজা করলাম, এরপর দুপুরে Le Limite রেস্টুরেন্ট থেকে লাঞ্চ করেছি। বিকেলে হোটেলেই ছিলাম। সন্ধ্যার দিকে আবার ‘পার্ক ডেস বান্টিন্স’ এ ঘুরতে গিয়েছিলাম। ডিনারের পর ওদেরকে ওখানে রেখেই আমি আর আপি হোটেলে চলে এলাম। আমি আমার রুমে যেতে নেবো তখনই আপি আমার হাত ধরে বলল,

— ” ওই রুমে যেতে হবেনা আমার রুমে চল ওখানেই সাজাচ্ছি।”

আমি অবাক কন্ঠে বললাম,

— ” কিন্তু আমার শাড়িটা আর কসমেটিকস আমার লাগেজে।”

— ” আরে আমি আমার রুমে নিয়ে এসছি চলতো।”

বলে আপি টেনে নিজের রুমে নিয়ে গেলো। গিয়ে দেখি সত্যিই লাগেজটা নিয়ে এসছে। কিন্তু আপির রুমটাও সুন্দর করে ডেকোরেট করা। আমি ভ্রু নাচিয়ে বললাম,

— ” কী ব্যাপার? তলে তলে এসব চলছে?”

আমি একটু লজ্জামাখা কন্ঠে বলল,

— ” বাহ রে শুধু তুই তোর বরকে সারপ্রাইজ দিবি? আমিও আমার বরকে তো একটু দিতেই পারি তাইনা?”

আমি হাসলাম। আর কথা না বাড়িয়ে লাগেজের ভেতর থেকে আমার একটা প্যাকেট বেড় করলাম। ওটার মধ্য থেকে নেভি রং এর সিলভার হোয়াইট স্টোনের পার দেওয়া সেই শাড়িটা বেড় করলাম যেটা ও আমাকে সিক্স মান্হ এনিভার্সিরিতে দিতে চেয়েছিল কিন্তু দিতে পারেনি ঐ দুর্ঘটনার জন্যে। পরে একদিন আমার হাতে শাড়িটা দিয়ে বলেছিল “যেদিন তোমার মন থেকে ইচ্ছে হবে সেদিন শাড়িটা পরে আমার সামনে এসো”। ‘ইচ্ছে হবে ‘ বলতে ও আসলে কী বুঝিয়েছে সেটাও বুঝতে পেরেছিলাম। আপির ডাকে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলাম। আপি আমাকে শাড়িটা সুন্দর করে পড়িয়ে দিলো। এরপর সিলভার হোয়াইট স্টোনের মোটামুটি বড় সাইজের ইয়ারিং, ডান হাতে নেভি ব্লু আর সিলভার হোয়াইট এর কম্বিনেশনের কাচের চুড়ি, ঠোঁটে নুড কালার লিপস্টিক, একটু কাজল আর একেবারে সামান্য মেকাপ দিয়ে সাজিয়ে দিলো। গলাতে আদ্রিয়ানের দেওয়া লকেট তো আছেই যেটা শাওয়ার টাইম ছাড়া আমি আজও খুলিনি। রেডি হয়ে আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিলাম। আপি আমার পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,

— ” অনেক হয়েছে। খুব সুন্দর লাগছে এবার চল,ওরা চলে আসবে।”

আপির রুম থেকে দুজনে একসাথে ছাদে এসে দেখি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়ে গেছে। ছাদ বলতে আমরা যেই ফ্লোরে আছি সেই ফ্লোরের করিডরের লাস্টে জয়েন একটা স্পেস আছে। সেটাকে ছাদও বলা চলে। ছাদটা মোটামুটি বড়ই। আর ওই করেডরেই একদম লাস্টে মানে ঐ ছাদের সাইডেই আমাদের রুমটা। ইফাজ ভাইয়াই হোটেলের লোকেদের সাথে কথা বলে এইসব এরেঞ্জ করিয়েছে। ওনারাও খুব আন্তরিক। সব রকমের সাহায্যই করেছে। আর সেটা সাজানো দেখে আমি আরও ভালোভাবে বুঝে গেলাম। আমি হা করে দেখছি সবটা। আদ্রিয়ানকে সারপ্রাইজ দেবো ভেবেছিলাম কিন্তু নিজেই অবাক হয়ে গেছি এতো সুন্দর ডেকোরেশন দেখে। সত্যিই অনেক সুন্দর। চারপাশে বিভিন্ন রং এর ডিজাইনার ক্যান্ডেল দিয়ে ফ্লোর সাজানো, বিভিন্ন কৃতিম ফুল লতা টাইম জিনিস দিয়ে চারপাশ সাজানো, তার ওপর লাইটিং করা, লাইটের আলো গুলো এতোই সফট যে দেখেই চোখ জুরিয়ে যাচ্ছে। ওখানেরই একজন ম্যাম বলল,

— ” হ্যালো ম্যাম। হ্যাভ আ লুক। হাউ ইস ইট?”

আমি অবাক দৃষ্টিতেই চারপাশটা দেখতে দেখতে বললাম,

— ” এক্সিলেন্ট। আই.. আই জাস্ট কান্ট এক্সপ্রেস। থ্যাংকস, থ্যাংকস আ লট।”

— ” ইউ আর ওয়েলকাম ম্যাম। ইনজয় ইউর টাইম। ওল দা বেস্ট।”

বলে ওরা চলে গেলো আপির আমায় জড়িয়ে ধরে অল দা বেস্ট বলে চলে গেলো। আমি এবার প্লান অনুযায়ী আদ্রিয়ানকে মেসেজ করে দিলাম এখানে আসার জন্যে। আর সবটা চেক করে নিলাম। হঠাৎ ই ওর আসার আওয়াজ পেয়ে লুকিয়ে পরলাম আর লাইট অফ করে দিলাম। ও এসে সবটা অন্ধকার দেখতে পেয়ে অস্হির হয়ে আমাকে ডাকতে শুরু করল। আমার খুব হাসি পাচ্ছে। এই ছেলেটাও না আমায় নিয়ে সবসময় একটু বেশিই চিন্তা করে। ওকে আর টেনশনে না রেখে লাইটস গুলো অন করে দিলাম। লাইট জলতেই চারপাশে তাকিয়ে অবাক হয়েছে তা ওর চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ও অবাক দৃষ্টিতে চারপাশে চোখ বোলাচ্ছে আর এগোচ্ছে। আমি ধীর পায়ে ওর কাছে গিয়ে পেছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ও কিছুক্ষণ থম মেরে ছিল। এরপর অবাক কন্ঠে বলল,

— “এসব কী অনি?”

আমি ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেই বললাম,

— ” সারপ্রাইজ।”

— ” সারপ্রাইজ?”

— ” হুম। কেন? সারপ্রাইজ কী শুধু তুমিই দিতে পারো নাকি? আমি পারিনা?”

ও আমাকে ছাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ কিন্তু হঠাৎ এভাবে..”

কিন্তু আর কিছু বলতে পারলোনা। চরম অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এই শাড়িটা যে আমি পরবো আজ হয়তো ও ভাবতেও পারেনি। আমার আগা করে একবার স্কান করে অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে যাচ্ছে আমাকেভ আমার খুব হাসি পাচ্ছে এখন ওর এইরকম মুখ দেখে। বেচারা যে খুব চমকেছে সেটা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি। ওর হাত ধরে ওকে মাঝে রাখা টেবিলটার কাছে নিয়ে গেলাম। ও টেবিলের দিকে তাকালো ওখানে সফট ড্রিংকস আছে। ও আমার দিকে তাকাতেই আমি ভ্রু নাচিয়ে বললাম,

— ” এবার বলুন কেমন হয়েছে সব? আমিও কিন্তু কম নই হ্যাঁ?”

আদ্রিয়ান এতোক্ষণ অবাক হয়ে সবটা দেখলেও এবার হাসি ফুটে উঠলো ওর মুখে আমার হাতে টান দিয়ে নিজের কাছে এনে বলল,

— ” তা হঠাৎ আজ এতোকিছু তাও আমার জন্যে? সবসময় তো তোমাকে স্পেশাল ফিল আমিই করিয়েছি। আজ হঠাৎ তোমার ইচ্ছে হলো? কী ব্যাপার?”

— ” তোমাকে হাইজ্যাক করার প্লানে করেছি।”

ও আমার কপালে কপাল লাগিয়ে বলল,

— ” আমিতো পুরাটা তোমারই। যেটা তোমার সেটা হাইজ্যাক করার কী আছে?”

আমি কিছু বললাম না শুধু একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। ও আমার গালে আলতো করে নিজের ঠোট ছুঁয়ে দিলো। আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ও আমার কানের কাছে মুখ এনে ধীর কন্ঠে বলল,

— ” এভাবে আমার সামনে আসাটা কী তোমার উচিত হলো? তুমি জানো তোমাকে আজ ঠিক কতোটা সুন্দর লাগছে? এখন যদি আমার দ্বারা কোনো ভুল হয়ে যায়। তখন?”

আমি কিছু বলতে পারছিনা ওর স্পর্শ আর এই ধীর কন্ঠে আমার হার্ট খুব জোরে জোরে বিট করছে নিশ্বাস ক্রমশ ভারী হয়ে উঠছে। ও আমার গলার পাশের চুলগুলো সরিয়ে একটা কিস করতেই আমি ওকে ছাড়িয়ে একটু দূরে সরে দাঁড়ালাম। বেশ কিছুক্ষণ সময় পর উনি আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাধে মুখ গুজে দিয়ে অস্ফুট স্বরে বলল,

— ” সবসময় আমাকে পাগল করে দিয়ে পরে নিজেই পালিয়ে আসো এটাকি ঠিক?”

আমার কী হলো জানিনা। হঠাৎ করেই আমি সেই ভয়ংকর কথাটা বলেই ফেললাম। নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়েই, নিজের সমস্ত আবেগ একত্রিত করে বললাম,

— ” ভালোবাসি তোমাকে।”

আমার মনে হলো আদ্রিয়ান কেঁপে উঠলো, হয়তো এই মুহূর্তে এই শব্দটা আমার কাছ থেকে আশা করেনি ওও। কিন্তু আচমকা শুনে ফেলে সেটাকে নেওয়ার জন্যে ওর শরীর মন দুটোই হয়তো প্রস্তুত হচ্ছে। ও আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বলল,

— ” আমি যেটা শুনেছি যেটা তুমি কী সেটা বলেছো?”

আমি জোরে জোরে দুটো নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে শক্ত রেখে বললাম,

— ” আই লাভ ইউ।”

ও অবাক দৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে আমার দুকাধে হাত রেখে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতেই তাকিয়ে রইল। আমি টেবিলের নিচের বক্সটা লাল গোলাপ ফুলের থেকে ফুলের একটা তোরা বেড় করে ওর সামনে সোজা বসে পরে ওর দিকে তাকিয়ে তোরাটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,

— ” জানি এভাবে সবাই বলে। আমিও বললাম। আমিতো আর তোমার মতো আলাদা বা অসাধারণ নই। খুবই সাধারণ। তাই আমার সবকিছুই সাধারণ। হুম ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি। কিন্তু সব দোষ তোমারই। তুমিই বাধ্য করেছো আমাকে তোমায় ভালোবাসতে। তুমি মানুষটাই এমন যে তোমাকে না ভালোবেসে থাকাই যায়না। দেখো তোমার ভালোবাসার পাগলামো আমাকেও পাগল করে তবে ছেড়েছে। তাইতো এসব পাগলামো করতে পারছি। নিজের সব ভালোবাসাতো আমায় দিয়ে দিয়েছো আমার ভালোবাসাটা গ্রহন করবে?”

ও কিছুক্ষণ স্তব্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে। এরপর আমার সামনে বসে পরে সাথে সাথেই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,

— ” তোমার সবকিছু। তো আমারই। আই লাভ ইউ। আই লাভ ইউ সো মাচ।”

— ” লাভ ইউ টু।”

বলে আমিও ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। কতক্ষণ জড়িয়ে ধরে ছিলাম আমরা নিজেরাই জানিনা। কিছুক্ষণ পর ও আমাকে ছেড়ে আমার কপালে কপাল লাগিয়ে বলল,

— ” জানো আজ কতোটা খুশি আমি?”

আমি ওর কাধে হাত রেখে বললাম,

— ” হুমম জানি। কারণ আমিও ঠিক ততটাই খুশি।”

কিছুক্ষণ দূজনেই চুপ ছিলাম কারণ বলার মত কিছুই ছিলোনা। শুধু একটু পর পর ওর ভালোবাসা স্পর্শে কেঁপে উঠছিলাম আমি। কিছুক্ষণ পর ও বলল,

— ” ড্রিংকস ঠান্ডা থাকবেনা চলো?”

আমি মাথা নাড়লাম। এরপর দুজনেই গোল সাজানো টেবিলে একে ওপরের ওপজিটে বসলাম। আমি একটু চুপ থেকে বললাম,

— ” তোমার জন্যে আরে জিনিস আছে।”

— ” সেটা কী?”

আমি আবার সেই বক্স থেকে কালো ঘড়িটা বেড় করে ওর হাত ধরে সামনে এনে ওর হাতে পরিয়ে দিলাম। ও অবাক হয়ে বলল,

— ” এটা মনে আছে তোমার?”

— ” এগুলো সিক্স মান্হেই করবো ভেবেছিলাম।কিন্তু.. মাঝখানে হারিয়ে ফেলেছিলাম। অনেক খুজে পেয়েছি ঘড়িটা।”

ও টেবিলে রাখা কার্ডটা খুলতে গেলেই আমি বাঁধা দিয়ে বললাম,

— ” উমহুম এখন না। এটা তখনই খুলবে যখন আমি তোমার কাছে থাকবোনা।”

ও ভ্রু কুচকে তাকাতেই আমি বললাম,

— ” আই মিন যখন তুমি একা থাকবে।”

ও কিছু না বলে বোতল থেকে ড্রিংকস দুটো গ্লাসে ঢেলে নিয়ে একটা আমার দিকে এগিয়ে দিলো। দুজনেই একটু করে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছি আর একে ওপরকে দেখছি। আর ও প্রতিবার আমার দিকে তাকিয়ে এমনভাবে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে যে আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকতেই পারছিনা। একটুপর ও হাত বাড়িয়ে গান চালিয়ে দিলো। আর সাথেসাথেই মিষ্টি সফট মিউসিক ভেসে এলো। বুঝতে পারলার ইংলিশ গান কারণ এখানে বাংলা বা হিন্দি এভেলএবেল না হওয়াই স্বাভাবিক। ও আমার দিকে হাত বাড়িয়ে আমি ঠোঁটে হাসি রেখেই ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থাকার পর। হাত ধরলাম ওর। ও আমার হাত ধরে মুচকি হেসে নিজের কাছে নিয়ে এলো। বা হাত কোমরে আর ডান হাত আমার বা হাতের আঙ্গুলের মধ্যে নিয়ে হাত মিলিয়ে নিলো। এরপর একদম কাছে টেনে গালে একটা কিস করল। পাশে গান বাজছে,

This magic moment
So different and so new
Was like any other
Until I kissed you
And then it happened
It took me by surprise
I knew that you felt it too
By the look in your eyes
Sweeter than wine
Softer than the summer night
Everything I want, I have
Whenever I hold you tight
This magic moment
While your lips are close to mine
Will last forever
Forever till the end of time
Whoa-oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh

গানের তালে মৃদু মুভ করে করে ডান্স করছি। কিন্তু আমার চোখ বন্ধ কারণ ওর মুভ গুলোতে আমার এতো কাছে চলে আসছে যে আমি ওর দিকে তাকাতে পারছিনা। কিন্তু এটা জানি ওর দৃষ্টি আমার দিকেই। এই দেখার জেনো কখনো শেষ হবেনা।

Sweeter than wine
Softer than a summer night
Everything I want, I have
Whenever I hold you tight
This magic moment
While your lips are close to mine
Will last forever
Forever till the end of time
Whoa-oh-oh-oh-oh
Whoa-oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh

Oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh-oh
Oh-oh-oh-oh

Magic, oh-oh-oh
Magic, oh-oh-oh
Magic, oh-oh-oh

গান শেষ হওয়ার পরেও কিছুক্ষণ ওখানে ওভাবেই দাঁড়িয়ে ছিলাম আমরা। কিছুক্ষণ পর আদ্রিয়ান বলল,

— ” রাত হয়েছেতো অনেক, রুমে যাবেনা?”

আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। ও আমায় কোলে করে সোজা রুমে নিয়ে গেলো। রুমে গিয়ে ঢুকতেই ও থেমে গেল। ওকে থামতে দেখে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকিয়ে আমিও অবাক হয়ে গেলাম। কারণ গোটা রুমটাই সাজানো ক্যান্ডেল দিয়ে আর বেডও ফুল দিয়ে। এটাতো আমি করিনি, তারমানে আপি করেছে? ও আমায় নামিয়ে বলল,

— ” তুমি এত এডভান্স কবে হলে?”

— ” আমি কিছু জানিনা নিশ্চয়ই আপি করেছে।”

আদ্রিয়ান কিছু না বলে চারপাশটা দেখতে লাগল। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ও মাতাল কন্ঠে বলল,

— ” জানপাখি।”

ওর এমন ডাকে কেঁপে উঠলাম আমি। ও ধীর পায়ে আমার কাছে এসে আমার কনের কাছে ফিসফিসে গলায় বলল,

— ” আজ তুমি আমায় এত কিছু দিলে। আমিও তোমাকে কিছু দিতে চাই। আমার ভালোবাসা। এতোকিছুর সাথে আজ আমি তোমাকেও চাই। একদম নিজের করে। মে আই?”

আমি কিছু না বলে ওর বুকে মুখ গুজে দিলাম। লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছি আমি। এর উত্তর যে মুখে দেওয়া সম্ভব নয় আমার পক্ষে। কিন্তু আমি জানি ও আমার মনের ভাষা ঠিক পরে নেবে। ও আবারও একি ভঙ্গিতে বলল,

— ” আমার ভালোবাসার রঙে আজ তোমাকে সম্পূর্ণ রাঙিয়ে দেবো। তোমার সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে আজকের পর আমি থাকবো শুধুই আমি।”

আদ্রিয়ান আমার ডান কানের দুলটা আস্তে করে খুলে নিয়ে আলতো করে কিস করল। আমি আরও শক্ত করে ধরলাম ওকে। একিভাবে ডানকানের দুলটাও খুলল। এরপর আমার হাতের চুড়িগুলো যত্নসহকারে খুলে রেখে কোলে তুলে নিলো আমাকে। এরপর ধীরপায়ে ফুলে সজ্জিত বেডের দিকে এগিয়ে গেলো। তারসাথে এলো বহু কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ভালোবাসা পূর্ণতা পেলো। যার সাক্ষী হয়তো এই প্রকৃতিও।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here