#অচেনা_তুমি
#লেখিকাঃমহিমা_হাছনাত_মাহি
#পর্বঃ২১
চিন্তার ভারে শুভ্রা খেতেও বসে নি। সেই সন্ধ্যা থেকে শুভ্রা এতো হাসফাস করছে। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় বাড়ির কারোরই এই ব্যাপারে কোনো রকম হেলদুল নেই। সবাই স্বাভাবিক হয়েই আছে।
প্রায় ১২ টা বাজতে চললো। বড়রা সকলেই ঘুমুতে চলে গিয়েছে ইতিমধ্যে। ড্রইংরুমে শুভ্রা একা একা বসে আছে। তখন ই নাদিম আর কুবরা এসে হাজির হয় শুভ্রার কাছে।
কুবরাঃ আপুউউউ চল না ভালো লাগছে না একটু বাইরে যাই না।
শুভ্রাঃ আমার ইচ্ছে করছে না তুই যা।
কুবরাঃ না না আমার একা ভয় করে। দেখ ঘুম ও আসছে না আজকে।
শুভ্রাঃ বললাম তো ইচ্ছে করছে না। আর নাদিম ভাইয়া আছে তো। এমনি তে তো সারাদিন উনার পেছনে লেগে থাকিস।
নাদিমঃ শুভাপু আমার ও ভালো লাগছে না। তোমারও ভালো লাগছে আর কুবরার ও ভালো লাগছে না। আর আমার মনে হয় না সাদাদ ও আজকে আসবে বলে। চলো একটা লং ড্রাইভ দিয়ে আসি। মাইন্ড ফ্রেশ হবে।
শুভ্রাঃ উনি আসবে না বলেছেন আপনাকে??
নাদিমঃ না তা বলে নি তবে রাত তো অনেক হয়েছে। এর আগেও কাজ থাকলে আমরা বাইরেই থাকতাম। তবে আজ আমি নেই তাই বলছি। যান একা একা তো সারাদিন বসেই রইলেন। যান রেডি হয়ে নিন।
এর পরেও শুভ্রা যেতে নারাজ। তবু নাদিম আর কুবরা জোর করে রেডি হতে পাঠিয়ে দেয়। শুভ্রা কয়েক মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে চলে আসে।
রাত প্রাই সাড়ে ১২ টা। ঢাকা শহরে গাড়ির যানযট এখনো রাস্তায় লেগে আছে। নাদিম ড্রাইভ করছে পাশে কুবরা আর পেছনে শুভ্রা বসে আছে। জানালার বাইরে মুখ বের করে দিয়ে শুভ্রা ব্যস্ত নগরী দেখতে ব্যস্ত। কিচ্ছু ভালো লাগছে না তার। সাদাফের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে খুব কম সময় ই বাইরে যেতো। যথাসম্ভব সবসময় শুভ্রার সাথে টাইম কাটাতে পছন্দ করতো। আজ হয়তো এই প্রথম সাদাফ আর তার এতোক্ষন দেখা হয় নি। তা নাহলে ঠিক ছিলো। কিন্তু ফোন কেন রিসিভ করছে না। এতোটা ব্যস্ততা কিসের?
ভাবতে ভাবতে নাদিম গাড়িটাকে একটা সুনসান নিরব খোলা জায়গায় নিয়ে গেল। আশেপাশে সবকিছু নিরব, নিস্তেজ। গাড়ি থেকে নামতেই একটা ধমকা হাওয়া সারা শরীর শিহরিত করে বয়ে নিয়ে যায়। বাতাসের ঘ্রান ও কতো সুন্দর পরিষ্কার। যেমটা বৃষ্টি আসার আগ মূহুর্তে আশেপাশের পরিবেশটা কেমন রোমেন্টিক ওয়েদার এ আবৃত হয় ঠিক তেমনি।
নাদিমঃ বুঝলে শুভ্রাপু। জায়গাটা দিনের বেলায় খুব সুন্দর। তবে সৌন্দর্য উপভোগ করতে দিনের বেলায় ও অনেক মানুষের ভিড় হয় এখানে। তাই তোমাদের রাতের বেলায় নিয়ে এলাম।
এমন পরিবেশ, এবং আবহাওয়ায় শুভ্রার মন টা একটু হালকা লাগছে। হাটতে হাটতে আপন মনে উপভোগ্য করতে থাকে শুভ্রা। কিছুদূর যেতেই শুভ্রার মনে হলো পেছন থেকে আর কারো হাটার আওয়াজ আসছে না। মেঘালো ঘন কালো রাতে আবছা আলোতে পেছনে ফিরে নাদিম আর কুবরাকে ডাকলেও কেউ আর সারা দেয় না।
অন্ধকারে হাতরাঁড়াতে হাতরাঁড়াতে একটু দূরে সে আলোর সন্ধান খুজে পেলো। কিছু দূর থেকে বেশ কিছু মোমবাতির আলো আসছে। শুভ্রা দৌড়ে গিয়ে সেদিকে যায়।
জায়গাটিতে পৌছে দেখে ছোট ছোট কালারিং ক্যান্ডেল দিয়ে ” SOORY” লিখা।
ক্যান্ডেল দিয়েও যে এতো সুন্দর এক হ্রদয় জুড়ানো ব্যবস্থা করা যায় তা সিনেমা ছাড়া বাস্তবে না দেখলে হয়তো বিশ্বাসই হতো না। আরো কিছু দূর এগিয়ে যেতেই শুভ্রার মাথার উপর শুরু হয় হরেক রকমের ফুলের পাপড়ির ছড়াছড়ি। এ যেন সাক্ষাৎ সিনেমার শুটিং। হঠাৎ করেই কেউ যেন আলতো করে শুভ্রার চোখ দুটি চেপে ধরে। ভিরে শুভ্রার পরান পানি শুকিয়ে যাবার অবস্থা। নড়াচড়া করতে গেলেই কানের একদম কাছ থেকে আওয়াজ আসে “হুসসসসস……..”। (মানে চুপচাপ থাকা)
এই আওয়াজ তার চেনা, এই গন্ধ তার চেনা, এই মধুময় কন্ঠ ও তার চেনা। ভাবতেই মুখের মধ্যে এক তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে শুভ্রার। তারপর তাকে চোখ বন্ধ অবস্থাতেই আরও কিছুদূর সামনে নিয়ে গিয়ে শুভ্রার চোখ দুটি আলতো করে খুলে দেয়। শুভ্রা আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে সামনে আবারও ক্যান্ডেল দিয়ে সাজিয়ে ” Happy Birthday My Shuvi ” লেখা। তারপর সামনে কতো সুন্দর বেলুন দিয়ে হ্যাপি বার্থডে লিখে ডেকুরেশন। তার সামনে একটা সুন্দর চকলেট কেক।
শুভ্রার তো খুশিতে চোখ চিকচিক করছে। পেছনে থাকা লোকটি শুভ্রার কোমড়ে বাহু দুটি দিয়ে জড়িয়ে ধরে শুভ্রার কাধে তার থুতনি রেখে ঘোরমাতাল কন্ঠে বললো
“সরি সরি সরি আম রেলি সরি। আর কক্ষনো এমন কথা বলবো না শুভি। জীবনেও না। প্লিজ ফরগিভ মে। প্লিজ শুভি আর রাগ করে থেকো না। আর আমার পরীটা…… শুভ জন্মদিন (কানের আরও পাশে) আমার শুভি পাখিটার আজ এক্কেবারে বিয়ের পরিপূর্ণ বয়সটা হলো শেষমেশ।
সাদাফের প্রতিটি কথায় শুভ্রার সারা শরীরে শিহরণ জাগাচ্ছে। ঠোঁট, হাত, পা তো রীতিমতো কাপাকাপি শুরু করছে। সাদাফের এতো কাছে আসা, এই ঘোরময় নেশাক্ত কন্ঠে কথা বলা, এভাবে অনুনয় বিনয় করা শুভ্রাকে আরও শীতল করে তুলছে। আবেগ, অনুভব, অনুভুতিতে শুভ্রার মুখ থেকে কথাও বের হচ্ছে না। আরে শুভ্রার তো তখনই রাগ গলে পানি হয়ে গিয়েছিলো যখন সাদাফ বাগানে কানে ধরে উঠবস করেছিলো। আর সত্যিই বলতে সারাদিন সাদাফের টেনশনে শুভ্রার আজকে কি বার ঠিক মনে নেই জন্মদিন কি করে মনে থাকবে৷ আর এসবের খেয়াল আজ সারাদিন তার মাথায় ও আসে নি৷
শুভ্রাকে চুপচাপ থাকতে দেখে সাদাফ এবার শুভ্রাকে ঘুরিয়ে দাড় করে। শুভ্রাকে ঘুরানোর সাথে সাথেই দেখে শুভ্রা কাদছে৷
সাদাফঃ এই শুভি কাদছো কেন? কি হয়েছে?
শুভ্রা কেদেই চলেছে। তার আবার সাদাফ ডেকে উঠে।
সাদাফঃ শুভি……… কি হয়েছে কাদছো কেন??
শুভ্রাঃ আপনি খুব পচা, খুব খারাপ৷ সারাদিন এতোগুলো ফোন দিয়েছি। একটা বার ও কি রিসিভ করা যেতো না?? আমি কি আপনার সাথে রাগ করেছি নাকি? সারাদিন কোন খবর নেই , কথা নেই, আমার কি টেনশন হয় না?? ( নাক টেনে টেনে কাদতে কাদতে) ৷
সাদাফঃ পাগলি তোমার যেমন কথা না বলে কষ্ট হয়েছে আমারও তো কষ্ট হয়েছে। এভাবে কি এর আগে কথা না বলে কি থেকেছি আমরা??
শুভ্রাঃ তাহলে ফোন ধরেন নি কেন? বাসায় যান নি কেন??
সাদাফঃ পাগলি মেয়ে বাসায় থাকলে কি আর তোমার জন্য এই সারপ্রাইজ প্ল্যান করতে পারতাম?
শুভ্রাঃ না পারলে নেই। এসবের কোনো দরকার তো ছিলো না।
সাদাফঃ কেন?? তোমার পছন্দ হয় নি??
শুভ্রাঃ হয়েছে। খুব হয়েছে। তবে আপনার চেয়ে স্পেশাল আমার কাছে আর কিছু নেই। আপনি থাকলে আমার আর কিচ্ছু লাগে না আর লাগবেও না।
সাদাফঃ এতটা ভালোবাসো আমায়??
শুভ্রা কিছু না বলে মাথা নিচু করে এখনো কাদছে। সাদাফ তারপর শুভ্রাকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে। এখনো শুভ্রা সাদাফের বুকেই মাথা রেখে কাদতে থাকে।
অন্যদিকে বেশ কিছুটা দূরে নাদিম আর কুবরা দাড়িয়ে আছে। কুবরা তো শুধু উকি দিচ্ছে ওখানে কি হচ্ছে দেখান জন্য। কিছু শুনতে না পেলেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। একবার তাকাচ্ছে তো আরেকবার ঘুরে অন্যদিকে তাকাচ্ছে।
নাদিমঃ এ তোমার লজ্জা করে না নিজের বোনের রোমান্টিক মোমেন্ট দেখতে??
কুবরাঃ মি পচা বাদাম,,,,,, আমি তো কিচ্ছু দেখছি না। আর ওরা কি ওপেনলি রোমাঞ্চ করছে নাকি যে আমার দেখতে লজ্জা লাগতো।
নাদিমঃ ওফফফ তুমিও না!! ওরা দেখে ফেললে কতোটা হেজিটেড ফিল করবে জানো??
কুবরাঃ এহহহহ যেন একদম এক্সপেরিয়েন্সড মহাপুরুষ। অবশ্য হবেন নাই বা কেন? ভায়া তো নিজেই বলেছে আপনি একটা প্লে বয়। ( ভেঙিয়ে)
নাদিমঃ এইইই একদম ফাউল কথা বলবে না। তুমি তো কোনো দিন প্রেম এর প ও করে উঠো নি এখনো? নিজে ব্যর্থ আবার অন্যকে তাচ্ছিল্য করে। আর তুমার সাথে করবেই বা কে? যার সাথে প্রেম কিংবা বিয়ে হবে তার জীবন টাই তো ত্যানা ত্যানা করে দিবে।
কুবরাঃ কিইইইই এত্তো বড় অপমান। আজকে আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই বলে এভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন? আমি যদি এখনিই বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে না দেখাই তাহলে আমার নাম ও কুবরা নই । ( ফুসতে ফুসতে চলে যায়)
নাদিমঃ মিস কুবরা আপনি অন্ধকারে কোথায় যাচ্ছেন। কাল সকাল থেকে খুজিয়েন নাহলে।
নাদিমের বলতে দেরি কিন্তু কুবরার চলে যেতে নই। চোখের পলকেই হারিয়ে যায় কুবরা।
এদিকে কুবরার কথার মাঝখানে এটাই মনে নেই যে এখন রাত। বয়ফ্রেন্ড বানানোর জন্য মানুষ তো দূরের কথা একটা পোকার ডাক ও কানে আসছে না। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কুবরা কোন রাস্তা দিয়ে এসেছে সেটারও হুদিশ পাচ্ছে না৷
এদিকে নাদিম ও তাকে পাগলের মতো খুজছে। এই অন্ধকারে হারিয়ে গেলে হবে এক কেলেঙ্কারি। খুজতে খুজতে নাদিম আবছা আবছা দেখতে পেলো কুবরা অন্ধকারে হাতরাঁড়াচ্ছে। কুবরার এমন অবস্থা দেখে নাদিমের মাথায় এক দুষ্ট বুদ্ধি এলো। পকেট থেকে মোবাইল টা বের করে একটা হরর টুন বাজিয়ে দিলো।
হঠাৎ করে কানে এক অদ্ভুত আওয়াজ আশায় কুবরা চারদিকে পাগলের মতো এদিক ওদিক করতে লাগলো। একপর্যায়ে এক ভৌতিক চিতকার শুনে কুবরা নিজেই একটা চিতকার দিয়ে উঠলো। ভুত ভুত ভুত বলে উল্টো দিকে দৌড়াতে শুরু করলো।
নাদিম তো এখন মজার বদলে আরও ফেসে গেলো। মুবাইল অফ করে সে ও কুবরার পেছন পেছন দৌড়াতে শুরু করলো। পেছন থেকে কারো দৌড়ানোর আওয়াজ শুনে কুবরা আরও বেগ বাড়িয়ে চলতে শুরু করে৷ কাদতে কাদতে কুবরার প্রান যায় যায় অবস্থা৷ নাদিন এবার কুবরাকে ডাক দেয়।
নাদিমের ডাক শুনেই কুবরা থেমে যায়। মনে আবারও ওই হাতিরঝিলে হারিয়ে যাওয়ার মতো ভরসা পায়৷ নাদিম আবারও ডাক দিলে পেছবে ফিরে দেখে এক ছায়া মানব কোমরে হাত দিয়ে হাপাচ্ছে। আবার নাদিমের গলা ভেসে আসে “মিস কুবরা দাড়ান “।
কুবরা এবার শিউর যে এটাই নাদিম৷ কাদতে কাদতে দৌড়ে গিয়ে নাদিমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কুবরা।
কুবরাঃ মিস্টার বাদাম,, ভুত ভুত ভুত………।
নাদিমঃ ভুত?? কোথায় ভুত?? কোথায় ¿?
কুবরাঃ আমি জানি না ভুত ডাকছে। আমার ভিষণ ভয় করছে৷ প্লিজ হেল্প মি।
নাদিমঃ আরে দেখো এখনো আমি ছাড়া আর কোনো ভুত নেই?? ( মিটিমিটি হেসে)
কুবরা এবার নাদিমকে এক ঝটকায় দূরে ঠেলে আবারও ভুত ভুত বলে কাদতে শুরু করে।
নাদিমঃ আরে আরে সরি মজা করছিলাম।
কুবরাঃ এই আপনি ভুত আপনি মোটেও নাদিম হতে পারেন না। আপনি নিজেই এ কথা বলেছে।
নাদিমঃ আরে কুবরা শান্ত হও। এসব আমি মজা করেছি । দেখো ওই হরর সাওন্ড টা আমিই দিয়েছে। এই দেখো মোবাইলে।
এই বলে সাউন্ড অন করতেই কুবরা চিল্লিয়ে দেয় আরেক কান্না।
কুবরাঃ এএএএএএ আপনি কত্তো পচা। আয়ায়ায়ায়ায়া আমার কত্তো ভয় করেছে আপনার ধারনা ও আছে??? ( বাচ্চাদের মতো কেদে কেদে)
নাদিম এবার কুবরার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেঃ ভয় নেই। ভয় দেখালে এক মাত্র আমিই দেখাতে পারি। আমি ছাড়া তোমায় কেউই ভয় দেখাতে পারবে না।
কুবরা এবার আরো শক্ত করে নাদিম কে জড়িয়ে ধরে।
কুবরাঃ আয়ায়ায়া আপনি খুব খারাপ, খুব খুব খুব খারাপ। ভিষণ খারাপ মানুষ আপনি। আপনার কপালে জিবনেও বউ জুটবে না দেখে নিয়েন। আরেকটা বউ কে যেখানে আপনি সবসময় চেতাতে থাকেন। আমার ফিউচার হাজবেন্ড আপনাকে খুব মারা মারবে এই আমি বলে দিলুম। আপনার তো কপালে জিবনেও বউয়ের…. এসব বলতে বলতে কুবরা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।
নাদিম কুবরার আর কোনো সারাশব্দ না পেয়ে কুবরাকে ডাকতে থাকে। তারপরও কুবরা কোনো রেস্পন্স নেই। নাদিম বুঝতে পেরেছে তীব্র ভয় এর কারনে হয়তো কুবরা সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি মোবাইলের ফ্ল্যাশ অন করে কুবরাকে কোলে তোলে নিয়ে গাড়ির দিকে এগোয় সে।
➡️➡️➡️➡️
এই শুভি আর কতোক্ষন কাদবে? সরি বললাম তো। দেখো তোমার পছন্দের চকলেট কেক এনেছি আমি। কুবরা বললো তোমার নাকি চকলেট কেক খুব পছন্দ। ( সাদাফ)
শুভ্রাঃ ওওও তার মানে এখানে ওই বান্দরনি ও শামিল আছে??
সাদাফঃ শুধু ও কেন? গোটা বাড়ি শুদ্ধ সবাইই শামিল আছে। ( চোখ টিপ দিয়ে)
শুভ্রাঃ কিইইইই…… শুধু আমি ই জানি না একমাত্র?? এই বুঝি আপনি আমায় ভালোবাসেন?? তাই বলি আপনি এতোক্ষন বাড়ি না গেলেও সবার কেন কোনো হেলদুল নেই। ধুর আপনারা কেউই আমায় মোটেও ভালোবাসেন না।
সাদাফঃ তোমায় যে আমি কতোটা ভালোবাসি শুভি তা তোমার ধারনাতীত। আর বাড়ির কথা বলছো। তা কি তুমি এতোদিনেও বুঝোনি??
শুভ্রা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
সাদাফঃ এই চলো চলো কেক কাটি। সারাদিন কিচ্ছু খাও নি আমার জন্য। চলো কেক কাটি।
শুভ্রাঃ আপনি কি করে জানলেন??
সাদাফঃ সব কথা জানাতে হয় না শুভি। বুঝেও নিতে হয়। এখন দাড়াও তো নাদিম দের ডাকি।
তারপর সাদাফ ফোন বের করে নাদিম কে কল দেয়।
নাদিম কুবরাকে কোলে করে সবে এনে রাখলো। তারমধ্যেই সাদাফের কল এলো।
সাদাফঃ কই রে তুই চলে আয় তোরা।
নাদিমঃ ধুর মিয়া পাগল নাকি তুই? তোরা তোরা পারসোনাল টাইম স্পেন্ড করছিস আবার আমরা কি করবো?
সাদাফঃ পারসোনাল টাইম শেষ। এবার কেক কাটবো। আয় চলে আয়।
নাদিমঃ আরে না না। তোরা এঞ্জয় কর। আর কাল তো সারাদিন বাকি আছে। কাল না হয় ফুল ফ্যামিলি এঞ্জয় করবো।
সাদাফঃ যাহ তা হয় নাকি? কুবরা কোথায়? ও নিশ্চয় কেক খাবে বলে বসে আছে। চলে আয়।
নাদিমঃ আরে না না মহারানি ঘুমিয়ে গিয়েছে। তেনার নাকি ভালো লাগছে না। আচ্ছা রাখ তো। আমরা চলে যাচ্ছি। তোরা ও চলে আসিস। আর টাইম নষ্ট করিস না। ভাবিরে টাইম দে।
সাদাফঃ এই শোন নাদিম,, হ্যালো?? হ্যালো???
যাহ কেটে দিলো। শুভি ওরা নাকি চলে গিয়েছে।
শুভ্রাঃ সে কি আমরা এখানে একা?
সাদাফঃ একা কোথায় আমি আছি না? ( চোখ টিপ দিয়ে)
শুভ্রাঃ কচুর লতি আছেন আপনি।
সাদাফঃ হা হা হা চলো এসো কেক কাটি।
তারপর তারা একসাথে এক কাটে, একে অপরকে খাইয়ে দেয়। তারপর সাদাফ শুভ্রার জন্য একটি গান গায়। অত:পর হেসেখেলে শুভ্রার জন্মদিনটা খুব সুন্দর একটা স্মৃতিময় একটি দিন হিসেবে গড়ে উঠে।
#চলবে।