অতঃপর প্রণয় পাঠ-১

“এই হরিণ,” ডাকটা শুনেই ইরিন প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে পেছনে তাকালো।বক্তাকে ঠাটিয়ে দুটো চড় মারার ইচ্ছে মনে মনে পোষণ করছিলো সে।কিন্তু ওর আশাতেই তৎক্ষণাৎ ছাই ঢেলে দিলো পেছনে দাঁড়ানো মানুষটা।

নাম আয়াজ রহমান।ইরিনরা যেই আটতলা এপার্টমেন্টে থাকে তার সপ্তম তলায় ইরিনদের পাশের ফ্ল্যাটটা আয়াজদের।সেই হিসেবে আয়াজ ওদের প্রতিবেশি।ইরিনের পিএসসি পরীক্ষার পর ওর বাবা ওদের ফ্ল্যাটটা কিস্তিতে কেনেন।তার একবছর পরেই আয়াজের বাবা ডাঃ হেলাল রহমান ওদের পাশের ফ্ল্যাটে আসেন।আয়াজরা চার ভাইবোন।দুই বোন, দুই ভাই।বোনেদের বিয়ে হয়ে গেছে।

আয়াজ সবার ছোট।ফর্সা টকটকে! সুন্দর স্বাস্থ্যবান।লম্বায় ছফুটের বেশি।তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে যখন তখন যেখানে সেখানে ইরিনের সাথে ঝগড়া বাধানো ! এছাড়া পড়াশোনাও করেন।একেবারে ফ্রেমে বাধিয়ে রাখার মত ট্যালেন্ট উনার!ঢাকা মেডিকেলের ফাইনাল ইয়ার স্টুডেন্ট,সেই রকম ভাবসাব!

জিরাফের মত লম্বা সুদর্শন এই মানুষটার সাথে পারিবারিক ভাবেই বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল ইরিনের।কিন্তু দুইজনের ঘোর আপত্তির কাছে হার মানতে হলো দুই পরিবারকে।তাদের বর্তমান মারামারিক অবস্থান দেখে পরিবারের সদস্যরা স্বস্তির নিশ্বাসই ফেলছেন।ভাগ্যিস জোর করে বিয়েটা দিয়ে দেন নি দুজনের।তাহলে ওরা দুজন মিলে পারিবারিক বিশ্বযুদ্ধ লাগিয়ে দিতো!

এককালে ইরিনকে পড়াতো আয়াজ।সেই থেকেই দুজনে রেষারেষি।ইরিনের ভাষ্যমতে ছাত্র হিসেবে তিনি খুব ভালো হলেও টিচার হিসেবে তিনি একেবারে জঘন্য।তার অবশ্য কারনও আছে।
পড়া না পারলেই কানে ধরানো থেকে শুরু করে নীল ডাউন পর্যন্ত সব শান্তি ইরিনকে দিয়ে ফেলেছেন তিনি।তারওপর ইরিনের লম্বা বিনুনি ধরে টানাটানি তো আছেই।

আর আয়াজের ভাষ্যমতে দুনিয়ার সবচেয়ে গাধাটাইপ স্টুডেন্ট হচ্ছে ইরিন।

পড়াতে বসে একদিন আয়াজ তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলো,”বলতো,’লং লিভ বাংলাদেশ’ এর বাংলা কি?”

ইরিন হাঁ করে কিছুক্ষন তার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে উত্তর দিয়েছিলো,”লম্বা বাস বাংলাদেশ!”

রাগে আয়াজের মাথায় চাঁদি ফেটে যাওয়ার অবস্থা।আধঘন্টা নীল ডাউন করিয়ে রেখেছিলো ইরিনকে।তারপর ইংরেজী বইটা মুড়িয়ে ঠুসঠাস কতক্ষন ইরিনের মাথায় তবলা বাজিয়ে বেরিয়ে গেলো সে।

আয়াজের ডাক শুনতে পেয়েছে ইরিন।কিন্তু বুঝতে দিতে চাইলো না।শুনেও না শোনার ভান করে দ্রুত পা চালালো।এইমুহূর্তে আয়াজের সামনে থেকে পালাতে হবে তাকে।আয়াজও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়।ইরিনকে ধরতে রীতিমত দৌঁড়াচ্ছে সে।

আয়াজ ওর কাছে এগিয়ে এসেই মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলল, ” কানে কালা নাকি তুই? কতবার ডাকলাম,সাড়া দিচ্ছিলি না কেন?”

—” শুনতে পাই নি।”

—” শুনতে পাসনি না ইচ্ছে করে জবাব দিস নি?”

ইরিন নিরস কন্ঠে বলল, “আমি সত্যিই শুনতে পাই নি।”

—“বাসায় নাকি তোর বিয়ের কথাবার্তা চলছে?” উৎসাহী চেহারা মাহমুদের।

— “হ্যাঁ।কাল দেখতে এসেছিলো।”

—” শুনলাম ছেলে নাকি আর্মি অফিসার?…পছন্দ হয়েছে?

—“আপনি জেনে কি করবেন?..বিয়ে ঠিক হলে দাওয়াত পেয়ে যাবেন।”

—“আগে তো পছন্দ হোক?তারপর বিয়ে?”

ইরিন ওর কথার উত্তর না দিয়ে হাঁটা ধরলো।এই মানুষটার সাথে কথা বলতে ওর অসহ্য লাগছে।

আয়াজ প্রায় দৌঁড়ে এসে ওর পথ আটকে দাঁড়ালো।তারপর ধমকে উঠে বলল, “কথার উত্তর না দিয়ে চলে যাচ্ছিস কেন?

ইরিন আবারও পাশ কাটিয়ে যেতে নিলো।কিন্তু আয়াজের কথায় থামতে হলো।

—“তুই একটু আগে রিক্সায় কার সংগে ঘুরছিলি আমি দেখেছি।….আন্টিকে গিয়ে যদি না বলেছি তাহলে আমার নামও আয়াজ রহমান না!”

আয়াজ গটগট করে হাঁটা ধরলো।ইরিন এবার ওকে ধরার জন্য রীতিমত দৌঁড়াচ্ছে।অনুনয় বিনয় করে ডাকছে।কিন্তু তাকে ইঞ্চি খানেক পাত্তাও দিলো না আয়াজ।এই মুহূর্তে ইরিনের কোন কথা শুনবে না সে;তার সাথে ভাব ধরেছে সে কেন এখন ছাড় দেবে??

কলেজ থেকে ফেরার পথে রাশেদ ভাইয়ের সাথে দেখা ইরিনের,যিনি এক কালে ওর খালাতো বোন মুনার বয়ফ্রেন্ড ছিলো।
মুনা প্রায় রাশেদের সাথে দেখা করার সময় ওকে নিয়ে যেত।তারপর বাসায় যখন ধরা খায় তখন ফ্যামিলি থেকে তাড়াতাড়ি মুনার বিয়ের ব্যাবস্থা করা হলো।
তার পেছনেও আয়াজের হাত আছে।ওর কাছেই প্রথম ধরা খায় মুনা আর ইরিন।সিনেমা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলো রাশেদ ওদের।আর ইবলিশটা সেদিনই বন্ধুবান্ধব নিয়ে সিনেপ্লেক্সে এ হাজির!..তারপর আর কি?
ইরিনের মায়ের কানে সুন্দর করে প্রেজেন্ট করে ঘটনাটা।সেদিন জুতো খুলে মেরেছিলো ইরিনের মা ওকে!

আজকে দেখা হতেই রাশেদ মুনার খবর জিজ্ঞেস করার জন্য ওকে ধরেছিলো।আয়াজ তখন নীলক্ষেতের দিকে বই কিনতে গিয়েছিলো।ফেরার পথে ওদেরকে দেখে ফেলে।

ইরিন অসহায় গলায় বলল,

—“সরি!আয়াজ ভাই,আমার ভুল হয়ে গেছে!আম্মাকে কিছু বলবেন না প্লিজ!আম্মা শুনলে মেরে আমার পিঠের ছাল তুলে ফেলবে!”

—“আমার কি? ”

—” আয়াজ ভাই প্লিজ!”

—“কি প্লিজ?”

—“আম্মাকে কিছু বলবেন না প্লিজ!”

—“আমি কি তোর কথামত চলবো?.. বলবো একশোবার বলবো!তুই আমার সাথে ভাব ধরেছিস না?..এখন কেন?…যা! সর সামনে থেকে!”

ইরিন কাঁদোকাঁদো গলায় বলল, ” আমার ভুল হয়ে গেছে।আমি আর জীবনেও আপনার কথার উত্তর না দিয়ে যাবো না!”

——“ভুল যখন করেছিস শাস্তিও পাবি।”

——“আমি সরি বলেছি তো।”

আয়াজ এবার বাঁজখাই গলায় বলল, “তুই আমার সামনে আর একটা কথা বললে ঠাস করে তোর গালে এক চড় বসিয়ে দেবো।..যা সর সামনে থেকে!”

ইরিন সরলো না।ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।গুড়িগুড়ি বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেছে।আয়াজ রিক্সা ডেকে উঠে পড়লো।একবারও পেছন ফিরলো না!কি নিষ্ঠুর!”

ইরিন নিশ্চিত আজকে মাইমুনা বেগম ওর চামড়া তুলে ফেলবে।রাশেদ ভাই নামক ছেলেটাকে আম্মা একদম পছন্দ করেন না।উনার কাছে রাশের ভাই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য লোক।তার অবশ্য বিশেষ একটা কারণও আছে।

রাশেদ ভাইয়ের চালচলন একেবারে উড়নচণ্ডী টাইপ!নোংরা কুঁচকানো শার্ট,রংজ্বলে যাওয়া জিন্স পড়ে ঘোরাফেরা করেন।চেহারার কবিকবি ভাব!

বাংলার অধিকাংশ মায়েরাই কবিকবি টাইপ ছেলেদের পছন্দ করেন না!তাদের ধারনা মনে এই কবিকবি চেহারার বোকাসোকা ছেলে গুলো একধরনের সরলতায় মেয়েদের বেধে ফেলে!অর্থাৎ মাথা নষ্ট করে দেয়!
যদিও কৈশোরে তাদের অনেকেই এমন খামখেয়ালি ছেলেদের-ই পছন্দ করতো।পছন্দ না কারলেই মায়া ঠিকই অনুভব করতো,কিন্তু তাদের উত্তরসূরিদের বেলায় এই ছেলেগুলো একেবারে নাজায়েজ!এদের ধারে কাছে ঘেঁষাও দণ্ডনীয় অপরাধ!

রাশেদকে নিয়ে ইরিনের বড় খালা ইরিনের ওপর অসন্তুষ্ট।কেন ইরিন জেনে শুনেও উনাকে সব জানালো না?উনার মেয়ে যে এমন একটা ছাগলের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে সেটা মা হিসেবে উনার তো জানার অধিকার ছিলো?ইরিন কেন জানালো না?কেন ইন্ধন দিল?

মায়মুনা বেগমের কড়া নিষেধ রাশেদের সাথে যেন ভুলেও যোগাযোগ না রাখে।

ইরিন দরজায় বেল বাজাতেই মাহিন এসে দরজা খুলে দিলো।
ভেতরে আয়াজকে বসা দেখে বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো ইরিনের।

আয়াজ নিশ্চই এতক্ষনে রাশেদ ভাইয়ের ঘটনা এক্সটা তেল মরিচ মিশিয়ে আম্মার কাছে পেশ করেছে!

মায়মুনা বেগম এসে জিজ্ঞেস করলেন, “কি রে আজকে এত দেরী যে?”

ইরিন ভয়ে ভয়ে আয়াজের দিকে তাকালো।উনি নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে চা খাচ্ছে যেন ইরিনকে দেখতেই পায় নি।

—- “আজকে এক্সট্রা ক্লাস ছিলো।”

ইরিন আর সেকেন্ডেও দাঁড়ালো না।দ্রুত পায়ে ভেতরে ঢুকে গেলে।এখানে বেশিক্ষণ দাড়ালেই মুছিবত!বলাতো যায় না আয়াজ ফট করে কোন ভেজাল লাগিয়ে বসে।

ও কাধের ব্যাগটা ওয়ারড্রবের ওপর রেখে দরজাটা বন্ধ করতে যাবে এমন সময় মায়মুনা বেগম এসে হাজির।মুখ থমথমে!

— “কিছু বলবে?”

মায়মুনা বেগম ঠাস করে ওর গালে একচড় বসিয়ে দিয়েছেন।তারপর বিছানার ঝাড়ুটা হাতে নিতেই ইরিন এক লাফে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।ওর বুঝতে বাকি রইলো না কেন হচ্ছে এসব!

মায়মুনা অনেক্ষন বকাবকি করে শেষে বেরিয়ে গেলেন।ইরিনের প্রচণ্ড রাগ লাগছে আয়াজের ওপর।খচ্চরটা তারমানে আম্মাকে সব বলে দিয়েছে?..সব সময় ওর পিছে লাগে!

বিকেল বেলা পাশের বারান্দায় আয়াজকে দাঁড়ানো দেখে ইরিন ভেতরে ঢুকে যেতে নিলো।আয়াজ তখন কানে হেডফোন গুঁজে আঙ্গুল নাচাতে নাচাতে গান শুনছিলো ওকে দেখে কান থেকে একটা হেডফোন খুলে ফেললো।ভিলেনটাইপ হাসি দিয়ে বলল,

—-“আজকে কতক্ষন জুতোপেটা করেছে তোকে?”

ইরিন এটমবোমার মত দাঁড়িয়ে আছে।আয়াজ সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,

—“আমি ভাবছি তোর জন্মদিনে আন্টিকে একজোড়া স্পেশাল বাটা জুতো গিফট করবো!…নাম হবে “হরিন চপ্পল!”
ওটা দিয়ে আন্টি তোকে স্পেশাল স্পেশাল টাইমে স্পেশালভাবে আদর করবে।

—“আম্মা আজকে আমাকে কিচ্ছু করে নি।”

—“চাপা মারিস না।আমি জুতোপেটার শব্দ শুনেছি।”

আয়াজ আবারও গা জ্বালানো হাসি দিলো।ইরিন তৎক্ষণাৎ রাগে পাশের ফুলের টব থেকে একদলা কাদামাটি নিয়ে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে আয়াজের গা বরাবর ছুঁড়ে মারলো।কিছুক্ষন আগে পানি দেওয়া হয়েছিলো ফুল গাছে।তাই টবের মাটি ভিজে কাদা হয়ে আছে।

ভেজা কাদামাটিতে আয়াজের টিশার্ট মাখামাখি।ওর হাঁ হয়ে যাওয়া মুখের ভেতর আরেকদলা কাদামাটি ছুঁড়ে মারতে ইচ্ছে করছে ইরিনের!

রাগে মুখ বাঁকিয়ে বলল,

—-“বেশি বাড়াবাড়ি করলে এবার সোজা মুখের ভেতর মারবো!..আমার টার্গেট মিস হয় না!”

আয়াজের মুখটা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে গেলো। আগুনদৃষ্টিতে ইরিনের দিকে তাকিয়ে আছে সে,পারলে এক্ষুনি কাঁচা গিলে ফেলবে!

ইরিন বারান্দা থেকে সরে এসে বেডরুমের দরজাটা ভালোভাবে লক করে দিলো।তারপর বাবার ওষুধের বক্স থেকে একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো সে।

মনে মনে আন্দাজ করে নিলো সে,একটুপর কি হবে, আয়াজ এসে সুন্দর করে নিজের কৃতকর্মের জন্য ওর কাছ ক্ষমা চাইবে।তারপর যখন ইরিন দরজাটা খুলবে নিজের স্বরূপে ফিরে আসবে।শুরু হবে আসল তুফান!

প্রতিবারই ইরিন জানে এমন কিছু ঘটবে কিন্তু প্রতিবারই সে দরজা খুলে দেয়।কিন্তু আজকে আয়াজের ওপর প্রচণ্ড বিরক্ত ইরিন। তাই দরজা না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে! দরজা আজকে কিছুতেই খুলবে না !

রাত এগারোটার দিকে ধাক্কাধাক্কির আওয়াজে ইরিনের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।ঘড়িতে চোখ পড়তেই একলাফে উঠে দাঁড়ালো।দরজা খুলতেই মাহমুনা বেগম হুড়মুড়িয়ে ভেতরে ঢুকলেন।
ওকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলেন।আয়াজের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে প্রচণ্ড বিরক্ত সে।

মায়মুনা বেগম বিলাপ করে বললেন,

——“দরজা খুলছিলি না কেন? আমার কত টেনশন হচ্ছিলো জানিস?..তোর বাবা মাহিন কেউ বাসায় নেই।দৌঁড়ে গিয়ে আয়াজকে ডেকে নিয়ে এলাম।ছেলেটা পড়ছিলো,পড়া থেকে তুলে নিয়ে এসেছি!তুই আমাকে এভাবে জ্বালাবি? ”

ইরিন মায়মুনা বেগমকে শান্ত করে বলল,

—“শরীর খারাপ লাগছিলো তাই একটু শুয়েছিলাম।ঘুম আসছিলো না দেখে বাবার ওষুধের বক্স থেকে একটা ঘুমের ওষুধ খেয়েছি,তাই টের পাই নি।এতকান্নাকাটি করার কি আছে?কান্না থামাও!”

মায়মুনা বেগম কিছুক্ষন ওর গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন ওর জন্য খাবার আনতে।দুপুরে আসার পর থেকে আর কিছু খায় নি মেয়েটা।আয়াজ এতক্ষণ সোফায় বসে ফোন টিপছিলো।

মায়মুনা বেগম বেরিয়ে গেলে ফট করে ভেতরে ঢুকলো গেলো সে,যেন এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলো।

ফট করে ইরিনের খোঁপা করা চুল গুলো টেনে ধরে বলল, “এবার কোথায় পালাবি?..বেয়াদপ কোথাকার আমার গায়ে কাঁদা ছুঁড়িস?আজকে তোকে টিকটিকির গু খাওয়াবো আমি!”

—“মাগো!..মাআ..”, ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো ইরিন।

আয়াজ চুলের গোছাটা আরেকটু শক্ত করে টেনে ধরতেই ইরিন কেঁদে দিলো।তবে ব্যথায় যতটা না কাঁদছে তার চেয়ে বেশি নাটক করছে সে।আয়াজ ধমকে উঠে বলল,

—“এখন কাঁদছিস কেন? আমার গায়ে কাদা ছোড়ার আগে মনে ছিলো না? আমি এমনি এমনি ছেড়ে দেবো?”

—“মাফ করে দিন আয়াজ ভাই।”

–“আগে মাফ চা!”

—“পা ধরে চাইবো না মুখে?”

—“বাহ দারূন আইডিয়া দিয়েছিস।চা,পা ধরেই চা!”

ইরিন বাধ্য হয়ে আয়াজের পা ধরলো ঠিকই কিন্তু মাফ চাইলো না, আয়াজের পায়ের ওপর একদলা থুথু ফেলে ছুটে পালালো।আয়াজ হতবম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে!ঘটনার আকস্মিকতায় ও ‘থ’ বনে গেছে,যেন বর্ষাকালের সবচেয়ে শক্তিশালী বজ্রপাত ওর মাথায় পড়েছে। সে সম্বিত ফিরে পাওয়ার আগেই ইরিন পগারপার!..ছুটে রান্নাঘরে মায়ের কাছে ঢুকে গেছে সে।

#অতঃপর_প্রণয়
#অরিত্রিকা_আহানা
#পর্বঃ১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here