#অতঃপর_প্রণয়
#অরিত্রিকা_আহানা
#পর্ব:৩
পরীক্ষার সময়টুকু আয়াজ হোস্টেলেই ছিলো।পরীক্ষা গতকাল শেষ হয়েছে।এবার দুমাসের লম্বা বন্ধ।
কিন্তু আরাম করার সময় নেই,বিসিএস এর প্রিপারেশন নিতে হবে ওকে।
বই পত্র নিয়ে হোস্টেল থেকে সোজা বাসায় এসে হাজির হলো সে।রেজাল্টের আগ পর্যন্ত বাসায় থেকে পড়াশোনা করবে।
ইরিন খবর পেয়েছে আয়াজ বাসায় এসেছে। রোজ সকাল বিকাল দুবার নিয়ম করে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় সে।আয়াজ ছাড়া তার দিনগুলো কেমন যেন পানসে মনে হচ্ছে।
কোন কোন দিন আয়াজের অপেক্ষায় দুপুরেও বারান্দায় বসে থাকে সে।কিন্তু আয়াজের দেখা নেই।
মায়মুনা বেগম প্রায়ই সোহেলির সাথে গল্পগুজব করে আসে,
ইরিন লজ্জায় কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে না,পাছে মা যদি কিছু সন্দেহ করে বসে??..কোন ভাবে যদি আয়াজ জেনে যায়?..ছি!ছি!আয়াজ তো ওকে নিয়ে দারূণ মশকরা জুড়ে দেবে।এই ভয়ে সে কিছুই জিজ্ঞেস করলো না।
প্রায় একসপ্তাহ পর,দুপুরবেলা ডাটা অন করতেই ফেইসবুকে আয়াজ স্টাটাস:
“আলহামদুলিল্লাহ!ফাইনাল প্রফ পাশ করলাম।”
কমেন্ট সেকশনে শুভেচ্ছার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।ইরিন ফোন হাতে নিয়ে ভাবছে,তারমানে আয়াজের রেজাল্ট বেরিয়েছে, আজকে নিশ্চই বাসায় আছে সে।ইরিন ডাটা অফ করে ফোনটা বিছানায় ওপর রাখলো,বারান্দায় দাঁড়িয়ে উঁকি দিলো।বারান্দার দরজা খোলা।বারান্দায় কেউ নেই।ভেতর থেকে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ আসছে।এত বড় একটা খুশির খবর হেলাল সাহেব বেশ জাঁকজমকভাবে সেলিব্রেট করছেন।ঘরভর্তি মেহমান।আয়াজের বোনেরা এসেছে।
বারান্দায় অনেক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো ইরিন,কেউ এলো না।মনটা খারাপ করে বারান্দা থেকে সরে এলো।বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমে তলিয়ে পড়লো।
ঘুম ভাংলো আয়াজের বোনঝি তুতুরীর ডাকে।ওর হাতে ধরে টানাটানি করছে ছয়বছরের ছোট্ট তুতুরী।
ইরিন উঠে বসতেই বলল,”ইরি তোমাকে মা আমাদের বাসায় ডাকছে।”
—“কেন সোনা?”
তুতুরী বিজ্ঞের ভঙ্গিতে বললো,”ছোটমামা ফার্স্ট হয়েছে,বাসায় অনেক মেহমান।”
—“তোমার ছোট মামা বাসায় আছেন?”
—“না মামা বাইরে।”
ইরিন বুঝতে পারছে না ওকে কেন ডাকা হয়েছে? খাট থেকে নেমে মাথা আঁচড়ে ভালো করে ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে নিলো।
তারপর তুতুরীকে নিয়ে আয়াজদের বাসায় ঢুকলো।
আয়াজদের ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই বেশ বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো ইরিন।
হেলাল সাহেব,মায়মুনা বেগম,সোহেলি বেগম ইরিনের বাবা এমনকি ইরিনের ছোট খালুও আছেন।
কিছু একটা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করছিলেন তারা ইরিনকে দেখে কিছুক্ষনের জন্য আলোচনা থামিয়ে দিলেন।ইরিন ড্রয়িংরুম পেরোতেই আবার আলোচনা শুরু হলো।
ইরিনের মাথায় আসছে না হঠাৎ কি উনারা এত জরুরী আলাপ করছেন।মায়মুনা এবং এবং ইরিনের বাবা নাহয় আয়াজের ভাইয়ের খবর পেয়ে এসেছে কিন্তু ছোট খালু?উনি এখানে কি করছেন?
আয়াজের বড়বোন রেশমি এসে ইরিনের হাত ধরে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলো।
—“কি রে তোর তো দেখাই পাওয়া যায় না।আমি এসেছি একসপ্তাহের মত হলো একবারও বাসায় এলি না।কি নিয়ে এত ব্যস্ত তুই?”
—“আসলে সামনে ফাইনাল পরীক্ষা তাই সময় পাই না।সারাদিন টিউশন তারপর রাতে পড়াশোনা।”
—“আয়াজের খবর শুনেছিস?”
জরিন ফেইসবুকে আয়াজের পোস্ট দেখার বিষয়টা চেপে গেলো।
–“না তো?”
–“ওর ফাইনাল প্রফের রেজাল্ট বেরিয়েছে।এবারও প্লেস করেছে।রাষ্ট্রপতি থেকে পদক আনবে!”
ইরিন হালকা হাসলো।আয়াজ বাসায় নেই।বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বেরিয়েছে।ইরিন ওর ঘরে খাটের ওপর বসে রেশমির সাথে গল্প করছলো এমন সময় আয়াজ এই মাত্র বাসায় এসে ঢুকলো।হাতে ঠাণ্ডা পানির বোতল।বোতলের মুখেই ঢক-ঢক করে পানি খেলো সে।রোদের তাপে মুখ লাল হয়েছে।খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গাড়ি ব্যবহার করে না সে।হেলাল সাহেবই বেশিরভাগ সময় গাড়ি নিয়ে ছোটাছুটি করেন।
ইরিন খাট থেকে নেমে গেলো।রেশমি গেলো আয়াজের জন্য শরবত আনতে।আজকে সকালেই হেলাল সাহেব বেল এনেছেন।বেলের শরবত বানিয়ে আয়াজের জন্য রেখে দিয়েছে সে।আয়াজ শার্টের সামনের দুটো বোতাম খুলেই ফ্যানের নিচ বরাবর বসলো।
রেশমি হাতে করে বেলের শরবত নিয়ে ফিরলো।আয়াজ একটানে পুরোটা শেষ করে করে বলল,”হরিণ কে মিষ্টি দিয়েছিস?”
——“ওর তো দেখাই পাওয়া যায় না।তুতুরী কে পাঠিয়ে মাত্র ডেকে এনেছি।দাঁড়া আমি মিষ্টি নিয়ে আসছি।”
রেশমি চলে গেলে আয়াজ শার্টের আরো দুটো বোতাম খুলে দিল।
ইরিনের হৃদপিন্ডটা তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো!এটা কেমন অসভ্যতা? রুমে যে একটা মেয়ে আছে সেই খেয়ালতো আয়াজের রাখা উচিৎ?
আয়াজ লম্বা হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।পা দুটো বাইরে ঝুলছে।চুলে আঙ্গুল বোলাচ্ছে সে।পকেট থেকে ফোন বের করে ডাটা অন করলো।ফোন থেকে মুখ না তুলেই ইরিনকে ডাক দিলো,
—“এদিকে আয় তো ইরিন?”
ইরিনের হাত পা কাঁপছে।এইমুহূর্তে কিছুতেই আয়াজের সামনে যেতে পারবে না।অস্বস্তি লাগছে তার।
আয়াজ আবারও ডাক দিলো।
ইরিন ধীর পায়ে এগিয়ে যেতেই বলল,আমার পায়ের কাছে তোষকের নিচে চাবির গোছা আছে।বের কর!
দ্রত আয়াজের কাছ থেকে সরে এসে চাবির গোছাটা বের করলো সে।
–আলমারিতে মাঝের সারিতে দেখবি র্যাপিং করা একটা প্যাকেট আছে,নিয়ে আয় তো।”
গোলাপি রংয়ের প্যাকেটটা নিয়ে আসতেই বলল,”খোল!”
—“আমি?”
—“হ্যাঁ,তুই!”
ইরিন র্যাপটা খুলতেই ভেতরে হলুদ রংয়ের আরেকটা।ওটা খুলতেই লাল রংয়ের আরেকটা।এভাবে প্রায় পাঁচটা র্যাপ খোলার পর অবশেষে নীল রংয়ের একটা জামদানী শাড়ি পেলো।
ইরিন শাড়িটা হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখলো। নীল রংয়ের ভেতরে ভেতরে সিলভার কালারের প্রিন্ট!বেশ সুন্দর!
আয়াজ বিরক্ত কন্ঠে বলল,
—“ভাঁজ নষ্ট করছিস কেন?”
ইরিন সাথে সাথে হাত সরিয়ে নিলো।
—“কেমন হয়েছে?”
—“কার জন্য এটা?”
—“যার জন্যই হোক তুই আগে বল কেমন হয়েছে?”
—” ভালো।”
আয়াজ ভ্রু কুঁচকে ফেললো।
—“শুধু ভালো?”
—“খুব সুন্দর!”
—“শিলাকে মানাবে?”
ইরিন অবাক হয়ে বলল,”কোন শিলা?”
—“আমার গার্লফ্রেন্ড!”
ইরিন মুখ ভেংচি কাটলো।এর মানে,’আমি বিশ্বাস করি নি।’ আয়াজ হেসে উঠে বলল,
—–“আমার বান্ধবী শিলা!গতবার রেজাল্ট বেরোবার পর আমাদের বাসায় এসেছিলো, দেখিস নি? সেবার বলেছিলো ফাইনাল প্রফে ফার্স্ট হলে ওকে একটা নীল জামদানী কিনে দিতে হবে,দেবো বলেছিলাম।..এলেই তো ধরবে।”
—“ওহ!”
—“তুই কি ভেবেছিস তোর জন্য? তোকে আমি শাড়ি দিতে যাবো কোন দুঃখে? তুই কি আমার বউ না বান্ধবী?”
আয়াজ আবারও সেই ভিলেনটাইপ হাসি দিচ্ছে।
ইরিনের রাগ লাগছে। আয়াজের চুলগুলো টেনে ধরে ওর নাক বরাবর কামড় বসিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।নিজেকে শান্ত করে বলল,
—“র্যাপিং খুললেন যে?”
–“তো কি হয়েছে?..তুই আবার করে দিবি।”
—“আমি পারবো না।”
—“কেন পারবি না কেন?”
—“আমি র্যাপিং করতে পারি না।আপনার বান্ধবী আপনি করুন।”
—“তুই পারবি তোর ঘাড় পারবে।খুলেছিস এখন ঠিক করতে পারবি না?”
—“আমি কি নিজে থেকে খুলেছি নাকি?আপনি বলেছেন তাই খুলেছি।”
—“হ্যাঁ তো এখন আমি বলছি তাই আবার র্যাপিং করে দিবি।”
ইরিন দৃঢ় গলায় বলল,”আমি পারবো না।”
কত বড় খারাপ মানুষ, ওর হাত দিয়ে র্যাপিং খুলিয়ে এখন বলছে বান্ধবীর জন্য,ছোটলোক!
আয়াজ শাড়িটা র্যাপ সহ দলামোচড়া করে সাইডে রেখে দিয়ে বলল,”আচ্ছা থাক,লাগবে না!”
রেশমি এতক্ষনে মিষ্টি নিয়ে ঢুকলো।লাজুক হেসে বললেন,
—“তোকে অনেক্ষন বসিয়ে রাখলাম।ড্রয়িংরুমে মহসিনের বিয়ের কথা হচ্ছে,তোর ছোট খালার মেয়ে মুক্তার সাথে।আমাদের সবার বেশ পছন্দ হয়েছে।”
মহসিন আয়াজের বড় ভাই।পেশায় ব্যাংকার।আয়াজারের চার বছরের বড় সে।কয়েকমাস যাবত তার জন্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছিলো। অবশেষে ইরিনের খালাতো বোন মুক্তাকে পছন্দ হয়েছে সবার।মুক্তা সোশিয়লজি তে অনার্স কমপ্লিট করে আপাতত ফ্রি আছে।মাস্টার্সের ভর্তি এখনো শুরু হয় নি।এর মাঝেই বিয়ের ফুল ফুটে গেলো।ইরিনের এতক্ষনে মাথায় ঢুকলো কেন ওর ছোটখালু আয়াজদের বাসায় এসেছেন।
রেশমি মিষ্টির প্লেট থেকে একটা মিষ্টি ইরিনের মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে বলল,”দুপুরে আমাদের সাথে খাবি! ঠিক আছে?..আমি যাই, ওদিকে কি কথা হয় শুনে আসি।”
রেশমি চলে যেতেই আয়াজ বলল,”বাবা আর মেয়ে পেলো না?”
—” কেন কি হয়েছে ?”
—“তোর খালাতো বোনগুলা একটাও সুবিধের না।দুনিয়ার সব ছেলে তাদের চেনা।এইটা কেমন কে জানে? আমার সরল সোজা ভাইটার কি হবে বুঝেছিস? এই তুই কি ওদেরকে দেখে দেখে এমন ঢং করা শিখেছিস তাই না? সবসময় এত সেজেগুজে থাকিস কেন?”
ছোটবেলা থেকেই ইরিনের সাজগোজের প্রচুর শখ।বড় হয়েও সেই অভ্যেস তেমন বদলায় নি।দিনের বেশিরভাগ সময়ই পরিপাটি হয়ে থাকে সে।গোসল করে রোজ কাজল দেয়,প্রায়ই দিনই তার হাতে রেশমি চুড়ি দেখা যায়।কখনো কখনো ঠোঁটে হালকা কালারের লিপস্টিক দেওয়া হয়।ছোটবেলায় আয়াজ প্রায়ই ওর চুল নষ্ট করে দিতো অথবা হাতের চুড়ি ভেঙ্গে দিতো।আয়াজ যে তখন একেবারে ছোট ছিলো তাই না।ইরিনের থেকে গুনেগুনে পাচবছরের বড় সে।তবুও ইরিনের সাথে খোঁচাখুঁচি করতে তার ভালো লাগে।তবে এর জন্য বহুত মাশুলও দিতে হয়েছে তাকে।মারামারির সময় ইরিন প্রায়ই ব্যথা পাওয়ার ভান করে বড়দের কাছ থেকে সিমপ্যাথি গেইন করেছে।যার ফলাফল স্বরূপ আয়াজকে নানারকম কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হতো।শাস্তির বেশিরভাগই আয়াজের মা সোহেলির নির্ধারিত।ইরিনকে অত্যাধিক স্নেহ করার ফলে ইরিনের সামান্য নেকামিপনাতে আয়াজের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতেন তিনি।
ইরিন আয়াজের কথার জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলো।আয়াজ আবারও খোঁচা মেরে বলল,
—“সত্যি করে বলতো,ভাইয়ার সাথে যার বিয়ে হয়েছে তাকে নিয়ে আবার সিনেপ্লেক্সে ঘোরাঘুরি করিস নি তো? পরে যদি আমি জানতে পারি তোর অবস্থা কিন্তু খারাপ করে দেবো?”
—“না যাই নি।”
—“সে তোকে নিয়ে গিয়েছে? তুই আবার চুপিচুপি এসব করে বেড়াচ্ছিস না তো?”
মুনা আর ইরিন রাশেদের সাথে সিনেপ্লেক্সে ধরা খাওয়ার পর থেকেই আয়াজের খোঁটা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে।এই নিয়ে হাজারবারের ওপর খোঁটা দেওয়া হয়ে গেছে তার।ইরিনের চোখমুখ লাল হয়ে ফেললো।আয়াজের চুলের গোছা চেপে ধরে টান মারলো সে।আয়াজ ব্যথায় মুখ বাঁকিয়ে ফেলেছে।ইরিন আরো জোরে টান দিয়ে বলল,
—“বলবেন আর অসভ্য কথা?”
—“ইরিনের বাচ্চা হরিণ ছাড় বলছি।”
—“আগে বলুন আর এইসব অসভ্য কথা বলবেন?”
আয়াজ উঠে বসে ইরিনের হাত থেকে নিজের চুল ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল,
—“ভদ্রঘরের মেয়েরা এভাবে পরপুরুষের সাথে মারামারি করে না ইরিন।দোজখের বাসিন্দা হবি তুই।সাতটা দোজখের সবচেয়ে খারাপ দোজখে যাবি,ছাড়!…ছাড় আমার চুল।”
অনেক কষ্টে ইরিনের কাছ থেকে নিজের চুল ছাড়িয়ে নিলো আয়াজ।ঠোঁট উলটে চুলে আঙ্গুল বোলাচ্ছে সে।তার এত সাধের হেয়ারস্টাইল এই মেয়ে নষ্ট করে দিলো।
ছোটবেলা থেকেই ওদের এই মারামারিতে আয়াজই ঝগড়া করেছে বেশি।ইচ্ছে করে অকারণে ইরিনের সাথে ঝগড়া বাধিয়েছে সে।ইরিন খুব সহজে রাগে না।কিন্তু সে রাগলে আয়াজ তখন চুপ হয়ে যায়।
—“আমার এত সাধের হেয়ারস্টাইলের বারোটা বাজিয়ে দিলি তুই!”
—“আপনি আমাকে অপমান করছেন কেন?”
—“ইহ্,দিবো কানের নিচে একটা!..অপমান দেখাতে আসছে আমাকে?.কলেজ ফাঁকি দিয়ে যখন বাইরে ঘোরাঘুরি করিস তখন অপমান কোথায় যায়? আমি কিছু বললেই দোষ?..আমার কানে সব খবরই আসে!”
তেড়ে এলো ইরিন।আয়াজ দুহাত উঁচিয়ে সাবধান করে বলল,
—“গায়ের জোরে তুই আমার সাথে পারবি?তুলে এমন একটা আছাড় দেবো যে এখানেই হিসু করে দিবি!”
—“আপনি একটা অসভ্য,বদ!”
—“কি বললি?..আমি অসভ্য?..যাদের জন্য এত সাজুগুজু করে কলেজে যাস তারা?
—“আমি কিন্তু চিৎকার দিবো আয়াজ ভাই।সবাইকে ডেকে বলবো আপনি আমার সাথে অসভ্যতা করছেন।”
ঠাস করে ওর গালে একচড় বসিয়ে দিলো আয়াজ।
—“ফাজিলের ফাজিল!সিনেমা পেয়েছিস?”
তারপর ইরিনের কন্ঠস্বর অনুকরণ করে বলল,
—“আমি কিন্তু এবার চিৎকার দিবো আয়াজ ভাই।দে!..দেখি তোর গলায় কত জোর?”
ইরিন গালে হাত দিয়ে হতবম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মাথা চক্কর দিচ্ছে।থাপ্পড় খেয়ে রাগে লাল হয়ে গেলো সে।আয়াজের পাশে রেখে দেওয়া শাড়িটা নিচে ফেলে ইচ্ছে মত পা দিয়ে পিষলো যেন আয়াজকে পিষছে।আয়াজ স্থির দৃষ্টিতে ওর কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করছে।ইরিন শাড়িটা তুলে ঘোমটার মত করে আয়াজের মাথায় পড়িয়ে দিয়ে একদৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।পেছন থেকে আয়াজ চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—“এই ইরিনের বাচ্চা দাঁড়া!আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন।”