অনুভবে তুই পর্ব-২৩

0
1935

#অনুভবে_তুই
#লেখনীতে-ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-২৩

রোজা জানালার গ্রিল ধরে বাইরে তাকিয়ে আছে। মন খারাপের সময়গুলোতে ওর ইচ্ছে হয়, আকাশে ওড়তে থাকা মেঘকুঞ্জের ন্যায় দ্রুতগতিতে ছুটে গিয়ে আদ্রিশকে বলতে, ‘আপনার জন্য আমার মন খারাপ হয়।’ কিন্তু এই একটি বাক্যই সে বলতে পারে না। ফিহাকে সেদিন কিছু কথা বলার পর ও কিছুই বিশ্বাস করে নি। উলটো রাগ দেখিয়ে ওর ফোন কেটে নাম্বারটি ব্ল্যাক লিস্টে যুক্ত করেছে; যার ফলে রোজা ওর সঙ্গে আর কথাই বলতে পারে নি। অন্যদিকে নেহা সিম পালটে বসে আছে। উৎসের সঙ্গে দু-একবার কথা হলেও নিজের মনের অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে ব্যর্থ রোজা। এরমধ্যেই গত পরশুদিন বিকেলে আচমকা এক আননোন নাম্বার থেকে ফোন এলো রোজার ফোনে। নেহা ভেবে কলটি রিসিভ করার কিছুক্ষণ পর রোজা বুঝতে পারলো ফোনের ওপাশের মানুষটি আসলে ইশার মা সুহানা শেখ। তৎক্ষনাৎই রাগে জর্জরিত হয়ে মুখাবয়ব রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো রোজার। এই মহিলার জন্যই আজ এতকিছু হচ্ছে। কিন্তু শত হলেও সুহানা শেখ ওর গুরুজন। অতিকষ্টে রাগ দমাতে চেষ্টা করলো রোজা, যেন পুরো ব্যাপারটা আবছা দুঃস্বপ্নের মতো মিলিয়ে যায়। একা একা মনের ভেতর সব চেপে রাখতে রাখতে ইদানীং মন-মস্তিষ্ক বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেছে ওর। সুহানা শেখ স্পষ্ট স্বরে কুশল বিনিময় করার পরে রোজাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি রোজা বলছো?’

রোজা ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘জি।’

ওপাশ থেকে বলল, ‘আমাকে চিনতে পারছো? আমি আদ্রিশ-নেহার ফুপি।’

রোজা ভীষণ অবাক হলো। গলার স্বরটা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করে নিশ্চিত হলো যে এটা সুহানা শেখ। তপ্ত নিঃশ্বাস ছেড়ে সংকোচ নিয়ে রোজা বলল, ‘চিনতে পেরেছি। কিন্তু হঠাৎ করে আমার কাছে? কোনো প্রয়োজনে ফোন করেছেন?’

সুহানা শেখ মন্থর কন্ঠে বললেন, ‘একপ্রকার তা-ই।’

রোজা বিরস মুখে বলল, ‘আমার কাছে কী প্রয়োজন আন্টি?’

সুহানা শেখ অপরাধী গলায় বললেন, ‘আসলে সেদিনের ব্যাপারটা নিয়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলাম মা। সেদিন আমি ঠিক বুঝতে পারি নি তোমার সাথে কতটা জঘন্য ব্যবহার করেছি। তখন অকারণেই আমার মন-মেজাজও ঠিক ছিল না। আমার এই ব্যবহারের কারণে তুমি বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছো, এটা মোটেও কাম্য ছিলো না ওবাড়ির কারোরই। সবটা যখন আমার জন্যই হয়েছে তখন আমিই বলছি, আমার ওপর রাগ পুষে রেখো না তুমি মা।’

রোজার জায়গায় অন্যকেউ হলে হয়তো মনে মনে পৈশাচিক হাসি দিতো, সুখ অনুভব করতো। কিন্তু রোজার তেমন কোনো অনুভূতিই হলো না। ছোট্ট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ফোনের ওপাশ থেকে সুহানা শেখ সেটা টের পেলেন। নম্র কন্ঠে বললেন, ‘কিছু বলছো না যে? তোমার কী মন ভালো নেই?’

রোজা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ভাষা খুঁজে পেলো না। হাসার চেষ্টা করে শুধু বলল, ‘তেমন কিছু না আন্টি।’

সুহানা শেখ ব্যকুল হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার এই বুড়ো আন্টিটাকে কী মাফ করে দেওয়া যায় না? মানুষ মাত্রই ভুল, আমার এই কাজটাকে কি ভুলা যায় না?’

এতবার করে নিজের ভুল স্বীকার করলে কি আর রাগ পুষে রাখা যায়? রোজার খুব খারাপ লাগছিলো। তথাপি সে হাসিমুখেই উত্তর দিল, ‘আমি আপনার ওপর রেগে নেই আন্টি। নিজের ভুলটা স্বীকার করে আপনি মহৎ একটি কাজ করেছেন। আমি আপনার মেয়ের মতো। এতবার করে মাফ চেয়ে আমাকে বিব্রত করবেন না দয়া করে।’

সুহানা শেখ মুগ্ধ হলেন। মেয়েটি কী স্পষ্ট করে কথা বলে! এমন একটা মেয়েকে কি করে যে এতসব কথা বলেছিল ভাবতেই লজ্জিত হলেন। প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলে রোজার মনোবস্থা বুঝার চেষ্টা করে অতি নরম গলায় তিনি অনুরোধপূর্ণ কন্ঠে বললেন, ‘তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?’

রোজা বিব্রত গলায় উত্তর দিল, ‘জি বলুন।’

‘আমার জন্য যেসব ঘটে গেছে সেসব ভুলে সবকিছু নতুন করে শুরু করা যায় না?’

রোজা চমকিত গলায় বলল, ‘আপনি কীসের কথা বলছেন?’

সুহানা শেখ শান্ত গলায় এবার প্রশ্ন ছুঁড়লেন, ‘তুমি কী আমার ছেলেটাকে একটুও ভালোবাসো না?’

গ্রিল আঁকড়ে ধরে রাখা রোজার হাতটা শিথিল হয়ে এলো। হৃদযন্ত্র দ্রুত বেগে ছুটতে লাগলো। নিঃশ্বাস দ্রুত থেকে দ্রুত হতে লাগলো। রুক্ষ প্রকৃতি হঠাৎই যেন দখিনা হাওয়ায় গা এলিয়ে দিলো। মনের এক গোপন কুঠুরিতে কে যেন কড়া নাড়তে লাগলো।
রোজার কণ্ঠনালি থেকে কথা বেরুতে চাচ্ছে না কিছুতেই। চোখজোড়া বুজে আসতে চাইলো, কথা বলতে মোটেও ইচ্ছে করলো না। উফফ, ওর এত লজ্জা লাগছে কেন? রোজা কোনোরকমে উত্তর দিল, ‘জানি না।’

সুহানা শেখ হেসে ফেললো। হালকা কেশে তিনি বললেন, ‘নিজেকে প্রশ্ন করে দেখো মেয়ে, হয়তো খুব সহজেই উত্তরটা জেনে যাবে। আমাকে বলতে ইচ্ছে না হলে বলো না, তবে যাকে ভালোবাসো তাঁকে অবশ্যই বলো।’

রোজা নিশ্চুপ রইলো। সবকিছু কেমন ঘোলাটে লাগছে। সুহানা শেখের গলা আবার শোনা গেল, ‘আর একটা কথা, নেহার বিয়েতে যদি তুমি না আসো তাহলে আমি বুঝে নেব যে তুমি আমার জন্যই আসো নি! আমাকে এখনো মন থেকে ক্ষমা করতে পারো নি।’

রোজা হতচকিত হয়ে বলল, ‘তেমনটা ভাববেন না আন্টি। এরকম কিছুই নয়।’

সুহানা শেখ মৃদুস্বরে বললেন, ‘তোমার আসার অপেক্ষায় রইলাম। তখন কথা হবে মেয়ে!’

ফোনটা রেখে রোজা কিয়ৎক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে রইলো বিছানার একপাশে। সুহানা শেখের প্রশ্নের উত্তরটি তো ওর জানা, তাহলে? ও কেন সত্যিটা বলতে পারল না? এইযে, সময়ে-অসময়ে যে আদ্রিশকে আজকাল সে অনুভব করে এটা কি প্রথম প্রেমের অনুভূতি? ওর হাতে হাত রেখে সুদূরে যাওয়ার তীব্র চেষ্টাটাকে বাস্তবে পরিণত করার যে বাসনা এটাকে কি প্রয়োজনীয়তা বলে? আদ্রিশের প্রতি ও যে প্রচন্ড এক মানসিক আসক্তিতে ভুগছে, এটাই কি প্রেম? ওর সাথে সারাটি জীবন একসাথে কাটানোর যে সুপ্ত এক ইচ্ছে ওর মনোজগতের গোপন কুঠুরি থেকে মুক্ত হতে চায় এর নাম-ই কি ভালোবাসা?

————————————————————————-

চারদিকে শীতের আমেজ। ধোঁয়া উঠা ভুতুড়ে কুয়াশারা জেঁকে বসেছে প্রকৃতিতে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে বিশালাকৃতির সূর্য। রোজাদের বাড়ির অন্দরমহলে সকাল থেকেই অনেকটা হুলস্থুল রব। তার কারণ আজ ডিসেম্বরের ষোলো তারিখ। আর ঠিক পাঁচদিন পরে নেহার বিবাহের দিন ধার্য করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ইনায়েত ও ইমতিয়াজ সাহেব ফোন করে জানিয়েছেন তারা যেন পুরো পরিবার নিয়ে বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকেই ও বাড়িতে উপস্থিত থাকে। এর মধ্যে দুটো দিন পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বাকি চারদিন। গত রাতে নিশিতা ফোন করে আজই যেতে বলেছে ওদের। সেজন্য আজিজুর রহমান বড় ভাইয়ের পরামর্শ মোতাবেক দ্রুত কাজকর্ম গুছিয়ে নিয়েছে। বাড়ির সকলেই নিমন্ত্রিত বলে রোজার মন খানিকটা বিষন্ন। ও ভেবেছিল, বিয়েতে যাবে না। বাড়িতে চাচা-চাচীর সঙ্গে থেকে যাবে। কিন্তু সুলতানা এমনভাবে জোরজবরদস্তি করলো যে রাজি না হয়ে পারলো না রোজা৷ কীভাবে নেহা-ফিহার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে ভাবলেই ওর কপাল চাপড়াতে ইচ্ছা করে। সবচেয়ে বড় কথা, কোনমুখে সে আদ্রিশের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে? লোকটার চোখে চোখ রাখলেই তো ওর মনের ভেতরটা পড়ে ফেলতে পারবে আদ্রিশ!
মনোবল শক্ত রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করে আকাশী-নীল রঙের সালোয়ার-কামিজ গায়ে জড়িয়ে নিলো রোজা। চুলগুলো কোনোরকমে একটা বিনুনি বেঁধে নিলো। সুলতানা মেয়ের মতিগতি সুবিধের মনে করতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, ‘একি! তুই বড় স্যুটকেসটা নিবি না? বইখাতা ছাড়া ওখানে গিয়ে কি পড়াশোনা করবি? তাছাড়া তোর ভার্সিটির ছুটিও তো প্রায় শেষ। আবার ফিরতি আসবি নাকি এখানে?’

রোজার টনক নড়লো। বাড়ির কেউ-ই তো এসব ঝামেলার কথা জানে না। রোজা যে ওখানকার সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছে এটা তো ওদের বলে নি সে। বাড়ির সবাই জানে ও গ্রামে ছুটি কাটাতে এসেছে। কিন্তু এখন মা’কে কি বলবে? বলে দেবে যে ও আর শহরে ফিরতে চায় না? ওকে ভাবনায় নিমগ্ন দেখে সুলতানা রেগে ওঠলেন, ‘তোর হয়েছেটা কী আমাকে বলবি? ফাজিল মেয়ে কোথাকার। থম মেরে বসে না থেকে সবকিছু গুছিয়ে নে। এখন রওয়ানা দিলে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে যাবে।’

রোজা মাকে আরকিছু বলার প্রয়োজন মনে করলো না। দরকারি জিনিসপত্র ব্যাগে গোছাতে শুরু করলো। দূরত্বই ভালোবাসার গুরুত্ব বোঝায়। বোধহয় এতদিনের বিচ্ছেদটা রোজার জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। নয়তো নিত্যনতুন সব অনুভূতির সঙ্গে ওর পরিচয় ঘটতো না। হিম ছড়ানো ঠান্ডা বাতাসে ওর হৃদকম্পন বারবার প্রমাণ করছিলো ওর চেতনায়-অনুভূতিতে আদ্রিশ নামক লোকটি কতটা মিশে আছে। সময় নামক প্রতিটি মুহূর্ত নিদারুণ সব স্বপ্নের জন্ম দিচ্ছিলো ওর অনুভবের প্রহরে প্রহরে!

—————————————-

বাড়ির বড় মেয়ের বিয়ে বলে আদ্রিশদের কাছের আত্মীয়স্বজন সবাই বিয়ের প্রায় এক সপ্তাহ আগেই চলে এসেছে। বাড়ির সব কাজকর্ম সবাই মিলেমিশে করছে। সুহানা শেখকে তার বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছে উৎস। অপরাধবোধে তিনি আর বেশি বাড়াবাড়ি না করলেও ইশা মায়ের কাছে ঘেঁষলো না, এমনকি কথাও বললো না। মনে মনে খুবই দুঃখ পেলো সুহানা শেখ। তবে অন্য দিনগুলোর মতো আদ্রিশ আজ আর ঘরের ভেতর কাটালো না। মেহমান ভর্তি বাড়িতে লোকজনদের কাজকর্মের দিকটা সে-ই দেখার দায়িত্ব নিলো৷ ইদানীং যেন রাগ ওর মাথায় চেপে বসে থাকে। পান থেকে চুন খসলেই ওর রাগের শিকার হতে হয় সবাইকে। কি হয়েছে, কেন হয়েছে সবকিছুর কৈফিয়ত ওকে দিতে হয়। এমনকি বাড়ির বাইরের লোকদের সাথেও একই ব্যবহার। ওর এই আচরণে বাড়ির সকলেই অতিষ্ট। তবে সুহানা শেখের সাথে বেশ নম্রভাবেই আচরণ করলো, যাতে ইশা কষ্ট না পায়। আজ বিকেলে অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে ইভেন ম্যানেজমেন্টের লোকদের কাজ তদারকি করছিলো আদ্রিশ। হঠাৎ ম্যানেজমেন্টের এক লোক ওর সাথে বেয়াদবি করায় এক থাপ্পড়ে ছেলেটির দাঁত ভেঙ্গে দেয়। গালের চামড়া রক্তাক্ত করে ছেড়েছে আদ্রিশ। উৎস আর ইমতিয়াজ সাহেব ওকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে ধরাধরি করে ছেলেটাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ওরা। মিতালি ছেলের এই ব্যবহারে খুব রেগে অনেক কথাক শুনিয়ে দিলেন। লিভিংরুমের শান্ত পরিবেশে মিতালির তেজদীপ্ত কন্ঠ আর আদ্রিশের ভয়ঙ্কর রাগ দেখে মেহমানরা সবাই চুপ করে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছিলো। পাছে আবার কার কাজে ভুল হয়ে যায় সে চিন্তা করে ওরা আর সেখানে এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে নিজেদের কাজে মন দিলো। কেউ কেউ আবার মনে মনে আদ্রিশকে গালাগালও দিলো।

আদ্রিশের মেজাজ ঠান্ডা করার জন্য ফিহা একগ্লাস শরবত এনে ধরিয়ে দিলো ওর হাতে। সোফায় বসে গ্লাসে চুমুক দেওয়ারত অবস্থায় হঠাৎই বাড়ির সদর দরজা দিয়ে বাড়ির ভেতর পদার্পণ করা মেয়েটিকে দেখে রক্ত ছলকে ওঠলো যেন! ও কি ভুল দেখছে? কয়েক সেকেন্ড চোখদুটো বন্ধ করে জোরে নিঃশ্বাস নিলো আদ্রিশ। তারপর চোখদুটো খুলে আবারও সামনে চাইলো। নাহ, ও ভুল দেখেনি। রোজানু সত্যিই এসেছে। কিন্তু কেন? আবারও ওকে কষ্ট দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করতে? কিন্তু আগের মতো ভুল যে সে আর করবে না! রোজানু নামক রোগটি যদি ওর মস্তিষ্ক থেকে দূর না হয়; তাহলে সেই মস্তিষ্কটাকেই এবার নষ্ট করে দেবে সে! তবে নিজের জায়গা থেকে উঠলো না আদ্রিশ, চোখদুটো মোবাইল ফোনে নিবদ্ধ রেখে ধীরেসুস্থে শরবতের গ্লাসে চুমুক দিলো।

এ বাড়িতে পা রাখতেই যে আদ্রিশকে চোখের সামনে দেখতে পারবে ঘূর্ণাক্ষরেও ভাবেনি রোজা। মিতালি-নিশিতা সবাই ওদেরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও রোজার মনযোগ ছিলো সম্পূর্ণ আদ্রিশের ওপর। কতদিন পর ওকে দেখলো সে? একদিন, দুইদিন নয়, একমাসেরও বেশি সময় পর। নিজের মধ্যে খুব লজ্জাবোধ কাজ করলেও আদ্রিশের পাশের সোফায় বসে থাকা ইশা, নেহা-ফিহার সঙ্গে আলাপ করতে এগিয়ে গেলো রোজা। ইশা-নেহা ওকে দেখে খুব উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও ফিহা তিরিক্ষি মেজাজ দেখিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আদ্রিশ ভুলেও ওর দিকে তাকালো না। মোবাইল স্ক্রল করতে করতেই দোতলার সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো ও। এটা দেখে রোজা খুব আহত হলো। নেহা সেটা টের পেয়ে ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘ভাইয়া তোর নামটাও শুনতে পারে না এখন।’

রোজা হতভম্ব হয়ে তাকালো। কখন যে অশ্রুজলে দু-চোখ ভিজে ওঠেছিল বুঝতেই পারেনি সে। কীভাবে ভাঙ্গাবে আদ্রিশের রাগ? কীভাবে বোঝাবে আদ্রিশকে ওর অনুভূতির কথা? কীভাবে বলবে যে, সে আদ্রিশকে ভালোবাসে?

—————————————————————————

Israt’s Typescripts
[নোট: কাল দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু লিখতে গিয়ে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় পোস্ট দেইনি। আরো কিছু শব্দ-বাক্যংশ যুক্ত করে মোটামুটি বড় পর্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনারা নিজেদের মতামত জানাবেন আশা করছি। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।]

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here