#অনুভূতি
#Roja_islam
#part 12
ঐ দিন এর পর দেখতে দেখতে ২ সাপ্তাহ চলে গেছে। এই দুই সাপ্তাহ বর্ণ না বেলা’র সাথে কথা বলেছে না বেলা’কে তার সাথে কথা বলতে দিয়েছে।পুরুপুরি ইগ্নোর করছে বর্ণ বেলা’কে। কারন সে আর বেলা’র পাগলামো নিতে পারছে না।বার বার নিজের বউ এর অন্যের কথা শুনতে। এতো দিনে বেলা বাইরে’র পা রাখতে পারে’নি অনেক চেষ্টা করেছে বেলা একটি বার কলেজ যেতে কিন্তু বর্ণ ওর জন্য পারেনি। বর্ণ কোনো ভাবে’ই বেলা কে বাইরে যেতে দেয়’নি। ঐ দিন এর পর থেকে বর্ণ সব সময় বেলা’র সাথে রেগে থাকে তাই বেলাও ভয়ে কিছু বলতে বা করতে পারে’নি কিন্তু আজ বেলা কলেজ যাবে যাবে যাবেই ভেবে নিয়েছে মনে মনে।
.
আজ বেলা সকাল সকাল উঠে বর্ণ ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর বর্ণ ঘুমুচ্ছে। আজ বেলা তার বর কে পর্যবেক্ষন করছে। এতো দিনে ভালো করে দেখছে বেলা বর্ণ’কে। বর্ণ দিকে কিছুক্ষন এক নজরে দেখে বেলা বলে।
.
– এই লুচু হনুমান’কে দেখে একটা কথা’ই মাথায় আসছে। সেটা হলো চকলেট বয়।ইশ একদম খেয়ে……..
ইয়া আল্লাহ ছিঃ ছিঃ কি ভাবছি এসব আমি।
না না এসব ভাবা যাবে না নিয়ান রাগ করবে।বেলা ভাগ এখান থেকে।
.
বলেই বেলা উঠে ওয়াশরুমের দিকে দৌড় দেয়। এক্টু দৌড় দিয়ে আবার বর্ণ ওর কাছে এসে কপালে একটা আলতো করে চুমু এঁকে দিয়ে বেলা আবার ছুটে ওয়াশরুমে চলে যায়।
.
কাউর গরম শ্বাস মুখে পরায় বর্ণ ওর ঘুম ভেঙে যায় কিন্তু চোখ খুলে’নি বর্ণ। কিন্তু যখন কপালে কাউর ঠোঁটে’র স্পর্শ পায় তখন চোখ খুলে দেখে বেলা দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকছে। বর্ণ সাথে সাথে উঠে বসে পরে এটা দেখে আর ভাবতে থাকে।
.
– মানে বেলা আমার কপালে কিস করেছে??
না না বেলা কেনো করবে! কিন্তু আমি যে ফিল করলাম। এই মেয়ে’র প্রেমে পরে পাগল হয়ে গেলাম না তো??
.
কপালে হাত দিয়ে বর্ণ বেলা’র কথা ভাবছে। এসব ভাবনার মধ্যে’ই বেলা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। বর্ণ কে এভাবে বসে থাকতে দেখে বেলা চিন্তায় পরে যায়।
.
– ইয়া আল্লাহ। এই লুচু হনুমান দেখে ফেলেনি’তোঁ । না, না ঘুমিয়ে ছিলো তো দেখবে কি করে?
.
এসব ভেবে’ই বেলা নিশ্চিন্তে চেঞ্জিং রুমে গিয়ে তৈরী হচ্ছে।
বর্ণ বেলা কে দেখে বেলা’র পিছন পিছন চেঞ্জিং রুমে গিয়ে বেলা’র পিছনে দারিয়ে বেলা’র দিকে তাকিয়ে থাকে।
বেলা কিছুক্ষন পর টের পায় তাঁর পিছনে কেউ আছে। পিছন ফিরে’ই দেখে বর্ণ।
– আপনি?
-…..
– কি হলো কথা বলছেন না কেনো…. ওহ হ্যা আপনি তোঁ আমার সাথে কথা বলেন না?
.
বর্ণ আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে যায়।
বেলা’র খুব খারাপ লাগে বর্ণ কথা বলে নি দেখে।
.
– এক্টু কথা বললে কি এমন হয় আমার সাথে। আর আমারি কেনো কষ্ট লাগে এই হনুমান’টা আমার সাথে কথা বলে না বলে? জানি নাহ কিচ্ছু জানিনা। শুধু মন বলে আমার সব চাই।আচ্ছা এটার মানে কি বলবো আমি। আমার সব চাই মানে বর্ণ, নিয়ান দু জনকেই চাই। ইয়া আল্লাহ ছিঃ ছিঃ বেলা চুপ কর। আমি বলি তোঁর শুধু নিয়ান কে চাই। আর আজ বর্ণ অফিস গেলে তোঁর যেভাবেই হক কলেজ যেতে হবে নিয়ান কে খুঁজতে হবে।
.
.
.
রাহি, বর্ণ, বেলা এক সাথে বসে ব্রেকফাস্ট করছে। বেলা একপ্রকার জোড় করে’ই ব্রেকফাস্ট করছে। কারন তার পেটে খাবার ঢুকছে না।এই ভয়ে যে বেলা কলেজ যাবে বর্ণ জানলে কি করবে।
দেখতে দেখতে রাহি,বর্ণ বেরিয়ে যায় বাসা থেকে। বেলা ওতপেতে ছিলো কোন সময় তাঁরা বেরুবে। ভাই-বোন চলে যেতে’ই বেলা শয়তানি হাসি দিয়ে। বাসা থেকে বের হয় চুপিচুপি কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন দারোয়ান বেলা দেখে বলে।
– ম্যাম আপনি বাইরে যেতে পারবেন না। স্যার মানা করেছে আপনাকে কোথাও যেতে দিতে।
.
দারোয়ান এর কথা শুনে ভয়ে ঢোক গিলে। তারপর নিজেকে সামলে বলে।
– আপনি আপনার স্যার কে জিজ্ঞেস করুন সেই বলেছে আমাকে বাইরে যেতে।
– ঠিক আছে ম্যাম আমি স্যার কে ফোন করছি!
.
বেলা’র ভয়ে হাটু কাঁপছে।এখন কি হবে এই ভেবে বর্ণ জানলে ঠিক কি করবে বেলা’র বেলা বুঝতে’ই পারছে।
বেলা দেখলো দারোয়ান ফোন করতে এক্টু ভেতোরে গেছে বেলা’র মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
দারোয়ান আসার আগেই বেলা নিজেই গেট খুলে সেখান থেকে পালালো।
– যাক বাবা যা হয় হক। আজ আমি কলেজ গিয়ে নিয়ান এর খবর বের করার পর বর্ণ আমায় মেরে ফেলুক তাও দুঃখ নেই। অন্তত খুঁজতে তোঁ পেরেছি নিয়ান কে এই ভেবে বর্ণ ওর হাতে মরেও খুশি থাকবো।কিন্তু সালা নিয়ান এর বাচ্চা গেলোটা কইইইইইইইইই।আমাকে মাঝ রাস্তায় ফেলে। পেলে খবর আছে তোঁর নিয়ায়ায়ান এর বাচ্ছায়ায়ায়া।
.
বেলা ফোন টাকা কিছু’ই না থাকা’র কারনে।
হেটে হেটে’ই কলেজ গেলো। গিয়ে’ই যেখান টায় নিয়ান এর বন্ধুরা সবাই আড্ডা দেয় ওখানে গেলো। গিয়ে নিয়ান কে দেখতে না পেলেও বাকি সবাই কে দেখতে পেলো বেলা সামনে গিয়ে সবার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলো।
– নিয়ান কোথায়। — চেঁচিয়ে।
.
সবাই আড্ডা থেকে মনোযোগ সরিয়ে কে চেঁচিয়ে উঠলো দেখার জন্য পিছন ফিলতে’ই বেলা কে দেখে ভাবি, ভাবি শুরু করলো। কিন্তু রাফি সবাই কে চলে যেতে বলে। নিজে বেলা’কে নিয়ে একটা নিরব জায়গায় বসে।
– ভালো আছো ভাবি?
– ভাবি’টা আপনা ভাই এর বউ হয়ে হলে ভালো থাকতাম! — চেঁচিয়ে।
[ বেলা বুঝাতে চেয়েছিলো। রাফি’র ভাই মানে নিয়ানের বউ হয়ে। রাফির ভাবি হতে পারলে ভালো থাকতো বেলা। কিন্তু রাফি বেলা কে ভাবি ডাকছে ঠিক কিন্তু। সে তো নিয়ানের বউ না। বর্ণ ওর বউ]
.
রাফি বেলা’র কথা’র আগা মাথা কিছু’ই বুঝলো না তাই বললো।
– মানে। — ভ্রু কুঁচকে।
– কিছু না আপনাকে বুঝানো’র টাইম নেই আমার। বলেন নিয়ান কই।
– নিয়ান কে কারা জেনো তুলে নিয়ে গেছে।
– মানে?? কারা তুলে নিয়ে গেছে? আর কেনোই?? — অবাক হয়ে।
– কেনো জানি’না।
– কারা তুলে নিয়ে গেছে তা তোঁ জানেন নাকি?
– নাম শুনেছি। কিন্তু চিনিনা আমি।
– কি নাম???
– শুনেছি কাদের খান নামে’র এক লোক তুলে নিয়ে গেছে।
.
নাম’টা শুনে বেলা’র মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। বেলা তাড়াতাড়ি উঠেতে নিলে রাফি বেলা’র হাত ধরে ঠিক ঐ সময়’ই। বেলা’র নাম ধরে কেউ ডাকছে শুনতে পায়। বেলা সামনে তাকিয়ে’ই দেখে বর্ণ অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বেলা’র হাতে’র দিকে। এটা দেখে’ই বেলা রাফি’র থেকে হাত ছাড়িয়ে আল্লাহ, আল্লাহ করতে করতে তাড়াতাড়ি বর্ণ ওর কাছে যায়।
.
বেলা বর্ণ কাছে যেতে’ই। বর্ণ বেলা’র হাত শক্ত করে ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। রাফি তাকিয়ে আছে বেলা আর বর্ণ ওর যাওয়ার দিকে।
.
চলবে….