#অনুভূতি
#Roja_islam
#part 3
.
বর্ণ আস্তে আস্তে নিচে গিয়ে বাবার পাশে বসে বললো।
– বাবা নেক্সট এমন হবে না।
-না হলেই ভালো…
আর রাহি তুমি ও তোমার ভাবির খেয়াল রাখবে।আমি কিন্তু আজই চলে যাবো সাবধানে থাকবে।
– ওকে বাবা। (রাহি হচ্ছে বর্ণ এর একমাএ বোন)
-আর বর্ণ তুমি আমার সাথে রুমে এসো কথা আছে।
-জ্বী বাবা।
.
বর্ণ বাবার পিছন পিছন তার রুমে গেলো।
-তোমাকে কিছু কথা বলবো। কান খুলে শুনে নাও।
-জ্বী বাবা!
-বেলার মা নেই তোমাদের মতোই একা মানুষ হয়েছে। তাই বেলা অনেক ছোট মানুষের মতো করে।কিন্তু বাবা কে খুব ভয় পায় তাই বিয়ে টা করেছে কিন্তু আমি জানি বেলা উল্টাপাল্টা করবে।কিন্তু এটাও আমি জানি তুমি ঠিক মানিয়ে নিবে বেলার সাথে।আর যদি আমি অন্য কিছু শুনি তো তোমার জন্য ভালো হবে না। আমি আজই চলে যাবো বাইরে অফিস এর কাজে জানো ই তো।আমি ঐ দিক টা সামলাই তুমি অফিস ঠিক মতো যেও ওকে।
– ওকে বাবা। তুমি কোন সময় বের হবে?
– ৫ মিনিট!
– ওকে।
– তোমায় এয়ারপোর্ট ড্রপ করে দিবো?
– দরকার নেই তুমি বেলার সাথেই থাকো।
– ওকে বাবা আশি।
– হুম।
বর্ণ বাবার রুম থেকে বেরিয়ে গেলো নিজের রুমের উদ্দেশ্য।
– দেখোই না বাবা তোমার ধানিলংকা পুত্রবধূর আমি কি হাল করি। এই মেয়ে কে মানিয়ে নিবো না আমি বরং মানুষ করবো আমি।এবার দেখবে বর্ণ এর আসোল রুপ। যেখানে আমাকে সবাই ভয় পায় ঐ জায়গায় এই মেয়ে কিনা আমায় কাল রাত থেকে যা নয় তাই বলছে করছে।এবার বুঝবে মজা। বিয়ে যখন করেছি আর ছাড়াছাড়ি নাই।- মনে মনে
.
বর্ণ রুমে গিয়ে দেখে পুড়া ঘরে জামা কাপড় দিয়ে ছোড়ানো ছিটানো।বর্ণ রাগ উঠে গেলো কিন্তু বেলা দেখেই রাগ গায়াব হয়ে গেলো। বেলা শুধু একটা টাওয়াল পড়ে কি জেনো খুঁজছে। বর্ণ হা করে তাকিয়ে আছে বেলার দিকে।কিন্তু বেলা কাপড় খুঁজতে এতো ব্যস্ত বর্ণ কে দেখতে পায়নি এখনো যে বর্ণ তাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।
.
– এই মেয়ে তো আমায় পাগল করে দিবে।আল্লাহ বাচাও সুন্দরী বউ এর হাত থেকে।
বর্ণ কোনো রকম নিজেকে ঠিক করে চিল্লিয়ে বললো।
– এই ফাজিল মেয়ে। আগে তো জিন্স পরতে এখনতো দেখছি তাওপরা ছেড়ে দিয়েছ।
– আয়ায়ায়ায়ায়া…আপনি?
.
বর্ণ কে দেখে বেলা এক চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। বর্ণ বুকে হাত দিয়ে বেডে বসে গেলো।
– আল্লাহ হার্টবিট এতো ফাস্ট চলছে কেনো আমার। বাচাও এই মেয়ের হাতথেকে আল্লাহ।
.
একটু পরে বেলা আবার জিন্স আর শার্ট পরেই বের হয়। যাদেখে বর্ণ ও আবার রেগে যায়।
– এই মেয়ে বলেছি না জিন্স না পরতে। কথা কানে যায় না?
– আগে আমার কথা শুনুন রুমে একটা মেয়ে আছে জানেন তো নক না করে কেনো এসেছেন? হ্যা?
– আমি বুঝিনি তুমি এভাবে থাকবে?
– এর শাস্তি হলো পরবোনা আমি শাড়ি।
–ডাহামিথ্যে কথা আমি পুড়া লাগেজ খুজছি একটা শাড়ি ও পাইনি।তাই বাহানা ধরছি পরমুনা।হিহি।- মনে মনে
.
বর্ণ রেগেমেগে বেলার দু বাহু ধরে দেয়ালে চেপে ধরে।
– আমি তোর হ্যাসবেন্ড তোকে সব ভাবে দেখার আমার অধিকার আছে। আর শাড়ি তুই পরবিনা ঠিক আছে সেই ব্যবস্থা ও আমি করছি।
– কি করবেন আপনি? – ভয়ে
– নিজে না পরলে আমি পড়িয়ে দিবো আর কি?
– আল্লাহ কি এসব বলে এই হনুমান বাচাও আমাকে কেউ। নিয়ান কই তুমি। – মনে মনে
.
বর্ণ বেলা কে ছেড়ে শাড়ি খুঁজতে থাকে।না পেয়ে।
– শাড়ি কই?
– শাড়ি ই তো নেই।
– নেই মানে?
– নেই মানে। আমি তো শাড়ি পরি না তাই নেই আমার কাছে শাড়ি আমি খুঁজেছি পাইনি তাই তো বাহানা ধরছি পরবোনা শাড়ি।
– ওহ… ওকে বাট ভেবো না তাই বলে পরতে হবে না তোমার।আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি ওয়েট।
.
বলেই বর্ণ হন হন করে বাইরে চলে যায়।
বেলা বর্ণ এর জাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
– আল্লাহ শাড়ি জেনো না পায়।আমি ছোট মানুষ শাড়ি পরতেই পারিনা।সামলাবো কি করে? – মনে মনে
.
বর্ণ রাহির কাছে যায় শাড়ি খুঁজতে।
– রাহি রাহি? কই তুই?
– কি ভাই চিল্লাছিস কেনো? কান ফেটে গেলো আমার।
– সুখে চিল্লাচ্ছি। এখন বল তোর কাছে শাড়ি আছে?
– হাহা বাবার কথা মতন দেখি। বউ কে শাড়ি পরাতে তুই দেখি উঠে পরে লেগেছিস।
– হাসি থামা যেটা জিজ্ঞেস করছি ঐ টা বল।
– বকাদেস কে দিচ্ছি আছে বোধহয় এক দুই টা।
– তাহলে দে একটা এখন তাড়াতাড়ি। ঐ বদ মেয়ে কে পরিয়েই ছাড়বো আজ শাড়ি আমি।
– বাবা তো চলেই গেছে তাহলে এসব করে লাভ কি?
– তোকে যা বলেছি তাই কর। – চিল্লিয়ে
– ওকে ওকে দিচ্ছি।
– তাড়াতাড়ি দে।
.
রাহি একটা শাড়ি বের করে এনে দেয় বর্ণ ওর হাতে।
– এই নে ধর। একটা কথা বলি?
– কি?
– তুই না ডিভোর্স দিয়ে দিবি তোর বউ কে তো এতো কিছু করছিস কেনো।
– দিবো না প্লেন চেঞ্জ।
– হাহাহা ভাই তোর বউ পছন্দ হয়েছে তাই তো?
যাক এমন সুন্দরী ভাবি আমার ও হাত ছাড়া হলো না তাহলে।
.
রাহি হাসতে থাকে। বর্ণ আর কিছু না বলে নিজের রুমে চলে যায় গিয়ে দেখে কাল রাতের মতো বেলা টেবিলের উপর পা তুলে বসে আছে। বর্ণ সামনে গিয়ে বলে।
– এই মেয়ে তুমি ভালো করে বসতে পারো না হ্যা?পুরা রুমে বসার জায়গার অভাব পরেছে যে তুমি এখানে ব…..
– আমার মন চায় আমি বসি আপনার কি?
– আহ বর্ণ কন্ট্রোল কর কন্ট্রোল কর।তোরই তো বউ এতো রাগ দেখালে চলবেনা – মনে মনে
.
বর্ণ এর হাতের দিকে বেলার নজর পরতেই। বেলা মুখটা বাংলার পাচ এর মতো হয়ে যায়।বর্ণ বুঝতে পেরে।এক টানে বেলা কে দার করায়।
– কি করছেন আপনি ছাড়ুন।
– উল্টাপাল্টা কিছু বললে। তোর কি হাল করি দেখবি। কাল রাত থেকে অনেক বলেছিস এখন আমি বলবো তুই শুনবি। – কটমট করে বলে বর্ণ
.
বেলা কিছু টা ভয় পায়।
– ঠিক আছে বলবো না।আমি চুপ। – নিজের ঠোঁটে এক আঙুল রেখে।
.
বর্ণ ওর খুব হাসি পাচ্ছে বেলার কিউট ফেস দেখে। কোনো রকম হাসি চেপে বেলার হাতে শাড়ি দিয়ে বলে।
– যাও এখানে সব আছে পরে এসো।
.
বেলা মাথা দুলিয়ে চলে যায় ওয়াশরুমে। বর্ণ বেডে বসে ফোন টিপতে থাকে। কিছুক্ষন পর
বর্ণ লক্ষ করে ১ ঘন্টা হয়ে গেছে কিন্তু এখনো বেলা বের হয়নি। তাই বর্ণ বেলা কে ডাকতে থাকে।
– বেলালা? এই মেয়ে কি করছ তুমি এতো ক্ষন লাগে ? আজ কি থাকবে ভেতরে?
.
বর্ণ এর গোলা শুনা মাএ বেলা দরজা খুলে দেয়। আর বর্ণ হা করে তাকিয়ে আছে বেলার দিকে।
– বেলা এটা কিভাবে পড়েছ শাড়ি?
– আমি এর থেকে বেশি পারিনা।- ঠোট উলটিয়ে বলে বেলা।
.
বেলাকে দেখে সব মিলিয়ে বর্ণ ওর খুব হাসি পাচ্ছে।বর্ণ আটকাতে না পেরে হো হো করে হেসে দেয়। বেলা শুধু শাড়ি কোনো রকম পুরাটা পেচিয়েছে রেখেছে গায়ে আর।হাটলেই পরে যাবে এমন অবস্থা।ঠোট উলটিয়ে রাখার কারনে। পুরাই পিচ্ছি বাচ্চা লাগতেছে বেলা কে যার কারনে। বর্ণ হাসি আটকাতে পারেনি।বর্ণ হাসতে হাসতেই বললো।
– বেলা আমার না তোমায় ধরে আদর করে দিতে ইচ্ছে করছে। কত কিউট তুমি।
.
বেলা লজ্জা পেলো বর্ণ ওর কথায়। বর্ণ হাসি থামিয়ে আস্তে আস্তে বেলার কাছে গিয়ে বেলার মুখটা উচু করে।
চলবে….