অন্তরিন প্রণয় পর্ব-২৯

0
1001

#অন্তরিণ_প্রণয়
#পলি_আনান
#পর্ব_২৯

সারা রুম জুড়ে পাইচারি করে একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে সোফায় বসে যায় সেহেরিশ।হাতে থাকা উপন্যাস বইটা নেড়ে দেখে ছুড়ে মারে বিছানার উপর।একা থাকতে যেন সমস্যা না হয় তার জন্য একগাদা বই কিনে এনেছে আফীফ।প্রথম প্রথম বিরক্ত লাগলেও একটা পর্যায়ে বই পড়ার উপর নেশা লেগে যায়।কিন্তু বর্তমানে আবার তার কেমন যেন অসহ্য লাগছে সবকিছু।অল্পতেই ক্লান্তি নেমে এসে ভর করেছে শরীরে।আজ সেই দুপুরে আফীফ বেরিয়েছে এখনো আসেনি।কি অদ্ভুদ সে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাত নয়টা দেখে উঠে গিয়ে বিছানায় শুয়ে যায়।ধীরে ধীরে তার চোখে নেমে আসে রাজ্যের ঘুম।

– স..সেহেরিশ!

পরিচিত কারো কন্ঠো কানে আসতেই সেহেরিশ দু’চোখ চমকে খুলে তাকায়।তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে চিরচেনা সেই প্রিয় মুখ।
– সেহেরিশ!
সেহেরিশ উঠে বসে।তার দু’চোখকে সে বিশ্বাস করতে পারছে না।জুহি তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।তার বেস্ট ফ্রেন্ড জুহি।
সেহেরিশ উঠে দাঁড়িয়ে যায়।চোখে মুখের বিস্ময় কাটিয়ে ঝাঝালো গলায় বলে,

– তুই এখানে কি করছিস?বেইমান।
– সেহেরিশ আমার কথাটা শুন।
সেহেরিশ জুহিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
– আরে তুই রেগে যাস না প্লিজ সেহেরিশ আমার কথাটা শুন।
– কি শুনবো?কি শুনবো বেইমানের কথা শোনার ইচ্ছা আমার নেই।
– তোর সাথে আমি কি করেছিলাম।প্লিজ সেহেরিশ মাথাটা ঠান্ডা কর।
– কি করতে বাকি রেখেছিস? তোর ভাইকে দিয়ে এবার আমাকে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করে দে।আমার আর ভালোলাগছেন না এইসব।
– সেহেরিশ রাগের মাথায় এইসব বলে লাভ নেই তুই প্লিজ আমার কথা শুন।

সেহেরিশ শুনলোনা।জুহি এগিয়ে এসে তার হাত ছুঁয়ে দিতেই রাগ দেখিয়ে আবারো ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়।টি-টেবিলের উপর থাকা কাচের গ্লাসটা নিয়ে ছুড়ে মারে জুহির মাথায়।সেহেরিশের এতটাই রেগে গেছে যে তার মাঝে হিতাহিত জ্ঞান নেই।শেষ বার কফির মগটা ছুড়ে মারতেই মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকে জুহির।কিন্তু জুহি এখনো সেহেরিশের ভুল ভাঙ্গাতে ব্যস্ত।
.
ব্লাক হাউজের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে পাইচারি করছে মুনিফ।আফীফ তাকে আজ বলেছে আসতে তার দেরি হবে তাই জুহির রিকুয়েষ্টে মুনিফ রিক্স নিতে রাজি হয়।ব্লাক হাউজের চাবি বর্তমানে একমাত্র আহনাফ দেওয়ান এবং আফীফের কাছে থাকে।আহনাফ দেওয়ানের পায়ে ধরে মিনতি করায় এক পর্যায়ে তিনি চাবি দিতে রাজি হন।

– কি রে তুই এখানে?
আফীফের কন্ঠে শুনে মুনিফ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।তার বুকের ভেতরে লাফালাফি করা হৃদপিন্ডটা এবার যেন লাফিয়ে বেরিয়ে আসবে।
– ক. কিছু না ভাই।
– কিছু না মানে?একি সেহেরিশের দরজার তালা খোলা কেন?
আফীফ রেগে যায়। দ্রুত দরজার ছিটকিনি খুলে রাগান্বিত সেহেরিশকে দেখে চমকে যায়। ডানে তাকাতেই রক্তাক্ত জুহিকে দেখে আপনা আপনি মুখটা হা হয়ে যায়।
– জিউ!জিউ তোর এমন হলো কি করে?
– ভাইয়া আমি সেহেরিশের সাথে কথা বলতে চাই।প্লিজ তুই ওকে শান্ত থাকতে বল।
– বললাম তো তুই বেরিয়ে যা এখান থেকে আমার কিছু জানার নেই আর কিছু শোনার নেই।

সেহেরিশের কথায় আফীফের বুঝতে বাকি নেই জুহিকে প্রহার সেহেরিশ করেছে।আফীফ জুহিকে টেনে কাছে আনে, সেহেরিশের দিকে তাকিয়ে ক্রুদ্ধ সুরে বলে,
– বারবার তোমার ভুল আমাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করে আর তা তুমি বুঝেও বোঝোনা।

.
জুহির পাশে অপরাধী মুখ করে বসে আছে আফীফ।তার ভেতরটায় নিংড়ে যাচ্ছে লজ্জায় নত হচ্ছে সবার কাছে বার বার।ফাতেমা তার দিকে তাকিয়ে রুষ্ট কন্ঠে বলে,
– এই মাইডার মাঝে কি আছে বুঝিনা আমি।একটা গেলে দুইডা আইবো।তবুও এই মাইয়াডার সব কীর্তি ভুইলা তারে নিয়া থাকস তুই।আমগো কোন দাম নাই তোর কাছে এহন তো আমরা পর।ওই মাইয়ার কারনে আজ আমার নাতিনডার মাথাডা ফাটলো এর জবাব তোরে আজ দিতেই হইবো।

ফাতেমার কথায় চোখ তুলে তাকায় আফীফ।

জুহি তার দাদী ফাতেমার দিকে তাকিয়ে বলে,

– দাদীজান সেহেরিশকে নিয়ে বাজে বকবে না।সেহেরিশ আমার কি তা তোমরা জানো না।ইতালিতে আমার আরেক পরিবার ছিল তারা।আঙ্কেল আন্টি কখনো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি বরং তারা সবসময় নিজেদের মেয়ের মতো আমাকে দেখে রেখেছে।আমার নিজের কাছে বর্তমানে অপরাধী লাগছে।

জুহির কথায় তাল মেলায় তার মা তাহিরা,

– হ্যা জুহি ঠিক বলেছে।বলি কি আফীফ এবার সেহেরিশকে ছেড়ে দাও।তোমাদের বিয়ের দেড় বছর প্রায় হয়ে গেছে এখন সুস্থ ভাবে সংসার চালিয়ে যাও।

আফীফ দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে।সেঁজুতি তখনি গমগমে সুরে বলেন,

– কার দোষ দেবো আমি?আমার ছেলের নাকি ওই মেয়ের।ছেলে মেয়েটাকে ভালোবেসেছে আর মেয়েটাও শেষ পর্যায়ে সম্মতি দিয়েছে তবে শেষ ভেজালটা লাগালো তার বাপ।এবার বলুন বাপ বেটির রেষারেষিতে এগারো জন মরলো।সেই পরিবার গুলোর অভিশাপ কি নেই?নাকি সেই মৃত মানুষগুলোর অভিশাপ নেই।তবে চিরতরে এই দেওয়ান বাড়ির গায়ে কলঙ্ক লেপ্টে গেছে।যাই হোক আমি এবার চাই তোরা সংসার গুছিয়ে নে আফীফ।

সেঁজুতির কথায় আফীফ কিঞ্চিৎ হাসে।কিন্তু তার হাসিটা অদ্ভুত।
– আম্মা আমি সংসার করছি আর আমার সংসারে সুখ আছে।কিন্তু সুখের মাঝে অতীতের কালো ছাঁয়াটা নেমে এসে সব তছনছ করে দেয়।

আফীফ উঠে দাঁড়ায়।জুহির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
– জিউ মাফ করে দিস।সেহেরিশের সুখ মানে আমার সুখ।সেহেরিশের দুঃখ মানে আমার দুঃখ।আর সেহেরিশের অপরাধ মানে আমার অপরাধ মাফ করে দিস বোন।
.
সেহেরিশ অস্থির ভঙ্গতি পা দোলাচ্ছে।জুহির জন্য খারাপ লাগা সৃষ্টি হচ্ছে মনে।তবে আবার মনে হচ্ছে সে যা করেছে বেশ করেছ।আফীফকে রুমে ডুকতে দেখে দাড়িয়ে যায়।আফীফ কাছে এসে তার থুতনি চেপে ধরে।

– তোমার ধারণা আছে তুমি কি করেছ?
– যা করেছি বেশ করেছি।জুহি আমার সাথে বেইমানি করেছে।
– না জেনে কথা বলবেনা একদম।
– না জেনে কথা বলা আমার স্বভাব না।আপনি প্রায় সময় জিউয়ের সাথে কথা বলেন তবে জিউ কে?আমি জানতাম না।আমার ইতালিতে থাকা কালীন এত এত ছবি আপনি কি করে পেলেন?দেয়ালের একটা ছবিও আমার তোলা নয় সব আমার অগোচরে তোলা।আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল উওর আমি পাইনি।সেদিন বিয়েতে রাতে আপনার ফোনের মেসেজটি দেখে আমার বিশ্বাসে আঘাত লাগে আফীফ।সেদিন স্পষ্ট জুহির নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছিল,

” ভাইয়া তুমি ব্লাক হাউজ থেকে পারভিন আন্টিকে ছেড়ে দাও।যেহেতু তোমার শর্ত ছিল যেদিন সেহেরিশ তোমার হবে সেদিন পারভিন মুক্তি পাবে।আর সেহেরিশকে প্লিজ তুমি বলার দরকার নেই আমি যে তোমার কাজিন জুহি।আমি দেশে এসে সেহেরিশকে বুঝিয়ে বলবো।সেহেরিশ আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সে অন্তত আমাকে ফিরিয়ে দেবে না।তোমাদের ভালোবাসার জয় হোক!”

ওইদিনে মেসেজটা পড়ে আমার মূহুর্তে জুহিকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে হয়েছিল।এদিকে বাবা আমায় আগে থেকে তার কসম দিয়েছিল যদি পারভিন আন্টিকে মুক্ত করতে পারি তবে আমি যেন ইতালি ফিরে যাই।গায়ে হলুদের আগের দিন রাতে পাপা আমায় বলেছিল তোমার সাথে সংসার বাধঁলে আমি তার মরা মুখ দেখবো।একদিকে বাবা অন্যদিকে তুমি।জীবনটা নরক লাগছিল।তাই সেদিন জুহির বিশ্বাস ঘাতকতায় হুট করে সিধান্তটা নিয়ে নিলাম।তোমায় বিয়ে করে ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে না হয় বিয়ে না করেই পালিয়ে গেলাম।

আফীফ চুপচাপ ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো।সে জানে সব দোষ খুরশীদ আনওয়ারের।বেচারি সেহেরিশ তো খেলার পুতুল।একবার খুরশীদ নাচায় আবার আফীফ।ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আফীফ সেহেরিশকে একপলক দেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।বাইরে দাঁড়িয়ে কাউকে ফোন করে জানতে চায়,

– পারভিন, পারু কারো খোঁজ পেয়েছো তোমরা?
– সরি ভাইজান।পেলাম না।তবে আমরা থেমে নেই সব জায়গায় লোক সেট করা আছে।
– কুত্তার বাচ্চা গুলোকে খুঁজতে এতটা সময় লাগে কেন তোদের?পারভিন আর পারুকে খুজতে যতটা দেরি করবি আমার ঘরের বউ তত কষ্টে থাকবে।আমি যাস্ট তোদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেবো যদি খোঁজ না পাস।দুইবোন ভেবেছেটা কি?তাদের একজন ১৩ বছর নিখোঁজ অন্যজন দেড় বছর।সব তল্লাশি কর আমার এইসব গোলমাল আর ভালো লাগছেনা।
– ভাইজান আমি লোক বাড়িয়ে দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ ভালো সংবাদ পাবেন।
– হুম।

আফীফ আবারো রুমে প্রবেশ করে।সেহেরিশ এখনো দাঁড়িয়ে আছে এসির মাঝেও সে ঘামছে।আফীফ তার পাশে দাঁড়িয়ে গায়ের শার্ট খুলে সোফায় ছুড়ে মারে।আফীফের অঙ্গভঙ্গি দেখে সেহেরিশ ঘাবড়ে যায়।এই ছেলে রাগের মাথায় আবার কিছু করবে না তো।সেহেরিশ ঢোক গিলে আরেকটু চেপে দাঁড়ায়।তখনি কানে বজ্রের ধ্বনির মতো ছুটে আসে আফীফের কন্ঠ।

– চিন্তা ধারা পাল্টাও সেহেরিশ।শাট খুলে ফেলেছি মানে এই নয় যে তোমার সাথে ইয়ে করবো।

আফীফের কথায় সেহেরিশ থতমত খেয়ে যায়।আফীফের লোমশ বুকের দিকে তাকিয়ে সহসা দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।আফীফ তার দিকে তাকিয়ে আড় চোখে বলে,
– আমি তো তোমারি তাকাও যত ইচ্ছে।
– হ্যা আমার তো খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই।
– নেই তো তুমি জানো না,তোমার কাজ আফীফকে সঙ্গ দেওয়া।এই ছাড়া আর কাজ নেই।

আফীফ উদাম দেহে ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসে যায়।সেহেরিশ সেদিকে তাকিয়ে মূহুর্তেই গলে যায়।
– আল্লাহ এই ছেলে এমন কেন?

সেহেরিশের ভাবনার মাঝেও আফীফ ডেকে উঠে,

– টুনটুনি বউ চুপচাপ পাশে এসে বসে যাও।

সেহেরিশ অবাক হয়।একটু আগে তুফান বয়ে গেছে অথচ এই ছেলের কোন হেলদোল নেই।সেহেরিশ আফীফের পাশে বসতেই আফীফ তাকে টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়।এক হাতে সেহেরিশের চুলে বিলি কাটছে অন্য হাতে ল্যাপটপে তাদের পুরোনো ছবির ফোল্ডার বের করে।সেহেরিশ আফীফের বুকে লেপ্টে আছে চুপচাপ।এই মূহুর্তে তার মাথায় কোন চিন্তা নেই,নেই কোন হতাশা।

– দেখো সেহেরিশ এটা আমাদের ছোট্ট জুহি।আর জুহি আমার ছোট চাচার মেয়ে।
– কিন্তু আপনি তো তাকে জিউ বলে ডাকেন?
– আদর করে ডাকি।ছোট বেলায় মজার ছলে ডাকতে ডাকতে এখন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।
– আমি যখন এই বাড়িতে ছিলাম তখন তারা কোথায় ছিল?
– চাচার কাজের উদ্দেশ্য ঢাকায়।তুমি তাকে একটুও দোষী ভেবো না সেহেরিশ।যা করেছে আমার জন্য করেছে।আমি তখন রাত দিন ঘুমের মেডিসিন নিতাম।যার ফলে আমার অবস্থা করুন।সেদিন পারভিনের উপর ভীষণ ভাবে রেগে যাই তাই তাকে ব্লাক হাউজে বন্দি করি এবং ওয়াদা করি যেদিন আমি তোমায় পাবো সেদিন তাকে মুক্তি দেবো।পারভিনকে শারীরিক, টর্চার আমি করিনি।শুধুমাত্র তোমার মতো বন্দি রেখেছি।যখন তোমার কথা মনে পড়তো তখন ইচ্ছে হতো চাবুকের বারি দিয়ে তাকে রক্তাক্ত করতে কিন্তু আমি তখনো নিজেকে দমিয়ে রাখি।কারন সে বেইমানি করেছে আমাদের সঙ্গে আর আমার বিশ্বাস ছিল আমি তোমায় পাবো।সবচেয়ে বড় বেইমান তো পারভিন আমাদের খেয়ে আমাদের সঙ্গ দিয়ে বেইমানি করেছে।
আর জুহি আমার অবস্থা দেখে ইতালিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।তোমাদের খোঁজ খবর শিওর ভাবে পেয়ে জুহি তার পরিবার নিয়ে ইতালি চলে যায়।আর এইভাবে তোমায় নজরে নজরে রাখে।

সেহেরিশ দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।এই মূহুর্তে নিজেকে অপরাধী লাগছে।জুহিতাকে কোন দিন কষ্ট দেয় নি তবে সে আজ কি করলো?মূহুর্তে সেহেরিশ ঠোঁট কামড়ে কেঁদে দেয়।
– আমি ভুল করে ফেলেছি আফীফ।প্লিজ আমায় জুহির সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করে দিন।আমি দেখতে চাই তাকে।
– সম্ভব না।বাদ দাও সেসব কথা।তোমার পারভিন আন্টির বন্দি দশার ছবিটা দেখো,

সেহেরিশ চোখ মুছে ল্যাপটপে তাকিয়ে মুখ কুচকে নেয়,
– এটা পারভিন আন্টি হলেও কিন্তু আন্টির গালে তো এত বড় তিল ছিল না।
– কি বলছো এইসব?
– হ্যা আমার মনে আছে আন্টির গালে কোন তিল ছিল না।
আফীফ চমকে যায় দ্রুত ফোন হাতে নিয়ে সেঁজুতির নাম্বারে কল করে,
– আম্মা একটা কথা জানার ছিল।
– কি কথা?
– পারভিন আন্টির গালে কি কোন তিল ছিল?
– না তিল ছিল তার জমজ বোন পারুর গালে।

আফীফের শ্বাস আটকে গেছে এত বড় ভুল!সেদিন তবে পারভিনের পরিবর্তে দৌবারিকরা ভুলে পারুকে ধরে এনেছিল।কিন্তু আফীফ পারুকে তখনো পাচঁ বছর আগ থেকে খুজে যায়।আর এদিকে পারু তার কাছেই বন্দিনি ছিল।তবে পারভিন কোথায়?জমজ দুই বোন হওয়ার কারনে সবাই চেহারা নিয়ে সংশয়ে ডুবে যায়।

আফীফের চিন্তিত মুখ দেখে সেহেরিশ ভ্রু কুচকে বলে,
– কি হয়েছে?
– কিছু না।
আফীফ সেহেরিশের মাথাটা টেনে কপালে চুমু খায়।
.
কেটে গেছে বেশ কয়েকদিন। দিন দিন সেহেরিশের দূর্বলতা বেড়ে গেছে।হুট হাট ঘুরে যায় মাথা।মাঝে মাঝে বেশ বুমি পায় আফীফ তার অবস্থা বুঝতে পেরে কিট এনে দেয় এবং সেহেরিশকে বলে প্রেগ্ন্যাসি টেস্ট করতে।কিন্তু প্রেগ্ন্যাসির ফলাফল দেখে সেহেরিশ বাকরুদ্ধ।
– কি হয়েছে তোমার চোখ মুখ এমন লাগছে কেন?
– আমি প্রেগন্যান্ট!

সেহেরিশের মুখে হতাশার ভাব এদিকে আফীফ খুশির ঝোকে তার সামনে হাটু মুড়ে বসে কেঁদে দেয় শব্দ করে।
– ইয়েস আমি বাবা হতে চলেছি সেহেরিশ আমাদের সংসারের পূর্ণতা পাবে আর তুমি মা হবে।
– কিন্তু আমি হতে চাই না।
– মানে?
– আমার বাচ্চার প্রয়োজন নেই।

সেহেরিশের এমন কথায় আফীফ প্রত্যুত্তর করার মতো শক্তি পেল না সে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
#চলেবে…..

বিঃদ্রঃ এখানে পারভিন পারু জমজ দুইবোন।আর পারভিনের সাথে আফীফের শক্রতা জানেন।তবে পারুর সাথে কী ঝামেলা তা আগামী পর্ব গুলোতে বুঝতে পারবেন।
❌কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here