#অন্ধকার_মানব(The unpredictable love)
#পর্ব_১৯
লিখা✍️তাজরিয়ান খান তানভি
“আর ইউ অলরাইট জাদ?অনেকদিন হলো তুমি ক্যাম্পাসে যাচ্ছো না?
অ্যানি থিংক রং??
“নো মম।এভরিথিংক ইজ ফাইন।”
“তাহলে??
জাদ কিছুক্ষন চুপ থাকে।জানালার দিকে তাকিয়ে ওই দুর আকাশ দেখে।
“কেন মারলেন আপনারা মাহনুরকে?ওর তো কোনো দোষ ছিল না।”
“জাদ এইসব কি বলছো?
“দোষ তো আমার ছিল তাহলে শাস্তি কেনো ও পেলো বলতে পারেন?
“তুমি এখনো ওকে ভুলতে পারোনি?
“কি করে ভুলবো মম?
নবনীযুক্তা যতবার আমার সামনে এসে দাড়ায় ততবারই মনে হয় মাহনুর এসে দাড়িয়েছে।”
“আই নো জাদ।দিস ওয়াজ আনএক্সপেক্টেড।আমরা কখনো ভাবতে পারিনি নবনীযুক্তার চেহারা হুবুহু মাহনুর এর মতো দেখতে।
কিন্তু এটাও সত্যি যে ও মাহনুর নয়।দ্বিধা শুধুই নবনীযুক্তার পুনর্জনম।”
“আপনারা কি ওকেও মেরে ফেলবেন?
“এইসব তুমি কি বলছো?
“প্লিজ ওকে মারবেন না।ওর তো কোনো দোষ নেই।”
“তুমি ভালো করেই জানো তোমার এইসব ভাবনার কোনো মানে হয় না।নবনীযুক্তা সাথে যা হওয়ার হবে।”
“নো মম,নো।নবনীযুক্তা বাচবে,,ওকে আমি বাচাবো।”
আইভান এসে বলে–
“জাদ তুমি ভালো করেই জানো ইশায়া,,,,,
“আপনারা ভাবলেন কি করে আমি ইশায়া কে বিয়ে করবো।তা কোনোদিন ও সম্ভব নয়।
ফ্রিদা বলে উঠে–
“জাদ শান্ত হও।
জাদ হনহন করে চলে যায়।
.
.
.
গত একমাসে দ্বিধা জাদ এর সাথে একবারও দেখা করেনি,আর ভার্সিটি তে যায় নি।জাদ প্রায়ই ভার্সিটি তে গিয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করে।কয়েকদিন ওর বাসায়ও গিয়েছিল কিন্তু ও দেখা করেনি।দুজন যেনো এখন দুমেরুর মানুষ।
রাত প্রায় তিনটা।হঠাৎ দ্বিধার ঘুম ভেঙে যায়।একটা তীব্র ঘ্রাণ ওর পুরো রুম জুড়ে।ও সব বুঝতে পারে।বারান্দায় গিয়ে দাড়াতেই বাইরের ঘরে জ্বালানো লাইটের আলোয় একজোড়া নীল চোখ দেখতে পায়।সিড়ি বেয়ে ধীরে পায়ে বাইরে এসে দাড়ায় দ্বিধা।
“কেনো এসেছেন আপনি এখানে?
জাদ গার্ডেনে থাকা ছোট্ট বেঞ্চিতে গা এলিয়ে বসে।
“আপনাকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই।”
“চলে যান এখান থেকে,চলে যান।”
“রাগলে কিন্তু আপনাকে বেশ মিষ্টি লাগে।”
দ্বিধা আরো ক্ষেপে যায়।চোখের পানি টলটল করছে,হয়তো এখনি নামবে বৃষ্টি।চোখ রাঙিয়ে বলে–
“আপনি আর কখনো এখানে আসবে না।
শুনেছেন কি বলেছি আমি,,কখনো আসবে না।”
দ্বিধা যাওয়ার জন্য সামনে পা বাড়াতেই জাদ ওকে হাত টান দিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ওর ঘাড়ে থুতনি রেখে বলে–
“ঠিক আছে আর কখনো আসবো না।তাতে যদি আপনি খুশি থাকেন তাহলে তাই হোক।”
দ্বিধা ঘুরে ওর দিকে তাকায়।
“কোথায় যাচ্ছেন আপনি??
“আপনার কাছ থেকে দুরে,,বহুদুরে।
“মানে,,,,?
পিছন থেকে রিশাল ডেকে ওঠে–
“স্পাইসি এতো রাতে এখানে কি করছো??
“ও জাদ,,
বলেই ও সামনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই।
“কি হলো??
“জাদ এসেছিল।”
“কোথায় সে?
“মনে হয় চলে গেছে।”
“কেনো এসেছিল ও?
“জানি না।”
সকালে ঘুম থেকে উঠে রিশাল এর কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে অনেকবার কল কলে জাদ কে।বাট মোবাইল বন্ধ।সেদিন এরপর ও জাদ মোবাইল নাম্বার ডিলেট করে দেয়।আর মোবাইল সুইচ অফ করে রেখেছিল।
রিশাল ওর ঘরেই সোফার উপর বসে ওকে দেখে যাচ্ছে।সে কখন থেকে কল করেই যাচ্ছে।
“রিশাল উঠো আমরা বের হবো।”
“কোথায় যাবো??
“আগে চলো।
বাইরে এসে ওরা গাড়িতে উঠে বসে।
“বলবে তো কোথায় যাবো??
দ্বিধা শক্ত কন্ঠে বলে–
“জাদ এর বাসায়”।
জাদ এর বাসায় এসে দেখে ওদের ঘরে বড় তালা
ঝুলছে।
দ্বিধা রিশালের দিকে অশ্রুভরা নয়নে তাকিয়ে বলে–
“তাহলে কি সত্যিই জাদ চলে গেছে?
“সত্যি করে বলোতো কি হয়েছে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”
দ্বিধা কাল রাতের ঘটনা খুলে বলে।
“ও আচ্ছা তাহলে এই ব্যাপার।
হয়তো ওরা চলে গেছে।ভালোই হলো দেশের মানুষগুলো এইবার শান্তিতে থাকতে পারবে।”
“বাজে কথা বলো না।হসপিটালে চলো।
“হসপিটালে কেনো??
আমার হাত পা তো একদম ঠিক আছে।”
“আর একটা কথাও বলবে না।
পুরো হসপিটাল দ্বিধা মি.আর মিসেস ইন্দ্রিয়াজ কে খুছে চলে।এখটা ও.টি এর কাছে আসতেই ফ্রিদা কে দেখে দৌড়ে আসে তার কাছে।
“আনটি জাদ কোথায়?
ফ্রিদা বেশ অবাক হয় ওকে হসপিটালে দেখে।
“আর ইউ অলরাইট দ্বিধ?।তোমাকে এমন কেনো দেখাচ্ছে?
“আমি ঠিক আছি আনটি।জাদ কোথায়??
“ও তো আজ ভোরেই একটা আমেরিকা চলে গেছে।”
দ্বিধা ধুপ করে বসে পরে।
“তাহলে কি ও সত্যিই ফিরবে না?
“নো মাই গার্ল।এমন তো নয়।ও কিছু দিনের মধ্যেই ফিরে আসবে।ও কি তোমায় ছাড়া থাকতে পারে।”
রিশাল পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো।মনে মনে বলে–
“বাব্বাহ!!মা তো দেখছি অভিনয়ে ছেলের চেয়ে একধাপ এগিয়ে।”
ওর কথা শেষ হতেই ফ্রিদা কড়া দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকায়।
রিশাল না দেখার ভান করে বলে–
“স্পাইসি এখন তো চলো।
জাদ আসলে না হয় আনটি আমাদের জানাবে।
তাই না আনটি?
“হুম”।
বাসায় পৌছাতেই দেখে ইতাফ ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
“প্রফেসর আপনি?
“জ্বি মায়াপরী।আপনি অনেকদিন ধরে ভার্সিটি তে আসেন না তাই দেখতে এলাম।”
“আসলে আমি একটু অসুস্থ ছিলাম তাই।”
“ইটস ওকে মায়াপরী।
আগামী সপ্তাহে ক্যাম্পাসে একটা ফাংশন এর আয়োজন করা হয়েছে।”
“রিপ্তি আমায় বলেছে।”
“আপনি কি আসবেন?
পরক্ষনেই রিশাল পারিজা ইরাম কে বলে–
“আনটি স্পাইসির খু খিদে পেয়েছে।আপনি ওকে খাইয়ে আসুন।”
“আমার আবার কখন খিদে পেলো?
“এতো কথা বলতে হবে না।
কি হলো আনটি যান।আর আঙ্কেল আপনি যান।”
ওরা যেতেই ইতাফ বলে–
“একটু বাড়বাড়ি হয়ে যাচ্ছে না মি.রিশাল?
রিশাল সোফায় পা এর উপর পা তুলে বসে টেবিলের উপর থেকে একটা আপেল নিয়ে তাতে কামড় বসায়।
“তা তো একটু হবেই।”
“আমি তোমার সাহস দেখে অবাক হই।একজন সাধারন মানুষ হয়ে তুমি আমার সাথে প্রতিধন্ধিতা করতে আসো।”
রিশাল উচ্চস্বরে হেসে বলে–
“আপনি যে একটা কাপুরুষ তা কি আপনাকে দেখিয়ে দিতে হবে?
“হোয়াট ডু ইউ মিন?
“আপনি কি ভেবেছেন আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।জাদ এর আসল রূপ স্পাইসির সামনে আনার জন্য এইসব ই আপনার প্ল্যান ছিল।”
“রিশশশালল,,,
“চিৎকার করবেন না।আমি আপনার কালো ছায়া স্পাইসির উপর কখনই পরতে দিবো না”।
ইতাফ হেসে বলে–
“তুমি,,,তুমি বাচাবে মায়াপরী কে আমার হাত থেকে?
“ইয়েস,,ইয়েস আই উইল।
বাট নাউ ইউ জাস্ট গেট আউট ফ্রম হেয়ার।”
“রিশাললললল,,,
“জাস্ট গেট আউট।”
“আই উইল সি ইউ নেক্সট টাইম।ইউ জাস্ ওয়েট এন্ড ওয়াচ।”
“ইয়েস,,আই অ্যাম ওয়েটিং।”
চলবে