অন্ধকার মানব পর্বঃ৩৩ শেষ

0
2590

#অন্ধকার_মানব(The unpredictable love)
#পর্বঃ৩৩_সমাপ্ত

লিখা✍️তাজরিয়ান খান তানভি

জাদ বইটা হাতে নিয়ে বলে–

“এর কোনো প্রয়োজন নেই আমাদের জীবনে।একে ডেস্ট্রয় করে দেওয়া উচিত।এই বই এর জন্য অনেক নিরাপরাধ মানুষের জীবন গেছে।তা আর হবে না।”

জাদ বইটাকে ছিড়তে গেলেই সেখানে উপস্থিত হয় ইতাফ,অধিরাজ আর তাদের আরো সাঙ্গ পাঙ্গ।ওদের দেখেই দ্বিধা ভয় পেয়ে যায়।জাদ দ্বিধার হাতে বই দিয়ে ওকে নিজের বাহুতে আড়াল করে।দ্বিধার শরীর কাপছে।

“হ্যালো মি.জাদ ইন্দ্রিয়াজ।আমি জানতাম তুমি এখানে আসবে।ইচ্ছে করলে আমি এই বই আগেই নিতে পারতাম কিন্তু তার চাবি তো মায়াপরীর কাছে।”

“কেনো এসেছিস তুই?

“ওই বই আমাকে দিয়ে দে।”

“তুই ভাবলি কি করে আমি তোকে এইটা দিবো।”
জাদ বিব্রতিকর হাসে।

“দেখ জাদ,তুই যা করেছিস আমি কিন্তু তা ভুলিনি।ইশায়া কে ভাই সত্যিই ভালোবাসতো।কিন্তু তুই আমার ভাইকে,,,

বলতে বলতে জাদ এর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ইতাফ।জাদ ওকে ছাড়িয়ে এক ঘুষি মারে ওর মুখে।ছিটকে দুরে গিয়ে পড়ে ইতাফ।ইতাফ এর বাবা অধিরাজ আর বাকিরাও ওকে ঘিরে ধরে।কোনোমতে লড়াই করছে সে।অধিরাজ জাদ গলায় চেপে তাকে দেহ থেকে আলাদা করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

জাদ এর হাত এখন বাকি নেকড়েদের কব্জায়।দ্বিধা কে ধরে রেখেছে ইতাফ।নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে দ্বিধা।

জাদ তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ওদের ফেলে দেয়।এক নিমিশেই একজন নেকড়ে মানবের বুকের থেকে তার হৃ্ৎপিন্ড টা বের করে নিয়ে আসে।নিচে পড়ে থাকা একটা কাঠের টুকরো ঢুকিয়ে দেয় অন্য একজনের পেটে।

অধিরাজ বেশি সুবিধা না করতে পেরে ইতাফ কে ইশারা করে।ইতাফ জাদ কে পিছন থেকেই ঝাপটে ধরে।অধিরাজ তার লম্বা আলখাল্লা থেকে এক ধারালো ছুরি বের করে।দ্বিধার চোখ মুখ মুহূর্তেই ফ্যাকাশে হয়ে যায়।ও লুটিয়ে পড়ে নিচে।

অধিরাজ জাদ এর একদম কাছে আসতেই তাকে উড়িয়ে ফেলে দেয় আইভান।সাথে সাথে সেখানে আসে ফ্রিদা,ইশায়া,কিং আর মল্লিকায়আলিয়া।

হাতে দিয়ে ইতাফ কে সামনে এনে ওর বুকে সিলভার এর পাত ঢুকাতে গেলেই অধিরাজ জাদ কে ধাক্কা মারে।আইভান অধিরাজ কে,ইতাফ জাদ এর সাথে আর বাকিরা অন্যদের সাথে লড়তে থাকে।

কিং তার ফন্দি আটে।যখনি জাদ ইতাফের খেল খতম করবে তার আগেই কিং জাদ এর পিঠে সেই অধিরাজ এর আনা ছুরি ঢুকিয়ে দেয়।

ইশায়া সহ বাকিরা চিৎকার দিয়ে উঠে।ব্যথায় অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যায় জাদ।ইতাফ কে ছেড়ে দিলে ও দ্বিধার কাছে গিয়ে বইটা নিয়ে নেয়।ইশায়া চিৎকার করে বলে–

“আই হেট ইউ পাপা।আই হেট ইউ।
জাদ,,তুমি জানো মাহনুর কে মাম্মা না পাপা মেরেছে।”
ইশায়ার এই কথায় দ্বিগুন জ্বলে উঠে জাদ।নিজের পিঠে বিধে থাকা ছুরি বের করে সেটা সরাসরি কিং হার্ট এর মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।

“আমি আপনাকে আগেই বলেছি আমি কাউকে ছাড়বো না।আমার মাহনুর কে মারার শাস্তি তো আপনাকে পেতেই হবে।”

জাদ ছুরিটা বের করে আবার সেই জায়গায় ঢুকিয়ে সেটাকে ঘোড়াতে থাকে।আর কিছুক্ষনের মধ্যেই শান্ত হয়ে যায় কিং এর দেহ।ইশায়া আর মল্লিকায় আলিয়া ভীষন ভেঙে পড়েন।ফ্রিদা তাদের দিকে তাকিয়ে বলেন–

“আজ কিং এর সব সাজা পূর্ন হয়েছে।”
দ্বিধা নড়তে শুরু করে।চোখ খুলেই জাদ বলে চিৎকার দেয়।জাদ তাকিয়ে দেখে ইতাফ দ্বিধা কে ধরে রেখেছে সাথে বইও।নেকড়ে রা সব ওর কাছে গিয়ে দাড়ায়।জাদ অলরেডি হেলতে শুরু করেছে।ভীষন যন্ত্রনা হচ্ছে ওর।কিন্তু এখনো তার কাজ বাকি।

“ইতাফ নবনীযুক্তা কে ছেড়ে দে বলছি।”
ইতাফ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।

“তা সম্ভব নয়।মায়াপরী আমার।তাকে আমি নিয়ে যাবই।”

জাদ এক পা আগাতেই ইতাফ বলে–
“আর এক পা সামনে এলে আমি কিন্তু মায়াপরীর অবস্থাও নবনীযুক্তার মতো হবে।”

“ইতাফফফফফ,,.

“শিসসসসস,নো সাউন্ড।অনেক হয়েছে জাদ।এইবার আমাদের পালা।”

দ্বিধা অশ্রুভরা চোখে তাকিয়ে আছে জাদ এর দিকে।জাদ অভয় দিচ্ছে,,ভরসা রাখুন আমার উপর,আমি আছি।

হঠাৎ ই দ্বিধা ইতাফের হাত থেকে বইটা টান দিয়ে ডান হাতে দিয়ে কিছু পানি ইতাফের মুখে ছিটিয়ে দেয়।পুরো মুখ জ্বলতে থাকে ইতাফের।দ্বিধা দৌড়ে জাদ এর কাছে আসতে গেলেই অধিরাজ ওর পথ আগলে দাড়ায়।জাদ এক নিমিশেই সেই ছুরি অধিরাজ এর বুকে স্থাপন করে।

দ্বিধা কে নিয়ে আসার সময় রিশাল সেই পবিত্র পানির বোতল দ্বিধা কে দিয়েছিলো।আর ও সেটাই ইতাফের মুখে ছিটিয়ে দেয় আর এতে ওর পুরো মুখ জ্বলসে যায়।অধিরাজ এর মৃত্যুতে বাকি নেকড়ে রাও ভয় পেয়ে যায়।ওর ইতাফ কে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।আইভান,ফ্রিদা ওদের পিছু নিতে চাইলেও জাদ এই অবস্থার জন্য ওরা ওকে ছেড়ে দেয়।
জাদ এর বুকে পড়ে দ্বিধা কাদতে থাকে।

“শান্ত হউন।আপনি আজ থেকে মুক্ত।”

দ্বিধার হাত থেক বই নিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয় জাদ।তার পরই পড়ে যায় জাদ।
.
.
.
.
গত পনেরো দিন দ্বিধার জীবনের বেস্ট দিনগুলো ছিলো।ওরা আমেরিকা ফিরে আসে।সেখানে তাদের সকল আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা হয়।ওর চাচাতো ভাই বোন সহ অন্যান্য সকলের সাথে দেখা হয়।ওর খুশি আরো চারগুন বেড়ে যায় কারন এই পনেরো দিন জাদ ওর সাথেই ছিলো।এক মুহূর্তের জন্যও জাদ ওকে ছেড়ে কোথাও যায় নি।আজ সকালেই সবাই বিদায় নেয়।কিন্তু তারপরও দ্বিধা ভীষন খুশি।কারন জাদ বলেছে ও আজকে তার সুধানিধী কে জীবনের সবচেয়ে দামি উপহার দিবে।আর দ্বিধার জীবনে জাদ এর কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে দামি উপহার ওর ভালোবাসা।

সন্ধ্যা থেকেই একের পর এক শাড়ি বদলিয়ে যাচ্চে দ্বিধা।কেনো যেনো কোনাটাতেই ওর মন বসছে না।ও চায় আজ ওকে এতো সুন্দর লাগবে যে জাদ যেনো চোখ ফেরাতে না পারে।

একটা গাঢ় লাল রঙের শাড়ি পড়লো দ্বিধা।সাথে ডার্ক লিপস্টিক।চোখে গাঢ় কাজল।কোনো অলংকার সে পড়েনি।

নিজের রুমের বারান্দায় দাড়িয়ে রাতের আকাশের চাঁদ দেখছে জাদ।কারন আজকের পর তার চাঁদ কে ছেড়ে ওই আকাশের চাঁদই হবে তার সঙ্গি।পিছনে এসে দাড়ায় দ্বিধা।

“জাদ,,,

ওর গলা পেয়ে সেদিকে তাকায় জাদ।
যেনো এক অপ্সরা দাড়িয়ে আছে।ওর আগে কখনো দ্বিধা কে ও এভাবে দেখেনি।তার সুধানিধী যে এতোটা সুন্দর তার জানা ছিলো না।এক নেশাভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও দ্বিধার দিকে।ইচ্ছে হচ্ছে তাকে আজ নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে।অনেক অনেক ভালোবাসতে।দ্বিধা সম্পূর্ণ নিজের করে নিতে।যেখানে শুধু ওর অধিকার থাকবে আর কারও কোনো অধিকার থাকবে না।তার সুধানিধী প্রতিটি অংশে শুধু তার স্পর্শ থাকবে,ভালোবাসার স্পর্শ।

কিন্তু তা সম্ভব নয়।

দ্বিধা ওর নুপুর পড়া পায়ে ঝঙ্কার তুলে এগিয়ে আসে জাদ এর কাছে।নিজেকে জাদ এর বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।জাদ এর ইচ্ছে করছে তার সুধানিধী কে আকড়ে ধরতে নিজের বুকে।
আলতো করে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে—

“এতো সেজেছেন কেনো আপনি?

“কেনো,,ভালো লাগছে না আমাকে?

“সিডিউস করছেন আমাকে??

দ্বিধা ওর বুক থেকে মাথা উঠিয়ে বলে—
“সবসময় এমন কেনো বলেন।শুধু কি আমারই আপনাকে কাছে পেতে ইচ্ছে করে,আপনার কি একটু ইচ্ছে করে না??

“আপনি এতো বোকা কেনো বলুন তো?

“এতো কথা বুঝি না।”

দ্বিধা আবারও জাদ এর বুকে নিজের মাথা রাখে।
“কবে বিয়ে করবেন আমাকে??

জাদ ওকে নিজের থেকে আলাদা করে দাড় করায়।
“তা সম্ভব নয় সুধানিধী।”

জাদ এর কথায় দ্বিধা মুখের রং বদলে যায়,যেনো কেউ ওর শরীরের সমস্ত রক্ত শুষে নিয়েছে।

“এইসব কি বলছেন ??

“যা সত্যি তাই বলছি।আমার কাজ শেষ।আমাকে ফিরে যেতে হবে,সুধানিধী।”

দ্বিধার গলা জড়িয়ে আসে।চোখের বান ভাঙবে বলে।

“কোথায় যাবেন আপনি??

“আমার দুনিয়ায়।আজ থেকে আপনি মুক্ত।আপনার জীবনের সকল অন্ধকার দূর হয়েছে।”

দ্বিধা আর পারলো না।অঝোর ধারা বইতে শুরু করলো ওর নয়ন থেকে।

“আমি আপনাকে কোথাও যেতে দিবো না।কোথাও না।”

দ্বিধা জাদ এর শার্ট খামচে ধরে ওকে ঝাকাতে ঝাকাতে বলে–

“কোথাও যাবেন না আপনি।আমি বাচবো না আপনাকে ছাড়া জাদ।”

“”শান্ত হোন সুধানিধী।আপনাকে যে আমাকে ছাড়াই বাচতে। এই সুন্দর পৃথিবী যে আপনার জন্য।এখানে আমার কোনো জায়গা নেই।”

“তাহলে আমাকে আপনার সাথে নিয়ে চলুন।”

“তা হয় না।আপনার উপর থেকে এই অভিশাপ দূর করার জন্য আমি এতো কিছু করেছি,সেখানে আপনাকে কি করে নিয়ে যাই বলুন।”

“আমি জানি না। আপনি আমাকে ছেড়ে গেলে আমি মরে যাবো জাদ।”

জাদ দ্বিধাকে নিজের বাহুতে শক্ত করে আবদ্ধ করে নেয়।

“এমন বলবেন না সুধানিধী,আপনার কিছু হলে যে আমি বাচবো না।”

জাদ দ্বিধার ঘাড়ে,গলায়,ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দেয়।দ্বিধায় মাথায় নেশাভর করে জাদ কে পাওয়ার নেশা।জাদ এর মধ্যে নিজেকে ডুবানোর আপ্রান চেষ্টা তার।

জাদ দু হাত দিয়ে ওর মুখ নিজের আজলা তে নিয়ে একদম ওর ঠোঁটের কাছে গিয়ে বলে–

“ক্ষমা করবেন আমায়।এছাড়া আমার আর কোনো পথ খোলা নেই।”

দ্বিধার চোখের পানি আজ জাদ এর স্পন্দনহীন হৃদয়ে আছড়ে পড়া ঢেউ এর মতো সব নাড়িয়ে দিচ্ছে।জাদ এক ওর অধরযুগল দ্বিধার প্রশস্ত কপালে চেপে ধরে।কিছুক্ষনের মধ্যেই দ্বিধা ওর কোলে হেলে পড়ে।জাদ ওকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।

মনভরে দেখতে থাকে তার সুধানিধীকে,এ যেন শেষ দেখা।

“আজ থেকে এই অন্ধকার মানবের ছায়া থেকে আপনি মুক্ত।আপনার আলো ছড়িয়ে পড়বে আপনার আলোকিত জীবনে।যেখানে আমার কোনো জায়গা নেই সুধানিধী(চাঁদ)।

জাদ এর চোখ থেকে নীল অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।নাহ,,তাকে দুর্বল হলে চলবে না।দ্বিধার কাছে গিয়ে ওর লাল রাঙা ঠোঁটে শেষ বারের মতো নিজের ভালোবাসার স্পর্শ একে দেয়।এক গভীর চুমু খায় ওর ঘুমন্ত ঠোঁটে।আজ জাদ পরিপূর্ন।ও তার সুধানিধী তার আলো ফিরিয়ে দিয়েছে।

নিচের হল রুমেই বসে আছে রিশাল,মি.আর মিসেস ইরাম আর মা,বাবা।
ইরাজ এর সামনে গিয়ে হাত জোড় করে বলে—

“আমি যা করেছি তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।আমার দেওয়া কথা আমি রেখেছি।নবনীযুক্তা একদম সুরক্ষিত।”

মিসেস ইরাম কে বলে—
“আপনার মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়ে গেলাম।একটু পাগলি,,,তাই দেখে রাখবেন।”

সবশেষে রিশাল কে বলল–
“তোমার বাবা কে আমি মারি নি রিশাল।যদি পারো ক্ষমা করে দিও।আমি আসি।”

“কোথায় যাচ্ছো তুমি??

“সেখান থেকে এসেছিলাম।”

“তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?স্পাইসি জানলে কি হবে জানো??

“জানি।তোমার স্পাইসি কিছুই জানবেনা।আমি তার স্মৃতি থেকে আমার দেওয়া সব স্মৃতি মুছে দিয়েছি।এখন সে চাইলেও মনে করতে পারবে না তার জীবনে জাদ নামে কেউ ছিলো।”

“এইসব তুমি কি বলছো?

“হ্যাঁ।
পারবে না সব ভুলে ওকে আপন করে নিতে?

“ওর জন্য তো আমি জীবনও দিতে পারি।”
জাদ অস্ফুট হাসে।

“আমি জানি।খেয়াল রেখো ওর।আজ থেকে ওর উপর শুধু তোমার অধিকার।”

ফ্রিদা অবাক হয়ে বলে–

“এইসব তুমি কি বলছো জাদ?
তুমি তো নবনীযুক্তা কে ভালোবাসো।”

“ভালোবাসি বলেই ওর কোনো ক্ষতি হোক তা আমি চাই না।”

“পারবে ওকে ছাড়া থাকতে?
“শিখে নেবো।
চলুন মম,ড্যাড।”

রিশাল পিছন থেকে বলে–

“তুমি কি কখনো ফিরবে না?

“জানি না।আসি।”

জাদ আর ওর মা বাবা বাইরে বেরিয়ে আসে।এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে জাদ।আজ সে পুর্ন।মাহনুর দেওয়া মনুষ্যত্ব আজ জিতেছে। পরমূহুর্তেই মিলিয়ে যায় তিনটি অবয়ব অন্ধকার ছায়ায়।

প্রায় এক ঘন্টা পর দ্বিধা বের হয়ে আসে রুম থেকে।মাথায় হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে বলে–

“মাম্মা এক কাপ কড়া চা দাও তো,মাথাটা ঝিম ঝিম করছে।”

রিশাল অবাক হয়ে দেখছে।সত্যিই কি স্পাইসি জাদ কে ভুলে গেছে।

“এই তুমি এভাবে কি দেখছো।সরো বসতে দাও আমাকে।মাথাটা ব্যথায় ফেটে যাচ্ছে।
ইরাজ প্রশান্তির নয়ন রাখলো রিশাল এর দিকে।
.
.
.
.
৫ মাস পর,,
তীব্র ঘ্রাণ নাকে আসতেই ঘুম ভেঙে যায় দ্বিধার।ঘাড়ের পাশটায় চিনচিন ব্যথা করছে।তীব্র সুঘ্রাণ কোথায় থেকে আসছে বুঝতে পারছেনা।পাশেই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে রিশাল।রিশাল কে ধাক্কা মেরে বলে–

“এই রিশাল,রিশাল উঠো,,

রিশাল ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে–
“আরে স্পাইসি কি হয়েছে??

“লাইটা টা অন করো।'”

“এতো রাতে?

“আরে অন করোতো।”
লাইট জ্বালাতেই পুরো রুমে চোখ বুলায় দ্বিধা।কিছুই দেখতে পায় না।”

“কি খুজছো তুমি?

“একটা ঘ্রাণ পাচ্ছো?

“কই নাতো।”
দ্বিধা উঠে ব্যলকোনিতে যায়।উপর হয় কিছু দেখে।না কিছুই নেই।

রিশাল ও বিছানা ছেড়ে ওর পাশে গিয়ে দাড়ায়।

“তোমার কি হয়েছে বলো তো।মেয়েরা প্রেগনেন্ট হলে ব্যাড স্মেল পায় আর তুমি,,

“জানি না।কেনো যেনো মনে হলো কেউ ছিলো এখানে।”

“হ্যাঁ,আছেই তো।আমাদের বাবুসোনা।”
রিশাল বসে দ্বিধার পেটে হাত বুলিয়ে বলে আস্তে আস্তে বলে—

“প্লিজ কাম ফাস্ট।পাপা ইজ ওয়েটিং ফর ইউ,জিদাদ।”

ব্যালকনি তে রাখা দোলনায় বসে রিশাল আর দ্বিধা।নিজের মাথাটা রিশালের ঘাড়ের উপর রাখে।
এরকম প্রায়ই হয়।এক অদ্ভুত ঘ্রাণ মোহিত করে ওকে।
আকাশের চাঁদ টা আজ অনেক সুন্দর।দ্বিধা মনে মনে বলে–

“আজকের চাঁদ তো অনেক সুন্দর।”
হঠাৎ একটা হাওয়া দ্বিধার কানের পাশে বয়ে যায় আর বলে–

“আপনি তার চেয়েও সুন্দর সুধানিধী।”

দ্বিধা মাথা উঠিয়ে বলে–

“তুমি কিছু বললে??

“কই নাতো।”

দ্বিধা আবারও ওর মাথা রিশাল এর ঘাড়ের উপড় রাখে।আর চাঁদ দেখতে থাকে।আর কয়েকদিন পর ওদের সন্তান আসবে।ভালোবাসায় পূর্ন হবে সংসার।

।।সমাপ্ত।।

(বিঃদ্রঃ অনেকেরই এন্ডিং পছন্দ হবে না। কিন্তু আমি যেভাবে সাজিয়েছি সেভাবেই শেষ করলাম।আপনার আপনাদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন গল্প সম্পর্কে আর এন্ডিং সম্পর্কে।আর এতোদিন কষ্ট করে পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here