#অপ্রত্যাশিত_বাসর…
#পর্ব_৪..
.
.
এখন আমি লোকটার বুকের মাঝে ঘুমিয়ে আছি। কিছুক্ষন পর আবির মেসজ দিল…
-প্লান সব রেডি সোনা…
-ওকে..
-আগামি কাল দেখা করবে সোনা..
-কোথায়..?
-পাতাকুড়ি পার্ক…
-ওকে..(কতগুলো চুমুর ইমোজি)
আমার বর আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আমি ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। ঘুমের মাঝে বলতেছে…
-আমায় ছেড়ে যেও না প্লিজ তিশা। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি….
ওর কথা শুনে ওর জন্য আলাদা টান অনুভব করলাম। কখন যে এই সাইকো লোকটাকে ভালবেসে ফেলেছি নিজেও জানি না। আমি উনাকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলাম। উনি ঘুমের মাঝে আমায় জড়িয়ে ধরে আছে……
।
।
সকাল হয়ে গিয়েছে। বাসায় মা ছাড়া কেউ নেই। তন্ময় ঘুমিয়ে গেছে। আমি মা কে মিথ্যা বলে বেরিয়ে পড়লাম আবিরের সাথে দেখা করার জন্য। গিয়ে দেখি আবির আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি যাওয়া মাত্রই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি এক ধাক্কায় ওকে সরিয়ে দিলাম….
-উফ আবির ছাড়ো তো… ভাল লাগে না এইসব….
-ওকে বাবা ঠিক আছে…
-কি প্লান করলা….
-এই নাও গান। এটা দিয়ে ওই সাইকো লোক টাকে খুন করে টাকা পয়সা সব নিয়ে চলে আসবে। তারপর আমরা পালিয়ে যাব অনেক দূর…..
-ওকে ঠিক আছে বায়….
আবিরের সাথে দেখা করে চলে আসলাম। এসে দেখি তন্ময় রেগে আছে । ভয়ে আমার জান শেষ আবার যদি মারে….
-কোথায় গিয়েছিলে….
-কোন জায়গায় না…একটু ঘুরতে…
-ঠাস ঠাস…
কি মনে কর নিজেকে।যাওয়ার আগে একবার আমার অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে কর নি কেন….
-সরি সোনা আর হবে না…(ওর গলা জড়িয়ে ধরে)
-না আমি রাগ করছি….
-কি করতে হবে আমার বরের রাগ ভাঙাতে….
ও কিছু না বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমার উপর উঠলো….
-যা চাব তাই দিবা তো…
-বলো সোনা কি লাগবে….(গলা জড়িয়ে ধরে)
-তোমার ওই গোলাপি ঠোট খাব….
-যাও দুস্টু সাইকো একটা….
তন্ময় কিছু না বলে ওর ঠোট আমার ঠোটের মাঝে ডুবিয়ে দিল। আমিও আমার স্বামির আদর উপভোগ করতে থাকলাম। কিছুক্ষন পর ও আমার শাড়ি খুলতে লাগল। আমি আর ওকে বাধা দিলাম না। আমাকে ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে অই….
-তুমি এত সুন্দর কেন গো…
ওর কথায় আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। ও আমায় ওর বুকের মাঝে নিয়ে বললল…
-তুমি যদি আমায় ছেড়ে চলে যাও তবে আমি মরেই যাব…
এইবার আমি রেগে গেলাম। ওর বুকের উপর উঠে একটা ছুরি ওর গলায় ধরলাম…
-আর একবার যদি মরার কথা বলছো তাহলে তোমার গলায় চালিয়ে দিব এইটা সাইকো ছেলে….
-আর বলবো না….ওই দেখ টিকটিকি…
আমি ভয়ে ছুরি ফেলে দিলাম। ওই সুযোগ মতো আমায় ওর নিচে ফেলে দিয়ে আমার উপর উঠলো। তারপর আমাকে ওর ভালবাসার আক্রমন শুরু করে দিল আমিও পাল্টা আক্রমন করলাম। ওর প্রতিটা স্পশে আমি শিহরিত হয়ে ঊঠছিলাম…..
।
।
বাবার বাসায় দিন গুলি অনেক টা হানিমুনের মত কাটলো। ও প্রতি রাতেই আমাকে অত্যাচার করত। কিন্রু তারপরেই আমাকে অনেক ভালবাসত। সত্যি বলতে ওর অত্যাচারের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। কিছুদিন পর চলে আসলাম বাসায়। আমার বর খালি আমাকে আদর করে। আমারো ভাল লাগে। কোন বউ ই বা না চায় তার বরের ভালবাসা পেতে। কিন্তু আমি আমার প্লান ভুলে যাই নি। রান্না ঘরে রান্না করছিলাম। এমন সময় ওই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমাকে চুমু খেতে শুরু করে…
-এই কি করছ কি…
-আমার সোনা বউকে আদর করছি…
-হইছে হইছে যাও আমি খাবার নিয়ে আসছি….
আমার ঠোট ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেল পাগলটা……
।
।
আজ প্লানকে সাক্সেস ফুল করব। সকালে উঠে রেডি হয়ে নিলাম। তন্ময় ঘুমুচ্ছে।আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে বললাম….
-আমায় মাফ করে দাও সোনা…আজকের পর হয়ত আর দেখা হবে না….
শেষবারের মত ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে বেরিয়ে পড়লাম। জানি না যে কাজে যাচ্ছি বেচে ফিরতে পারব কিনা। যাওয়ার আগে পুলিশকে ফোন দিলাম। আসলে আমি একজন গোয়েন্দা। টাকা পয়সা কিছুই নেই নি শুধু আবিরেত দেয়া গান নিয়েছি….
-টাকা পয়সা কই এনেছ….
-টাকা পয়সা জানিনা কিন্তু তুমি আমার কাছে বাচবে না আবির উরফে ছোট জামান…(বলেই ওর দিকে গান ধরলাম)
-তিশা কি বলছ তুমি….
-চুপপ থাক। তুই কি মনে করছিস তোর কারনে আমি আমার বরের ক্ষতি করব। তোকে ভাল করেই চিনি। তোকে ধরার জন্যই এই প্লান আমার…..
-ওহ….ওই দেখ তন্ময়….
।
তন্ময় এইখানে কিভাবে আসবে। আমি পিছু ঘুরতেই আমার হাত থেকে ছো মেরে গান নিয়ে গেলল আবির…..
-যখন পরিচয় জেনেই গেছ তোমার আর বেচে থেকে লাভ নেই সোনা….
-আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। গুলির আওয়াজ পেলাম। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে নিথর হয়ে পড়ে আছে তন্ময়। ওর বুক থেকে রক্ত ঝড়ছে। মুচকি হেসে বুকে হাত দিয়ে লাভ শেপ করে আছে। আরেকটি গুলির আওয়াজ পেলাম। পুলিশ করেছে গুলিটা। আবিরের মাথার খুলি উড়িয়ে দিয়েছে…..
।
।
তন্ময়ের এই অবস্থা দেখে আমি ঠিক থাকতে পারলাম না। ওকে আমার কোলে নিয়ে হাউমাউ করস কাদতে লাগলাম….
-কেন করলে আমার সাথে এমন…কেন নিজের এই অবস্থা করলে….
-আমি তোমায় ভালবাসি গো। তোমায় কিভাবে মরতে দিতে পারি বল…..
-আমিও ভালবাসি তোমায়…
-আমার একটা কথা রাখবে…আমায় একবার তোমার বুকে জড়িয়ে নিবে….
আমি কিছু না বলে ওকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলাম। কিছুক্ষন পর ও হাত পা ছেড়ে দিল। আমি ডাকছি তাও সাইকোটা সাড়া দিতেছে না….
-এই উঠো না প্লিজ…উঠো না তুমি আমাকে না মারলে আমি থাকবো কিভাবে….
আমি ওর বুকে মারতে থাকলাম। হঠাত ও শ্বাস নিতে শুরু করল। আমি ওকে মেডিকেল নিয়ে গেলাম। ফোন করে সবাইকে ডাকলাম। ওকে আই সি ইউ তে নেয়া হয়েছে। কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে বললল…
-দেখুন উনাকে আমরা বাচাতে পারবো না। উনার হার্ড বরারবর গুলি লেগেছে তাছাড়া প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে।আপ্নারা পারলে উনাকে বিদেশে নিয়ে যান….
।
ডাক্তারের কথা শুনে আমি কান্নায় ভেংেএ পড়লাম। আমার কারনেই আজ ওর এই অবস্থা। কিছুসময় পর একটা মেয়েকে দেখে আমি আটকে গেলাম। আমি কি সপ্ন দেখছি। এ কিভাবে সম্ভব। আমার মনে অনেক প্রশ্ন…..
চলবে…
(aronno joy)