অব্যক্ত ভালোবাসা পর্ব-৪০ শেষ পর্ব

0
2387

#অব্যক্ত ভালোবাসা
#অন্তিম পর্ব
#সুমাইয়া ইসলাম নিশা

সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।সময় সময়ের মতো ঠিকই প্রবাহিত হয়ে যাবে।সময়ের স্রোতের সাথে সাথে বদলে যাবে কিছু সম্পর্কের স্রোত।সময়ের সাথে সাথে সম্পর্ক বদলায়,জীবন বদলায় শুধু বদলালো না মায়ান আর মেহবিনের সম্পর্ক।আজো তাদের মধ্যে ঠিক আগের মতোই অনুভূতি কাজ করে।মায়ানের এখনো তার শ্যামলতাকে ঘিরে আগের মতোই মাদকতা কাজ করে।আর মেহবিন আজো তার মায়ানের ছোয়ায় একদম মিইয়ে যায়।মায়ান আর মেহবিন এখন মায়ানের কেনা নতুন বাড়িতে থাকে।মিসেস তনয়া ও সাথে থাকেন।মাইজা এখন মিসেস রুকাইয়ার সাথে থাকেন।সম্পর্কের পালাক্রমে এখন সবাই সবার মায়ায় একদম মিশে আছে।

রাত নয়টা।ঘর্মাক্ত,ক্লান্ত শরীর নিয়ে মায়ান অফিস থেকে ফিরল।চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট।গত এক বছর ধরে যে পরিমাণ কষ্ট মায়ান কাজের পিছনে পড়ে থেকে পেয়েছে সেই পরিমাণ কষ্ট আসলে তার প্রাপ্য নয়।মায়ান চাইলেই দিব্যি লন্ডনে গিয়ে শুয়ে বসে পরিবার নিয়ে থাকতে পারে।কিন্তু এই আরামের ঘোর বিরোধীতা করেছে মেহবিন।তার ভাষ্যমতে কারো রেখে যাওয়া সম্পত্তি দিয়ে না,নিজের পরিশ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন করবে।মায়ানও তার শ্যামলতার কথা মাথা পেতে নিয়েছে।ক্লান্ত ভঙ্গিতে এলোমেলো পায়ে মায়ান ঘরে প্রবেশ করল।পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে মেহবিনকে পেলো না।বেডে বসে পা থেকে মুজা খুলতে খুলতে গলা বাড়িয়ে মেহু বলে ডাকার আগেই মেহবিন ঘরে প্রবেশ করল।মায়ান হাসল মেহবিনকে দেখে।মেহবিন আজকেও প্রতিদিনের মতো হাতে লেবুর শরবত নিয়ে দাড়িয়ে আছে।মেহবিন নিজের পরিহিত সবুজ শাড়ির আচল ঠিক করে মায়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গ্লাস এগিয়ে দেয়।মায়ান নির্নিমেষ ভাবে গ্লাস নিয়ে এক ঢোকে সব খেয়ে নেয়।তারপর পুনরায় গ্লাস মেহবিনের হাতে দিয়ে বলে-

-”ধন্যবাদ।

মেহবিন হাসে।মায়ান মেহবিনের চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে আয়নার সামনে গিয়ে হাত থেকে ঘড়ি খুলতে থাকে।মেহবিন গ্লাশ টেবিলে রেখে একটু কেশে মায়ানকে বলে-

-”আপনার সাথে একটু কথা আছে মায়ান ভাই?

কথাটা বলে নিজেই নিজের মুখ চেপে ধরে মেহবিন।মায়ান তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মেহবিনের দিকে।মায়ান হাতের ঘড়িটা শব্দ করে রাখে।তারপর মেহবিনের দিকে এগুতে এগুতে বললো-

-”কি বললে?আরেকবার বলো তো।

মেহবিন নিজের মুখ চেপে এখনো দাড়িয়ে আছে।এইতো তাদের দাম্পত্যের জীবনের কতগুলো দিন চলে গেলো।কেটে গেলো এক বসন্ত।অথচ আজও মেহবিন মায়ান কে মায়ান ভাই বলেই ডাকে।প্রথম প্রথম মায়ান ব্যপারটা এতো সিরিয়াসলি নেয়নি।ভেবেছে সময়ের সাথে সাথে অভ্যাস বদলে যাবে।কিন্ত তার ভাবনায় পানি ঢেলে মেহবিন বিয়ের ছয়মাসেও মায়ান ভাই ই ডাকতে লাগলো।মায়ান সর্বপ্রথম মেহবিনকে বারণ করলো ভাই না বলতে।তারপরেও কাজ না হওয়ায় টানা তিনদিন কথা বলেনি।এতে খানিকটা কাজ হলো।বেশ কিছুদিন মেহবিন মায়ানকে সম্বোধন করাই ছেড়ে দিলো।আজ আবার সেই একই ভুল করলো মেহবিন।মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো শব্দটা।মায়ান মেহবিনের কাছে গিয়ে দাড়িয়ে কপাল কুচকে জিজ্ঞেস করলো-

-”কি বললে এইমাত্র?আরেকবার বলো,শুনতে পাইনি আমি।

মেহবিন বড়োসড়ো ঢোক গিলল।তারপর মেকি হেসে বললো-

-”আসলে বলতে চেয়েছিলাম কালকে মাইজার জন্মদিন তো-

মেহবিন কথা শেষ করার আগেই মায়ান মেহবিনের কড় টেনে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।দাতে দাত চেপে মায়ান বলে-

-”কথা ঘুরানো তো ভালোই শিখেছো?আমার বোকারানী তো দেখছি আমাকেই কথার মারপ্যাঁচে ফেলতে চাইছে।

কোমড়ের চাপ আরো দৃঢ় করে মায়ান বললো-

-”আমি তোমার কোন জন্মের ভাই মেহু?কেনো বারবার ভাই ভাই করে আমার ভগ্ন হৃদয়ের উত্তাপ আরো বাড়িয়ে দেও।আর কি করলে তোমার এই অভ্যাস পরিবর্তন হবে।

মেহবিন অসহায় চোখে তাকালো মায়ানের দিকে।সে ও তো চায় ভাই না ডাকতে তাও মুখ থেকে বেরিয়ে যাবেই শব্দ টা।মেহবিন কাদো কাদো ফেস করে বললো-

-”আমি চেয়েও পারিনা।কি করবো বলুন।শব্দটা মুখ থেকে বের হয়েই যাবে কোনোভাবে।এখানে আমার কি দোষ বলুন তো মায়ান ভাই?

মেহবিন এবার চমকে উঠলো।একাধারে দুই দুই বার এক ভুল করলো।ভয়ে ভয়ে মায়ানের দিকে তাকাল।মায়ানের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আরো প্রখর হয়েছে।মেহবিন বুঝে গিয়েছে আজ তার রাত দশটার খবর আছে।সে হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই মায়ান ফট করে মেহবিনকে কোলে তুলে নিলো ।মেহবিনের পিলে চমকে উঠে।মায়ানের কলার খামছে ধরে আতকে উঠে বলে-

-”কি করছেন?

মায়ান বাকা হেসে বলে-

-”আসলে তোমার কোনো দোষ নেই।দোষ আমারই।তোমার এই ভুলের জন্য কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।এইজন্য নিজের স্বামীকেই ভাই ডেকে গলার পানি শুকিয়ে ফেলছো।তবে আর নয়।এই ভুলের জন্য আজ তোমাকে অভিনব শাস্তি দেয়া হবে।আই হোপ এরপর থেকে আর এই ভুল হবেনা।

মেহবিন হাত পা ছোটাছুটি করতে লাগল।মায়ান মেহবিনকে বেডে নামিয়ে দিয়ে ঠোট বাকিয়ে বললো-

-”ঘামে লেপ্টে দেওয়ার জন্য খুবই দুঃখিত আমি।বাট আজকে শাস্তি না দিলেই নয়।

মেহবিন চোখ বড় করে কিছু বলতে নিতেই মায়ান তার রুক্ষ ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো মেহবিনের ওষ্ঠে।মেহবিন খিচে চোখ বন্ধ করে ফেললো।আকাশের সমস্ত চাদ,তারা ওদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইল।

————————-

প্রকট আওয়াজে মোবাইল বেজে উঠতেই চোখ খুলে গেলো মাইজার।মাইজা বিরক্ত হলো।এই মোবাইল তার ঘুমের চিরশত্রু।ওর শান্তির ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিলো।মাইজা মোবাইল হাতে নিয়ে স্ক্রিনে চোখ বুলাতেই মাইজার বিরক্ত কাটল।ঠোটে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।মাইজা ফোন রিসিভ করে কানে নিতেই মেহবিন সুর তুলে বললো-

-”Happy Birthday to you,Happy Birthday to you,Happy birthday,happy birthday my dear maja.

মাইজা হাসলো।তারপর বললো-

-”অনেক অনেক থ্যাংকু।কিন্ত তুই তো সবসময়ই রাতেই আমাকে উইশ করিস তাহলে আজ সকালে করলি যে?

ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ এলোনা।মাইজা মেহবিনের নিশ্চুপ থাকাতে কি বুঝলো কে জানে।সে কথা ঘুরিয়ে বললো-

-”আজকে এখানে আসবি না?

মেহবিন উৎফুল্ল হয়ে বললো-

-”হ্যা আসতে তো হবেই।আজকে তো….

মেহবিনের কথা শেষ হবার আগেই মাইজা বললো-

-”মেহু তোর সাথে একটু পরে কথা বলছি।আমার একটা কল এসেছে।

মেহবিন আচ্ছা বললো।মাইজা ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে রনক বললো-

-”শুভ পয়দা দিবস মিস শুকনো মরিচ।

মাইজা শব্দ করে হাসল।তারপর বললো-

-”ধন্যবাদ মশাই।

রনক হেসে বললো-

-”তো বার্থডে গার্ল আজকে কিন্তু কোনো বারন শুনবোনা।আমার সাথে কিন্তু আজ দেখা করতে হবেই।

মাইজা হেসে বললো-

-”আজ্ঞে জ্বি মশাই।দেখা করবো।বলো কোথায় দেখা করতে হবে?

রনক একটু ভেবে বললো-

-”আমি মেসেজ করে দিবো।

মাইজা ওকে বলে দিলো।রনক ফোন কেটে দেয়।মাইজা জানলা দিয়ে আকাশে তাকিয়ে বললো-

-”তোমাকে ছাড়া প্রথম জন্মদিন আম্মু।সমস্যা নেই।তুমি না হয় দূর থেকেই আমার জন্য দোয়া করলে।

সন্ধ্যার শেষ প্রহর।সূর্য কমলা রঙ ধারন করে আকাশের মাঝে ডুবে গেলো।আকাশে অন্ধকার ছেয়ে গেছে।মাইজা গোলাপি রঙের শাড়ি পরছে আজকে। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া।রেস্টুরেন্টের ভেতর প্রবেশ করতেই মাইজা পুরো রেস্টুরেন্ট খালি পেলো।রেস্টুরেন্টের প্রতিটি কোণে বিভিন্ন কালারের লাইট জ্বলছে।মাইজা কাউকে দেখতে না পেয়ে বললো-

-”রনক তুমি কি আছো এখানে?

তখনই রেস্টুরেন্টের সব লাইট অফ হয়ে গেলো।মাইজা ভয় পেয়ে গেলো।মাইজা রনককে ফের ডাকার আগেই হালকা নীল রঙের নিভু নিভু আলো জ্বলে ওঠে।মাইজা চমকে যায়।পেছন থেকে পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে মাইজা পেছন ঘুরে তাকায়।

-”হ্যাপি বার্থডে মিস শুকনো মরিচ।

রনক দাড়িয়ে আছে।রনক ক্যাজুয়াল পরেছে আজকে।ঠোটে চমৎকার হাসি।মাইজা হেসে রনকের সামনে গিয়ে বলে-

-”থ্যাংকস মি:এলিয়েন।

রনক মাইজার দিকে একটু এগোলো।মাইজাকে ভালো করে দেখে বললো-

-”সুন্দর লাগছে।

মাইজা হাসল একটু।রনক তাকিয়েই রইল মাইজার দিকে।মাইজা রনককে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো-

-”কি হয়েছে তাকিয়ে আছো কেনো?

মাইজার কথা বলার মাঝেই রনক মাইজার সামনে হাটুভেঙে বসে পরেছে।মাইজা অবাক হয়ে তাকায় রনকের দিকে।রনক মাইজার হাত নিজের হাতে নিয়ে বলতে শুরু করে-”

-”আমি সবসময়ই অন্যরকম ছেলে ছিলাম জানো তো।ড্রিঙ্ক করা,ঠিকমত স্টাডি না করা,মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করা।পুরা বাউণ্ডুলে ছেলে।কিন্তু এই বাউণ্ডুলে ছেলেই যে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসার মানে বুঝবে,এটা আমার ভাবনারো বাইরে ছিলো।হ্যা আমার ভাবনা ভুল প্রমাণিত হয়ে আজকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।ভালোবেসে ফেলেছি আমার সামনে দাড়ানো নারীকে।ভালোবেসে ফেলেছি আমার সামনে দাড়ানো ত্যাগী মেয়েকে।তবে এই ভালোবাসার শুরু আজকে নয়।আরো অনেক আগেই।যখন তোমার আর ভাবির মাঝের সমস্যার জন্য মায়ান লন্ডন ব্যক করেছিল তখন প্রথম আমি তোমার কথা জানতে পারি।ভাইয়ার থেকে সব শুনে বেশ রাগ উঠেছিলো তোমার উপর।কিন্তু দুই বছরের ব্যবধানে সেই রাগ উধাও হয়ে গেলো তোমার ত্যাগের কথা শুনে।অদ্ভুত ভাবে হলেও ভালো লেগে গেল তোমাকে।আর সেই ভালো লাগা আজ ভালোবাসায় পরিনত হয়েছে।আমি সেই ভালোবাসাকে পূর্ণতা দিতে চাই।তুমি কি আমার হবে?আমায় বিয়ে করবে শুকনো মরিচ?

মাইজার দুচোখ বেয়ে ঝর্ণার ন্যায় জল গড়িয়ে পরল।মুখ থেকে কথা বেরোচ্ছে না।সমস্ত কথা গলায় দলা পাকিয়ে রয়ে গেলো।অনেক কথা ব্যক্ত করতে যেয়েও পারলনা।চুপ করে রইল মাইজা।

_____________________________

পরিশিষ্ট:নিউইয়র্কের বসন্ত আজকে।চারপাশে যেনো নিউইয়র্কে রঙ লেগেছে।রাস্তায় বিভিন্ন ফুল পাতা পড়ে আছে।বিভিন্ন পার্ক,ফাকা জায়গায় টিউলিপ ফুল ফুটেছে।গাছে গাছে চেরি ফুলের মেলা।বিশাল দালানের উনিশতলার একটা ফ্লাটের জানলা দিয়ে এই পরিবেশ দেখছে মাইজা।সবার কাছে নিউইয়র্কের শীতকাল পছন্দের হলেও মাইজার বসন্ত কাল পছন্দ।ফোনের আওয়াজে মাইজা বাইরে থেকে চোখ সরায়।কাচের থাই গ্লাস টেনে দিয়ে সেন্টার টেবিল থেকে ফোন তুলে।মাইজা নাম্বার দেখেই চিনে ফেললো কে কল করেছে।ফোন তুলে কানে নিতেই ওপাশ থেকে মেহবিনের খুশি খুশি কন্ঠ শুনা গেলো।

-”মাজা আমি মা হতে যাচ্ছি।তুই আন্টি হবি মাজা।

মাইজা নিরব রইল।তারপর ঠোট প্রসারিত করে হেসে বললো-

-”কি বলছিস মেহু?তুই মা হবি?আমার তো বিলিভ ই হচ্ছেনা।কংগ্রাচুলেশন।

মেহবিন হাসি থামিয়ে চুপ করে থাকলো।তারপর নিরবতা ভেঙে বললো-

-”তুই কি এখনো আসবিনা বিডিতে?

মাইজাও চুপ মেরে গেলো।তারপর থমথমে মুখে বললো-

-”আসতে পারি আর না পারি,আমার একটা অনুরোধ রাখবি?

-”কি?

মাইজা কন্ঠে কাতরতা এনে বললো-

-”তোদের যদি মেয়ে হয় তাহলে ওর নাম মায়াবিন রাখবি।রাখবিতো?

মেহবিন রাখব বলে ফট করে কেটে দিলো।মাইজা অনেকবার হ্যালো হ্যালো করল।ফোন কান থেকে নামিয়ে ডিসকানেক্ট দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।মেহবিন ফোন কেটে অঝরে কাদছে।তখনই মায়ান ঘরে প্রবেশ করে।মায়ানকে দেখে মেহবিন ঝাপটে ধরে মায়ানকে।মায়ান প্রথমে চমকালেও পরে কিছু আন্দাজ কর বললো-

-”মাইজার সাথে কথা বলছিলে?

মেহবিন উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞেস করলো-

-”মানুষের জীবন এমন অদ্ভুত কেনো বলুন তো?

মায়ান জবাব দিলোনা।চুপচাপ নিজের প্রেয়সীকে বুকের মাঝে আগলে নিলো।

মাইজা চারবছর হলো আমেরিকা আছে।এখন মাইজা আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী।সেদিন রনক ওকে প্রপোজ করার একসপ্তাহ পরই মাইজা আমেরিকায় চলে আসে।তবে রনকের সাথে নয়,একা।সেদিন রনকের মুখে বিয়ের কথা শুনে মাইজা বেশ অবাক হয়েছিলো।মাইজা তখন নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়েছিলো রনকের থেকে।তারপর বলেছিলো-

-”তুমিই মোটেও বাউণ্ডুলে ছেলে নয় রনক।তুমি হলে আমার শক্তি,আমার অনুপ্রেরণা।এই একটা বছর তুমি আমায় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছো।আমার শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছো।তাইতো মেহবিনের পর বন্ধুত্বের হাতটা তোমার দিকে বারেয়েছিলাম।তুমিও আমার হাত আগলে নিয়েছিলে।কিন্তু আজ তোমার হাত আগলে ধরা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।কেনো সম্ভব নয় সেটা জিজ্ঞেস করোনা।আর আমি তোমাকে ভালোবাসি কিনা সেটাও জানতে জোর করবেনা।কারন মানুষ যখন কিছু বলতে না চায় আর যদি তাকে ঐ বিষয়টা বলার জন্য জোর করা হয় তখন সেই মানুষটা মিথ্যা বলতে বাধ্য হয়।কিন্তু আমি তোমাকে মিথ্যা বলতে চাইনা।আমায় ক্ষমা করো রনক।

সেদিন কথাগুলো বলেই মাইজা চলে গিয়েছিলো।রনকের সামনাসামনি পরতে চায়না বলে সবাইকে অনেক জোরাজোরি করে একসপ্তাহ পরই আমেরিকা চলে আসে।আর এখানেই পড়াশুনো শুরু করে।আজ চারবছর মাইজা এখানে।ঐদিনের পর থেকে রনকের সাথে মাইজার আর দেখা হয়নি।নাইবা হয়েছে যোগাযোগ।মাইজা মোবাইলের গ্যালারি তে গিয়ে রনকের একটা ছবি বের করলো।একনয়নে তাকিয়ে রইল রনকের হাসিমাখা ছবির দিকে।রনকের থেকে দূরে থেকে বুঝতে পারছে যে রনকের প্রতি একটু হলেও তার অনুভূতি জাগ্রত হয়েছিলো।যেই অনুভূতির নাম ভালোবাসা।কিন্তু সেই ভালোবাসা প্রকাশ করার আর কোনো রাস্তা নেই।মাইজাও চায় না সেই অনুভূতির কথা জানাতে।মাইজা রনকের ছবিতে হাত বুলিয়ে আনমনেই বলে উঠো-

-”সব ভালোবাসা কি প্রকাশ করা জরুরি?তুমি নাহয় রইলে আমার #অব্যক্ত ভালোবাসা হয়ে।

(দেড় মাস পেরিয়ে অবশেষে আজ গল্পটার সমাপ্তি টানলাম।জানিনা কেমন হয়েছে,একদম চিন্তাভাবনা ছাড়াই গল্পটা লিখতে বসেছিলাম।আমি জানি শেষটা আপনাদের মন মতো হয়নি।কিন্তু গল্পের নামের সাথে মিল রেখে সমাপ্তিটা এভাবেই দিতে হলো।এছাড়াও বানান ভুলের প্রবনতা,ঠিকমতো সাজিয়ে লিখতে না পারা।এসব সমস্যাও হয়েছ।তার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আমি।অনেকেই আমাকে সাপোর্ট করেছেন তাদেরকে মন থেকে ধন্যবাদ।শেষে শধু একটাই অনুরোধ কষ্ট হলেও গল্পটা যারা এতদিন পড়েছেন তারা এক লাইন হলেও গল্পটার সম্পর্কে লিখবেন।সবাইকে ধন্যবাদ ❤)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here