- #অসুস্থ_ভালোবাসা
#লেখিকা : তিয়ানা তিথি
#পার্ট_1 +2
.
.
নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ঠিকভাবে মনে করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।আসলে এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না আমার বিয়ে হয়ে গেছে তাও এইভাবে!!!আমি এখন বসে আছি আমারই রুমে,ভাবছেন তো বিয়ে হয়েছে তাহলে এখনো কেনো শশুরবাড়ি না গিয়ে বাবার বাড়িতে বসে আছি?আসলে আমার ভাগ্যটাই এমন।কিন্তু আমার ভাগ্যটা যে এমন হবে আমি তা কখনো ভাবতেই পারিনি।ছোটবেলা থেকে বলতে পারেন বাবার আহ্লাদে আর মায়ের স্নেহে বড় হয়েছি।অভাবটা কি তা কখনো বুঝিনি।বাড়ির ছোট মেয়ে বলে কথা।আমাদের জয়েন ফ্যামিলি সবাই একসাথেই হাসি মজায় মেতে থাকি এইভাবেই লাইফটা চলছিল কিন্তু কখনো ভাবিনি লাইফে এমন একটা ঝড় বয়ে যাবে তাও আমার সাথে!!আসলে সব ঠিক ঠাকই চলছিল বিপত্তিটা ঘটলো সেইদিন।সেইদিনটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে তা আমি কখনোই ভাবিনি……
.
তিন মাস পূর্বে….
সেইদিন রাস্তায় খুব ঝামেলা হয়েছিল দুইদল সন্ত্রাসী নাকি মারপিট করেছে।তাই একা আসার সাহস করলাম না তাওহীদ ভাইয়া (বড় চাচার ছেলে) কে কল করলাম ভার্সিটিতে আসার জন্য ভাইয়াও বলল আসবে কিন্তু তার কিছুক্ষণ পর আবার তাওহীদ ভাইয়ার কল আসলো জানালো যে সে আসতে পারবেনা বাড়িতে জানিয়ে দিবে কেউ এসে আমাকে নিয়ে যাবে ততোক্ষন যেনো আমি ভার্সিটিতেই অপেক্ষা করি কিন্তু আমার আর সহ্য হচ্ছিলো না একা একা বসে থাকতে কারন তখন প্রায় সবাই চলে গিয়েছে তাই আমি তারাতারি করে ভাইয়াকে বললাম যে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত আমি একাই আসতে পারবো।শুনে ভাইয়া বলল..
“” না পাকামো করিসনা।রাস্তাঘা
ঁটের অবস্থা ভালো না কখন কি হয় বলা যায়না তুই ওখানেই থাক আমি দেখছি।
“” না ভাইয়া তোমাকে বলছি তো এখন সব ঠিক আছে আমি আসতে পারবো শুধু শুধু টেনশন নিয়ো নাতো।
“” ঠিক বলছিস তো? পারবি আসতে?
“” হ্যাঁ ভাইয়া পারবো তুমি অযথাই টেনশন করছো।
“” ঠিক আছে সাবধানে বাড়ি চলে যাস..বাই।
“” ওকে ভাইয়া বাই।
ভাইয়াকে তো বলে দিলাম টেনশন না করতে কিন্তু আমার তো খুব ভয় লাগছে।কি করবো শুধু শুধু আর বাড়ির লোকদের টেনশন দিতে চাইনা মা খুব শক্ত টাইপের কিন্তু বড় আম্মু (বড় চাচি) আমাকে নিয়ে খুব বেশি পজেটিভ যদি শুনে একবার এখানে গন্ডগোল হচ্ছে তাহলে আর আমার বাড়ি না গিয়ে সোজা হাসপাতালে যেতে হবে।ব্যাগটা নিয়ে ভয়ে ভয়ে বেড়িয়ে পড়লাম রাস্তায় চারপাশটা চোখ বুলিয়ে নিলাম না পরিবেশ ঠান্ডা এখন আর টেনশনের কিছু নেই কিন্তু কোনো রিকশা দেখতে পাচ্ছিনা তাই বাধ্য হয়ে এক প্রকার হাঁটা শুরু করলাম।হাঁটছি একা একা খুব ভয় লাগছে পুরো রাস্তা ফাঁকা হাতে গুনা কয়েকজন মানুষ মাত্র কিছুদুর যেতেই যা দেখলাম তা দেখার মতো মানসিকতা আমার একদমই ছিলনা খুব ভয় পেয়ে গেলাম দেখি একটা লোক রাস্তায় পরে আছে আর তার পেট দিয়ে রক্ত পরে ভেসে যাচ্ছে পুরো রাস্তা। আমার কি হলো আমি নিজেও বুঝতে পারলামনা পুরো শক্ত হয়ে গেলাম সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম।লোকটা যন্ত্রনায় ছটফট করছে কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেনা যে যার মতো দৌড়িয়ে পালাচ্ছে।আমার মূহুর্তেই যে কি হলো আমি দৌড়িয়ে লোকটার কাছে গেলাম দেখি এখনো সেন্সলেস হয়নি সেন্স আছে আমি লোকটার মাথা আমার কোলে তুলে নিলাম ব্যাগ থেকে পানি বের করে মাথাটা একটু তুলে পানি খাওয়ালাম লোকটা একবার আমার দিকে তাঁকালো তারপর আবার যন্ত্রনায় কাঁতারাতে থাকলো।আমি হেল্প হেল্প বলে চিৎকার শুরু করে দিলাম কিন্তু কেউই এগিয়ে আসলোনা আমার কাছে ব্যাপারটা খুবই অবাক লাগলো কিন্তু তখন আমার এতকিছু ভাবার টাইম ছিলনা কি করব বুঝতে পারছিলাম না তারাতারি করে নিজের ওরনাটা দিয়ে লোকটার পেট শক্ত করে বেঁধে দিলাম হঠাৎ একটা রিকশা যাচ্ছিলো ডাক দিতেই থেমে গেলো আমি হাত জোর করে বললাম মামা প্লিজ আমাকে একটু তারাতারি হাসপাতালে নিয়ে চলুন আমার হাতে টাইম নেই।ভাগ্য সদয় হলো রিকশাওয়ালা যেতে রাজি হলো তার সাহায্য নিয়ে লোকটাকে রিকশায় তুললাম লোকটা কে আমার কাঁধে মাথা রেখে বসালাম আমি আরেক হাত দিয়ে শক্ত করে তার বাহুডোর জরিয়ে ধরে রাখলাম।সবাই হা করে আমাকেই দেখছিল আমার খুব রাগ হচ্ছিলো এইটা ভেবে হা করে দাঁড়িয়ে ঠিকই দেখছে কিন্তু সাহায্য করতে কেউই এগিয়ে এলোনা কি আজব সব দুনিয়ার লোক।যেই আমি রক্ত দেখলে বেহুশ হয়ে যাই সেই আমিই কিনা আজ এতোকিছু করছি!!রক্তাতো মানুষটা কে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে চলেছি…..
যেই আমি রক্ত দেখলে বেহুশ হয়ে যাই সেই আমিই কিনা আজ এতোকিছু করছি!!রক্তাকতো মানুষটা কে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে চলেছি।লোকটা আমার এক হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে কেমন যেনো একটা অসস্তি হচ্ছে,হবেই তো লাইফে ফার্স্ট কোনো ছেলের স্পর্স কিন্তু কিছু করার নেই লোকটা তো আর স্বাভাবিক না মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।আমি রিকশাওয়ালা মামা কে আরেকটু তারাতারি যেতে বললাম।লোকটার কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিনা সেন্সলেস হয়ে গেলো নাতো?লোকটার গালে হাত রেখে কয়েকবার ঝাঁকাতেই লোকটা চোখ মেলে তাঁকালো আমার দিকে তাঁকায়ে মিষ্টি একটা হাসি দিলো।আমিতো পুরাই ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম!!! মরে যাচ্ছে তাও আবার আমাকে দেখে মিষ্টি করে হাসছে???আজব তো….
.
ঢাকা মেডিকেলের সামনে এসে রিকশা থামলো। আমি রিকশাওয়ালা কে লোকটাকে ধরতে বলে মেডিকেলের ভিতরে ছুটে গেলাম।দুটো লোককে সাথে করে ফিরে আসলাম আর তাকে নিয়ে ভিতরে গেলাম কিন্তু এখন হলো আরেক বিপত্তি ডাক্তার বলছে পুলিশ কেস আগে পুলিশকে খবর দিতে হবে।আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না আমি রিকোয়েস্ট করলাম তারা যেনো আগে চিকিৎসাটা শুরু করে তারপর আমি দেখছি ব্যাপারটা।কিন্তু কেউ আমার কোনো কথা শুনছে না আমি তাদেরকে হাত জোর করে রিকোয়েস্ট করছি বলছি লোকটা আরেকটু লেট হলে মরে যাবে প্লিজ কিছু একটা করুন।আমি কথাগুলো বলতেই দেখলাম একদল লোক আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ডাক্তারকে ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখাচ্ছে আর বলছে এক্ষুনি চিকিৎসা শুরু না করলে রক্তের বন্যা বইয়ে দিবে।আমি তো নিজের চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারছিনা এইগুলো আমার সামনে ঘটছে আমি ভয়ে দেওয়ালের সাথে মিশে রইলাম কি হচ্ছে বুঝার চেষ্টা করছি।ডাক্তার কে দেখলাম ভয়ে গুটিয়ে গেছে কিন্তু আরেকটু পর যা দেখলাম তা দেখে হাসবো না কাঁদবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আরেকজন ডাক্তার এসে…
“” স্যরি স্যরি ব্রাদার ও আসলে নতুন জয়েন করেছে তোমাদের কে চিনতে পারেনি।এই তোমরা দাঁড়িয়ে আছো কেনো এখনো বড়ভাই কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাও কুইক..ফার্স্ট।(ডাক্তার)
“” দয়া করে দেখবেন যেনো ভাইয়ের কিছু না হয়।(কাঁদতে কাঁদতে ছুরি হাতে লোকটি বলল)
“” চিন্তা করোনা আল্লাহ কে ডাকো।আমি দেখছি।(লোকটার কাঁধে শান্তনা সরুপ হাত রেখে)
আমি আর ভয়ে সেখানে এক মূহুর্ত ও দাঁড়ালাম না,দৌড়িয়ে বাহিরে চলে আসলাম।হাটুতে ভর দিয়ে হাঁপাচ্ছি আর তখনি কারো ডাকে সম্মতি ফিরে পেলাম যেনো।
“” আপামণি যাইবেন না?(রিকশাওয়ালা)
“” তু..তুুমি? যাওনি এখনো? আচ্ছা আচ্ছা চলো তারাতারি এখানে আর এক মূহুর্ত দাঁড়ানো যাবেনা।
বলেই লাফ দিয়ে রিকশায় উঠে গেলাম।আর ভাবছি আমার সাথে এইগুলো কি ঘটছে!!! লোকটা কে? আরে ধুর এখনো বাসায় যেতে পারলাম না এতক্ষনে বোধয় বাড়িতে হৈচৈ পরে গেছে আমাকে নিয়ে।আল্লাহ জানে বাসায় গিয়ে কি বলব আজকে…
.
আস্তে আস্তে বাড়িতে ঢুকছি হে আল্লাহ নিজের বাড়িতেই আজ চোরের মতো ঢুকছি।হাতের কব্জি উলটিয়ে একবার টাইমটা দেখে নিলাম ইয়া আল্লাহ ৫:২০ বেজে গেছে?আল্লাহ বাঁচাও আজ আমাকে বলতে বলতেই কলিংবেল চাপলাম একবার।আশ্চর্য ব্যাপার একবার চাপতেই দরজা খুলে দিলো।সবটাই মাথার উপর দিয়ে গেলো সবাই দরজার সামনে আমাকে চোখ বড় বড় করে দেখছে আর বড় আম্মু আমাকে দেখে একবার তিথি বলেই সেন্সলেস হয়ে মাটিতে পরে গেলো।মা দৌড়িয়ে এসেই বলল…
“” তিথি কি..কি হয়েছে তোর?এই অবস্থা কেনো?এতক্ষন কোথায় ছিলি?
“” আপু তুই জানিস সবাই কতো টেনশনে আছে?(ছোট ভাই তানিম)
“” এই তোর কি হয়েছে সারা শরীরে রক্তমাখা কেনো? আর তোর ওরনাই বা কোথায়? (বড় চাচার মেয়ে তৃন্নি)
আমি এতক্ষনে বুঝলাম সবাই আমাকে এলিয়েন ভাবার কারনটা কি। আমি একদম ভুলে গিয়েছিলাম যে আমার পুরো শরীরে রক্ত দিয়ে যা তা অবস্থা। আমি আর এতো কিছু না ভেবে বড় আম্মুর কাছে গেলাম এখনো সেন্সলেস হয়ে পরে আছে তৃন্নি কে বললাম এক গ্লাস পানি নিয়ে আসতে।পানির ছিটা দিতেই বড় আম্মু চোখ খুলে তাঁকালো।আর আমাকে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো।এই হচ্ছে এক মহিলা সত্যি পাগল কি বলব আমাকে নিয়ে যতোটা ভাবে ততোটা বোধয় তৃন্নির জন্যও ভাবেনা।
“” তিথি মামোনি তুই কোথায় ছিলি জানিস চিন্তায় আমার এখানে কি অবস্থা?(বড় আম্মু)
“” জানিতো নাও তো আগে একটু পানি খেয়ে নেও (বলেই মাথাটা তুলে পানি খাইয়ে দিলাম)
“” তোর এই অবস্থা কেনো? এই চুপ কোনো কথা বলতে হবেনা আগে যা ফ্রেশ হয়েনে তারপর সব কথা হবে।
“” ভাবি তুমি কি বলছো!!? ও এই অবস্থায় বাড়িতে ফিরলো আর আমরা কোনো কিছু না জেনে চুপ করে থাকবো এখনো? তাওহীদটা তো বাসায় এসেই ওরে না পেয়ে পুলিশের কাছে ছুটলো।(মা)
“” কি?????? ভাইয়া পুলিশের কাছে গেছে?
“” হ্যাঁ বড় আব্বুও গিয়েছে।(তানিম)
“” তারাতারি কল কর বল যে আমি বাসায় ফিরে এসেছি।
“” আমি কল করে দিয়েছি আব্বু,ভাইয়া বাসায় আসছে।(তৃন্নি)
“” এই আর কোনো কথা না সবাই চুপ তিথি মা তুই রুমে যা আগে সকালে আজ ভালো মতো খেয়েও যাসনি এখন পর্যন্ত নিশ্চই কিছু খাওয়া হয়নি?যা যা তুই তারাতারি ফ্রেশ হয়ে আয় আমি তোর জন্য খাবার বাড়ছি।(বড় আম্মু)
আমি মিষ্টি করে একটু হেসে রুমে চলে আসলাম।বাথরুমে ঢুকে পরলাম গোসল করতে হবে।গোসল করে এসে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই মনে পরে গেলো আমার প্রিয় ওরনাটা ওই লোকটার কাছে রয়েগেলো।ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো একটু বড় আম্মুর ডাক শুনা গেলো নিশ্চই টেবিলে খাবার নিয়ে বসে আছে আমার জন্য।আর কোনো কিছু না ভেবে চলে গেলাম খেতে।আমি বসে আছি আর বড় আম্মু আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর ড্রয়িংরুমে সবাই গোল করে বসে আমাকে দেখছে বড় আব্বু আর তাওহীদ ভাইয়াও এতক্ষনে চলে এসেছে সবাই আমার দিকে জিঙ্গাসা ভরা দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে কিন্তু বড় আম্মুর ভয়ে কিছুই বলছেনা জানি খাওয়া শেষ হলেই আমাকে সবাই একগাদা প্রশ্ন ছুরে দিবে।আমি খেয়ে সবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ভাইয়া যেই কিছু বলতে যাবে তখনি আমি হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করলাম। আমি ভার্সিটি থেকে বের হয়ে দেখি কোনো রিকশা নেই তাই বাধ্য হয়ে হেটেই আসছিলাম কিন্তু হঠাৎ একটা লোককে দেখি পরে আছে রাস্তায় দেখে মনে হলো কেউ পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে কেউ কোনো সাহায্য করছিলো না তাই আমি তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই তাই এতোটা দেরি হয়ে গেলো।বলে সবার দিকে তাঁকাতেই দেখি সবার চোখ যেনো আরো বড় হয়ে গেছে। কি হলো সবাই এইভাবে তাঁকিয়ে আছো কেনো?
“” তিথি এইটা তো পুরো সিনেমা।(তৃন্নি)
“” আপুরে তুই একটুও ভয় পেলিনা? তুইনা রক্ত দেখলেই অজ্ঞান হয়ে যাস।(তানিম)
“” না রে লোকটা মৃত্যুর সাথে লড়াই করছিলো তখন আমার এতোকিছু ভাবার টাইম ছিলোনা।(আমি)
“” তোকে আমি বার বার বলেছিলাম ভার্সিটিতেই থাক আমি একটা ব্যাবস্থা করছি নিশ্চই কোনো সন্ত্রাসী হবে হয়তো তা না হলে ছুরি মারবে কেনো?(ভাইয়া)
এতোক্ষন পর সবার বলা শেষে বড় আব্বু মুখ খুলল
“” তা হে রে মা পুলিশ কেস হয়নি? পুলিশ আবার তোকে কিছু বলেনি তো?(বড় আব্বু)
“” না বড় আব্বু আমি ওখানে যেতেই তাদের লোক এসে গিয়েছিলো তাই আমি আর দেরি না করে চলে আসি।
“” তুই একবার ফোন করে জানাতে তো পারতি আমাদের। (মা রেগে গিয়ে)
“” মা আমি আসলে তখন….
কথা শেষ হওয়ার আগেই বড় আম্মু থামিয়ে দিলো..
“” হয়েছে হয়েছে এবার সবাই থামো মেয়েটা আজ অনেক বড় কাজ করেছে একজনের জীবন বাঁচিয়েছে। মেয়েটার উপর দিয়ে অনেক খাটুনি গিয়েছে এবার ওরে একটু রেস্ট নিতে দাও।(বড় আম্মু)
আমি বড় আম্মুকে জরিয়ে ধরে গালে একটা চুমু খেয়ে রুমে চলে আসলাম তৃন্নিও আমার পিছু পিছু এলো। এসেই আবার প্রশ্ন করা শুরু করলো..
“” এই আপু লোকটা কি অনেক ইয়াং ছিলো? সুন্দর হেন্ডসাম ছিলো?
“” আমি রাগি লুক নিয়ে বললাম,খুব পাঁকামো শিখে গেছো না?বড় আম্মু সেই কথা জানে তো?
“” এই আপু তুই না পঁচা খুব একটু বললে কি হয়?
“” আর কথা না বাড়িয়ে পড়তে বস যা যদি বকা খেতে না চাস।
“” উফফ..তুই না….
রাগ দেখিয়ে চলে গেলো। আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম শরীরটা আজ খুব ক্লান্ত। আচ্ছা লোকটা এখন কেমন আছে?আর যা দেখে আসলাম তাতে তো আমি এইটা সিউর যে লোকটা কোনো বড় ধরনের সন্ত্রাসী।ওদের কাউকেই এইসবের কিছু বললাম না শুধু শুধু টেনশন করবে। আচ্ছা তৃন্নি ওইগুলো কি বলে গেলো!! আমি সেইভাবে তাকে দেখিই নাই তবে এটুকু মনে পরছে লোকটা দেখতে খুব সুন্দরই হবে যেই লম্বা বাবাহ।উফফ আমি যে কি বোকা মেডিকেলের রিসিপশনের নাম্বারটা নিয়ে আসলেও তো জানতে পারতাম লোকটা কেমন আছে।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম….
.
সকালে নাস্তা করে বের হবো তখন আব্বু ডেকে বলে দিলো আর যেনো কালকের মতো না করি।আমি মাথা নাড়িয়ে চলে আসলাম।ভার্সিটিত
ে আজ কিছুতেই মন বসাতে পারলাম না শুধু ভাবছি লোকটা কেমন আছে।শায়লা(ব্রেস্ট ফ্রেন্ড)অবশ্য বার বার জিঙ্গাসা করেছে।তাই শায়লা কে সব খুলে বলি।তারপর এইভাবে ৭দিন কেঁটে গেলো আমি ওইদিনের সবকিছু ভুলেই গেলাম কিন্তু হঠাৎ একদিন ভার্সিটি থেকে ফিরছিলাম দেখি আমার সামনে একটা গাড়ি এসে থামলো আমি তাঁকাতেই দেখি কিছু লোক নেমে এলো কিরোকম ভিলেন টাইপের তারপর একটা ছেলে নেমে এলো আমি তো দেখে পুরাই ক্রাশ খেলাম ইয়া লম্বা,ফর্সা,চোখ গুলোর দিকে তাঁকিয়ে তো আমি হারিয়েই যাচ্ছিলাম সাদা-আকাশি চেকের শার্ট পরা হাতে ব্রেন্ডের ঘড়ি চুল গুলো বাতাসে সামনে এসে রয়েছে দেখে তো আমার চোখের পলকই পরছেনা।
“” হ্যালো এই যে ম্যাডাম..
ডাক শুনে বাস্তবে ফিরে এলাম।ছেলেটা আমার একদম কাছে এসে দাঁড়িয়েছে আমি তো খেয়ালই করলাম না।
“” জ্বি..জ্বি আমাকে বলছেন?
“” হ্যাঁ আপনাকেই বলছি। সেইদিন আমাকে হাসপাতালে রেখে এসে আরতো কোনো খোঁজe খবরই নিলেfন না।
আমি তো কথাটা শুনে পুরোই আকাশ থেকে মাটিতে পরলাম তারমানে সেই লোকটাই এই ছেলেটা!!? আমি ভয়ে পুরো গুটিয়ে গেলাম তারমানে এই ছেলেটা সন্ত্রাসী আমি আর এক মূহুর্ত দাঁড়ালাম না হাটা শুরু করলাম কিন্তু আমার পুরো শরীর যেনো কাঁপছে পা যেনো আগেই বাড়ছে না।ছেলেটা আমাকে পিছোন থেকে ডাকছে না আমি কারো কোনো কথা শুনতে চাইনা।
চলবে……..