#আকাশে_তারার_মেলা_২
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___৫০
ইতি,অভিক কিংকর্তব্য বিমূঢ়!আদ্র দের উপস্থিতি যেন ওদের জন্য একেবারেই কাম্য ছিল না। আর তাও যদি হয় কবুল বলার ঠিক আগ মুহুর্তে তবে তা খুবই ভয়ংকর কিছুর বার্তা দেয়। আদ্র হাতের মিষ্টি গুলো সামনের টেবিলে রেখে দিল।
‘ কি রে বিয়ে বসে যাচ্ছিস হুট করে তা-ও আমার সংসার ভাঙ্গার চেষ্টায় সফল না হয়েই?’
ইতি ফাঁকা ঢোক গিলল। গলা শুকিয়ে প্রায় কাঠ হয়ে গেছে। আদ্রর আগমন যে তার জন্য সুফল নয় তা দিব্যি বুঝতে পারে। পাশে থাকা অভিকের দিকে তাকাল ভয়ার্ত চোখে। অভিকের পরিবার,ইতির পরিবার এবং নিকট কয়েকজন আত্মীয় স্বজন বিয়েতে উপস্থিত। সকলে ফ্যালফ্যাল নয়নে চেয়ে আছে ওদের দিকে, যেন কোনো ড্রামা চলছে এখানে। ড্রামার থেকে কমও তো নয়। একটা চেয়ার টেনে আনল আদ্র। তুলির দিকে তাকিয়ে দেখল তুলির হাত পা কাঁপছে। হাত টা ধরে বসিয়ে দিল চেয়ারে। তুলিসহ সকলে হতবাক। ইতস্তত কন্ঠে বললো,
‘ আমি দাঁড়িয়েই ঠিক আছি ডাক্তার সাহেব।’
‘ একদম ঠিক নেই দাঁড়িয়ে তুমি।’
‘ কিন্তু! ‘
‘ আর একটা কথা যদি বলেছ তাহলে মুখ সেলাই করে দিব। এটা আমার জন্য খুব একটা কষ্টকর নয়।’
তুলি চুপচাপ বসে রইল। কারণ আদ্রর দ্বারা মুখ সেলাই করা একদমই কঠিন হবে না। একদমই না। হৃদয় পাষাণ বলেই তো অন্যের হৃদপিণ্ডের চিকিৎসা করার ক্ষমতা রাখে,তুলি হলে তো মিনিটে মিনিটে বেহুঁশ হতো। অন্যের হার্ট সার্জারি করবে এমন সাহস নেই।
পায়েল মিষ্টির প্যাকেট খুলে একটা মিষ্টি হাতে তুলে নিল। ইতির মুখের সামনে ধরে দু ঠোঁট প্রসারিত করে বলে উঠল,
‘ মিষ্টি খা তোর হেরে যাওয়ার খুশিতে,বিয়ের খুশিতে এবং আদ্রর বাচ্চার আন্টি হওয়ার আনন্দে।’
ইতির মুখের আদল পরিবর্তন হয়ে গেছে। ক্রুদ্ধ চোখে চাইল পায়েলের দিক। পায়েল হাসল। বিস্তর হাসি। জোর করে ইতির মুখে মিষ্টি টা পুরে দিয়ে টিস্যু নিয়ে হাত মুছল। কাঠ কাঠ স্বরে বললো,
‘ আমার সাথে ধানিলংকা হবার চেষ্টা করাও বৃথা। চোখ দুটো নিচে রাখ এখনও অনেক কিছু বাকি। তখন নাহয় তেঁতে উঠিস চরিত্রহীনা মেয়ে।’
অভিক ফোড়ন কেটে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে,
‘ হাউ ডেয়ার ইউ পায়েল?তুলি বড্ড বাড় বেড়েছ। ইতিকে চরিত্রহীনা বলছো তার বাড়িতেই এসে?বেয়াদব মেয়ে।’
‘ চরিত্রহীন ব্যক্তি চরিত্রহীনার পক্ষ নিচ্ছে। বাহ্ ব্যাপক ইন্টারেস্টিং তো! দু’জন দু বিছানায় অন্যদের নিয়ে মেতে থাকে অথচ মন থেকে দু’জন একই ছাদের নিচে বসবাস করে।’
কথাটা বলে সবগুলো দাঁত প্রদর্শন করে হাসল অন্তু। পায়েলের হাত টা ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। রাগে,আক্রোশে ফেটে পড়ছে অভিক। উঁচানো স্বরে চিল্লিয়ে উঠল,
‘ গেট আউট ফ্রম হেয়ার।’
‘ রিলেক্স! এতো জোরে চিল্লানো স্বাস্থ্যের জন্য একেবারে ভালো নয়।’
আদ্রর লহু স্বরে অভিক দমে গেল। সহজ সরল, সাদামাটা কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
‘ কি চাই?’
‘ কিছু না। আপাতত কবুল বলে দু’জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারপর নাহয় বাকি টা শুরু করা যাবে।’
অভিকের বাবা এতক্ষণ অব্দি শান্ত হলেও আর থাকতে পারল না। গলা উঠিয়ে বলে উঠলেন,
‘ কি হচ্ছে এসব?তোমরা এখানে কেন?’
‘ বিয়ে এটেন্ড করতে এলাম বিনা নিমন্ত্রণে।’
জবাবে নিরলস ভঙ্গিতে বাক্যটা আওড়াল আদ্র। অভিকের বাবা থম মেরে গেলেন এমন অভিব্যক্তিতে। পায়েলের সাথে অভিকের বিয়ে যেদিন ভেঙে গেল সেদিনই বুঝতে পারলেন তিনি আদ্র ঠিক কেমন ধাঁচের ছেলে। কে চায় নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারতে!তাই তো তিনি নিরুত্তর থাকলেন,কাজী সাহেব কে তাগিদ দিলেন বিয়ে পড়ানোর।
তুলি ক্যাবলাকান্তের ন্যায় তাকিয়ে। আদ্র,পায়েল,অন্তু, নিবিড়ের উদ্দেশ্য একটু আকটু আঁচ করতে পারছে। এই একটুও বুঝতে যেন মাথার ঘাম পায়ে ঝরে পড়ছে। কি ভয়ংকর এরা!তবে তুলির নরম, আবগি মনে ইতির জন্য আজ এক ফোঁটাও দয়া আসছে না। মনের আয়নায় দৃশ্যমান হচ্ছে ডায়েরি তে লিখিত আদ্রর কথাগুলো বাস্তব রূপে,ইতির সেদিনের মিথ্যে বলে আদ্র ও তার সম্পর্কে ফাটল ধরানোর চেষ্টা। এছাড়া অভিক!তুলির দ্বারা যদি সম্ভব হতো অভিক কে নিজ হাতে ভয়ংকর মৃত্যু দিত। কিন্তু কাউকে আঘাত করার মতো মনমানসিকতা নেই তার।
ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ইতি কবুল বললো। আঁড়চোখে বারংবার অবলোকন করতে লাগল পায়েল,আদ্র সকলকে। বিয়ে সমাপ্ত হতেই আদ্র হাত তালি দিল। সাথে সকলে। আদ্রের এরকম উদ্ভট বিহেভিয়ার তুলির মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আবার এখানে উপস্থিত থাকতেও খুব একটা স্বস্তি পাচ্ছে না। কেমন বন্ধ বন্ধ হয়ে আসছে নিঃশ্বাস। জঘন্য দু’টো পারসন সামনে স্থির থাকলে কারই বা স্বস্তির দেখা মিলবে!
আদ্র ক্লান্ত ভঙ্গিতে নিঃশ্বাস বিমোচন করে দিল। তুলির হাত টেনে দাঁড় করাল চেয়ার হতে। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে তুলির। একবার নিজে বসাল, আবার নিজেই টেনে উঠাল। আদ্র আবার পাগল হয়ে যায় নি তো অতিশয় রাগের দাপটে!
‘ যাও অভিক সাহেব ও ইতি কে বিয়ের গিফট দিয়ে আসো তুলা।’
এবার বোধহয় তুলি জ্ঞান হারিয়েই বসবে। এই যে আদ্রর এতো দুর্বোধ্য হাসি, ভাবলেশহীন, নির্বিকার,নির্লিপ্ত মুখভঙ্গি তা ঝড়ের অব্যবহিত পূর্বের আকাশের স্থিরভাব মাত্র। কোন সময় প্রকান্ড ভাবে ধরণীতে এসে লন্ডভন্ড করে দিবে তা বুঝার ক্ষমতা কারো নেই। আমতা আমতা করে প্রশ্ন করল তুলি,
‘গিফট?’
‘হুম। চলো ওদের গিফট দিবে।’
‘ কিন্তু আমরা তো গিফট আনি নি।’
তুলিকে এনে ইতির সম্মুখে দাঁড় করাল আদ্র। ঘাড় কাত করে পাশ ফিরে আদ্রর দিকে তাকাল তুলি করুণ চাহনি নিক্ষেপ করে। আদ্র মুচকি হেসে বলে উঠল,
‘ ইতির গালে থাপ্পড় মারো। আশা করি এর থেকে বড় গিফট তুমি দিতে পারবে না। এবং এটাই ইতির জন্য যোগ্য উপহার।’
তুলি রসগোল্লার মতো চোখ বড় বড় করে তাকায় আদ্রর কথার প্রেক্ষিতে। অথচ আদ্র শান্ত ও ঠোঁটে লেগে আছে ক্ষীণ হাসি। বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত সকলে নিস্তব্ধ,হতবুদ্ধি এমন কথায়। আদ্র ফের বলতেই তুলি নিজের চিকন,দুর্বল হাতের দিকে এক পলক চাইল। মাথা তুলে আনতস্বরে না বলল। সাথে সাথেই শুনতে পেল আদ্রর চাপা,গম্ভীর স্বর।
‘ ইতির গালে তোমার হাতের থাপ্পড় না পড়লে,তোমার কানে, গালে আমার হাতের স্পর্শ পড়বে। খুব কঠিন স্পর্শ। ‘
তুলি ঢুক গিলল। ইতি কিছু বুঝে উঠার আগেই শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মেরে বসল গালে। একেকটা মানুষের চক্ষু কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার অভিপ্রায়। তুলির কি হলো জানে না তবে অভ্যন্তর হতে একটা চাপা রাগ জাগ্রত হয়ে গেল। আদ্রর বলার অপেক্ষা না করে পুনরায় কষিয়ে একটা থাপ্পড় মারল ইতি কে। তুখোড় দৃষ্টিতে তাকাল। রাগান্বিত কন্ঠে আওড়ালো,
‘ আপনি জঘন্য। আমার খালামণি কে অপদস্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। ডাক্তার সাহেবের দিকে কুনজরে তাকিয়েছেন। আমার সংসার ভাঙার জন্য মিথ্যে,বানোয়াট কথা বলেছেন। সবচেয়ে বড় কথা একটা মেয়ের সম্মান,যা একদমই ঠুনকো নয়। তা আপনি বিলিয়ে দিয়েছেন অনায়সে।’
তুলির রণচণ্ডী রূপ দেখে বিস্মিত পায়েল,ইতি সকলে। তবে আদ্র শান্তি পাচ্ছে। জীবনে মানুষকে একদম বোকা হতে নেই। সরল সোজা মন, সবার হৃদয় ছুঁয়ে দিতে পারে না। কেউ কেউ বোকামির সুযোগ নেই, হাসিল করে নেয় স্বয়ং উদ্দেশ্য। অভিকের মেজাজ গরম হয়ে গেল। হাত উঠিয়ে তুলির গালে মারতে যাবে তার আগেই নিজের বুকে তুলি কে চেপে ধরল আদ্র। তীক্ষ্ণ,রোষপূর্ণ চাউনি ফেলল। চোখ দুটো হতে এই বুঝি ঝরে পড়বে এক ফোঁটা লাল তরল রক্ত।
‘ খুন করে ফেলব! আমার প্রাণে যে আঘাত করবে তাকে কষ্ট করে পৃথিবীতে বাঁচতে দিব না আমি। তাই ভুলেও ছোয়ার চেষ্টা করবি না। আমার ভালোবাসা, আমার তুলা। তোর মতো জানোয়ার থেকে বছরের পর বছর আড়ালে ওকে প্রটেক্ট করে আসছি। আর তুই সামনেই ছুঁয়ে দিবি!’
বাড়ন্ত হাতে চাপ পড়তেই অভিকের পুরো মুখ বিষিয়ে এল। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠল। কন্ঠনালি হতে বেরিয়ে এল অসহ্য ব্যাথা মিশ্রিত চিৎকার। কেউই আদ্রর ক্রোধের কাছে এগিয়ে এসে অভিক কে সাহায্য করার সাহস করে উঠতে পারল না। ইতি জমে গেল ভয়ে৷ পিছিয়ে গেল কয়েক পা।
‘ কি ভেবেছিলি দু’জন মিস তামান্না কে সুইসাইড করার জন্য ফোর্স করে বেঁচে যাবি?মেয়েটা এতোটা ভীতু ছিল না যে হার মেনে যাবে। কিন্তু তোরা ওকে সুইসাইড করতে বাধ্য করেছিস। ইন্টিমেট হবার ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়েছিস। দু’জন তো একে অপরের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনে আবদ্ধ ছিলি তাহলে খুব কি দরকার ছিল অন্যের সাথে খারাপ করার?তোদের মতো মানুষ আমি আমার লাইফে একদমই দেখি নি। এতোই যখন দেহ চাহিদা পতিতা পল্লিতে বিজনেস করলেও পারতি। ‘
আদ্র অভিক কে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিল। সবাই এক নজরে চেয়ে আছে। অভিক,ইতির বাবা-মা নিস্তব্ধ। উনাদের মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না পূর্বে।
‘ পায়েল কে বিয়ে করার প্ল্যান টা ইতির ছিল। তোরা দু’জন মিলে চেয়েছিলি সেদিন জন্মদিনে ইতিকে সম্মুখে থাপ্পড় মারার কারণে পায়েল কে বিয়ে করে প্রতিশোধ নেওয়ার। পতিতার সমতুল্য এই মেয়ের তো ভাগ্য ভালো আমি ওকে জ্যন্ত সমাহিত করি নি। মেয়ে বলেই বেঁচে গেল। মেয়েদের গায়ে হাত তোলা আমার স্বভাবে নেই। খুব বেশি রাগের চোটে ওইদিন থাপ্পড় মেরে ফেলেছি। তোরা মনে করেছিলি সব তোদের পরিকল্পনা মতে হবে৷ বাট লেট মি টেল ইউ।
তোর অতীত,বর্তমান সব আমার জানা। যেদিন ইতি আমাকে খারাপ প্রস্তাব দিয়েছল সেদিনই আমি সব খোঁজ খবর নেই। জানতে পারি প্রায়ই তোর বেড পার্টনার হয় ইতি। ভাবলি কি করে কোনো খোঁজ খবর না নিয়েই জীবনের প্রিয় বান্ধুবী কে তোর মতো জানোয়ারের কাছে তুলে দিব?তোরা মানুষ রূপে অমানুষ। কেবল দেহ সুখ টা-ই খুঁজে গেলি। পায়েলের বিয়ে অব্দি শুধুমাত্র প্রমাণ জোগাড়ের জন্য নিরব ছিলাম। আমি তোদের শাস্তি দিব না। দিবেন আল্লাহ। কিন্তু প্রত্যেক টা মানুষের, তোদের বাবা -মার জানা উচিত ছিল বিলাসিতায় কতটা বকে গিয়েছিস তোরা। কতটা নিকৃষ্ট তাদের সন্তান। সবসময় সত্য গোপন রেখে অন্যকে শান্তি দেওয়ার জন্য পাপ বাড়তে দিতে নেই। বাগানের সৌন্দর্য নষ্ট করে এমন আগাছা কে উপড়ে ফেলে দেওয়ায় শ্রেয়।’
ইতির বাবা পড়ে যেতে নিলে পিছন থেকে সামলে নেয় নিবিড়। সোফায় বসিয়ে দিয়ে পানি এগিয়ে দেন। গ্লাস টা ফিরিয়ে দিলেন। চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে গেল। বড় ভাইয়ের ছেলে ও নিজের মেয়ে এতটা কলুষিত তিনি জানতেন না। ইতি গতরাতে জানাল সে অভিক কে ভালেবাসে। অভিকও তাকে বিয়ে করতে চায়। আদ্র মোবাইল বের করে সব প্রমাণ ইতির বাবার হাতে ধরিয়ে দিল। তামান্নার সাথে সেদিন দেখা করার ভিডিও টা। এছাড়া ভার্সিটির বিভিন্ন মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফিজিক্যালি এটাচ হওয়ার চেষ্টা। ইতির বাবা মেয়ের দিকে একবার তাকালেন। পুলিশ কে ফোন করে খুলে বললেন কিভাবে অভিক মেয়েদের সাথে প্রতারণা করত এবং সুইসাইড করতে বাধ্য করত। নিজের মেয়ের দোষ টাও ঢাকলেন না ভদ্রলোক। তবে একটাই রিকুয়েষ্ট করলেন যদি সম্ভব হয় ইতি কে যেন বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়।
পায়েল নিজের ৭৮০ টাকা দিয়ে কেনা জুতা টা হাতে তুলে নিল। ব্যাথায় মেঝেতে কুঁকড়ানো অভিক কে এলোপাতাড়ি মারতে মারতে বলে উঠল,
‘ শালা!সামান্য হাতের ব্যাথা সহ্য হয় না আবার প্রতিশোধ নিতে চাস। দেখা প্রতিশোধ নিয়ে। জেলে যেতে হবে না জুতো পিটা করে রক্তাক্ত করব তোকে। আমার বোনকে মারার জন্য হাতও তুলিস। তোর গালে মারব আমি জুতা দিয়ে।’
মারতে মারতে অভিকের গালের অবস্থা খারাপ। ছিলে গিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। অন্তু কোমর জরিয়ে টেনে আনল। ফিসফিস করে বললো,
‘ ছেড়ে দে জান। ও তো তোর মার খাওয়ার যোগ্য না। তবুও কেন মারছিস?ওকে মেরে তোর হাত টা আর নষ্ট করিস না। প্লিজ!’
.
.
তুলির খারাপ লাগছে ইতির বাবার দিকে তাকিয়ে। এ মুহুর্তে একজন অসহায় বাবা দেখতে পাচ্ছে সে। কোথায় ইতি আর কোথায় তার বাবা। এ যেন আকাশ-পাতাল পার্থক্য। উনি হয়ত অনুশোচনায় ভুগছেন ভালো করে মানুষ করতে পারেন নি মেয়েকে। আজ এই মুহুর্ত থেকে প্রত্যেক টা মানুষ আঙ্গুল তুলবে কিন্তু সবাই কি জানে প্রত্যেক টা বাবা -মা-ই সন্তান কে সঠিক পথে মানুষ করার চেষ্টা করে। বড় হয়ে কেউ কেউ বিগড়ে যায়। বাবা-মা তো কখনও বলে না বিগড়ে যাও তোমরা!ইতি নিজের জন্যও ভাবে নি, শয়তানের প্ররোচনায় পরে খুইয়ে বসেছে জীবনের সব। মোহ,চাওয়া, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি বাড়বেই তবে নিজের বিবেকে বুঝে নিতে হবে কোনটা ভুল এবং কোনটা সঠিক। আজ আদ্র সবটুকু খোলাসা না করলে হয়ত ওদের পাপ বেড়েই যেত কমতো না বৈকি!
#চলবে,,
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। যারা যারা গল্পটা পড়েন রেসপন্স করার অনুরোধ রইল।)