#আকাশে_তারার_মেলা ✨
#লেখিকাঃআসরিফা_ সুলতানা_ জেবা
#পর্ব -৩
❝যদি বলি আপনাতে মুগ্ধ হয়েছি আমি। আপনি কি বিশ্বাস করবেন আদ্র? আমি যদি বলি মন হারিয়েছি আপনি কি আমার মনটা খুঁজে দিবেন ড.আদ্র? মুগ্ধ হয়েছি আপনাতে, মন হারিয়েছে আপনার মনের খুঁজে। খুব মিস করেছি তোমাকে। পুরো দশ দিন দশ মাস মনে হয়েছে। প্রহর গুলো কাটানো সত্যিই কষ্ট সাধ্য ছিল আদ্র।❞
একটা মেয়ের শ্রুতিমধুর কন্ঠের কথা গুলো ভেসে এল মোবাইল থেকে। স্তব্ধ হয়ে বসে রইল তুলি চেয়ারে। অজানা এক কষ্টে অন্তর মুচড়ে উঠছে বার বার। ডাগর ডাগর চোখ দুটো তে টলটল করছে পানি। তুলির কিশোরী মন তবে কি আবারও ছেয়ে যাচ্ছে আঁধারে? আবারও ভয়েস মেসেজ টা চালু করল তুলি। কর্ণধার হওয়া প্রত্যেক টা শব্দ যেন খুবই বিষাক্ত! এতো মিষ্টি স্বর মেয়েটার তবুও যেন তুলির কাছে বিষাক্ত কিছু শব্দ যা তুলির হৃদপিণ্ডে আঘাত করছে অনবরত। তুলি নিজেও অনুভব করতে পারছে না কেন হচ্ছে তার এতো কষ্ট!
কিছুক্ষণ আগেই আদ্রর সাথে হসপিটালে এসেছে তুলি। ইমারজেন্সি অপারেশন থাকায় তুলি কে কেবিনে বসিয়ে দিয়ে চলে গেল আদ্র। যাওয়ার আগে নিজের মোবাইল টা দিয়ে গেল তুলির কাছে যেন তুলি বোরিং না ফিল করে। কড়া গলায় নিষেধ করে গেছে রুম এর বাহিরে না যাওয়ার। তুলি ও বাধ্য মেয়ের মতো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে আদ্রর আদেশ। মোবাইলে আদ্রর একটা ছবিতে চোখ আটকে গেল তুলির। সেটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে মগ্ন ছিল তখনই ভয়েস মেসেজ টা এল। নিজের কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে ভয়েস টা অন করতেই শুনতে পেল কোনো এক মেয়ের আদ্রর জন্য প্রকাশিত অনুরাগ।
খানিক সময় পর কেবিনে প্রবেশ করল আদ্র। চোখে মুখে তার খুশি উপচে পড়ছে। হয়তো অপারেশন টা সাকসেসফুল হয়েছে । চঞ্চল তুলি কে বিষন্ন অবস্থায় দেখে বুক টা কেঁপে উঠল আদ্রর। বড় বড় পা ফেলে তুলির কাছে এসে বসে পড়ল হাটু গেঁড়ে। নীরবতা ভঙ্গ করে প্রশ্ন করল,,,
—“কি হয়েছে তুলি?(শান্ত কন্ঠে)”
আদ্রর দিকে দৃষ্টি স্থির করে অসহায় স্বরে জবাব দিল,,,
–“কেন যে ভালো লাগছে না আদ্র ভাইয়া। আমায় বাসায় নিয়ে চলুন প্লিজ।”
ভ্রু কুঁচকাল আদ্র। সকাল বেলা ও কতো এক্সাইটেড ছিল হঠাৎ আবার কি হল মেয়েটার! কথাটা ভেবেই উঠে দাঁড়াল আদ্র। নিজের ফোন হাতে নিতেই চোখে পড়ল ভয়েস মেসেজ টা। থম মেরে রইল কিছুক্ষণ । শব্দগুলো কানে পৌঁছাতেই তুলির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। নিজের ফোন টা পকেটে ঢুকিয়ে তুলির উদ্দেশ্যে বলে উঠল,,,
–চলো।
বাসায় এসে রুমে দরজা বন্ধ করে বসে আছে তুলি। কিছুই ভালো লাগছে না তার। বসন্তের সৌন্দর্য ও আজ তার মনে ধরছে না। এক ফালি রোদ্দুর ও চায় না তুলির। তার তো এক রাশ ভালোবাসা ও এক মুঠো শান্তির প্রয়োজন। সতেরো বছরের একটা মেয়ের আর কি বা চাওয়া হতে পারে এর চেয়ে বেশি! দরজায় কখন থেকে কড়া নেড়ে যাচ্ছে কেউ। বিরক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়াল তুলি। দরজা মেলতেই চোখে পড়ল আদ্রর রক্তিম চোখ। তুলি কিছুটা পিছিয়ে যেতেই ভিতরে ঢুকে দরজা টা লাগিয়ে দিল আদ্র। পিছন ফিরে কষিয়ে এক থাপ্পড় মারল তুলির গালে। গালে হাত দিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে আদ্রর দিকে তাকাল তুলি। নিজের চোখের জল কিছুতেই আটকে রাখতে পারল না আর। ডুকরে কেঁদে উঠল শব্দ করে। হাত টা ধরে নিজের বুকে টেনে নিল আদ্র। আদ্রর বুকে গুটিসুটি মেরে রইল তুলি। চোখের পানি নাকের পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে আদ্রর সাদা শার্ট টা। হিচকি তুলতে তুলতে বলে উঠল,,,
–“আপনি আমাকে মারলেন কেন আদ্র ভাইয়া?”
—” মারলাম কোথায়? আমি তো আদর করলাম। গায়ে বসন্তের হাওয়া লেগেছিল। হাতটাও বেশ চুলকাচ্ছিল। ভাবলাম তোমাকে একটু আদর করে দেখি। ষ্টুপিড একটা! দরজা লাগিয়ে রেখেছিলে কেন?কখন থেকে ডাকছিলাম কোনো খেয়াল আছে?”(ধমকে)
কথাটা বলেই তুলি কে ধাক্কা দিয়ে বুক থেকে সরিয়ে দিল আদ্র। ধাক্কায় কয়েক পা পিছিয়ে গেল তুলি। পড়ে যেতে নিলেও কোনোভাবে সামলে নিল নিজেকে। অবাক ও লজ্জা যেন তার চিরসঙ্গী হয়ে উঠল মুহুর্তেই। ভাবতেই সারা শরীর শিউরে উঠছে তুলির যে আদ্রর বাহুতে আবদ্ধ ছিল কয়েক মিনিট। হৃদপিণ্ড কাঁপতে লাগল প্রচন্ড গতিতে। এ কেমন শিহরণ! এ কেমন অনুভূতি! ছোট্ট তুলি যেন নিমিষেই লজ্জায় লুটিয়ে পড়বে পড়বে ভাব। তুলির দিকে রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকাল আদ্র। নিজের শার্টের বুকের কাছের অংশ টা দেখে নিয়ে রাগী কন্ঠে বলল,,,
— “দরজা বন্ধ করে আর কখনও পেত্নীর মতো বসে থাকলে ছাদ থেকে ফেলে দিব আমি। একটুখানি একটা মেয়ে অথচ ভাব এমন যেন রাণী এলিজাবেথ। এখনো নাক দিয়ে পানি পড়ে আর ওনি দরজা বন্ধ রেখে বুঝায় ওনার প্রাইভেসি দরকার। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আসবে। আর হে চোখে যেন কাজল না দেখি। দেখলে ময়লা পানিতে চুবিয়ে মারব তোমাকে।”
কথাগুলো বলে একটু খানিক সময় ও দাঁড়াল না আদ্র। তুলি তো ভীষণ চমকিত আদ্রর কথা শুনে। কি বলে গেল এসব আদ্র? মারার হুমকি দিয়ে গেল? চোখে কাজল দিলে ওনার কি সমস্যা?এখন কি ওনার জন্য আমার সাজা ও নিষিদ্ধ? কথাগুলো ভেবেই মিনমিন স্বরে বলে উঠল,,,
–“আপনি ভীষণ খারাপ আদ্র ভাই। আপনি তো নির্দয়, পাষাণ একজন মানুষ। কিন্তু আমার মনটা যে তা মানতে নারাজ।”
——-
নিচে এসে আমরিনের পাশে দাঁড়াল তুলি। আদ্র বসে বসে ফোন ঘাটছিল। কারো আসার শব্দ পেয়ে মুখ তুলে এক পলক চাইল তুলির দিকে। ফোন টা পকেটে ঢুকিয়ে চুল গুলো টেনে নিল পিছনে। তুলি ও আমরিন গাড়ির পিছন সিটে বসতেই আদ্র ও বসে পড়ল তুলির সাথে। সাথে সাথেই অজানা কিছু অনুভূতি গ্রাস করে নিল তুলিকে। আদ্রর স্পর্শে বজ্রপাতের ন্যায় ছলকে উঠল সারা শরীর। আমরিনের দিকে একটু চেপে বসতে নিলেই আদ্র গম্ভীর স্বরে আস্তে বলে উঠল,,
–” থাপ্পড় টা মনে হয় তেমন লাগে নি। নড়াচড়া করছো কেন?সমস্যা নেই আদ্রর গায়ের জোর এতো কম না। পরের বার সবটুকু শক্তি দিয়েই দিব।”
হঠাৎ মনে পড়ল তুলির সেদিন রাতের কথা। ভয়ে আঁতকে উঠল। এই লোকের গায়ে যেই জোর তুলি ঐদিন রাতে বুঝিস নি? আর থাপ্পড় টাও কম ছিল না। চুপচাপ হয়ে বসে থাক তুলি। –মনে মনে কথাগুলো বলে একদম চুপ হয়ে আদ্রর সাথে বসে রইল।
আকস্মিক নিজের হাতে কারো হাতের ছোঁয়া অনুভব করতেই শীতল স্রোত বয়ে গেল তুলির মেরুদণ্ড বরাবর। এটা কি তুলির মনের ভুল? নাকি কোনো হ্যালুসিনেশন? চোখ ফিরে আদ্রর দিকে চাইল। আদ্র বাহিরে তাকিয়ে। কিন্তু তার হাতের মুঠোয় তুলির এক হাত যা আমরিনের অগোচরেই মুঠো বন্দী করে নিয়েছে আদ্র। তুলি কে একটু কাছে টেনে কানের কাছে ধীর কন্ঠে বলে উঠল,,,
–” থাপ্পড়ের জন্য সরি ছোট্ট তুলি।”
আদ্রর গরম নিশ্বাসের উত্তাপ তুলির হৃদপিণ্ডে তীব্র আঘাত হানতে সক্ষম। অজানা এক ঘোরে ডুবে গেল তুলি। মনে শুরু হয়েছে ঝড়। আদ্রর হাতের মুঠোয় বন্দী হাতটাও কাঁপছে মৃদু মৃদু। তুলির লজ্জায় নুয়ে যাওয়া মুখ টা দেখে আলতো হাসল আদ্র। হাতটা আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরে মাথা এলিয়ে দিল সিটে। ওড়না তে টান অনুভব করতেই তুলির দুরুদুরু বুকের কম্পন বেড়ে গেল দ্বিগুণ। বিস্ফোরিত নয়নে আমরিনের দিকে চাইতেই দেখল আমরিন কানে হেডফোন গুঁজে সিটে মাথা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। মনে সংকোচ নিয়ে আদ্রর উপর চক্ষু স্থির করল তুলি। চমকে উঠল! ভীষণ চমকে উঠল! আদ্র তুলির ওড়না মুখের উপর দিয়ে সিটে মাথা এলিয়ে শুয়ে আছে। আজ বোধ হয় তুলির হৃদপিণ্ডে স্পন্দন থেমেই যাবে। কি হচ্ছে এসব তার মস্তিষ্ক কিছুতেই ধারণ করতে পারছে না। ওড়না দিয়ে রাখাতে আদ্রর মুখের ভঙ্গি ও বুঝা দায় হয়ে পড়েছে। দুচোখ বুঁজে তুলি ও মাথা এলিয়ে দিল সিটে। যা হবার হোক এ মুহুর্তে হৃৎস্পন্দনের স্বাভাবিক হওয়া খুবই প্রয়োজন।
কলেজে ভর্তি করে দিল আদ্র তুলি ও আমরিন কে। তুলি স্কুলে সাইন্স বিভাগে পড়লেও এখন গ্রুপ চেঞ্জ করতে চেয়েছিল কিন্তু আদ্রর কড়া নির্দেশ সাইন্স গ্রুপে পড়তে না চাইলে ভর্তি করাবে না আদ্র। বেচারি তুলি মুখ ফুটে সবার সামনে বলতেই পারল না বায়োলজি তে তার ভীষণ দুর্বলতা।
হাস্যকর হলেও ইহা তুলির কাছে ভয়ের অপর নাম। আদ্রর চোখ রাঙানো তে শেষমেশ ভর্তি হল তুলি। গেইটের কাছে আসতেই আমরিন বলে উঠল,,
–“ভাইয়া রিমি দের বাসায় যাব। আম্মুকে বলে এসেছি। তুলি কে ও সাথে নিয়ে যাব।”
–” তুলি আমার সাথে বাসায় যাবে। তুই গাড়ি নিয়ে চলে যা। বাসে চলে যাব আমি তুলি কে নিয়ে।”
চোখের আকৃতি বড় হয়ে এল আমরিনের। সে কি ঠিক শুনল? যেই আদ্র আহনাফ তার সাতাশ বছরের জীবনে কখনও বাসে চড়ে নি সে নাকি আজ বাসে চড়বে। অবাক স্বরে আমরিন বলল,,,
–” ভাইয়া তুমি তো বাসে চড়ো না। ”
–“তো কি হয়েছে? আজ চড়ব। তুই তো বিপরীত দিকে যাবি এতে গাড়ি ঘুরিয়ে বাড়ি ফিরতে ও দেরি হয়ে যাবে। তার চেয়ে ভালো হবে তুই গাড়ি নিয়ে চলে যা। আমি তুলি কে নিয়ে বাসে চলে যাব।”
তুলি বরাবরই নীরব দর্শক। কিন্তু তার মনে অজানা কোনো কারণে ভেজে উঠছে খুশির ঝংকার। আদ্রর সাথে বাসে যাবে ভাবতেই কেন যে অসংখ্য ভালো লাগা ছেয়ে গেল মন জুড়ে। আমরিন ভাইয়ের মুখের উপর আর কথা বলল না। তার ভালো করেই জানা আছে ভাই রেগে গেলে আর নিস্তার নাই।
বাসে উঠে চোখ কপালে উঠে গেল আদ্রর। একটা ও সিট খালি নেই। কোনোমতে তুলি কে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তুলি ঠিকমতো দাঁড়াতে ও পারছে না। বাসের ঝাঁকুনি তে বার বার পড়ে যাওয়ার অবস্থা। একে তো এমন পরিস্থিতি তার উপর কিছু ছেলে এসে দাঁড়াল কাছে। মাথা তুলে আদ্রর দিকে অসহায় চোখে চাইল তুলি। নিমিষেই কোমরে হাত রেখে নিজের একদম কাছে টেনে নিল আদ্র তুলিকে। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে বুকের মাঝে আঁকড়ে নিল আদ্র। কোমরে আদ্রর হাতের ছোঁয়া তুলির মন টা নাড়িয়ে দিল। খামচে মুঠোতে পুরে নিল আদ্রর নীল জ্যাকেটের কিছু অংশ। আদ্র মুচকি হেসে মনোযোগ দিল তার দেওয়া তুলা নামের মেয়েটা কে আগলে রাখতে।
—————-
ফুচকা স্টলের সামনে দাড়িয়ে আছে তুলি। উদ্দেশ্য একটাই ফুচকা খাওয়া। তখন বাস থেকে মাঝ রাস্তায় নেমে গেল আদ্র। তুলির দিকে তাকিয়ে ঠোঁট দুটো প্রসারিত করে বলল,,,
–“চলো ফুচকা খেয়ে যাই তুলা।”
আদ্রর কথাটা শুনে মাথা দুলাল তুলি। বিস্মিত হয় নি সে। হবেই বা কেন? অনেক ছেলেরাই ফুচকা পছন্দ করে। স্কুলে ও তো দেখত মেয়েদের আগে ছেলে গুলোই লাইন লাগিয়ে রাখত স্কুল গেইটে ফুচকা খাওয়ার জন্য। প্রথমদিকে বিস্মিত না হলেও পরক্ষনে হতেই হল যখন আদ্র মুখে হাসি টেনে বলল,,
–“ছোট খাটো একটা প্রতিযোগিতা হলে কেমন হয় বলো তো? দেখি কে কতো প্লেট ফুচকা খেতে পারে!”
কথাটা শুনে তুলি বোধ হয় চাঁদ হাতে পেয়ে গেল। ফুচকা এক প্লেট খেয়ে কখনও তার মন ভরে না। প্রতিযোগিতার উছিলায় তো অনেক প্লেট খাওয়া যাবে। উফ সকাল বেলা কষ্ট অনুভূত হলেও এখন তুলির খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করছে।
হাতে ফুচকার প্লেট পেয়ে বেঞ্চে বসে পড়ল আদ্রর পাশে। গাড়ি নিয়ে এসেছে ড্রাইভার। বাসেই ফোন করে দিয়েছিল আদ্র। পুরো তিন প্লেট ফুচকা সাবাড় করে ফেলেছে তুলি ও আদ্র। চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে শ্যামবর্ণা তুলির। আরেক প্লেট খাওয়া তুলির পক্ষে সম্ভব না। অথচ আদ্র খেয়েই যাচ্ছে। একটা ছেলে এতো ফুচকা কেমনে খায়? কথাটা ভেবেই উঠে দাঁড়াল তুলি। ভিতর জ্বলে যাচ্ছে তার। মাথা ঘুরাচ্ছে। চারদিকে তাকিয়ে কোনো উপায় না পেয়ে লাগাল দৌড় গাড়ির দিকে। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল আদ্র। ডেকে উঠল তুলিকে। আদ্রর দিকে ফিরে বলে উঠল তুলি,,,
–“আমার ভীষণ পেয়েছে আদ্র।”
তাড়াতাড়ি বিল মিটিয়ে দৌড়ে তুলির পিছন পিছন গাড়িতে এসে বসল আদ্র। তুলি গাড়ি থাকা এক বোতল পানি গড়গড় করে খেয়ে নিল। চোখ বড় বড় করে অবাক স্বরে বলল আদ্র,,
–“তোমার না ভীষণ পেয়েছে তাহলে এভাবে পানি খাচ্ছো কেন? এভাবে পানি খেলে তো এখানেই কাজ শেষ। ”
আদ্রর কথার মানে বুঝতে একটু ও দেরি হল না তুলির। এখন বুঝতে পারছে তখন ঝালের ঠেলায় কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলেছে! এই মুহূর্তে পালাতে পারলে বেশ হতো। কিভাবে আদ্র কে মুখ দেখাবে সে? নিজের ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে লজ্জিত কন্ঠে বলে উঠল,,
–” আমার ভীষণ পায় নি আদ্র ভাইয়া। আমার তো ভীষণ ঝাল লেগেছে।”
তুলির কথা শুনে ফিক করে হেসে দিল আদ্র। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল,,,
–” ঝাল লাগলে যে কেউ দৌড়ায় তা আজ প্রথম দেখলাম। তবে কথাটা কিন্তু সেই ছিল তুলা।
আবারও হেসে দিল আদ্র। বিড়বিড় করে বলে উঠল তুলি,,
–“ছি!ছি! কি বিব্রতকর পরিস্থিতি!
চলবে,,,,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। তাড়াহুড়োয় লিখেছি। কেমন হয়েছে জানাবেন সবাই।)