#আকাশে_তারার_মেলা ✨
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব -৬
চারদিকে নিস্তব্ধতা। নেই কোনো নিশাচর প্রাণীর ডাক বা কোনো শব্দের উৎস।সারা ঘরময় ছড়িয়ে আছে নিস্তব্ধ অনুভূতি। শ্যামবর্ণা কন্যা ডুবে আছে গোলাপের নেশায়। অজস্র আবেগের, অনুভূতির সঞ্চার হচ্ছে তুলির হৃদয়ে। কালো গোলাপ গুলোর কাছে নাক নিয়ে নিঃশ্বাস টেনে নিচ্ছে তুলি। ক্রমশই ভারী হয়ে আসছে তার নিঃশ্বাস। বুকের মাঝে অজানা অনুভূতি ঝড় তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মনের মাঝে ক্ষণে ক্ষণে উঠছে উত্তাল ঢেউ। ভাবতেই শিহরিত হচ্ছে আবার লাজুক লাজুক হাসি ও হাসছে যে আদ্র ওর জন্য কালো গোলাপ এনেছে। খানিক সময় আগেও কতো ভয় পাচ্ছিল। অথচ এখন অনুভূতির স্রোতে ভেসে যেতে ব্যস্ত।
তখন চোখ খুলে দেখল আদ্র হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চেয়ে আছে এক ধ্যানে। নীল বর্ণী চোখ দুটো টকটকে লাল। চেহারায় অস্থিরতার ছাপ। চুলগুলো ও কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। আদ্রর এই অস্থির চেহারা তুলির হৃদপিণ্ডে এক শীতল অনুভূতির জন্ম দিল।বুকটা ও দরফর করতে লাগল প্রচন্ড গতিতে।এমন লাগছে কেন আদ্র কে? প্রশ্ন টা মনে রেখেই উঠে বসতে নিলে নড়েচড়ে উঠল আদ্র। তুলি কে বসিয়ে দিয়ে নিজের হাতে মুষ্টিবদ্ধ তুলির হাত টা আলতো করে চুমু খেল। শিউরে উঠল তুলি। এসির ঠান্ডায় ও কপালে জড়ো হল বিন্দু বিন্দু ঘাম। আবার মনের আষ্টেপৃষ্টে বয়ে যেতে লাগল প্রশান্তির বাতাস। আচ্ছা প্রেমে পড়লে কি এমনটাই হয়? তবে কি আমি প্রেমে পরে গেছি নাকি এটা নিতান্তই আবেগ? মন পাঁজরে প্রশ্ন টা সৃষ্ট হতেই আদ্রর দিকে তাকাল তুলি। মলিন কন্ঠে বলে উঠল আদ্র,,,
–এভাবে সামান্য কারণে ভয় পেয়ে কেউ বেহুশ হয়ে যায়?তুমি জানো কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি?মুহুর্তেই মনে হচ্ছিল কে যেন আমার কলিজা ছিঁড়ে নেওয়ার চেষ্টায় উঠে পড়ে লেগেছিল।
অতিশয় বিস্ময়ে জড়ীভূত হয়ে পড়ল তুলি। আদ্রর কথার জবাবে কি বলবে জানা নেই তার৷ সে তো অনুভূতির সাথে যুদ্ধে নেমেছে। যেই যুদ্ধে মস্তিষ্কের চেয়ে মনে সঞ্চারিত অনুভূতি গুলো জয়ী হচ্ছে বার বার। হৃদপিন্ডের উঠানামা অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। আদ্রর কথার মায়ায়, অস্থির চোখের মায়ায় ডুবে যাচ্ছে তুলি। কেমন নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে তুলির মাঝে। আদ্রর স্পর্শ যেন তার জন্য কারেন্টের ঝটকার মতো। ঝটপট হাত টা সরিয়ে নিল তুলি। ভীষণ হতভম্ব সে। সামান্য জ্ঞান হারাতেই কি তার জন্য আদ্রের এমন অবস্থা? সত্যি কি তাই? নিজের মাঝে যেন নিজেকেই হারিয়ে ফেলছে তুলি। নিমিষেই অস্তিত্বে মিশে গেল আদ্র আহনাফ নামক মানুষটা। দু চোখ বন্ধ করে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল আদ্র। টেবিল থেকে কালো গোলাপ নিয়ে একটা গোলাপ গেঁথে দিল তুলির কানের পিঠে। চমকাল তুলি। হতবিহ্বল চোখে তাকাল আদ্রর মুখের দিকে। আদ্রর ঠোঁটের কোণে প্রস্ফুটিত এক হাসি। আচমকাই তুলির মনে হল তার হৃদয় অন্য কারো দখলে চলে যাচ্ছে। পরক্ষণেই আবার মনে হল তার মনের গহীনে তো আদ্রর জন্য তীব্র আর্তনাদ । দখল করে নিতে চাই আদ্র কে। প্রেমের বর্ষণে ভিজতে চায় আদ্রর সাথে।
–গোলাপ গুলো তোমার জন্য ছিল। আমি এতোটাও খারাপ না যে তোমায় গোলাপ খাওয়াবো। আমাদের বাসায় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার আছে এবং আমার যা স্যালারি তাতে তোমাকে খাওয়ানোর সাধ্য ও আছে। সো তোমার গোলাপ খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই তুলা।
মৃদু স্বরে কথাটা বলল আদ্র। গোলাপ গুলো বাড়িয়ে দিল তুলির দিকে। আদ্রর নেশাময় চাহনি তে নিজের চক্ষু জোড়া আবদ্ধ রেখে ফুল গুলো হাতে নিয়ে নিল তুলি। আদ্রর ঠোঁটের হাসি টা আরেকটু প্রস্ফুটিত হল। আর একটু ও দেরি না করে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। হয়তো এতো সময় অব্দি নিজেকে সামলে রাখা টাই কঠিন হয়ে পড়েছিল।
দু চোখে ঘুম নেই তুলির। নয়া নয়া প্রেমে পড়লে বুঝি এমনই হয়? আদ্রর স্পর্শ, আদ্রর মায়ায় জড়ানো সেই নীলাভ চোখ কল্পসা করতে মগ্ন কল্পনাবিলাসী তুলি। শুয়া থেকে উঠে বসল তুলি। গোলাপ গুলো বুকে জড়িয়ে বলে উঠল,,,
–আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি আদ্র। আপনার জন্য জমায়িত অনুভূতি গুলো আমায় অসহনীয় পীড়া দিচ্ছে। ঘুমোতে পর্যন্ত দিচ্ছে না।হৃদয়টা কেঁপে উঠছে বার বার। আচ্ছা এটা কে কি প্রেম বলে নাকি ভালোবাসা? প্রেম আর ভালোবাসা কি এক? আমি একদমই বুঝতে পারছি না আদ্র। তবে এতটুকুই ঠাওর করতে পারছি আমি আবেগের বশীভূত নয় আমি আপনাতে মত্ত হয়ে পড়েছি। আপনি আমায় ভালোবাসেন তো আদ্র?আপনার জীবনে অন্য কোনো নারী নেই তো?
কথাগুলো মিনমিন করে বলতে বলতে গোলাপ গুলো বুকে জড়িয়েই শুয়ে পড়ল তুলি।আজ হয়তো প্রশান্তির ঘুম হবে।
আদ্র রুমে আসতেই দেখতে পেল সায়েরা বেগম বসে আছেন। তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল আদ্র। এখন মা কি বলবেন ভালো করেই জানা আছে তার। নিঃশব্দে রুমে ঢুকল সে। বিছানায় বসতেই সায়েরা বেগম বলে উঠলেন,,,
–তুলির রুমে ছিলি তাই না?
–থাকলে?
ছেলের ভাবলেশহীন জবাবে প্রচন্ড পরিমাণে অবাক হলেন সায়েরা বেগম। কঠোর গলায় বলে উঠলেন,,
—তুই কি নিজের দেওয়া কথা ভুলে যাচ্ছিস আদ্র? তুলি এ বাড়িতে কেন আছে জানিস তো? ওরাও ব্যাক করছে আদ্র। তোর বাবা যদি এমন কিছু টের পান তাহলে তুলি কে আর এ বাড়িতে রাখবে না। তুই কি এমনটাই চাচ্ছিস?তুই কিন্তু কথা দিয়েছিলি তুলিকে নিয়ে আসলে তুই,,,
সায়েরা বেগমের কথাটা শেষ করতে দিল না আদ্র। পুরো উপেক্ষা করে পা বাড়াল ওয়াশরুমে। ঝরনার নিচে দাঁড়িয়ে গায়ের গেঞ্জি টা খুলে ছুঁড়ে মারল ফ্লোরে। নিজের হাত মুষ্টি করে লাগাতার ঘুষি মারতে লাগল দেয়ালে। সায়েরা বেগমের বুক চিরে একটা উত্তপ্ত শ্বাস বেড়িয়ে এল। তিনি ভালো করেই জানতেন আদ্র কোনো কথা বলতে রাজি হবে না। নিরুপায় তিনি। ভয় হচ্ছে বাবা ও ছেলের মাঝে দূরত্ব আরো বেড়ে যাবে নাতো!!!!!
_______
কাছের মসজিদ থেকে আযানের শব্দ ভেসে আসছে তুলির কানে। হুড়মুড়িয়ে উঠল তুলি। আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়াল বিছানা থেকে। অযু করে এসে নামাজ আদায় করে নিল। আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে কিছুটা পরিপাটি করে নিল। অদ্ভুত এক ইচ্ছে জেগেছে তার মনে। আদ্রর ঘুমন্ত স্নিগ্ধ ভরা চেহারা দেখার ইচ্ছে। আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে বলে উঠল,,,
–তুই তো আদ্র ভাইয়ার সঙ্গে একদম বেমানান তুলি। ওনি কতো সুন্দর, চোখ গুলো কেমন নেশাময়। অবশ্য তোর চোখ গুলো ও মায়ার অধিকারী। কিন্তু আদ্র! আদ্র একটু না অনেক বেশিই সুন্দর। বয়স সাতাশ অথচ এখনও চোখে মুখে তরুণের ছাপ।
বারান্দায় এসে আদ্রর রুমের বারান্দায় উঁকি মারল তুলি। খুশিতে লাফিয়ে উঠল সাথে সাথেই। কারণ আদ্রর বেলকনির দরজা মেলা। তুলি কে আর পায় কে! লাফ দিয়ে আদ্রর বারান্দায় উপস্থিত হল মুহুর্তেই। পা টিপে টিপে শব্দহীন রুমে প্রবেশ করল । আবছা আবছা অন্ধকার রুম টা তে। আদ্র থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে উপুড় হয়ে ঘুমোচ্ছে। সারা রুম শীতল হয়ে আছে। লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠল তুলির গাল দুটো। সংকোচ এসে ঝেকে ধরল প্রচুর পরিমাণে। দৃঢ় পায়ে এগিয়ে গিয়ে আদ্রর মাথার কাছের খালি জায়গা টায় বসল।আদ্রর ঘুমন্ত মুখ দেখে এক মুঠো শান্তি ছুঁয়ে গেল হৃদপিণ্ডে। বেহায়া মন চেয়ে বসল আদ্র কে একটু! শুধু একটু পরিমাণ ছুঁয়ে দিতে। মন কে সায় দিয়ে কাঁপা কাঁপা হস্তে আদ্রর কপালে পরে থাকা চুল গুলো ছুঁয়ে দিল তুলি। হাতে চাপ অনুভব করতেই চোখ বড় বড় করে তাকাল তুলি। শ্বাস ভারী হয়ে আসতে লাগল ক্রমাগত। চোর ধরা পড়লে যেমনটা হয় ঠিক তেমন অবস্থা তুলির। নিজের কপালে তুলির হাত টা চেপে ধরে সূক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করল আদ্র। চোখ জোড়া ভীষণ লাল। হাসফাস করতে লাগল তুলি। এভাবে ধরা পড়ে যাবে ভাবে নি সে। সব দোষ বেহায়া মনের। কি জবাব দিবে এখন আদ্র কে সেটা ভেবে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে।
–কি হল হাত বুলিয়ে দাও।
আদ্রর কোমল স্বরে এমন বাক্য শুনে দেহে প্রাণ ফিরে পেল তুলি। খানিক বাদেই বাক্য টা ভালো করে কর্ণপাত হতেই অভিভূত হয়ে তাকিয়ে রইল আদ্রর দিকে। আদ্রর ঠোঁটে তৃপ্তির হাসি। হাসি টা খুবই মুগ্ধময়। সব ভয় দূর হয়ে গেল তুলির। কোমল মনটা ও নুইয়ে পড়ছে লজ্জায়। আদ্র কোনো প্রশ্ন করল না অথবা খারাপ কিছু ভাবল না সেটাই অবাক হওয়ার মূখ্য বিষয় তুলির নিকট। হাত বুলিয়ে দিতে নিলে হাতটা আবারও চেপে ধরল আদ্র। নিজে উঠে বসল। আদ্রর বুকের লোমশ অংশ দেখে লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিল তুলি। তুলির লজ্জিত মুখ যেন খুব করে টানছে আদ্র কে। পাশ থেকে গেঞ্জি টা নিয়ে পড়ে তুলিকে বলে উঠল,,,
–আমার দিকে তাকাও তুলি।
তুলি তবুও ফিরতে রাজি নয়। ধমকে উঠল আদ্র। আদ্রর ধমকে তাড়াতাড়ি করে ফিরে চাইল তুলি।
–পা উঠিয়ে বসো খাটে।
আদ্রর দিকে বিস্মিত নয়নে চেয়ে জড়তা-সংকোচ কাটিয়ে পা উঠিয়ে বসল তুলি। হঠাৎ নিজের কোলে আদ্রর মাথা অনুভব করতেই শরীরের প্রত্যেক টা পশম শিউরে উঠল। ইচ্ছে জাগল আদ্র কে অনুভূতি মিশিয়ে বলতে–“আপনি হুটহাট কাছে আসবেন না আদ্র। প্রচন্ড ভাবে কেঁপে উঠে আমার হৃদপিন্ড। লজ্জা শরম উচ্ছন্ন করে আপনার বুকে মিশে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছে জাগে।”
—বারান্দা টপকে আসতে গেলে কেন তুলি? যদি পড়ে যেতে?আর কখনও এমনটা করবে না প্লিজ।
আদ্রর কথার পৃষ্ঠে কিছু বলার শক্তি টুকু ও যেন হারিয়ে ফেলছে তুলি। নিজের অজান্তেই হাত বুলাতে লাগল আদ্রর চুলে। পরম আবেশে দু-চোখ বুঁজে ঘুমের দেশে পাড়ি দিল আদ্র। রাত টুকু কেটেছে তার নিদ্রাহীন। ভোরের দিকে লেগেছিল চোখ দুটো তখনই এক অন্যরকম সুবাস নিয়ে রুমে প্রবেশ করল তুলি। তুলি তাকিয়ে দেখল গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে আদ্র। দীর্ঘ! দীর্ঘ একটা শ্বাস ছাড়ল তুলি। এখন সে পুরো নিশ্চিত আদ্র ঘুমিয়ে পড়েছে। মুচকি হেসে টুপ করে চুমু খেয়ে নিল আদ্রর কপালে। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে দিতে লাগল নিজের নরম হাতের পরশ। সাথে সাথেই চোখের কোণে জমে থাকা এক ফোঁটা অশ্রু বৃষ্টির ন্যায় টুপ করে পড়ল আদ্রর চোখে। নড়ে উঠল আদ্র। এই অশ্রু টা তুলির কষ্টের অশ্রু নয়। এটা তো আনন্দের অশ্রু। আকস্মিক তুলি ঝুঁকে পড়ল আদ্রর মুখের একদম সন্নিকটে। চোখ বুঝে ফেলল সাথে সাথেই। আদ্র গম্ভীর স্বরে বলে উঠল,,,
–চোখ খুল।
আস্তে আস্তে করে চোখ খুলল তুলি। দুরুদুরু বুক নিয়ে আদ্রর দিকে চেয়ে রইল। তুলিকে ছেড়ে দিয়ে উঠে পড়ল আদ্র। গালে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল,,,
–কাঁদছিলে কেন?
–কাঁদছিলাম না। এমনিতে চোখে হঠাৎ পানি চলে আসল।
হাসল আদ্র। দৃঢ় কন্ঠে বলল,,
–উল্টো পাল্টা বকার অভ্যেস কি আজীবন থাকবে?
–আমি কখন উল্টো পাল্টা বকলাম?
তুলির সাহস যেন হুট করে বেড়ে গেল। তীর্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদ্র বলে উঠল,,,
–তাই নাকি?আপনি উল্টো পাল্টা বকেন না কুমিল্লার তুলা?
–একদমই না।
কথাটা বলেই উঠে পড়ল তুলি। মুখের উপর আচড়ে পড়ছিল আদ্রর অসীম অনুভূতি মিশ্রিত ভারী নিঃশ্বাস যা তুলি কে গ্রাস করে নিচ্ছিল। আদ্রর মাদকতায় হারিয়ে যেতে বাধ্য করছিল। ছোট্ট হৃদপিণ্ডের দ্রুত উঠা নামা প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক করে তুলছিল তুলি কে।এক দৌড়ে চলে গেল বারান্দায়। অবাক হল আদ্র। পিছু পিছু গেল তুলির। নিজেকে সামলে একটু আওয়াজ করে তুলি হেসে বলল,,,
–আমি উল্টো পাল্টা বকলে দোষ অথচ আপনি যে হুটহাট করে কসাই হয়ে যান।
চোখ গরম করে চাইল আদ্র। তুলি বুঝে গেছে রক্ষে নেই। লাফ দিয়ে নিজের বেলকনিতে যেতে নিলে আদ্র আঁতকে উঠল।
–এই তুলি পড়ে যাবা।
–কিছু হবে না ডাক্তার সাহেব। এতটুকু জায়গা লাফ দেওয়া আমার জন্য ছোট্ট খাট্টো ব্যাপার।
আদ্র নরম স্বরে ধীর কন্ঠে বলল,,,–“তোমার প্রাণটা আমার জন্য নিজের প্রাণের চেয়ে ও অধিক মূল্যবান। ”
রুমে আসতেই মেসেজ টোন ভেসে আসল আদ্রর কানে। মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেসেজ টা ওপেন করতেই ঠোঁটে ফুটে উঠল রহস্যময় হাসি।
____
ডাইনিং টেবিলে বসে নাস্তা করছে সবাই। আদ্রর বাবা বিজনেস রিলেটেড কিছু কাজে দেশের বাহিরে গিয়েছেন। নিরবতা ভেঙে আমরিন সাহস জুগিয়ে বলে উঠল,,,
–আম্মু আমাদের কলেজ থেকে ট্যুরে নিবে দুই দিন পর।
খাওয়া বাদ দিয়ে মাথা তুলে চাইল তুলি। কই সে তো শুনে নি এমন কিছু? বেশ জোরেই বলল,,
–কই আমি তো এমন কিছু শুনি নি আমরিন।
এই ভয়টাই পাচ্ছিল আমরিন। যার জন্য এতোকিছু সেই পুরো প্ল্যানে জল ঢেলে দিতে প্রস্তুত। সন্দেহের চোখে মেয়ের দিকে চাইলেন সায়েরা বেগম। ঢকঢক করে পানি খেয়ে তুলির দিকে চেয়ে শুকনো হাসি হাসল আমরিন।
–তুলি তুই তখন ক্লাসে মনোযোগ দিস নি নাহলে তো স্যারের কথা গুলো শুনতে পেতি। থাক আমি তো শুনলাম। আমি শুনলে যেই তুই শুনলে তো একই কথা তাই না?
বিমূঢ় স্থির হয়ে বসে রইল তুলি। সায়েরা বেগম খেতে খেতে বললেন,,,
–ঠিক আছে দু জনেই চলে যাস। তুলির ও ভালো লাগবে ঘুরে আসলে।
তীব্র আনন্দ নিয়ে মা কে মিষ্টি হাসি উপহার দিল আমরিন। তুলি ভ্রু কুঁচকে মিনমিন করে উচ্চারিত করল,,,
“আমরিন তুই একটা ডাহা মিথ্যুক। ”
চলবে,,,,
( রিচেইক করা হয় নি।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)