আড়ালে_ভালোবাসি পার্ট_১০ (বোনাস পার্ট)

আড়ালে_ভালোবাসি পার্ট_১০ (বোনাস পার্ট)
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

আরহান অবাক চোখে তাকিয়ে বলে মানে? আরহান এর কথায় জয় হেসে বলে

_” মানে টা খুব সহজ নিজের জিনিস ফেলে রাখলে মানুষ তো হাত বাড়িয়ে নিতে চাইবে । বাকিটা তোর ইচ্ছা ভেবে চিন্তে ডিসিশন নে সব তোর চোখের সামনে

জয় রুম থেকে বের হতে গেলে আরহান জয়ের কলার ধরে সামনে এনে জড়িয়ে ধরে। জয় আরহান এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে হটাৎ জয় নিজের ঘাড়ে তরল জাতীয় কিছু অনুভব করে তড়িঘড়ি করে বলে

_” ভাই তোর কি হইছে ? তুই কান্না করছিস কেনো ? আমাকে বল ছোট বেলা থেকে সব বলিস এখন বলবি না

_” আমাকে মাপ করে দে সত্যি আমি বুঝতে পারছি না কি করবো চারিদিকে এত বিশ্বাসঘাতক দের দেখে এখন আমি বুঝতে পারছি না কে আমার বন্ধু

জয় আরহান কে সরিয়ে অবাক এ কোন আরহান কে দেখছে । ছোট থেকে জয় আরহান এর সাথে আছে কিন্ত কখনো কাদতে দেখেনি আজ কি না একটা মেয়ের জন্য কান্না করছে । ছেলেরা নাকি খুব সহজে কান্না করে না

_” আরহান ভাই শুন আমাকে বল সব বল । তোকে এভাবে দেখতে পারছি না আমার খুব কষ্ট হচ্ছে । তুই যদি বলিস আমি নিশাতের সাথে কখনো কথা বলবো না কিন্তু তু

_” নিশাত কে আমি ভালোবাসি কিন্ত ওকে আমি নিজের কাছে রাখতে পারবো না কিছুতেই না (অন্য দিকে তাকিয়ে )

_”কিসের জন্য পারবি না অবশ্যই পারবি তুই নিশাত কে ভালবাসিস আর নিশাত পারবে তোকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে না

আরহান এবার শক্ত চোখে তাকায় জয় কিছু বলার আগেই আরহান বলে

_” ওর জীবনে আমার কোনো জায়গা নেই । নিশাত এর মত মেয়ে কখনো চাইবে না আমার মত ছেলে কে । আমি ওর যোগ্য না

_” সব ঠিক হয়ে যাবে সব কিছু আমার উপর একটু ভরসা রাখ দেখবি সব ঠিক হবে । নিশাত কে দুরে রাখিস না আর কত #আড়ালে_ভালোবাসবি এবার সামনে যা কাছে টেনে নে

_” না এটা হয় না আমি পারবো না আর ফিহা

_” ফিহা ফিহা ফিহা তুই কি জানিস ফিহার চরিত্র ? ওর ব্যাপারে কখনো খোঁজ নিয়েছিস

_” আরহান আবরার কে যতটা বকা ভাবিস সে তত বকা না এতদিন সবাই আমার নরম রূপ দেখেছে এখন থেকে হিংস্র রূপ দেখবে

চোখ মুখ লাল করে কথাটা বললো । জয় কোনো কিছু বুঝতে পারছে না ।আরহান সোফায় মাথা নিচু করে বসে পড়ে জয় ও ওর পাশেই বসে

দুইজনের মাঝে নিরবতা । নিরবতা ভেঙ্গে আরহান বলে

_” শেষ বারের মত আমার একটা হেল্প করবি (করুন কণ্ঠে )

_”তুই শুধু বল তোর জন্য জীবন দিতে রাজি

_” যত দিন না আমি নিশা কে নিজের কাছে আনছি তত দিন তুই ওর পাশে সব সময় ছায়ার মত থাকবি

_” তুই

_” খুব তাড়াতাড়ি নিশা কে আমি নিজের কাছে আনবো । এই কয় দিনে এত টুকু বুঝেছি নিশা শুধু আমার মোহ না আমার বেচে থাকার শেষ সম্বল যাকে আকড়ে ধরে শেষ নিশ্বাস নিতে চাই ।প্রথম যখন নিশা কে দেখি তারপর থেকে যখন ওর কথা মনে পড়ত আমি ভেবেছিলাম এটা মোহ কিন্ত এত বছর একবারের জন্য ওকে ভুলতে পারিনি ।সেদিন ভার্সিটিতে ওকে দেখে যেনো আমার প্রাণ ফিরে পেয়েছি । ওকে ছাড়া আমার বেচে থাকার কোনো মানে হয় না ।আমার জীবন বরাবরই অর্থহীন ওর মধ্যে আমি বাচার আলো দেখেছি ওকে হারানোর কথা মনে উঠলে জীবন শেষ করতে ইচ্ছা করে আমি বাঁচতে চাই ওর সাথে মরতেও চাই ওর সাথে জানিস আজ দুইদিন আমি অ্যালকোহল হাত দেয়নি জানিনা অ্যালকোহল এর নেশার থেকে ওকে দেখার নেশা আমাকে বেশি আকর্ষণ করছে তাই তো সারারাত ওর বাসার সামনে বসে থাকি

জয় শুধু শুনছে কিছু বলার ভাষা পাচ্ছে না ভালোবাসা মানুষকে এভাবে কাবু করতে পারে সেটা জয়ের জানা ছিল না । আরহান কে আজ ছোট বাচ্চাদের মত লাগছে যে নিজের খেলনার জন্য কান্না করছে । জয় জানে আরহান জীবনে কি কি ফেস করেছে আর ওকে এমন বানানোর জন্য কে দায়ী । জয় আরহান এর কাধে হাত রাখে আরহান কোনো রেসপন্স না দিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে জয়কে দেখায়

জয় জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আরহান সেটা বুঝতে পেরে বলে

_” এই পিক আমাদের ভার্সিটির কয়েকটা ছেলে তুলেছিল নিশাত কে ব্লাকমেইল করবে বলে

_” তোকে কে বলেছে ?

_” আমার লোকেরা নিশার উপর সবসময় নজর রাখে নিশার নিচু হওয়া পিছনে সব ছবি তুলছে

কথাটা বলতে বলতে আরহান টেবিলে বারি মারে রাগে ওর সব কিছু শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছে । জয় নরমাল ভাবে জিজ্ঞেস করে

_” ছেলে গুলো কোথায় ?

_” যেখানে থাকার কথা নিশার মত মেয়েরা ভুল করে ওদের জন্ম দিয়ে ফেলছে তাই আমি কষ্ট করে আবার সেই জায়গায় পাঠিয়ে দিলাম (বাকা হেসে )

জয় শুধু দেখছে শান্ত একটা ছেলে কারোর কথার কোন উত্তর দেয় না সে কি না মানুষ ভাবতেই জয়ের কেমন হচ্ছে । আরহান আবার বলে

_” এখনো আসল কাজ বাকি সেটা করতে পারলে সব বাদ দিয়ে নিশা পাখি কে নিয়ে অনেক দূরে চলে যাবো এক নতুন জীবন যাপন করবো

_” আমি তোর পাশে আছি কিন্ত আসল কাজ কি?

_” সেটা খুব তাড়াতাড়ি জানতে পারবি (বাকা হেসে )

পরের দিন সকাল সকাল নেহা নিশাতের বাসায় এসে হাজির নিশাত কে আজ নিজে হাত তৈরি করবে । নিশাত না না করে যাচ্ছে কিন্ত নেহা শুনবে না

নিশাত না পেরে ঘরের দরজা বন্ধ করে রেডী হচ্ছে আর নেহা ডেকেই যাচ্ছে ।

অনেকক্ষণ পর নিশাত রেডী হয়ে বের হলো নেহা রেগে তাকিয়ে দেখে হা

নিশাত আজ একটা ব্ল্যাক গাউন পড়েছে মুখে মেকাপ দেয়নি পাউডার দিয়েছে চোখে কাজল । হাতে ব্লাসলেট গলায় কিছু না কানে ছোট পাথরের দুল। ফর্সা শরীরে ব্ল্যাক যেনো ফুটে উঠছে নেহা কিছু বলতে যাবে তার আগে ঈশা বলে

_” আজ তো আমার দুলাভাই পাগল হয়ে যাবে। ভালো করেছিস মেকাপ করিস নি তাহলে অজ্ঞান হয়ে যেত

_” সত্যি নিশু আজ যদি আমি ছেলে হতাম তোকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যেতাম

নিশাত হেসে বলে।

_” হা সেটাই বাকি আছে এখন চল

_” এই চল মানে কি ঈশা যাবে তো আমি কোনো কথা শুনবো না ঈশা কে আমি রেডী করাব

নিশাত না না বলছে কিন্ত ঈশা আর নেহার জুরাজুরিতে রাজি হয়ে যায় নেহা মেকআপ করতে গেলে নিশাত বলে।

_” এই একদম মেকআপ করবি না আমাদের দুই বোনের এলার্জির সমস্যা । মেকআপ করে রোদে গেলে প্রবলেম হবে সেই জন্য আমি করিনি

_” আরে কিছু হবে না

_” তুই জানিস না আমার একটু রোদের বেশিক্ষণ থাকলে মুখ হাত লাল হয়ে যায় মেকআপ ছাড়া পাউডার দে

নেহা মাথা নাড়িয়ে ঈশা কে রেডী করে দেয় । নেহা ঈশা নিশাত বেরিয়ে পড়ে ।

এদিকে

আরহান দাড়িয়ে আছে কতক্ষন ধরে নিশাত কে একবার দেখবে বলে। কাল সারারাত ওর ঘুম হয়নি

জয় পাশে থেকে খুচাচ্ছে আরহান রাগী চোখে তাকাতেই জয় মিটমিট করে হাসছে হটাৎ জয় বলে

_” ওই দেখ যার অপেক্ষা করছিস সে এসে গেছে

আরহান খুশি হয়ে সামনে তাকাতেই মুড অফ হয়ে যায় । ফিহা গাড়ি থেকে নেমে আরহান দের দিকে আসছে। জয় কানে কানে বলে

_” কি দেখেছিস তো ?

আরহান জয়ের পায়ে জোড়ে লাথি মারে জয় আহহ বলে উঠে

ফিহা এসেই আরহান এর হাত ধরতে গেলে আরহান কানে ফোন নিয়ে অন্য দিকে চলে যায় এতে ফিহার রাগ হলেও কিছু করার নেই জানে আরহান ওর রাগ ভাঙাবে না । তাই ফিহা আবার পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে

_” বেবি আজ তুমি আমাকে আনতে গেলে না কেনো ? জানো আমি কত wait করেছি

আরহান এর খুব রাগ হচ্ছে তাও নিজেকে ঠান্ডা করে বলে

_” তোমার তো মেকআপ নষ্ট হয়ে গেছে ছি কেমন পেত্নীর মতো লাগছে

আরহান এর বলতে দেরি ফিহা দৌড়ে ওয়াশরুমে যায় । আরহান যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো

_” খুব তাড়াতাড়ি সবার খেলা শেষ করে নিশা কে নিয়ে অনেক দূরে চলে যাব (মনে মনে )

আরহান একটা বড়ো নিশ্বাস নিয়ে হাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকায় জয় পাশে থেকে বলে

_” ওই দেখ এইদিকে আসছে

এবার ও ফিহা মনে করে জয়ের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতে জয় জোড়ে ধাক্কা দিতেই আরহান তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে নিলে কেউ ধরে ফেলে।

আরহান নিজেকে ঠিক করে তাকাতেই দেখে গোলাপী ড্রেস পড়া একটা পিচ্ছি মেয়ে পাশে তাকাতেই নিশাত কে দেখে খুশি হয়ে যায় ।

হটাৎ ঈশা বলে উঠে

_” জিজু

ঈশার কথা শুনে আরহান থতমত খেয়ে যায় নিশাত আর জয় তো চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছে নেহা ফোনে কথা বলছে তাই এইদিকে কর হুস নেই ।

ঈশা আবার বলে উঠে

_” জিজু আপনি

আরহান এর তো কাশি উঠে যায়। জয় মিটমিট করে হাসছে

চলবে

(আমি কিন্ত আমার কথা রেখেছি বোনাস পার্ট দিয়েছি এখন আপনারা সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করে আমাকে জানান কেমন হইছে । অনেক কষ্ট করে লিখছি অ্যাসাইনমেন্ট করে এখন আপনাদের কমেন্ট দেখে পরের পার্ট দেবো হয়তো একটু দেরি হতে পারে । হ্যাপি রিডিং )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here