আড়ালে_ভালোবাসি পার্ট_৫

আড়ালে_ভালোবাসি পার্ট_৫
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

নিশাত বসে বসে ভাবছে কি করবে ঈশা পাশে বসে চকোলেট খাচ্ছে আর নিশাত কে দেখছে। একটু আগে নেহা ফোন করে বলে ভার্সিটিতে একটা Sir এর রিট্রাইড হবে সেইজন্য একটা অনুষ্ঠান করবে সকল ছাত্র ছাত্রী মিলে সব কাজ করবে ।

“আপু তুমি ওতো টেনশন করো না তো কাকী ঠিক রাজি হয়ে যাবে

“তুই জানিস তাই না ?

“জানি তো নেহা আপু যখন এত করে বলছে আর ভার্সিটিতে কোনো অনুষ্ঠান হলে তুই স্টুডেন্ট হয়ে থাকবি না সেটা কি ভালো দেখায়

“কাকী ওতো রাত পর্যন্ত থাকতে দেবে না আর ভার্সিটিতে কাজ করতে হবে বাড়ির কাজ সামলে আমি কি করবো এই নেহা টা অনেক জেদী

“হুম নেহা আপু ঠিক করছে তুই একটু নেহার আপুর জায়গায় নিজেকে রেখে দেখ আর বাড়ির কাজ আমি সামলে নেবো তুই just তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবি নাহলে কাকী আমাদের দুইজন কে কাচা চিবিয়ে খাবে

“উফফ দেখি কি হয় এখন ভালো লাগছে না সর

“খালি আমাকে বকে হূ (ভেংচি কেটে)

নিশাত বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো দাড়াতেই ঠান্ডা বাতাস নিশাত কে ছুয়ে দিল ।নিশাত দুই হাত মেলে লম্বা একটা নিশ্বাস নিল ।

এদিকে বাইরে থেকে কেউ একজন নিশাত কে খুব ভালো ভাবে দেখছে যেনো তার দেখার শেষ নেই।

নিশাত বারান্দায় রাখা একটা বই হাতে পড়তে লাগলো । ছোট থেকে নিশাত গল্পের বই পড়তে খুব পছন্দ করত বাবা_মা মারা যাবার পর আর পড়া হয়নি । ঈশা নিশাতের মত হইছে অল টাইম বই পড়ে যতক্ষণ নিশাত বাড়ি থাকে না ততক্ষণ বই পড়ে । নিশাত বাড়ি আসলে ওর সাথে থাকে ।

নিশাত বই পড়ছে কিন্ত বার বার মনে হচ্ছে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে কিন্ত কে ।

নিশাত পড়া বাদ দিয়ে বারান্দার গ্রিলে হাত দিয়ে দাড়িয়ে থাকে কাউকে দেখতে পেলো না একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবার বসে ।

আরহান যখন নিশাত কে দেখতে ব্যাস্ত তখন ওর ফোনে কল আসে। আরহান না দেখে বিরক্তি নিয়ে কল ধরতেই ফিহা কান্না করে বলে

“বেবি তুমি আমার সাথে এমন কেনো করছো ? আমি কি করেছি তুমি সবসময় আমাকে ইগনোর কর রাগ দেখাও কেনো ? (কান্না করতে করতে )

আরহান রেগে উত্তর দেয়

” দেখ ফিহা আমার এখন কথা বলার কোনো মুড পরে কথা বলছি

ফিহা: না তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না প্লীজ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি । একটু বুঝার চেষ্টা করো আমি তোমার জন্য কি করিনি তুমি যা বলছো সব করেছি আরহান প্লীজ এমন করো না আমি মরে যাবো আমরা ত বিয়ে করবো তাই না

ফিহার কথায় আরহান এর বুক ধক করে উঠে

আরহান : সত্যি তো আমি এটা কি করছি না না ফিহা কে এভাবে আমি কষ্ট দিতে পারবো না । আমি ওকে প্রমিজ করেছি বিয়ে করবো শেষে এসে এভাবে না না আরহান আবরার কাউকে কথা দিলে সেই কথার খেলাপ কখনো করে না আর নিশার জন্য আমার ফিলিং না কোনো ফিলিং নেই কোনো ফিলিং নেই (মনে মনে )

ফিহা : কিহলো বেবি কথা বলো প্লীজ

আরহান : আজ রাতে ক্লাবে আসছ তো ?

ফিহা : হা অবশ্যই তুমি বলছো আর আমি আসবো না সেটা কি করে হয় আমি আসবো (খুশিতে গদগদ করে )

আরহান : ওকে রেডী থেকো আমি পিক করতে আসবো

ফিহা : yea sure i love u baby

আরহান: i love u too (নিশাতের দিকে তাকিয়ে )

আরহান ফোন কেটে নিশাতের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চলে যায় ।

ফিহা কল কেটে মুচকি মুচকি হাসে তখনই কেউ বলে উঠে

“বেবি তুমি কার সাথে কথা বলছিলে ?

ফিহা : কারোর সাথে না বেবি আমাকে যেতে

মহিন : ওহ বেবি আর একটু থাকো এখন তোমাকে ভালোবাসার বাকি আছে (মুচকি হেসে )

ফিহা : কিসের জন্য wait করছো

ফিহা এক টান দিয়ে মহিন (ফিহার বিএফ ) কে নিজের উপর ফেলে ।

এদিকে
জয় বার বার নিশাত কে ফোন দিচ্ছে কিন্ত ধরছে না

(আরিয়ান আহমেদ জয় । অনেকের আরিয়ান গুলিয়ে যাচ্ছে তাই জয় দিলাম এবার সবাই বুঝতে পারবে )

ঈশা এসে নিশাত কে ডাক দে

ঈশা : আপু তোর ফোন বাজছে ?

নিশাত : কে ফোন দিছে ?

ঈশা : দেখ তুই আমি গেলাম

নিশাত ফোন হাতে নিয়ে দেখে জয়ের অনেকগুলো ফোন ।নিশাত আর দেরি না করে ধরে

নিশাত : hello

জয়: নিশাত কখন থেকে ফোন দিচ্ছি কোথায় চাইলে ?

নিশাত : ফোনের কাছে ছিলাম না কোনো জরুরি দরকার ?

জয় : হা না মানে বলছি আরহান কি তোমার ওখানে ? মানে তোমার সাথে কি দেখা হইছে

নিশাত : উনার সাথে তো আমার দেখা হয়নি আমি কখন চলে আসছি

জয় : পরে কি দেখা হইছে ?

নিশাত : না তো কোনো সমস্যা ?

জয় : না ও তো ঘুরতে যাবে আজ যায়নি ভাবলাম তোমার সাথে

নিশাত : আমার সাথে কেনো থাকবে (অবাক হয়ে )

জয় : এমনি বললাম আচ্ছা ভালো থেকো

নিশাত : জি আপনিও

নিশাত কল কেটে দিয়ে ভাবে

নিশাত : লোকটা এমন কেনো একটু বলে গেলে কি ক্ষতি হয় এত irresponsible কেনো ? তবে লোকটা কে দেখে কেনো যেনো আমার খুব মায়া হয় মনে হয় লোকটার অনেক কষ্ট । সবসময় গম্ভীর হয়ে থাকে কখনো হাসতে দেখিনি (আনমনে )

জয় কল কেটে ভাবতে থাকে

জয় : আরহান নিশাত এর সাথে নেই তো কার সাথে ? যেইসব জায়গায় যায় আজকে যায়নি আজব ব্যাপার কিছু হলো না তো ওর ?

আরহান বাসায় আসতে আরহান এর আম্মু বলে

আম্মু : আমাদের কি একটু বলে যাওয়া যায় না আমরা কতো টেনশন করছিলাম (অস্থির হয়ে )

আরহান সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে আবার ফিরে এসে বলে

আরহান : তোমরা আমার জন্য টেনশন করবে লাইক সিরিয়াসলি । নিজেদের কাজ থেকে যদি বিশ্রাম পাও তারপর না হয় আমাকে নিয়ে ভেবো

আম্মু : এভাবে বলছো কেনো ??

আরহান : আম্মু প্লীজ আমি খুব ক্লান্ত আমাকে একটু রেস্ট নিতে দাও

আম্মু : কিন্ত তুমি

আর কিছু বলার আগেই ফোন বেজে উঠে

আরহান : ওই যে তোমার ডাক পড়ছে! নিজের কাজ করো আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না আমি এত তাড়াতাড়ি মরবো না (তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে )

আম্মু : আরহান ! আমার কথা শুন আরহান

আরহান আর কোনো কথা না শুনে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয় । বিছনায় বসে ভাবতে থাকে কি করবে

ফোন বের করে নিশাতের কিছু ছবি দেখতে থাকে । প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত সব ছবি । আরহান এর সব কিছু ঝাফসা লাগছে বুকের না পাশ যেনো খালি খালি লাগছে ।

চোখ বন্ধ করে নিশাতের সব কিছু মনে পড়ছে কেনক এমন হচ্ছে সেটা আরহান এর অজানা

কিছু কিছু অনুভূতি বুঝতে আমাদের সময় লাগে

আরহান : না আমাকে নিজের উপর কন্ট্রোল রাখতে হবে মনের উপর ও । যে মন আমার কথা শুনে না সেই মন রেখে লাভ কি ? এখন থেকে আবার আগের খারাপ আরহান হয়ে যেতে হবে পার্টি ,স্মোক,মেয়ে এইসব আমার জীবন। নিশশ শশা (টেবিলে বাড়ি দিয়ে )

আরহান নিচে তাকিয়ে হটাৎ বলে jrhe

আরহান : আজ থেকে #আড়ালে_ভালোবাসবো

উঠে দাড়িয়ে ফ্রেশ হতে যায় ফ্রেশ হয়ে রেডী হয়ে বেরিয়ে পড়ে ফিহার বাড়ির দিকে ।

ক্লাবে ফিহা আরহান ড্যান্স করছে কিন্ত আরহান এর মন টিকছে না অস্থির লাগছে ।

জয় এসে আরহান কে ডাক দিতেই আরহান কোনো কিছু না ভেবেই জয়ের কাছে যায়

জয় : কোথায় ছিলি কত বার ফোন দিয়েছি

আরহান : ড্রিংক প্লীজ

জয় :আমি তোকে কিছু বলছি

আরহান : আরহান আবরার কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য না

জয় : আরহান

আরহান : হুস বড্ড জ্বালাস

কথাটা বলে অন্য দিকে চলে যায় জয় যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে

নিশাত ছটফট করছে একবার ভাবছে জয়কে ফোন দিবে আবার ভাবছে না কি জানি ভাববে কিন্ত আরহান এর কথা জানার জন্য অস্থির হয়ে আছে

নিশাত : আচ্ছা ওতো ভেবে কি লাভ একবার ফোন করি যদি কোনো বিপদ হয় না না ফোন দি

নিশাত ফোন দিতেই জয় দূরে গিয়ে ফোন ধরে

জয় : হা নিশাত বলো

নিশাত : কি করছেন ?

জয় : বন্ধুদের সাথে আছি তুমি কি করছো ??

নিশাত : তেমন কিছু না আসলে

জয় : কিছু বলবে ?

নিশাত : না মানে

উফফ নিশাত তুই এত ভীতু কবে হলি সোজা কথা বলতে একট সময় (মনে মনে )

জয় : হা বলো

নিশাত : বলছি আপনার ফ্রেন্ড কে কি পেয়েছে ঠিক আছে উনি ??

জয় হেসে দেয়।

জয় : ওহ তাহলে এই জন্য ফোন

নিশাত : তেমন কিছু না আপনি চিন্তিত ছিলেন তাই

জয় : আমি চিন্তিত ছিলাম তাই নাকি নিজের

নিশাত : না তেমন কিছু না ভুল ভাবছেন ।

জয় : আচ্ছা তাই

নিশাত : হা

জয় আসছে আর নিশাতের সাথে কথা বলছে দুর থেকে আরহান তাকিয়ে দেখছে ।

জয় কল রাখতে আরহান বলে

“কার সাথে কথা বলছিলি?

“নিশাত

নিশাত নামটা শুনে আরহান আর কিছু না বলে ফিহার কাছে গিয়ে ড্রেন্স করে ।

রাতে নিশাত ওর কাকার ঘরে যায়

“কাকা তোমার ওষুধ

“এখানে বস তোকে কিছু কথা বলবো যা তোর জানার দরকার

চলবে

(সরি for late সবাই জানেন একবার লিখতে গিয়ে ফোন অফ হয়ে গিয়েছিল আবার লিখতে গিয়ে সব কপির বদলে ডিলেট হয়ে গিয়েছিল । লিখার আর মুড নেই শরীর ভালো না তাও ভাবলাম দি আশা করি গঠনমূলক কমেন্ট পাবো )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here