#আপনিময়_তুমি💓[ A unbearable Crazy love]
#Season: 02
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr]
#Part: 10…
‘অসভ্য, চোর বদজাত একটা ছেলে লজ্জা করে না তোমার। আমার লকেট দেও বলছি।’
‘ট্যারা হে, পার তেরা হে।’ বলেই ডেবিল স্মাইল দিল। হা হা করে হেসে বলল, ‘আমি চোর হতে পারি, বদজাত হতে পারি। কিন্তু আনহা ম্যাডাম আপনার মতো মিথ্যেবাদী নই। নিজেকে বাঁচানোর জন্য অন্য কারও নামে মিথ্যে বলব। আপনি আমার কথা রাখবেন কিনা তাই বলুন। বললে দিব না বললে নাই।’
রাগে দাঁত কিড়মিড় করল আনহা। চিৎকার করে বলল, ‘বলো কী করতে হবে?’
হাসল ইহান। বলল, ‘বেশি কিছু না। আপনাকে আমার সাথে বাইকে উঠতে হবে। এবং… আপনাকে… আমার… সাথে রাইডে যেতে হবে।’
‘হোয়াট! কী বলতে চাইছ?’
‘এটাই আজকে বাইক রেসে আপনি আমার সঙ্গী হবেন। কারণ টা আমার নিজের বাইক। মায়ের তার কিউট ছেলের জন্য বাইকটা কিনে দিয়েছে। আর তাতে সর্বপ্রথম আপনাকে চড়াতে চাচ্ছি। বলুন রাজি কি না?’
‘আর কোন চয়েজ আছে?’
ক্যাবলা হাসি দিল ইহান। মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘না।’
অতঃপর ইহান বাইকে উঠে আনহাকে ইশারা করল। আনহা রাগে হাত-পা ঝাড়তে ঝাড়তে বাইকে উঠে বসল। কিন্তু ওর বসার স্ট্যাইল দেখে ভ্রু কুঁচকায় ইহান। বলে, ‘এটা বাইক। রিক্সা না যে এভাবে বসছেন। ভালো করে বসুন।’
‘আমি না তোমার বড় সো আমাকে কিছু শিখাতে এসো না।’
‘তাই নাকি। তা এর আগে কয়বার বাইকে বসেছেন বলুন তো?’
ইহানের এ-কথায় চিমসে গেল আনহা। কিছু বলতে পারল না। ইহান আবার জিজ্ঞেস করল, ‘কি হলো বললেন না যে? কতবার উঠেছেন?’
‘এর আগে আমি কখনো বাইকে উঠিনি। এটাই ফাস্ট।’ আড়ষ্ট গলায় বলল আনহা। কথাটা শুনে বিস্ফোরিত চোখে ইহান বাইকের পিছনে আনহার দিকে তাকায়। সন্দিহান কণ্ঠে বলে, ‘বুঝছি। দয়া করে বাইকে বাইক ভাবুন, রিক্সা ভাব্বেন না। ছেলেকে ছেলে ভাবুন, ছোট-বড় ভাবতে যাবেন না।’
‘মানে?’
‘আমাকে ধরে বসুন। আপনাকে নিয়ে রেসে যাচ্ছি। এভাবে বসলে কাগজের মতো উড়ে যাবেন।’
‘যাব না। তুমি চালাও।’ বাইকের পিছনটা ধরে বলল আনহা।
‘দেখুন আনহা…’
‘তুমি যাবে?’
‘ঠিক আছে। আমার কী? পরে কিছু হলে আমাকে কিছু বলতে পারবেন না।’ বলেই বাইকে স্টার্ট দিল ইহান।
ইহান আস্তে আস্তে বাইক চালাচ্ছে। এটা দেখে আনহা বলল, ‘এই স্পিডে আমাকে ভয় দেখাতে এসেছিল। মনে তো হচ্ছে ঠেলাগাড়ি চলছে। আর ভাব ছিল এমন Dhoom-3 আমিরখান বাইক চালিয়ে ক্লাইম্যাক্স করতে যাচ্ছে।’
আনহার এ-কথায় ইহান দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। ইচ্ছে করছে ওনাকে একটা ক্লাইম্যাক্স সিন দেখাতে। কিন্তু যেভাবে বাইকে বসেছে তাতে এমন কিছু করলে গ্যাস বেলুনের মতো উড়ে চলে যাবে। ওনাকে আর হারিকেন মানে হসপিটাল ছাড়া খুঁজে পাওয়া যাবে না।
কিছুদূর যেতেই ইহান রেসের স্টার্ট পয়েন্টের কাছে পৌঁছে যায়। সবাই ইহানকে দেখে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। ইহান বাইক থামাতেই জিহাম এসে বলে, ‘আজকে নিজের বাইক নিয়ে রেসে যাচ্ছিস। জিতেই কিন্তু ফিরতে হবে। তা খালাম্মা কি আজ তোর পার্টনার হবে নাকি?’
ভ্রু-কুঁচকায় ইহান। বলে, ‘এই মহিলাকে নিয়ে রেসে গেলে রেস জিতব কিনা জানিনা। কিন্তু হ্যাঁ, এনার হসপিটাল টিকিট কনর্ফাম৷’
তখনি ইহানের প্রতিপক্ষ ছেলে সোহেল এসে বলল, ‘এই অয়ন রেসের জন্য প্রস্তুত তো?’
বাঁকা হাসল ইহান। বলল, ‘অয়ন সবসময় রেডি। নিজের কথা ভাব।’
‘আজকে কিন্তু নিউ রুলস। আজকের রেস কাপল হিসেবে করতে হবে। মানে তোর পার্টনার লাগবে। প্রথম দিনই নিজের বাইকে মেয়েকে নিয়ে রেস… তোর তো কপাল খুলে গেল রে মামা।’
হাসল ইহান। ওদের কথা একদম আনহার ভালো লাগল না। ও ইহানের কানের কাছে গিয়ে বলল, ‘আমাকে বাইকে উঠতে বলেছ। আমি উঠেছি। এবার যাই৷ এই রেস-ফেসে আমি নাই। এসব আমার ভালো লাগে না।’
তখনি সোহেল বলে উঠে, ‘ও কি তোর পার্টনার নাকি রে অয়ন। দেখে তো মনে হচ্ছে।’
সোহেলের কথায় রেগে গেল আনহা। ইহানের পিঠে আঙুল দিয়ে বারবার গুতো দিতে লাগল। কিছুটা বিরক্ত হয়ে ইহান বলে, ‘কীহহ?’
‘ছেলেটা আমাকে তুই করে কেন বলল?’
‘আনহা আমি আপনার ছোট হতে পারি। কিন্তু ঐ ছেলেটা না। ও আমার ক্লাসমেট হলেও আপনার তিন-চার বছরের বড়।’
‘কিন্তু…’
ওদের গুজুরগুজুর করতে দেখে সোহেল বলল, ‘অয়ন, তোর বড় হিসেবে তোকে এডভাইস করছি। এইসব মেয়ে নিয়ে বাইক রেসিং করা যায় না। তারপরে তোর মর্জি।’ কথাটা বলেই পিছনে সোহেল ওর পার্টনার তানিশার সাথে হাই ফাইভ করল। তানিশা ইহানকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘তুই হঠাৎ করে এমন বেহেনজি টাইপকে নিজের বাইক পার্টনার বানাতে যাচ্ছিস! কেন তোর বাইকে বুঝি কেউ উঠতে চায় না।
কথাটা শুনে আনহা বাইক থেকে নেমে যেতে ধরল। বাধ সাধে ইহান। বলে, ‘আজ আমি ওনাকে নিয়েই রেস কমপ্লিট করব।’
ইহানের এ-কথায় বিস্ফোরিত চোখে তাকায় আনহা। কী বলছে এসব? সেদিন ছেলেটার বাইকে যে স্পিড় দেখেছে, তাতে ও দুনিয়ায় থাকবে। ইহান আনহার দিকে তাকিয়ে আনহা মাথা নাড়িয়ে না বলে। ইহান চোখ-মুখ শক্ত করে ওকে বাইকে উঠার ইশারা করে কিন্তু আনহা না করে।
‘ওকে তাহলে লকেটের কথা ভুলে যান।’
‘এই না। দাঁড়াও।’ গাল ফুলিয়ে বাইকে উঠে।
আনহা বাইকে উঠলে ইহান বলে, ‘আমাকে জড়িয়ে ধরুন। নাহলে পরে যাবেন।’
‘এই দেখ আমার পক্ষে না এসব সম্ভব নয়।’
‘আমি আপনার ভালোর জন্য বলছি।’
‘কোনো দরকার নেই।’
এই উত্তরে ইহান আর কথা বাড়াল না। বাইক স্টার্ট দিয়ে স্টার্টিং পয়েন্টে গেল। আরেকটু পরেও ইহান বাইক স্টার্ট দেবে। কিন্তু আনহার কোনো নড়নচড়ন নেই। ও ভাবছে এমন করে বসে থাকলে বোধহয় ইহান ওকে নামিয়ে দেবে বাইক থেকে। সোহেল আর তানিশার কথার চেয়েও ইহানের আনহার বিহেভে রাগ লাগল। রেস শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে ইহান বাইক থেকে নেমে দাঁড়াল। আনহা কিছু বুঝে উঠার আগেই আনহার কোমর ধরে ঠিকভাবে বসিয়ে দিল। অতঃপর বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিতেই আনহা ভয়ে ওর কাঁধ খামচে ধরল। কিন্তু বাইক স্টার্ট হতেই কখন যে ইহানকে জড়িয়ে ধরল নিজেও জানে না। চোখ বন্ধ করে খুব শক্ত করে ইহানকে আঁকড়ে ধরল। আনহাকে অবস্থা বুঝে ইহান বাইকে স্পিড তুলে সামনে এগোলো। কিন্তু বিপত্তি ঘটল ইন্ডিং পয়েন্ট যাওয়ার সময়। ইন্ডিং পয়েন্টে যাওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে আনহা ইহানের পিঠ থেকে মাথা তুলল। বাইকের গতিতে দেখে ওর মাথা ঘুরানো শুরু করল। চিৎকার করে বাচ্চাদের মতো কান্না করে একহাতে ইহানের পিঠ ছেড়ে কনুইয়ের ভাজ দিয়ে গলা চেপে ধরল। আনহার এমন বোকামিতে একদম প্রস্তুত ছিল না ইহান। রেস থেকে ধ্যান সরে গেল। বাইকের গতি কমাতেই আনহা ভয়ে ওকে ছেড়ে দিল। আর কী করার ধপাস করে রাস্তায় পড়ে গেল। কিন্তু ইহান তখন বাইক থামাতে পারল না। চলন্ত বাইক হওয়ার কারণে কিছুদূর গিয়ে থামে। বাইক থামতেই ইহান দৌড়ে আনহার কাছে যায়….
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
হাসপাতালে কেবিনে ডক্টর এসে ব্যান্ডেজ করছে। কিন্তু আনহাকে নয় ইহানকে। বাইক থেকে আনহা কাদা পানিতে পড়ে আনহা রাস্তার পাশের কাদা-পানিতে পড়েছে। ওখানটা পাকা ছিল না। তাছাড়া পড়ার সময় বাইকের গতি কম ছিল বিধায় তেমন কিছুই হয়নি। শুধু নোংরা পানিতে গোসল করেছে আরেকটু ব্যথা পেয়েছে। কিন্তু ইহানের সমস্যা হয়েছে। ইহান যখন বাইক থেকে নেমে আনহার কাছে গেছে আনহা নিজের রাগ সামলাতে না পেরে খুব জোরে ইহানের হাতে কামর বসিয়ে দিয়েছে। এমন কামর দিয়েছে বেচারার হাত থেকে রক্ত বের করে ফেলেছে। আর অবস্থাও এমন ছিল কেউ ছাড়াতেই পারেনাই। আর এই কারণেই আনহার জায়গায় ওকে ব্যান্ডেজ করাতে হচ্ছে।
আনহা অপরাধী মতো মাথা নিচু করে রেখেছে। তখনি জিহাম বলে, ‘এই প্রথম দেখলাম কেউ বাইক থেকে পড়ে কুত্তিতে কনভার্ট হয়েছে। এর আগে তো…’
‘এই বাজে কথা বলবা।’
‘বাজে কথা বলমু না মানে। আরে আজব তো কে এমনে কুত্তার মতো কামরায়। এই অয়ন তোর প্রেগন্যান্ট হওয়ার চান্স আছে৷ ভালোয় ভালোয় বলছি পশু হাসপাতালে চল। নাহলে ছেলে হইয়া যদি বাচ্চার জন্ম দেস মান-ইজ্জত থাকব না। আর যে কুত্তিতে তোরে কামরাইছে আমি শিয়র তুই প্রেগন্যান্ট হইয়া যাবি।’
‘কীসব যা তা বকছো?’
‘যা তা বকছি? ইহান তুই বল আমি কি মিথ্যে বলছি।’
এ-কথায় ইহান নিরিহ মুখ করে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে, ‘ছিঃ আনহা ছিঃ। আমার ভাবতেও লজ্জা করছে—আপনি আমার সাথে এমন কিছু করবেন। আপনি শুধু নিজের না মেয়ে জাতির কলঙ্ক।’
‘মানে?’
‘এতদিন সিনিয়র ছেলেদের দেখেছি, জুনিয়র মেয়েদের প্রেগন্যান্ট করতে। কিন্তু আপনি সিনিয়র মেয়ে হয়ে আমাকে আমাকে…। আমার মতো একটা বাচ্চা ছেলেকে প্রেগন্যান্ট করতে চাইছেন। তাও আবার কুত্তার বাচ্চা। হায় খোদা…’
ইহান কান্নার ভঙ্গিমা করে জিহামের বুকে মুখব গুঁজল। ডক্টর তা দেখে হাসছে। জিহাম ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, ‘কাঁদিস না অয়ন৷ কাঁদিস না। তোকে ন্যায় আমি দিব। এই বাচ্চার মাকে তার দায়িত্ব নিতেই হবে৷ বাধ্য সে বাচ্চার দায়িত্ব নিতে। পুরুষ নির্যাতন চলবে না। তবে একটা প্রব্লেম..’
‘কী?’ জানতে চাইল আনহা।
‘আমারও তাই জিহাম। কী প্রব্লেম?’
‘তোর পেটে কিসের বাচ্চা হবে? খালাম্মা তো কুত্তির মতো কামরাইছে। সে হিসেবে তোর পেটে একটা কুত্তা হবে।’
‘কুত্তা? আমি তো মানুষ।’ বলল আনহা।
‘হ্যাঁ, আনহা তো মানুষ।’
‘আরে বাল, আনহা তো মানুষ। কিন্তু কামর তো কুত্তার মতো দিসে। সেই হিসেবে তোর কুত্তার বাচ্চা হবে। আর তোর বাচ্চা তোকে বাবা ডাকবে না। বলবে ঘেউ ঘেউ। আর তা সব এই আনহার জন্য। আনহা আপনাকে অয়ন আর ওর সন্তানের দায়িত্ব নিতেই হবে…’
‘
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা পরের পর্বে জানবেন]
লেখায় ভুল থাকতে পারে৷ চেক করা হয়নি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।