আমার পুতুল বর লেখিকা: আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম) পর্ব:৩৫

আমার পুতুল বর
লেখিকা: আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম)
পর্ব:৩৫

বাসের সবাই ঘুমিয়ে থাকলেও ঘুম নেই অভ্র আর সূর্যের চোখে। সূর্য চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে ছিলো, আরশি হঠাৎ ওর কাধে মাথা রাখে। সূর্য চোখ খুলে ঘাড় ঘুরিয়ে আরশির দিকে তাকায়। আরশি ওর দিকে ঘুরে ঘুমিয়ে আছে। ঘুমের মাঝেই সূর্যর কাধে মাথা রেখেছে ও। কিন্তু বেচারি আরামে ঘুমোতে পারছে না। ঝাঁকুনির কারনে ওর মাথা বার বার সূর্যের কাধ থেকে পড়ে যাচ্ছে। আরশি কিছুক্ষণপর বিরক্ত হয়ে আবারো মাথা রাখছে। কিন্তু আবারো পরে যাচ্ছে। সূর্য হালকা হেসে আরশি কে এক হাতে জড়িয়ে ধরে যাতে বাসের ঝাকুনিতে ওর ঘুমের কোনো সমস্যা না হয়। আরশি ও দু হাতে সূর্যের কোমর জড়িয়ে ধরে আরো আরাম করে নিজের মাথা ওর কাধে রাখলো। এবারে সূর্য বড়ো করে হাসলো। অভ্র সিটে হেলান দিয়ে আরশি-সূর্যর সিটের দিকে তাকিয়ে আছে। ওরা অভ্র দের সিটের বরাবর পাশের সারিতে বসেছে বিধায় অভ্রর ওদের দেখতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। ওদের এতো কাছাকাছি দেখে অভ্রর অনেক খারাপ লাগছে। ইচ্ছে করছে ওদের আলাদা করে দিতে। কিন্তু তা তো সম্ভব না। অভ্র দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ওদের থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়ার সময় ওদের পিছনের সিটে বসা নিধির দিকে নজর পড়লো। ও মাথা সিটের থেকে সরিয়ে বাইরের দিকে দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। যার ফলে ওর মাথা ঝুলছে। অভ্র ভ্রু কুঁচকে ফেললো।
~ এভাবে ঘুমোচ্ছে! এরপর তো ঘাড় ব্যাথা করবে। কোনো হুশ নেই। যাক গে আমার কি!
চোখ সরিয়ে নিতে গিয়েও পারলো না। রেহানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ও ঘুমে বিভোর। ও আস্তে করে নিজের সিট থেকে উঠে নিধির কাছে গেলো। আলতো করে ওর মাথা সিটে রাখলো। কিন্তু নিধি আবার বাইরের দিকে মাথা ঘুড়িয়ে ফেললো।
অভ্র বির বির করে বললো,,,
~ ঘূমের মাঝে ও আমার সাথে ওর ত্যাড়ামি করতেই হবে।
আবার ওর মাথা সিটে রেখে ওকে মিহির দিকে ঠেলে সরিয়ে দিলো। এবার আর নিধি নড়লো না। মিহির মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে রাখলো।
অভ্র নিশ্বাস ফেলে নিজের সিটে ফিরে এলো। পাশে তাকাতেই দেখলো সূর্য ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ও কিছুটা হকচকিয়ে গেলো। সূর্য কিছু বললো না শুধু একটু হাসলো। ওর হাসি দেখে অভ্র নার্ভাস হয়ে গেলো। আমতা আমতা করে বললো,,
~ আসলে ভাইয়া ও যেভাবে শুয়ে ছিলো, ঘাড় ব্যাথা করতো তাই জাস্ট ঠিক করে দিতে গেছিলাম।
~ আমিতো কিছু জিজ্ঞেস করিনি।
অভ্র থতমত খেয়ে গেলো। আসলেই তো, শুধু শুধু বলার কি ছিলো। সূর্য আরশি কে আরেকটু ভালো ভাবে জড়িয়ে ধরে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,,,
~ নিজের ভালোবাসার মানুষের জন্য কেয়ার দেখানোটা দোষের কিছু না।
অভ্র চমকে ওর দিকে তাকালো। সূর্যকে আরশির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাত মুঠ করে ফেললো। তারপর থমথমে গলায় জিজ্ঞেস করলো,,
~ ভালোবাসার মানুষের প্রতি কেয়ার বলতে ?
~ তুমি বুদ্ধিমান তাই আশা করি ভেঙ্গে বলতে হবে না।
~ এমন কিছুই না। রেহান আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার আপনজন। সেই অনুযায়ী ওর বোনের জন্য এতটুকু কেয়ার তো দেখাতেই পারি। আমার আপনজনদের আমি অলওয়েজ কেয়ার করি।
সূর্য হেসে বললো,,,
~ আপনজনের জন্য কেয়ার আর ভালোবাসার মানুষের জন্য কেয়ার এক হয় না। এটা আশা করি খুব জলদি বুঝতে পারবে।
অভ্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সূর্যের দিকে তাকালো। তারপর বললো,,,
~ আপনার আরশির প্রতি কেয়ারটা ঠিক কোনটা তাহলে? আপনজনের জন্য কেয়ার নাকি ভালোবাসার মানুষের জন্য কেয়ার ?
~ যেদিন তুমি নিজে বুঝতে পারবে নিধি তোমার কাছে ঠিক কি। সেদিন তোমার এই প্রশ্নের উত্তর ও তুমি নিজেই পেয়ে যাবে।
অভ্র আর কিছু বললো না। সূর্য আবার নিজের চোখ বন্ধ করে ফেললো।

খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরে এসে ওদের গাড়ি থামলো। ওরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে গেলো। আরশি কাচুমাচু হয়ে মিহির পাশে দাড়িয়ে আছে।
ঘুম ভাঙ্গার পর নিজেকে সূর্যের বাহুডোরে দেখে হতবাক হয়ে গেছিলো ও। কিছুক্ষনের জন্য রিয়েক্ট করতেই ভূলে গেছিলো। তারপর নিজের অবস্থান বুঝতে পেরে সূর্য থেকে ছিটকে সরে গেলো। এতে সূর্যের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলো। ও ভ্রু কুঁচকে আরশির দিকে তাকালো।
~ এরোকম রিয়েক্ট করার কি আছে? একটু আগেই ঘুমিয়েছিলাম। নিজে তো সারারাত আমাকে বালিশ বানিয়ে আরামে ঘুমালে। কিন্তু যেই আমি একটু ঘুমাতে গেলাম ওমনিই তোমার জ্বলছে তাই না?
~ ক. কি বলছেন? আমি কখন আপনাকে বালিশ বানালাম? ( এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো )
~ বানাও নি? আমাকে ঝাপটে ধরে রেখেছিলে। কতবার তোমাকে সরানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু তুমি আরো বেশি করে ঝাপটে ধরেছো।
আরশির মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। মিন মিন করে বললো,,
~ সরি। আমি ঘুমের ঘোরে বুঝতে পারিনি।
সূর্য আড়চোখে আরশির লজ্জা মাখা মুখের দিকে তাকালো। তারপর বাকা হেসে বললো,,,
~ এখন আমার বালিশ লাগবে। আমি ঘুমাবো। ঠিকমতো ঘুম হয় নি আমার।
আরশি ফ্যালফ্যাল করে সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে।
সূর্য আচমকা আরশি কে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে এলো। তারপর আরশির এক হাত জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ গুজে দিলো। আরশি স্তব্ধ হয়ে গেলো। সটান হয়ে বসে আছে ও। সূর্যর এই কাজের জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই ঘুম। আড়চোখে সূর্যের দিকে তাকিয়ে তুতলিয়ে বললো,,,
~ ক. কি ক. করছেন? কে.উ দেখে ফেল.. আর কিছু বলতে পারলো না ঘাড়ে সূর্যের ঠোটের স্পর্শ পেতেই সব কথা গলায় আটকে গেলো। সূর্য আরশির কোমর জড়িয়ে ধরে আরেকটু কাছে গিয়ে ওর গলার মধ্যভাগে চুমু দিলো। আরশি কেঁপে উঠলো। চোখ জোড়া আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো। সূর্য মাথা তুলে আরশির দিকে তাকালো। আরশি চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে। মুচকি হেসে ওর কপালে চুমু দিয়ে সরে এলো। বেশ কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে আস্তে আস্তে চোখ খুললো আরশি। পাশে তাকিয়ে দেখলো সূর্য সিটে হেলান দিয়ে বাকা হেসে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নিলো।
একে একে সবাই জেগে গেলো। তারপর ওরা আরিয়ার দেওয়া খাবার খেয়ে নিলো। তখন থেকে এখন পর্যন্ত আরশি একবারের জন্য ও সূর্যের দিকে তাকায় নি।

ওরা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে নিলো যতদিন সাজেক থাকবে ততোদিনের জন্য।

যত দূরে চোখ পড়ছে শুধু পাহাড় আর পাহাড় দেখা যাচ্ছে। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ের রাস্তার উপর এক একটা গাড়ি ছোট পিপড়ার মত দেখা যাচ্ছিলো। চারপাশে সবুজের সমারোহ তে সবার চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। আরশি মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারপাশ দেখছে। কেউ একজন যে ওকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে তা কি সে জানে!
ওরা দুপুরের দিকেই মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট পৌঁছে গেলো। মাহির আগের থেকেই রুম বুক করে রেখেছিলো। ওরা শুধু দুইটা কটেজ ই খালি পেলো। তারাশা আর রোদেলা। লাস্ট মোমেন্টে প্ল্যান করার কারনে এমনটা হয়েছে। অন্যান্য রিসোর্ট গুলোর চেয়ে এটাই বেস্ট তাই এটাই ঠিক করেছে ওরা।
ওরা সবাই তারশায় ঢুকলো। কাঠের তৈরি কটেজ। বাঁশ দিয়ে দেয়াল দেয়া। রুমটা অনেক সুন্দর। একটা বেড আর ফ্লোরিং বেড এর ব্যাবস্থা ও আছে। এটায় সব মেয়েরা থাকবে। আর রোদেলায় সব ছেলেরা। আরশি বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলো। পর্দা সরাতেই বারান্দা থেকে উঁকি দিলো সূর্যের মিষ্টি আলো। মিহি ও দৌঁড়ে এলো।
~ওয়াও আরশি ক্লাউড ট্যারেস।
নিধি, রোজ, ন্যান্সি আর সুজানা ও এগিয়ে এলো। ওরা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। খুব কাছ থেকে পাহাড় আর মেঘের ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে। ওরা সবাই মিলে বেশ কিছুক্ষণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করলো। মাহির সবাইকে তাড়া দিয়ে বললো,,
~সবাই জলদি ফ্রেশ হয়ে নাও লাঞ্চ করতে যেতে হবে।
সবাই একে একে ফ্রেশ হয়ে নিলো। সূর্য ওর মা কে ফোন করে জানিয়ে দিলো যে ওরা পৌঁছে গেছে। তারপর ওরা মনটানাতে গেলো লাঞ্চ করতে।

দুটো টেবিল মিলিয়ে বসেছে ওরা। এক টেবিলে আরশি, সূর্য, সুজানা, মাহির, রিক, নাহিদ। অন্যটা তে রেহান, মিহি, রোজ, ন্যান্সি, নিধি , অভ্র। ওয়েটার তিনটা আইটেম নিয়ে এলো। বাঁশ করুল, বেম্বো চিকেন আর বেগুন ভর্তা। খাওয়া শেষে ওরা আবার কটেজে ফিরে এলো। সবাই রেস্ট নিতে চলে গেলো। বেশ কিছুক্ষণ পর সূর্য বললো হ্যালিপ্যাডে সূর্যাস্ত দেখতে যাবে। ওরা সূর্যাস্তের দশ মিনিট আগে হ্যালিপ্যাডে এসে পৌঁছায়। মিহি চারপাশে তাকাচ্ছে। হঠাৎ চেঁচিয়ে বললো,,,
~ আরশি দেখ দেখ ওটা কি?
রেহান মিহির পাশেই ছিলো। ওর আচমকা চিৎকারে হকচকিয়ে গেলো। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
~ এরকম ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছো কেনো তুমি?
~ কি বললেন আপনি? আমি ষাঁড়ের মতো চেছাচ্ছি?
~ তো কি করছো? আশে পাশে যে মানুষ আছে সেই খেয়াল আছে? এভাবে চেঁচালে কেনো ?
~ আপনাকে বলবো কেনো? আরশির দিকে এগিয়ে গেলো। তারপর ইশারায় সামনে তাকাতে বললো। আরশি সেদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো।
~ এটা কি করছে?
বাকিরা ও সেদিকে তাকালো এবার। মাহির বললো,,
~ এগুলো হচ্ছে ব্যাম্বো টি। এই চা টা তেতুঁল দিয়ে বানায়।
~ ওয়াও জোস তো ব্যাপারটা অনেক। ( ন্যান্সি )
~ চলোনা সবাই আমি ওই চা টা খাবো। ( রোজ )
~ হ্যাঁ আমি চা হাতে নিয়ে ছবি তুলবো। ( ন্যান্সি )
~ ঠিক আছে চলো। ( মাহির )

চা বানানোর স্টাইলটা খুব ইউনিক। একটা কাপের মধ্যে চা বানিয়ে সেটা ছোট একটা বাঁশের মধ্যে ঢেলে সবার হাতে দেওয়া হচ্ছিলো। সবাই চা হাতে নিয়ে আগে ছবি তুললো। ওরা চা তে চুমুক দিয়ে একেকজন প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে গেলো।
~ দারুন টেস্ট। ( সুজানা )
~ হ্যাঁ। ( নিধি )
~ আচ্ছা সবাই চলো সূর্য ডুববে এখন। ( মাহির )

সূর্যটা আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসছে। এর রং হলুদ থেকে কমলা, কমলা থেকে লাল টুকটুকে হয়ে গেলো। পুরো আকাশ কমলা-হলুদ-লাল রঙে রঙিন হয়ে গেলো। মেঘেরা ও সূর্যের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের বর্ণ পরিবর্তন করলো। সূর্যটা আস্তে আস্তে পাহাড়ের সাথে মিশে গেল। সবাই নিস্তব্ধ হয়ে দেখছে।। অস্তমান সূর্যের অতুলনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করছে তারা। সূর্য ডোবার পর ওদের হুশ ফিরলো। রোজ আর ন্যান্সি ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বাকিরাও পোজ দিয়ে ছবি তুলছে। আরশি এখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মুখে লেগে আছে এক চিলতে হাসি। বাতাসে ওর চুল এলোমেলো হয়ে গেছে। সূর্য আস্তে আস্তে ওর পাশে এসে দাড়ালো। আরশির দিকে এক পলক তাকিয়ে বাকিদের দিকে তাকালো। সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। সূর্য ধীরে ধীরে আরশির কোমরে হাত রেখে ওকে কাছে টেনে নিলো। হঠাৎ এমন হাওয়ায় আরশি ঘাবড়ে গেলো। সূর্য কে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। মাথা নামিয়ে বললো,,
~ কি করছেন ? সবাই আছে তো।
~ হ্যাঁ আছে। ছবি তুলছে। আমিও তুলবো।

আরশি সূর্যের দিকে তাকালো। সূর্য এই ফাঁকে নিজের ফোন বের করে ওদের দুজনের ছবি তুলে নিলো। কিন্তু ওরা জানে না কেউ একজন ওদের এই বিশেষ মুহূর্তটাকে ক্যামেরায় বন্দি করছিলো। যখন সূর্য আর আরশি ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলো তখন হঠাতি সুজানার নজর ওদের দিকে পড়লো। প্রথম কয়েক সেকেন্ড ও অবাক হয়ে এই দৃশ্য দেখছিলো। তারপর কি হচ্ছে বুঝতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলো। মাহির কে ইশারায় ওদের দেখালো। মাহির ও প্রথমে চমকে গেছিলো। পরক্ষনেই মোবাইল বের করে ছবি তুলতে শুরু করলো।
~ ও মাই গড আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা ভাই আর আরশি !! আমি ঠিক দেখছি তো?
~ একদম ঠিক দেখছিস।
~ আমার যে কি খুশি লাগছে আমি বলে বুঝাতে পারবো না। মা, খালামনি অনেক খুশি হবে এটা জানতে পারলে যে আরশি রানি আর ভাই এক সাথে সময় কাটাচ্ছে। বিশেষ করে ভাই এর কথা জানতে পারলে অনেক খুশি হবে। আমি এক্ষুনি ওদের খবর দিচ্ছি। ( এক্সসাইটেড হয়ে ফোন করতে যাচ্ছিলো )
~ আরে কি করছিস ?
~ ফোন করছি ওদের ব্যাপারটা জানাবো।
~ না এখন ওদের কিচ্ছু জানাবি না। আগে দেখ আর কি কি হয় তারপর একবারে সব কিছু জানাবি।
~ বলছিস?
~ হ্যাঁ।
~ ওকে। আচ্ছা শোন থ্যাংকস। যদি তুই আমাদের কে এখানে না নিয়ে আসতি তাহলে হয়তো এরকম একটা সিন কখনো দেখতে পারতাম না। ( মুচকি হেসে )
~ থ্যাংকস কেন বলছিস? তোর জন্য তো আমি সব করতে পারি।
~ আচ্ছা?
~ সন্দেহ আছে?
~ হ্যাঁ ।
~ তা কি করতে হবে তোর সন্দেহ দূর করার জন্য?
~ কালকে ট্রেকিং এ নিয়ে যেতে হবে।
~ ব্যাস এইটুকুই?
~ হ্যাঁ।
~ তুই চাইলে তো আমি নিজেকেই তোকে দিয়ে দিতে পারি। সেখানে এটা তো সামান্য।
~ নিজেকে দিবি মানে?
~ ( সুজানার দিকে ঝুঁকে ) আমার সবটা তোর নামে করে দিবো। কখনো চেয়ে দেখিস।
সুজানা মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। মাহির ও সুজানার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে আছে।

মিহি নিজের সেলফি তুলছিলো। তখনই সেলফি ক্যামেরায় মাহির আর সুজানাকে একে অপরের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতে দেখলো। ওর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। দ্রুত ওদের ছবি তুলে ফেললো।
~ তার মানে আমি কি ঠিক ভাবছিলাম? ভাইয়া আর সুজানা আপু একে অপরকে পছন্দ করে? নাহ্ ভালোবাসে। ওয়াও। এক দিকে আরশি আর সূর্য ভাইয়া অন্যদিকে মাহির ভাই আর সুজানা আপু। এই ট্রিপের শেষে মনে হচ্ছে আমরা দু দুটো কাপল পাবো। আমার কাজ পাগল ভাইটা ও যে কাওকে ভালোবাসতে পারে , কখোনো ভাবিই নি।
কথাটা ভাবতেই মিহি মুচকি হাসলো।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here