#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-১০
১৯.
অনেকক্ষন ধরে ফোন বাজছে কিন্তু রিসিভ করা হচ্ছে না এমন না যে কেউ ফোনের পাশে নেই বা দেখেনি । বরং ফোনে কাছেই বসে ফোন বাজা দেখছে তাহু ।যে ফোন করেছে সে আর কেউ না তানভি নিজে।
মেহুর কেন জানি ভয় লাগছে ফোনটা ধরতে। একে একে পাঁচ বার ফোন বেজে কেটে গেলো।
এবার আর ফোন না বরং মেসেজের টোন আসলো ।
তাহু প্রথম ভাবলো দেখবে না কিন্তু কি মনে করে যেনো আবার হাতে নিলো ।
মেসেজ অপশনে গিয়ে ক্লিল করলেই ভেসে উঠলো মেসেজ।
” আমি জানি তুমি ফোনের কাছে বসে আছো আর একবার ফোন দিবো যদি না ধরো তাহলে তোমার বাবার কাছে ফোন দিয়ে তোমাকে চাইব।
বিষয়টা অবশ্যই তোমার ভালো লাগবে না তাই তারাতাড়ি ফোন ধর।”
মেসেজ পড়ার সাথে সাথে আবার ফোন আসে । তাহুকে একটু চিন্তা করারও সময় দেয় না। বুকে আকাশ সমান ভয় নিয়ে কল রিসিভ করে হ্যালো বলে।
কি বেপার ফোন ধরতে কি সমস্যা তোমার ? তুমি কি আমাকে ভয় পাও ?
তাহু কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা ও আসলেই ভয় পাচ্ছে। কিন্তু মুখে তো আর বলা যায় না ভয় পাইতেছে ।তাই সে খুব আস্তে করে বললো না আমি ঠিক আছি ।
সত্যি ঠিক আছো সিউর তো?
জি আমি ঠিক আছি।
ওকে ! কি করতেছিলে?আর বাসার সবাই কেমন আছে?
জি সবাই ভালো আছে।
বক্স খুলে দেখছো?
এবার তাহুর কথা বন্ধ হয়ে গেল । কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা । তার মধ্যে ভয় আর লজ্জা লাগছে । তাই চুপ করে আছে।
তানভি আবার বললো tahu are you hear me?
জি।
শুনো মেয়ে যদি মনে ভয় থাকে তাহলে ভয় কাটিয়ে নাও। কারণ আজ থেকে প্রতিদিন আমার সাথে কথা বলতে হবে। বুঝতে পারছো কি বলছি ।
জি।
কি জি জি করতেছ কখন থেকে।আর কোনো কথা পারো না?
জি পারি তো।
আবার জি । ওকে যাও আজ প্রথম বলে মাফ হলো কিন্তু পরে কিন্তু আর মাফ করবো না। যাই হোক উপহার পছন্দ হইছে । সত্যি বলবা।
……………।
চুপ কেন ভালো লাগে নাই।
না না ভালো লাগছে সাথে সাথে বললো তাহু।
Thank God. ভালো লাগছে তোমার । এই প্রথম মেয়েদের জন্য কিছু কিনছি তো তাই confused ছিলাম । যাক তোমার ভালো লাগছে এতেই খুশি।
তখনি ওর কেবিনের দরজায় টোকা পড়লো।
ফোন কানে রেখেই বললো ‘come in’.
অফিসের একজন স্টাফ এসে বললো স্যার আপনাকে বড় স্যার ডাকছে।
হুম আপনি যান আমি আসছি।
আচ্ছা রাখি এখন পরে কথা হবে। আল্লাহ হাফেজ।
জি আল্লাহ হাফেজ।
এতোক্ষন যেনো নিঃশ্বাস আটকে রেখেছিলো তাহু তাই বড় করে নিঃশ্বাস ছারলো ফোন রাখার পরে । মনে হয় যেন জীবন ফিরে পেলো । মনে কেমন সুখ সুখ অনুভুতি হচ্ছে । কারণ তাহু নিজেও প্রেমে পরে গেছে।
২০.
নাসিম উদ্দিন সাহেব স্কুল থেকে এক প্রকার দৌড়ে বাসায় আসছে কারণ বাসা থেকে ফোন আসছে চেয়ারম্যান আসছে বাসায় আবার তার ছেলের বিয়ের কথা নিয়ে ।
নাসিম উদ্দিন ভেবে পায় না এই চেয়ারম্যানের কি মাথায় কোনো সমস্যা আছে নাকি।
লোকটাকে বলা হইলো যে আমার মেয়েকে বিয়ে দিবো না তাও বাসায় চলে আসছে।
ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসছে।
বাসার ড্রইং রুমে বসে আছে চেয়ারম্যানের সাহেব। তার সামনের টেবিলে কিছু নাস্তা রাখা । আর তার সামনে বসে আছে তাহুর দাদি ।
নাসিম উদ্দিন বাসায় ঢুকে চেয়ারম্যানকে সালাম দিলো। আপনি বসেন আমি আসছি বলে ভিতরে গেলো। আর ভিতরে যাওয়ার প্রধান কারন স্ত্রীর কাছে সুস্পষ্ট ভাবে যানা যে চেয়ারম্যান কেন এসেছে এখানে এবং এসে কি কি বলছে।
তাহুর বাবা স্ত্রীর থেকে সব জেনে আবার ড্রইং রুমে আসে চেয়ারম্যানের সামনে বসে।
তো চেয়ারম্যান সাহেব হঠাৎ আমার বাসায় কোনো কি দরকার।
চেয়ারম্যান তার চরিত্রসুলভ খেক খেক করে হেসে উঠে । আর বলে যার ঘরে সিয়ানা মাইয়া আছে তার ঘরে তো মানুষ হঠাৎ হঠাৎ আইবোই।
আর আমার পোলার মন তো আপনের বাড়িতে পইরা রইছে তাই আমার আসতেই হইলো।
দেখেন চেয়ারম্যান সাহেব আপনারে আগেও বলছি এখন ও বলি আমি আমার মেয়েকে এখন বিয়ে দিবো না। আমার মেয়ে বিয়ের জন্য এখনো ছোট। আপনি কেন বার বার একই প্রস্তাব নিয়ে হাজির হন।
হ…. মিঞা তোমার কথা তো বুঝছি। কিন্তু আমার পোলায়ও তো জিদ ধরছে সে বিয়া করবো তোমার মাইয়ারে। আর আগের দিনের মাইয়াগোও তো এর চেয়ে ছোট কালে বিয়া হইয়া দুই-তিন বাচ্চার মা হইয়া যাইতো। তার তুলনায় তোমার মাইয়া ঢের বড়। আর আমার কি কোনো দিক দিয়া কম আছে যে পড়ালেখা কইরা চাকরি করন লাগবো । আমার পোলা আর পোলার বউ সারা জীবন বইসা খাইতে পারবো।
চেয়ারম্যানের এমন বেহুদা কথা শুনে তাহুর বাবার মন চাইলো ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে। কিন্তু যতই হোক বাসায় আসা কোনো অতিথির সাথে তো আর খারাপ ব্যবহার করা যায় না । তার উপর সে চেয়ারম্যান মানুষ আবার মানুষ হিসেবে সে সুবিধার না তাই আর বেশি কথা বাড়ালো না।
বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো যদি ছেলের বিয়ের কথা ছাড়া আমার বাড়ি আসেন তাহলে আপনাকে সাদরে গ্রহণ করবো। এখন আপনি আসতে পারেন। আসসালামুয়ালাইকুম বলে ভিতরে চলে গেলো।
চেয়ারম্যান তাহুর বাবার এমন ব্যবহারে খুবই অপমান বোধ করলো। পিছন থেকে বলে উঠে দেহো মিঞা কাজটা ঠিক করলা না ভালোয় ভালোয় বিয়ার প্রস্তাব নিয়া আইছি রাজি হইয়া যাও পরে আমার পোলায় যদি কোনো অঘটন ঘটাইয়া ফেলে তাইলে কিন্তু কিছু কইবার পারবা না ।
যেতে যেতে থেমে গেলো নাসিম উদ্দিন রাগে ওনার শরীর জলে উঠলো । পিছন ঘুরে বললো সম্মান দিচ্ছি বলে ভাববেন না যে সামনেও সম্মান দেখাবো। দেশে আইন আছে । আমি দেখবো আপনি কি করেন ।বলে চলে গেলো আর পিছন ফিরলো না।
দেইখা নামু বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো চেয়ারম্যান।
চলবে………..