#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-২০
৩৯.
বাসার লিভিং রুমে সেই কখন থেকে বসে আছে তাহু আর তাকে ঘিরে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ বসে আবার দু’জন তো সুয়েও পরেছে সোফায় । এখানে বেশিরভাগ জনকেই চিনে না । একেক জনের পর একেক জন সেই কখন থেকে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে ।একজন বুড়ি তো এক প্রশ্ন বার বার করে মাথা ঘোলা করে ফেলছে । তার প্রশ্ন – দুগা ডাইল দিয়া ভাত খাইবা ? যদিও এখন তাহুর অনেক খুদা পেয়েছে কিন্তু লজ্জা আর ভয়ে কাওকে কিছু বলতে পারছে না । সেই কখন আসার সময় মাঝ রাস্তায় তানভি জোর করে একটু কেক খাইয়েছিলো। সারা দিনের না খাওয়াটা এখন জেকে বসেছে । তার উপর এতো মানুষ ঘিরে রাখার অস্থিরতা,মনে হচ্ছে ভিতরে থেকে সব উল্টে এসে পড়বে ।
দুর থেকে তানভির মা এটা খেল করেন যদিও ছেলের উপর এখনো রাগ আছে এভাবে বিয়ে করাতে । কিন্তু এই মেয়েকে তার ভিসন পছন্দ হয়েছে কি সুন্দর নিষ্পাপ একটা চেহারা । এমন একটা বউই তো চেয়েছিলো পুতুলের মতো । কিন্তু মেয়েটা যদি সত্যিই ঐ চেয়ারম্যানের ছেলের সাথে ভেগে থাকে তাহলে আমার তানভিরে কি হবে । আমার একটা মাত্র ছেলে । না বাবা না এই মেয়েকে এখনই হালকা ভাবে নেয়া যাবে না , কিছুদিন মেয়ে চালচলন দেখতে হবে তারপর দেখা যাবে এই মেয়ে আমার তানভিরের জন্য যোগ্য কি না ।
পাশে মেয়েকে দেখতে পেয়ে চোখের ইশারায় রিমিকে ডাকলো তানভিরের মা ।
হে মা বলো ডাকছিলে কেন ? এই দিকে ভাইয়া বার বার ফোন দিচ্ছে ভাবিকে যেনো রুমে নিয়ে যাই ফ্রেস করে কিছু খেতে দেই ভাবি নাকি একদম না খাওয়া।
দেখ এই মেয়ে আসতে না আসতেই আমার ছেলের এতো পরিবর্তন বাইরে গিয়েও এই মেয়ের প্রতি এতো দরদ । কেন ও কি ভাবছে ওর বউকে না খাইয়ে মেরে ফেলবো।
মা কি উল্টা পাল্টা কথা বলতাছো , ভাবি এখানে সম্পূর্ণ নতুন কাওরে চিনে না কত ধকল গেছে তার উপর দিয়ে তার মধ্যে সারা দিন না খাওয়া ভাইয়ার তো চিন্তা হবারই কথা ,আর তাছাড়া ভাইয়া তোমার ও চিন্তা করে তার বউয়ের খবর নেওয়ার সাথে সাথে তোমারও খবর নিছে এবং তোমাকে সময় মত বিপির ঔষধ খাইতে বলছে।
কথা শুনে তানভিরের মা মনে মনে খুব খুশী হলো কিন্তু তা প্রকাশ করলেন না । মেয়েকে বলে উঠলেন ঠিক আছে ঠিক আছে যা ওকে তর রুমে নিয়ে যা আর ফ্রেস হতে বল আমি খাবার পাঠাচ্ছি ।
রিমি এসে সবার মধ্য থেকে তাহুকে তুলে নিয়ে গেলো কিন্তু পেছন থেকে সেই বুড়ো আবারো বলে উঠলো ঐ ওরে কয়টা ডাইল দিয়া ভাত দিস ।
রিমি পেছন তাকিয়ে বললো আচ্ছা দিবো ।
তাহু যেনো এতোক্ষণে একটু শান্তি ফিরে পেলো । সেই আসছে পর থেকে যে এক জায়গায় বসেছে তো একবারের জন্যও উঠা হয় না , আর লোকটা বাসায় এতো গুলো অচেনা মানুষের মাঝে রেখে গেলো একটা ফোনকল পেয়ে তার আসার কোনো খবর নেই ।
৪০.
তাহু রিমির রুমে বসে আছে । কিছুক্ষন আগে ফ্রেস হয়ে একটা সুতি থ্রিপিস পড়েছে । তাহুর শাশুড়ি প্লেট ভর্তি ভাত – তরকারি আর একটা শাড়ি ও দুইটা থ্রিপিস নিয়ে এসেছিলো বলে গেছেন জেটা পরে সাচ্ছন্দবোদ করি সেটাই যেনো পরি। তাই থ্রিপিস বেছে নিছে পরার জন্য । যদিও ফিটিং হয় না কিন্তু পরে আরাম বোধ করছে।
ফ্রেস হয়ে বের হলে রিমি বলে উঠলো ওয়াও ভাবি তোমাকে খুব স্নিগ্ধ লাগছে , তুমি খুব সুন্দর ভাবি মাশআল্লাহ । আমার ভাই শুধু শুধু পাগল হয় নাই ।
রিমির কথায় তাহু একটু করে হাসলো ।
আচ্ছা তুমি খাওয়া শুরু করো আমি একটু পরে আসছি।
না,না আপনি থাকুন আপু আমি একা থাকতে পারি না । আর আমি একা একা খাবো নাকি আপনিও খাবেন আমার সাথে প্লিজ।
ওকে খাবো কিন্তু আমাকে তুমি করে বলতে হবে বয়সে বড় হতে পারি কিন্তু সম্পর্কে তো ছোট তাই প্লিজ তুমি করে বলবা ।
ওকে আসো আমরা এক সাথে খাই ।
খাওয়া যখন প্রায় শেষ তখন এসে তানভি রুমে ডুকে ।এসেই তাহুর হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়েছে ।
প্রায় অনেক ঘন্টা পর দাদি ,মা আর ভাইকে দেখে আবার কান্না এসে যায় তাহুর ।
দাদি বলে উঠে কেমন আছো বইন খাইছো।
হা দাদি মাত্র খেয়েছি তোমরা সবাই কেমন আছো । তোমরা খাওয়া দাওয়া করছো ।
হুম আমরাও মাত্র খাইলাম। তা শশুর বাড়ির সবাই কেমন? তাহুর মা বলে উঠলো।
তাহু কথাটা শুনে রিমির দিকে তাকায় দেখে খাবার খাওয়া শেষে সব কিছু গোছগাছ করছে ।
রিমি তা আরচোখে খেল করে তাই তাড়াতাড়ি সব নিয়ে চলে যায় কিন্তু যেতে যেতে কনে আসে ।
হা দাদি সব কিছু ঠিকঠাক আছে আর সবাই খুব ভালো।
দাদি আপনার এই ছিঁচকাদুনে নাতি বলেন একটু কম কান্নাকাটি করতে , মানুষ দেখলে তো মনে হয় তানভি বউ পিটায় । সারা রাস্তা কান্না করতে করতে আসছে ।
কথাটা শুনে তাহুর কান্না যেনো আরো বেরে গেলো ,তাহুর সাথে মার আর দাদিও কান্না করে দিলো ।
তানভি তো পুরাই বেকুব হয়ে গেছে , এমন কি বললো যে এক সাথে তিন জনেই শুরু করে দিলো । অসহায় ভাবে মেঘের দিকে তাকালো তানভি।
মেঘ তিন জনকেই ধমক দিয়ে বললো কি শুরু করছো তিন মহিলা কি এমন বলছে যে কন্না করতে হবে আজব।
চলবে…………
আসসালামুয়ালাইকুম এভ্রিওয়ান । সবাইকে
ঈদ মোবারক
অনেক অপেক্ষা করিয়েছি । করণ অনেক ব্যস্ত ছিলাম।
কিন্তু আজ রাতে আরেক পর্ব দিবো ইনশাআল্লাহ
ঈদ বোনাস।😊