#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-২১
৪১.
কিছুক্ষণ আগে তাহুকে তানভিরের রুমে দিয়ে গেছে রিমি । রাত এগারোটা বাজে এখন মনে ভয়-জড়তা নিয়ে সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে তাহু আর ঘরের সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে । ঘরের আকার বিশাল । এতো বড় রুম হয় ? ঘরের সব ফার্নিচার দেয়াল-ফিট । এক পাশে চার জন সোয়ার মত একটা বিশাল খাট । খাটের পাশেই ছাদ থেকে ফ্লোর পর্যন্ত পর্দা দেয়া তার পাশেই একটা দরজা দেখা যাচ্ছে কিসের সেটা বুঝা যাচ্ছে না।
তাহু যে সোফায় বসা তার পাশেও একটা দরজা দেখা যাচ্ছে । ছোট্ট একটা ফ্রিজ ও আছে । রুমটা খুব পরিপাটি করে সাজানো । কোথাও কোনো অগোছালো ভাব নেই । দেখতে দেখতে তাহুর মন চাইলো বিছানাটায় গিয়ে একটু সুইতে কিন্তু ওনি না আসা পর্যন্ত সোয়াটা ভালো দেখায় না তাই একটু আরাম পাওয়ার জন্য সোফায় পা উঠিয়ে বসলো।
রাত প্রায় এগারোটা চল্লিশে তানভি রুমে ঢুকে । মনে মনে যা ভেবে রুমে ঢুকেছিলো রুমে ঢুকে দেখে ঠিক তাই হয়েছে। তাহু ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছে ।
তানভি রুমে ঢুকে প্রথমে আস্তে করে কাবাডে কিছু পেকেট রাখে তারপর নিজের জন্য ড্রেস বের করে ওয়াস রুমে চলে যায় ।
বিশ মিনিটের গোসল নিয়ে বের হয় তানভি । তারপর আস্তে করে তাহুর সামনে যায়। তাহু তখন গভীর ঘুমে। সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তাকিয়ে থাকে অনেকক্ষন।
তানভি স্বপ্নেও ভাবেনি যে এমন করে বিয়েটা করে ফেলবে। তবে মনে একটা প্রশান্তি কাজ করছে যে এই মেয়েটা এখন সব সময় ওর চোখের সামনে থাকবে। আর কোনো কষ্ট পেতে দিবে না।
নিজে সদ্য গোসল করা ঠান্ডা হাতটা দিয়ে স্পর্শ করে তাহুর গালে । ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে তাহু একটু নরে চরে কিছু খাওয়ার মত মুখ নারিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরে। তাহু এতদিনের ক্লান্তি যেনো একেবারে কাবু করে ফেলছে। তাই তানভির হাতের স্পর্শ পেয়েও ঘুম ভাঙ্গার নাম নেই । কে বলবে এই মেয়ে আজ স্বামী ঘরে ,আজ তার বাসর রাত। যদিও বাসর সাজাতে দেয়নি তানভি।
তানভি ওর খাওয়ার অঙ্গভঙ্গি দেখে হেসে দেয় । আস্তে করে কোলে উঠিয়ে নিয়ে বিছানায় সুইয়ে দেয়। তারপর লাইট অফ করে দিয়ে তাহুর পাশে সুয়ে পরে । আস্তে করে তাহুকে জরিয়ে ধরে মাথার পাশে চুমু দিয়ে নিজেও ঘুমিয়ে পরে।
৪২.
তাহুর ঘুমের ঘোরে মনে হয় কে যেনো দম আটকে রেখেছে। পাঁচ কেজি ওজনে কি যেনো ওর শরীরের উপর। তাই আস্তে করে চোখ খোলে নিজের অবস্থান বুঝার জন্য । নিজের পাশে একজন পুরুষ মানুষের অবস্থান দেখে দরফরিয়ে উঠে দু’হাত পিছনে গিয়ে বসে পরে । ও ভুলেই গেছে ওর যে বিয়ে হয়ে গেছে ।
তানভি ওর অবস্থা দেখে নিজেও উঠে বসে পরে , পাশে লেম্পটা জালিয়ে দিয়ে বলে তাহু কি হইছে ভয় পাইছো ?
তাহু এতোক্ষনে নিজের অবস্থান বুঝতে পারে এবং তানভিকে দেখে নিজেকে একটু সামলে নেয় ।
এমন ভয় পেলে কেন কোনো শপ্ন দেখছো ।
না না আমি ঠিক আছি একটু পা_পানি হবে আমি পানি খাবো ।
তানভি সাথে সাথে পাশ থেকে গ্লাস নিয়ে পানি ধরে তাহুর মুখের সামনে । তারপর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে চারটা দশ বাজে ।
এখনো আলো ফুটতে অনেক সময় আসো আবার ঘুমানোর ট্রাই করো।
তাহু আস্তে করে তানভির দিকে মুখ করে সামান্য দুরুত্ব রেখে আবার শুয়ে পরে ।
তানভি প্রথমে লাইট অফ করে পরে বিছানা থেকে নেমে যায় ।
তাহু তাকিয়ে শুধু দেখতে থাকে কি করছে তানভি।
খাট থেকে নেমে ঘুরে গিয়ে তাহুকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরে।
জরিয়ে ধরায় তাহু একটু কেঁপে উঠে ।
কেঁপে উঠাটা অনুভব করতে পারে বাঁকা হেসে উঠে তানভি। তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠে ভয় পেয়ো না জান আমি তোমার হাসবেন্ড।
কথাটা শুনে যেন সারা শরীরে গরম ভাব ছুটতে থাকে। কি অসভ্য লোকটা ।
আবার বলে উঠে আমি কিন্তু মোটেও ভালো না বউয়ের সাথে সব ধরনের অসভ্যতা করতে পারি । সময় হলে সব দেখাবো । আপাদত এখন ঘোমাও।
চলবে………….