আমার প্রিয় তুমি পর্ব-৬

0
1848

#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-৬

১১.

স্কুলের মাঠে বিশালাকার পেন্ডেল তৈরি করা হয়েছে অনুষ্ঠানের জন্য। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ।
সবার ড্রেসের রং এক বলে দেখে মনে হচ্ছে সাদা রঙের ফুলের বাগান ।
আমরা তিন বান্ধবী অটো থেকে নামলাম স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে । ও মা! মনে হচ্ছে আমরাই লেট সবাই দেখি চলে আসছে ।
দেখ তাহু আমরা অনেক লেট করে ফেলছি অনুষ্ঠান মনে হয় শুরু হয়ে গেছে ।
হুম তাই তো মনে হচ্ছে চল তাড়াতাড়ি স্টেজে যাই।
মোটামুটি সবাই চলে আসছে । দেখি আমার বাবাকেও আমন্ত্রণ করা হয়েছে সে স্টেজে বসে আছে ,তার পাশে হাওলাদার সাহেব এবং তার নাতি ।তারা তিন জন কি নিয়ে জেনো কথা বলছেন।
অনুষ্ঠান এখনো শুরু হয়নি। তাই তাড়াতাড়ি গিয়ে আমরাও আমাদের আসন গ্ৰহন করলাম । তারপর চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে লাগলাম ।
হঠাৎ মেহু বললো দেখ স্টেজে তোর বাবার সাথে কালকের ঐ সুন্দর ছেলেটা না । ইশ কি সুন্দর আমি তো ফিদা ইয়ার।তাকিয়ে দেখি তানভি লোকটা বাবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
বাহ্ ভালোই তো হাসতে পারে লোকটা , কাল দেখে তো মনেই হয় নাই। আসলেই দেখতে সব দিক দিয়ে পার্ফেক্ট। হুহ তাতে আমার কি? আমি আবার সব দিক দেখতে মনোযোগ দিলাম।

তানভি কথা বলতে বলতে সামনে বসা ছাত্রছাত্রী দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয় কিন্তু পরক্ষনেই আবার ফিরে তাকায় তিন নং সারির একদম কোনায় বসা এক সাদা পরীর দিকে। হঠাৎই মনে হলো তার হার্টবিট মিস হলো।
কালও তো দেখেছিলো মেয়েটাকে কই কাল তো এমন লাগেনি। কেমন পিচ্চি পিচ্চি লাগছিলো কালকে মেয়েটাকে । এক দিনে কি এমন হলো যে বড় বড় লাগছে পিচ্ছিটাকে।
চোখ বুজে লম্বা একটা শ্বাস নিলো তানভি। নাহ তার পরও ভালো লাগছে না । মন চাচ্ছে ছুটে গিয়ে জরিয়ে ধরতে পিচ্ছিটাকে । একে তো চাই ইইই চাই তানভিরের তাও পবিত্র ভাবে। মনে মনে ভাবতে লাগলো তানভি।
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সে এতখন যাকে দেখে মুগ্ধ হচ্ছিল আরো বেশ কিছু চোখ মুগ্ধ হচ্ছে সেই একই কারনে । দেখতেই চোয়াল শক্ত হয়ে আসে তানভিরের।
মাএই সে বুঝতে পারলো তার মনের সুপ্ত প্রেমের কথা আর সাথে সাথেই প্রেমে কাটা এসে গেলো । নাহ এটা তো কখনোই মানা যাবে না । তাই তার সাদা পরীর দিকে তাকায় কিন্তু মেয়েটার এইসবে কোন খেয়ালই নেই।
Ohh shit….আমি তো ওর নামই জানি না ,এতো বড় ভুল কি করে হলো। নাহ ওর কল-কব্জা সম্পর্কে সব জানতে হবে। এইসব আকাশ-পাতাল চিন্তা করতে করতে তাকিয়ে রইলো তার হঠাৎ হওয়া প্রেমের দিকে।

১২.

তাহরিমা স্কুলের একটা খালি রুমে বসে কান্না করছে আর তার সামনে লোভাতুর দৃষ্টিতে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে চেয়ারম্যানের ছেলে রাকিব।
এতোক্ষণ শক্তই ছিলো তাহরিমা কিন্তু যখন রাকিব বললো তুমি যদি আমার প্রস্তাবে রাজি না হও তাহলে বাসর রাত আমি এখনই সেরে ফেলবো।
আর তাই একলা রুমে ভয় পেয়ে গেলো‌ তাহরিমা ।
সে যদি চেঁচায়ও কেউ সুনতেও পারবে না কারন স্কুলের এই দিকটায় এখন কেউ নাই তারমধ্যে মাইকের শব্দ কেউ এখন বুঝতেও পারবে না এখানে কি হইতেছে।
এই সব দিক চিন্তা করেই তাহরিমা ভয় পেয়ে যায়।

এতো কান্না কি আছে আমি তো এখনো কিছুই করলাম না সুন্দরী । যখন করবো তখন কি করবা । তাই বলতেছি বিয়েতে রাজি হয়ে যাও তাহলে বিয়ের পরেরটা বিয়ের পরেই করবো। বলেই নোংরা একটা হাসি দিল।

অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে শিলা আর মেহু তাহরিমার জন্য।সেই কখন গেছে তাহু ওয়াসরুমে আসার কোনো নাম-গন্ধ নেই। ত্রিশ মিনিট পার হবার পর শিলা আর মেহু খুঁজতে বের হলো তাহরিমাকে। ওয়াসরুমে এবং তার আসেপাশে সব যায়গায় খুঁজলো কিন্তু পেলো না । তাই বাধ্য হয়ে স্কুলের প্রতিটা রুম খোজতে লাগলো । খোঁজতে খোঁজতে অডিটরিয়মে চলে আসে কিন্তু না সেখানেও নাই ।যেই না চলে আসবে কারো কান্নার শব্দ পেয়ে থেমে যায়। দু’জন দু’জনের দিকে তাকায় বিস্ময়ের সাথে এবং দ্রুত এগিয়ে যায় অডিটরিয়ামে পাশে ছোট্ট রুমের দিকে। কাছে গিয়ে দেখে রাকিবের চেলারা রুমের বাইরে দাঁড়ানো ।দেখে বুঝার আর বাকি রইলো না ভিতরে কি হইতেছে।তাই শিলা মেহুকে বললো তুই এখানে দাঁড়া যদি বেশি খারাপ দেখিস তাহলে ভিতরে ঢুকে যাবি আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে তাহরিমার বাবাকে ডেকে নিয়ে আসি।
কথাটা বলেই ছুটে গেলো মাঠের দিকে।

চলবে……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here