#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-৯
১৭.
তাহু ,শিলা আর মেহু তাদের তিন জনের ফোকাস এখন সামনের টেবিলে রাখা ছোট বক্স টাতে ।
বিকেলে তানভির ওখান থেকে ফিরে এসে সাথে সাথে শিলা আর মেহুকে আসতে বলে।
আসার পর থেকে সেই যে বক্স টার দিকে তাকিয়ে আছে মনে হয় যেনো চোখ সরালেই বক্সের ভিতর থেকে কোনো মূল্যবান সম্পদ বের হয়ে যাবে।
কিছু প্রহর বাদে মেহু বিরক্ত হয়ে বললো দূর বাল আর কত অপেক্ষা করাবি , তোরা যদি না দেখস আমাকে দেখতে দে ভিতরে কি আছে । আর তাকিয়ে থাকতে মজা লাগতাছে না।
হুম মেহু ঠিক কথা বলছে । তাহু খুলতো কি আছে দেখি। না খুললে বুঝবো কি করে ভিতরে কি আছে।আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ভাইয়া তকে পছন্দ করে।
ঐ তদের আজব মার্কা কথা বন্ধ করবি।ঐ গুমরামুখো আমাকে কেন পছন্দ করতে যাবে শুধু শুধু। আর ওনি সব সময় ঢাকা থেকেছে তারমধ্যে বিদেশ ফিরত তাহলে আমার মতো গ্ৰামের মেয়েকে কেন পছন্দ করতে যাবে। তাছাড়া তোদের কি মনে হয় ওনি এতো দিন এমনে এমনে থেকেছে কোনো জিএফ ছিলো না ।দেখ গিয়ে ডজনে ডজনে প্রেমিকা আছে ওনার। তাই এইসব আজাইরা কথা বলা বন্ধ কর।
আচ্ছা যা তোর কথাই মানলাম কিন্তু এখন তো বক্সটা খুলে দেখ কি আছে । আর কত দেরী করবি।
আমি খুলবো না এই মেহু তুই খুল। মেহু মনে হয় এই কথাটারই অপেক্ষা করতেছিলো ওর বলতে দেরি রঙ্গিন কাগজে মুড়ানো বক্সটা নিতে দেরি হলো না।
বক্সটা খুলার পরই দেখলো গোল্ড কালারের একটা নুপুর । সাদা রঙের পাথরে কাজ করা নুপুটা এক কথায় অসাধারণ । সাথে বের হলো একটা চিরকুট।
শিলা বললো দেখছিস আমি বলছিলাম না তানভি ভাইয়া তোকে লাইক করে । এখন চিঠিটা পর দেখি কি লিখছে।
“সাদা পরির পা খালি ছিলো । সেটা দেখতে মোটেও ভালো লাগেনি ।
খুব যতনে দিয়েছি ভালোবেসে কাছে রেখো।
আরেকটি আমার কাছে যখন পূর্ণ অধিকারে আসবো নিজে পড়িয়ে দিব।
অপেক্ষায় আছি নুপুর পড়া পা দেখার।”
চিঠিটা পড়ে তিন জনেই পাথর হয়ে বসে আছি ।কি ছিলো এটা ইনডাইরেকলি প্রপোজ বলবো নাকি ডাইরেকলি প্রপোজ বুঝতেছি না।
শিলা চিৎকার করে বলে উঠলো দেখলি আমার কথা মিললো তো বলছিলাম না ভাইয়া তোকে পছন্দ করে।
ওয়াও তাহু আমাদের দুলাভাই নাকি দ্যা গ্ৰেট তাজরিয়ান হাওলাদার তানভি।
মেহু বললো আমাকে কেউ চিমটি কাট আমি শপ্ন দেখছি না তো। আমাদের তাহু আর তানভি ভাইয়া ওহ মাই আল্লাহ । তুই সুন্দরী আর ভাইয়া সুন্দর তাদের বাচ্চা হবে সুপার সুন্দর।
তাহুর মনে এখন অন্য রকম অনুভুতি অনুভব হচ্ছে তার মধ্যে মেহুর এমন আগাম কথায় ওর মনে হচ্ছে জ্ঞান হারাবে।
১৮.
তাহরিমার বাবা জনাব নাসিম উদ্দিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরছেন । বাসা থেকে মাএ বিশ মিনিটের পায়ে হাঁটার রাস্তা । অবশ্য অটো বা রিকশায়ও আসা যায় কিন্তু ওনি বেশিরভাগ সময় পায়ে হেঁটে আসেন । তার ধারনা গ্ৰামের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার মোক্ষম সুযোগ হলো পায়ে হেঁটে চারপাশ দেখা যানবাহনে এই সুযোগটা কখনো পাওয়া যায় না । তাছাড়া প্রতিদিন নিয়ম মাফিক সকাল বিকাল হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই প্রতিদিনের মতো আজও সে পায়ে হেঁটে বাসায় আসছে।আর যার সাথে দেখা হচ্ছে তার সাথে কুশল বিনিময় করছেন।
স্কুল থেকে দশ মিনিটের রাস্তা পার কারার পর দেখা হলো চেয়ারম্যানের সাথে। নাসিম উদ্দিন তার স্বভাব অনুযায়ী চেয়ারম্যানের সাথে কুশল বিনিময় করলেন।
চেয়ারম্যান মানুষটা যে বেশি সুবিধার না সেটা গ্ৰামের কম-বেশি সব মানুষই জানে।সে হিসেবে তাহুর বাবার তার সম্পর্কে অবগত। বিশেষ করে তার ছেলে রাকিবের চরিত্র সম্পর্কে গ্ৰামের বড় থেকে ছোট সবাই জানে।
তাই সবাই তার সামনাসামনি ভালো বল্লেও পিঠপিছে চেয়ারম্যানকে খারাপ বলে অনেকে তো গালি দিতেও দ্বিতীয়বার ভাবে না।
নাসিম উদ্দিন চেয়ারম্যানকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছেন।
চেয়ারম্যান তার স্বভাব অনুযায়ী খেক খেক করে হেসে সালামের উওর নিলেন। ভালো আছি তা আপনে কেমন আছেন আপনার বাড়ির সবাই কেমন আছে?
জি আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালোই আছি।
তা মিঞা তোমার মেয়ে যেন কিসের পড়ে?
জি আপনাদের দোয়ায় এবার নবম শ্রেনীতে পড়ে।
মেয়ে তো বড়ই হয়ে গেছে। তা মেয়ের বিয়া সাদি দিবা না ।
এই সব নিয়ে এখনো ভাবি নাই । আমার মেয়ে বড় হলেও এখনো বিয়ের বয়স হয় নাই । মেয়ে আমার আরো পড়াশুনা করবে।
মেয়েগো এত পড়াশুনার কি দরকার আছে।ওরা কি চাকরি করবো নাকি ।
আমার পোলারে বিয়ে করামো।আমার পোলা কিন্তু কোনো দিক দিয়া খারাপ না। আল্লায় দিলে আমারও কম দেয় নাই।সারা জিবন বইয়া বইয়া খাইতে পারবো। আমার পোলা তোমার মাইয়ারে পছন্দ করছে। তোমার মাইয়ার কপাল খুইলা যাইবো এই বিয়া হইলে। কি বলো?
চলবে…………..