#আমার রাজ্যের রানী
#Part : 27
#Writer : Sriti Nur Avni
🍁
বিয়ে,,
বিয়ে মানেই একগুচ্ছ ভালোবাসা।বিয়ে মানেই হাসাহাসি দৌঁড়াদৌঁড়ি,,লাফালাফি সাথে সবাই মিলে নীর্ঘুম রাত কাটানো। বিয়ের আগের রাতে ঘুমানো চলে?নাহ!একদম নাহ।এটা অন্যায়,, একদম ঘোর অন্যায়ের দলে পরে যায়।
রাত ১ টা,,,
সূক্ষ্ণ হাতে কাজ করা বড় চট টা বিছিয়ে ছাঁদের মাঝখানে বসে আছে একদল তরুন তরুনি।চারদিকে নানান রকম আলোর সাথে আকাশে মস্ত বড় চাঁদের জোৎস্না ছরিয়ে সুন্দর এক আলোরন ফুটিয়ে তুলেছে।
দোলনায় পা ঝুলিয়ে বসে একমনে মোবাইল টিপছে নীল।
ভ্রু কুঁচকে নীলের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো মাইশা,,,
—দেবরজি তুমি ওখানে কি করছো এখানে এসে বসো।আমরা এখন গেম খেলবো।
—খেলো না ভাবিপু,,আমি এখানে বসেই খেলি।
—নাহহ আমরা এখন Truth or dare খেলবো।তাই তুমি এখানে এসে বসো।
নীল আড়মোড়া ভেঙে উঠে এলো।নিতু নিজের জায়গার পাশে নীলের বসার জন্য জায়গা করে দিলেও নীল না দেখার ভান করে অভনীর পাশে বসে পরলো।নীলের এভোয়েড নিতুর রাগ কে দ্বিগুন বাড়িয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।
কোকাকোলার বোতল টা নিয়ে মাইশা ঘুরাতেই প্রথমে গিয়ে পরলো নীরবের দিকে আর প্রশ্ন করবে অভনী।
—ভাইয়া Truth or dare?
—নাহ মানে আমি তো ভয় একটু কম ই পাই তাই সত্য বলতে ভয় পাইনা। Truth.
—মাইশা আপু কে অন্য কারো সাথে প্রেম করেছেন ভাইয়া।
অসহায় মুখ করে বলে উঠলো নীরব,,,,
—এটা কোন ধরনের প্রশ্ন বোন।আমার বোন হয়ে আমার সংসার ভাঙার প্রস্তুতি নিলে?প্রশ্ন টা চেঞ্জ করনা।
—নাহ ভাইয়া,,,, একদম প্রশ্ন চেঞ্জ হবে না।তুই ই তো বললি ভয় পাস না।এবার বল বল (নীল)
নীরব মাইশার দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে বলে উঠলো,,,
—মাএ দুই থেকে তিনটা।
—কিহহহ?তুই আমারে ছাড়া আরো দুই থেকে তিনটা প্রেম করছোস তাও আবার বলছিস মাএ?দাঁড়া তোরে কালকে রাতে দেখামু মজা।
নীরব অসহায় মুখ করে মাইশার দিকে তাকিয়ে আছে।এতোক্ষনে ছাঁদ কাঁপিয়ে হাসির রুল পরে গেছে সবার।হাসতে হাসতে বলে উঠলো নীল,,,
—ভাইয়া রে তোকে কালকে রাতে ভাবিপু বোঝাবে মজা,,,এমন না হয় সারারাত কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় 🤣
—হয়েছে হয়েছে আর দাঁত কেলাতে হবেনা।দেইখো তোমার বউ তোমারে সারারাত কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবে।
মাইশা আবারো বোতল ঘুরালে এবার নীলের দিকে পরলো।আর প্রশ্ন করবে মাইশা।
—-কি দেবরজি?এবার বলো Truth or dare?
—Truth.
—তোমার লাইফে তোমার ভালোবাসার মানুষ টা এসেছে?আসলে কে সে?কেনো ভালোবেসেছো তাকে?
অভনী একটু নড়েচড়ে বসলো।এই মূহুর্তে নীলের কথা গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে শোনার ইচ্ছে তার।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো নীল,,,,
—হ্যাঁ এসেছে।
—ওহহ তাই নাকি?তা কে সে?গাইস ডু ইউ ওয়ান্ট টু লিসেন? (মাইশা)
—ইয়েস,,,(সবাই)
অভনীর আর শুনতে ইচ্ছে করছে না।নীলের মুখে অন্য কাউকে ভালোবাসে শুনতে কেমন যেনো হিংসে হচ্ছে তার।হয়তো এই মূহুর্তে অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা খুব সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণ করবে সে।ভাবতেই চোখের কোনে জমাট বাঁধলো অভিমানের নোনাপানি,,,,চোখ জোরা বন্ধ করে বলে উঠলো নীল,,,,
—আমি তাকে অকারনেই ভালোবাসি।আমাকে যদি জিগ্যেস করা হয় হুয়াই আই লাভ হার?তাহলে বলবো কোনো রিজন নেই।অজানা কোনো কারনে ভালোবেসে ফেলেছি তাকে।হয়তো এমন অজানা কারনেই অন্য কাউকে ভালোবাসে সে।ওর সাথে কথা বলতে না পারলে দম বন্ধ হয়ে আসে আমার,,হয়তো ওয় ও অন্য কারো সাথে কথা বলতে না পারলে দম বন্ধ হয়ে আসে।ওর একটু ছোঁয়ায় শরীরে শিহরন জাগায় আমার কিন্তু ওর হয়তো না!অদ্ভুত এক ভালোবাসা আমার।তবুও দিনশেষে ওর দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে থাকার জন্য মরে যেতে ইচ্ছে করে।কিন্তু সে বুঝে না,,,বড্ড অবুঝ সে।তবুও এই অবুঝ মেয়েটি কেই চাই আমার।দিনশেষে অবুঝ মেয়েটিকেই বুকে চেপে রেখে বলতে চাই,,,”ভালোবাসি,,ভালোবাসি,,ভালোবাসি।
সবার হাত তালির শব্দে ঘোর কাটলো অভনীর।মানুষটা এতোটা ভালোবাসে কাউকে?এতোটা?
পাশ থেকে উওেজিত কন্ঠে বলে উঠলো আরিহা,,
—ভাইয়া ওয়ান সাইডেড লাভ?
—মে বি (মুচকি হেসে)
🍁
সকালে আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে নীলের রুমে আবিষ্কার করলো অভনী।ঘুমু ঘুমু চোখে চারপাশে চোখ ভুলাচ্ছে সে।ও তো এখানে ছিলো না,,,ছাদে গল্প করতে করতেই তো সবাই একসাথে ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। তাহলে এখনে আসলো কিভাবে? বিছানা থেকে উঠতে নিলেই তার নজর গেলো হাতের দিকে।দুহাত মেহেদীর রঙে রাঙিয়ে আছে,,,কোনো মেহেদী আর্টিস্ট যে দিয়ে দেয়নি তা মেহেদীর আঁকাবাকা রাস্তা দেখলেই বুঝা যাচ্ছে।তবে দেখতে খারাপ লাগছে না।পা জোরা নিচে ঝুলিয়ে রেখে হাত দুটো সামনে এনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হাতের শুকিয়ে থাকা মেহেদীর দিকে।ও তো মেহেদী দেয়নি,,তাহলে?
ঘুমু ঘুমু চোখ নিয়ে উঠে দাঁড়ালো অভনী।তখনি দরজায় হেলান দিয়ে বলে উঠলো নীল,,,,
—তা মেডামের ঘুম ভেঙেছে এতোক্ষনে?ঘরি তে তাকিয়ে দেখুন কয়টা বাজে।
—ও আসলে রাতে অনেক রাতে ঘুমিয়েছি তো তাই খেয়াল ছিলো না।সরি সরি সরি আমি আপনার রুমে আসতে চাইনি,,কিন্তু আমাকে এখানে আনলো কে?আর হাতে মেহেদী ই বা লাগিয়ে দিলো কে?
হাতে থাকা ব্লাক কফি টাতে চুমুক দিয়ে ভিতরে ডুকতে ডুকতে বলে উঠলো নীল,,,
—আমি নিয়ে এসেছি।
—হুয়াট।(চোখ দুটো বড় বড় করে)
—এতে এতো অবাক হবার কি আছে?
—না মা..নে কি..ভাবে এনেছেন?
—কেনো কোলে করে (ভাবলেশহীন ভাবে)।
—এ্যাহহহহ😱।
—any Doubt? ওখানে অনেকে একসাথে ঘুমিয়েছে।কয়েকজন ছেলেও ছিলো সো ওখানে তো আপনাকে রেখে দিয়ে চলে আসতে পারিনা।তবে ভয় পাবেন না আমি কিন্তু ড্রইং রুমের সোফায় ঘুমিয়েছি,,,আচ্ছা ওরনা সড়ান।(সামনে এগিয়ে আসতে আসতে)
ওরনা টাকে আরো শক্ত করে গায়ে চেপে ধরে চিল্লিয়ে বলে উঠলো অভনী,,,
—কেনো?
—আরেহ মাথা থেকে সরাতে বলছি।গাঁ থেকে নয় (ডেবিল হেসে)
—কে…নো?(ভয় পেয়ে)
—সরাবেন নাকি আমি নিজে সরিয়ে নিবো? (ধমকের সুরে)
অভনী সাথে সাথে মাথা থেকে উরনা টা সরিয়ে দিলো,,,পেছন থেকে হাত টা বের করে মাথা থেকে পুরো শরীরে আবিরে রঙে রাঙিয়ে দিলো অভনীকে নীল।হাতে থাকা অবশিষ্ট আবির গুলো আলতো ভাবে লাগিয়ে দিলো অভনীর গালে।অভনী ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে নীলের দিকে।এই মূহুর্তে কোনো সার্কাসের জোকারের মতো হয়তো করে দিয়েছে ছেলেটা ওকে।
কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো নীল,,,
—ঘুমু ঘুমু চোখে চুল গুলো এলোমেলো রেখে কারো সামনে যাবেন না প্লিজ।কেউ একজন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে সারাজীবন ভালোবাসার জেলে আটকা পরে থাকতে হবে।চাইলেও বের হওয়া যাবে না।
অভনীর চোখ গুলো আরো বড় বড় হয়ে গেলো।কি বলে এই ছেলেটা?ইদানিং এমন কাছে কাছে থাকছে কেনো?নীল কফির মখ টা নিয়ে আরেক হাত টাউজারের পকেটে ডুকিয়ে হেলেদুলে চলে গেলো বাহিরে।
নিজেকে কোনো রকমে ঠিক করে নিজেদের রুমে চলে গেলো সে।খাটের উপর বড় একটা শপিং ব্যাগ দেখে অবাক হয়ে তাকালো।আজকেও কি সবাই কে একরকমের ড্রেস দিয়েছে নাকি পড়ার জন্য?
খাটে শপিং ব্যাগে মোড়ানো লেহেঙ্গা টা খুলে ধরলো অভনী।এটাতো সেদিনের ট্রায়াল করে পড়া লেহেঙ্গা টা।এখানে কিভাবে?এটাতো মাইশা আপু তার কোনো এক বোনের জন্য পছন্দ করেছিলো।মনে হয় ভুলে এখানে আছে।ভাবতেই লেহেঙ্গা টা ব্যাগে মুড়াতে গেলে চোখে পড়ে ছোট্ট একটা চিরকুট। লেহেঙ্গা টা খাটে রেখে চিরকুটের ভাজ টা খুলে ধরলো সে,,,
“”‘সেদিন মনে হয়েছিলো ব্লু রঙের এই লেহেঙ্গা টা যেনো শুধু আপনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে।নিপুন হাতে কাজ করা সেই লেহেঙ্গা টা কি নিপুন ভাবেই না সাজিয়ে তুলেছিলো আপনাকে।আজকে এই লেহেঙ্গা আর সাথে দেয়া অরনামেন্টস গুলোই পরবেন।যদি কথা নড়চড় হয় তো হাত পা ভেঙে বাসায় বসিয়ে রাখবো,, মাইন্ড ইট মিস. অভনী “”
চিঠিটা পড়েই দুম করে খাটের উপর বসে পড়লো অভনী।মাইশা আপু তো আপনি আপনি করে বলে না।তাছাড়া এমন ভাবে মারার হুমকিও দিবে না।তাহলে?কে দিয়েছে?হিরো সাহেব?হ্যাঁ উনিই তো আমায় মিস. অভনী বলে ডাকে।হুহ অন্য একটা মেয়েকে ভালোবেসে দেবদাস হয়ে এখন কি আমাকে মায়া দেখাচ্ছে?কিন্তু ওনি অন্য কাউকে ভালোবাসলে আমার কি?আমার কেনো এতো জ্বলে? তাহলে কি আমি,,,,না না তা হতে পারেনা।অভনী কুল কুল,,তোর সাথে একদম মানায় না।
খাট থেকে নেমে বারান্দায় গেলো অভনী।বাহিরে হৈ হুল্লোড়ে ভরপুর।সবাই আবির নিয়ে সবাইকে রাঙিয়ে দিচ্ছে। আরিহাও মেতে উঠেছে সেই খেলায়।নীর্ঝয় কে দেখে বুঝার উপায়ই নেই তার মনে কতো কষ্ট,,, এক হাতে ক্যামেরা নিয়ে মেতে উঠেছে নীল ও।কি খুশি আজ সবাই!ছোট মা ছোট আব্বুর সাথে মেতে উঠেছে আজ মা শাহেরা বেগম ও।বুড়ো নানী দাদী রাও কেউ বাদ যায়নি,,,সবার পুরোশরীরে আবিরের রঙে রাঙানো।কি অদ্ভুত সবাই!নীলের দাদী আর নানীও অভনীর নানী কে কেমন আপন করে নিয়েছে।ওদের দেখে মনে হচ্ছে কত জন্মের বান্ধবী যেনো ওরা।দুষ্টমি করে একজন আরেকজনের গাঁ রাঙিয়ে দিচ্ছে আজ। রায়হান সাহেব ও থেমে নেই,,, নাতি নাতনী দের সাথে রঙ খেলতে খেলতে বুড়ো বয়স টাকে মনে হচ্ছে যৌবনের পদার্পন সেই সময় গুলো।অভনী আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না।মনটা কেমন ফুঁরফুরে লাগছে।দৌঁড়েশুরু করলো নিচের উদ্দেশ্য।
🍁
নীল রঙের লেহেঙ্গা পরে চুল গুলো খোলা রেখেছে অভনী।কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে হবে নীরব আর মাইশার।সবাই যখন কমিউনিটি সেন্টারের উদ্দেশ্যে বের হবে।ঠিক তখনি পুলিশের গাড়ি করে এগিয়প আসলো দুজন পুলিশ।সবাই অবাক হলেও নীল অবাক হয়নি।নীলের সাথে থাকা রাতুল,সাব্বির আরো কয়েকজন হালকা ভয় ভয় পাচ্ছে।কিন্তু এতে নীলের কোনো ভাবান্তর নেই।পুলিশ দুটো এগিয়ে এসে নীহাল আহম্মেদ আর নীল কে সালাম দিলেন।আশ্চর্য সূচক ভাবে তাকিয়ে মুখে হালকা হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলে উঠলো নীহাল আহম্মেদ,,,,,
—আরে ওসি মো: সাত্তার সাহেব যে?হঠাৎ কি মনে করে?
—আসলে আমি নীল স্যারের সাথে মি. শাফিন ইকবাল খানের মৃত্যুর বিষয়ে কথা বলতে আসছি।
“মৃত্যু ” এই শব্দ টাই সবার মাথায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।নীল খুন করলো শাফিন কে?কিন্তু কেনো?শাফিন ইকবাল খান নাম টা বড্ড চেনাচেনা লাগছে অভনীর কাছে। পরমূহুত্যেই মনে পরে গেলো পরশু রাতের কথা।মানুষ টা ওর লাইফ থেকে দূরে চলে যাক এটা চাইলেও লোকটার মৃত্যু চায়নি সে।সত্যিই কি ওই শাফিন ই মারা গেছে?কিন্তু তার জন্য নীলের সাথে কথা কেনো?তাহলে কি নীল……না আর ভাবতে পারছে না অভনী চোখ দুটো ভরে আসছে তার।একজন মানুষ হিসেবে আরেকজন মানুষের মৃত্যুর খবরে হয়তো এমনি লাগে হোক না সে খারাপ মানুষ। অবাকের চরম পর্যায় কাটিয়ে বলে উঠলো নীহাল,,,,,
—কিন্তু নীলের সাথে কেনো?ও কি কিছু জানে?
পাশ থেকে স্বাভাবিক সূরে বলে উঠলো নীল,,,
—বাবা হি ইজ বিগ ড্রাগ বিজনেসম্যান।আর তা সম্পর্কেই আমি কিছু জানি তাই এসেছেন ওনারা।তোমরা যাও আমি এদিক দিয়ে থানা হয়ে চল যাবো।তবে মি. ওসি বিয়ে বাড়িতে এসে কাজ টা ঠিক করেন নি।
—সরি স্যার।
—বাবা তোমরা যাও আমি আসছি।তোমার ছেলে দেশের ভালোর জন্য সবই করতে পারে জানোই তো।
নীহাল আহম্মেদ মুচকি হেসে বলে উঠলো,,,
—ইয়াহ মাই সান।আই নো।যাও।
পাশ থেকে গাড়ো খয়েরী রঙের শেরওয়ানী পরে থাকা নীরব বলে উঠলো,,,,
—ভাইরে আমার বিয়ে টাকে তুই পুরো সিনেমাটিক করে মনে রাখিয়ে দিলি,,,প্রথম দিন ঠাস ঠাস থাপ্পড়,, দ্বিতীয় দিন গায়েব আর আজ সোজা পুলিশ বাড়িতে।আহা কি বিয়ে আমার!
নীল মুচকি হেসে আর চোখে অভনীর দিকে একবার তাকিয়ে রাহুল কে নিয়ে হাঁটা ধরলো নিজের গাড়ির উদ্দেশ্যে।
পুলিশ অফিসার রাও তার পিছু পিছু চলে যেতে লাগলো।
🍁
স্যার আপনি মেরেছেন শাফিন কে?
পুলিশ অফিসার মোঃ সাত্তার সাহেবের কথা মুচকি হেসে বলে উঠলো নীল,,,
—হাম।
নীলের এমন সোজা সাপ্টা শিকার করা টা ঠিক হজম হলো না সাত্তার সাহেবের।তবে নীলের ধারা এসব সম্ভব তা খুব ভালো ভাবেই জানেন ওনি।হালকা নড়েচড়ে বলো উঠলেন ওনি,,,,
—কিন্তু কেনো স্যার?
নীল আরেকটু সামনে গিয়ে অফিসারে দিকে মাথা টা ঝুকিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,,,,
—আমার কলিজার দিকে হাত বাড়িয়েছে।
—মা…নে?
—-খুব সহজ সাত্তার সাহেব। মি.শাফিন ইকবাল খান আমার ভালোবাসার দিকে হাত বাড়িয়েছে।আমার ভালোবাসার মানুষ টাকে যন্ত্রণা দিয়ে পা কেটেছে।আমাকে এক্সিডেন্ট করে হসপিটালে ভর্তি করিয়ে আমার জান পাখির চোখে পানি এনেছে।আবার আমার বাসায় গিয়েও আমার ভালোবাসার দিকে হাত দিঁয়েছে।তবে আমার জান পাখি ওকে ঠাটিয়ে চড় বসিয়ে দিয়েছিলো যা আমি আজকে রাতুলের কাছে জানলাম।শুনুন সাত্তার সাহেব ও চেয়েছিলো আমার ভালোবাসা কে আমার থেকে আলাদা করতে তাই আমি নিজে তার দেহ থেকে প্রান টা আলাদা করে দিলাম।আমি খুব আগেই সবকিছু জানতাম কারন ওকে খুঁজে বের করা আমার জন্য তেমন কোনো কাজই নয়।শুধু ওর ড্রাগ ব্যাবসায়ের জাল টা বের করতে সময় লেগেছে।ও লেখাপড়ার পাশাপাশি ড্রাগ ব্যাবসা করলো।এতো ছোট মাপের খেলোয়ার হয়ে আমার সাথে খেলতে এসে বড্ড ভুল করে ফেলেছে ।
নীল আরাম করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে পরলো।সাত্তার সাহেব উত্তেজিত সুরে বলে উঠলো,,,
—কিন্তু আপনি তো গোপনেই ওনাকে মারতে পারতেন।তাহলে এভাবে কেনো?
—কেনো এভাবে মারাতে আপনার কোনো সমস্যা?টাকা পাবেন এটাতো আরো খুশির খবর আপনাদের জন্য।
—না মা…নে।
—আপনাদের কাজই তো এসব সাত্তার সাহেব।আমি চাইলেই পারতাম মেরে লাশ টা কে গুম করে দিতে কিন্তু শাফিন খান ভুল করলেও ওনার বাবা মা তো করেনি তাই শেষবারের মতো ওনাদের দেখার সুযোগ করে দিলাম।তাছাড়া সবাই দেখুক ডার্গ এর ব্যাবসায়িদের কতো কঠিন মৃত্যু হয়।যা শাফিন কে দেখতে পেলেই বুঝতে পারবে ওরা।তবে হ্যাঁ আমার পারিবারিক বিষয়,,ভালোবাসার মানুষ টার কথা যেনো কেউ জানতে না পারে তাহলে হয়তো আপনারো শাফিনের মতোই অবস্থা হবে।
নীল উঠে ব্লু রঙের ব্লেজার টা এক হাতে নিয়ে আরেক হাতে সানগ্লাস পরতে পরতে বের হয়ে যেতে লাগলো থানা থেকে।তার পিছনে থাকা রাতুল টাকা বের করে ওসির টেবিলে রেখে হাঁটা ধরলো নীলের পিছন পিছন।
চলবে,,,,,
(শাফিন কে মেরে দিলাম সবাই হ্যাপি তো?🙄)