আমার_গল্পে_তুমি ২১_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
,
কি হচ্ছে কি ইয়ানা আমি কিন্তু এভাবে তোমার পিছু পিছু যেতে পারবো না আর দেখতে পাচ্ছো না বৃষ্টি হচ্ছে দ্রুত গিয়ে গাড়িতে বসো।
আমি কি আপনাকে বলেছি যে আমার পিছনে আসুন আপনি যায়না কেনো এসেছেন?? আমি একাই যেতে পারবো আমার কাউকে প্রয়োজন নেই।
ওহ রিয়েলি?? নিজের দিকে একবার তাকিয়ে দেখেছো বৃষ্টি তে ভিজে শাড়ির কি অবস্থা,, এই অবস্থায় তুমি বাড়ি যাবে?? মানুষকে শরীল দেখাতে ভালো লাগে??
ওনার কথা শুনে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি সত্যি শাড়ি ভিজে একদম গায়ের সাথে লেপ্টে গেছে আমি শাড়িটা আরো ভালো করে নিজের গায়ে পেঁচিয়ে নিলাম তবুও ওনার গাড়িতে যাবো না।
কি হলো এভাবে হা করে দাঁড়িতে আছো কেনো?? যাও গিয়ে গাড়িতে বসো, তোমার জন্য আমি ভিজে যাচ্ছি ,।
আমি কি আপনাকে ভিজতে বলেছি?? কেনো এসেছেন ,, আপনাকে বারবার আমার ড্রাইভার হওয়া লাগবে না আপনি যেতে পারেন,, আমি যখন একা আসতে পেরেছি তো একা যেতেও পারবো।
সত্যি ভালো কথা শোনার মেয়ে তুমি নও ,, সব সময় শুধু বকবক করতে জানো,, কথাটা বলে আর্দ্র ইয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করল, কেননা কথা বলতে বলতে ইয়ানা আর আর্দ্র গাড়ির থেকে প্রায় অনেক দূর চলে এসেছে।
এটা কি ধরনের ব্যবহার মিস্টার আর্দ্র, ছাড়ুন আমায়, নামিয়ে দিন,, আপনি না ভদ্র ঘরের ছেলে তাহলে এটা কেমন ব্যবহার মাঝ রাস্তায় বলা নেই কওয়া নেই এভাবে একটা মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন, আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
আর একটা কথা বললে কিন্তু রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যাবো তখন দেখবো কি করো।
দিন তো ফেলে দেখি কতবড় সাহস, কী ভেবেছেন আপনার এই ধমকানিতে আমি ভয় পেয়ে চুপ করে যাবো?? মোটেও না আপনি যতই আমায় ধমকান না কেনো আমি চুপ করবো না আআআআআআ এটা কি করলেন??
বলেছিলাম না বেশি বকবক করলে ফেলে দেবো তো সেটাই করলাম এখন যলদি করে গাড়িতে বসো নয়ত তোমাকে রেখেই চলে যাবো, আর রাত কিন্তু প্রায় এগারোটার বেশি বাজে যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে সেহেতু রাস্তায় তেমন কেউ নেই এখন দ্যাখো তুমি কি করবে নিজের ইগো দেখিয়ে এভাবে রাস্তায় বসে থাকবে নাকি গাড়িতে গিয়ে বসবে,আর হ্যাঁ, আমি গাড়িতে ওয়েট করছি যলদি এসো বেশি দেরি করলে কিন্তু তোমায় রেখেই চলে যাবো।
কি খরাপ লোক এভাবে কেউ রাস্তার উপর ফেলে দেয় আহ আমার কমরটা মনে হয় ভেঙেই গেছে যাবো না ওনার সাথে,, কিন্তু ওনি ঠিকি বলেছে এখন অনেক রাত হয়ে গেছে তার উপর আবার অনেক শীত করছে আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে তো অঙ্গান হয়ে যাবো কি করবো এখন ,,, আমার ভাবনার মাঝেই ওনি গাড়ির হর্ণ বাজাতে লাগল।
আসছি,, সব সময় শুধু এমন করে আহ বাড়ি গিয়ে গরম তেলের শেক নিতে হবে। ,, গাড়ির কাছে যেতেই ওনি ভিতর থেকে গাড়ির দরজা খুলে দিলো আমিও চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসলাম,৷, সেই তো আমার সাথেই এলে মাঝখানে এতো নাটক করার কি দরকার ছিলো।
দেখুন৷ ,,, অনেক দেখেছি আর দেখতে চাই না এখন তুমি চুপ করে থাকো,,।
তখন ইয়ানা রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর আর্দ্র ইয়ানাকে দিতে যাওয়ার জন্য ইয়ানাকে খুঁজতেছিলো তখন অনিক বলল যে একটু আগে নাকি ইয়ানা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে অনিক অনেকবার ডেকেছে তবুও ও শোনেনি,, অনিকের কথা শুনে আর্দ্র তাড়াতাড়ি করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আকাশে অনেক মেঘ ছিলো আর্দ্র বেরোনোর পরপরই আকাশ ভেঙে বষর্ণ শুরু হলো, আর্দ্র কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলো ইয়ানা বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতে হেঁটে যাচ্ছে তখনি ও গাড়ি থামিয়ে ইয়ানার পিছনে গেলো।
নামো তোমার বাড়ি এসে গেছে। আর কালকে হ,হাচ্চু সকাল সকাল চলে আসবা, মনে হচ্ছে তোমার জন্য আমার জ্বর আসবে।
এই শুনুন মোটেও আমার দোষ দিবেন না নিজেই তো আমার পিছনে আসলেন,, আর হ্যাঁ বাসায় গিয়ে সরিষার তেল গরম করে হাতে পায়ে আর কানে ডলে ডলে নিবেন আর ঔষধ খেয়ে নিবেন তাহলে দেখবেন সেরে যাবে, আর আমার কিছু হবে না আল্লাহর রহমতে, কেননা আমার এসবে অভ্যাস আছে।
হোয়াট কি বললে আমি ওই সরিষার তেল নেবো?? নো ওয়ে, আর তোমাকে এতো ঙ্গান দিতে হবে না যাও নামো।
একে তো দেখছি ভালো কথা বললেও দোষ, পরে বুঝবে মজা ,, ইয়ানা গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে চলে গেলো আর আর্দ্র ও গাড়ি ঘুড়ায়ে চলে গেলো।
সকালে,,,,
ইয়ানা অফিসে গিয়ে আর্দ্রর কেবিনের সামনে গিয়ে দরজায় নক করতেই ভিতর থেকে জবাব আসল এসো, ইয়ানা ভিতরে গিয়ে দেখলো ওখানে আর্দ্র নেই তার বদলে অনিক বসে আছে। একি ভা,,না মানে স্যার আপনি?? আর্দ্র স্যার কোথায়??
আরে ইয়ানা এসো বসো, আর্দ্রর কথা আর কি বলবো কালকে তোমাকে দিয়ে আসার পর রাতে সেকি জ্বর, তুমি তো জানোই অন্তরার এই অবস্থা আর মাতো রাতে ঔষধ খেয়ে ঘুমায় সারারাতে আর উঠে না, তারপর আমি আর অন্তরা গিয়ে মাথায় পানি দিয়ে ধুয়ে জোর করে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে এসেছি,, এখনো অল্প জ্বর আছেই তাও অফিসে আসতে চাইছিলো আমি ওকে জোর করে রেখে দিয়ে আসছি।
সত্যি স্যার আপনার ভাইটা বড্ড অবাধ্য কারো কোনো কথা শোনেই না, একদম ইগো ওয়ালা।
হ্যাঁ কিছু বললে??
ক,,,কই কিছু না তো??
আচ্ছা তাহলে চলে কাজ শুরু করা যাক,,, তারপর ওরা কাজ করতে লাগল, ইয়ানা তো পুরো সময় কেমন মনমরা হয়ে ছিলো যেনো ওর শরীল এখানে কিন্তু মন অন্য কোথাও অনিক অবশ্য এটা খেয়াল করেছে,
,,,,,,,,
, আচ্ছা চাম্প তোমার চাচ্চু কোথায়, ওনাকে তো আজকে দেখছি না।
ওহ চাচ্চু?? চাচ্চুর তো অনেক জ্বর হয়েছে তাই রুমে শুয়ে আছে,, ডাক্তার দাদু এসে ওষুধ গিয়ে গেছে তবুও একটু একটু জ্বর আছে তাই শুয়ে আছে।
ওহ আচ্ছা,, বলছি কি তুৃমি একটু পড়ো আমি এখনি আসছি ওকে। আচ্ছা ঠিক আসে।
ইয়ানা পরশের রুম থেকে বেরিয়ে আর্দ্রর রুমে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো আর্দ্র চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে , ইয়ানা আস্তে করে রুমের ভিতর গিয়ে দেখল আর্দ্র ঘুমিয়ে রয়েছে,, ইস ওনার চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে আর নাক টাও কেমন লাল হয়ে আছে ,, ওনার হয়ত বৃষ্টি তে ভিজার অভ্যাস নেই তাই জ্বর চলে আসছিলো তবুও ওনাকে বললাম যে তেল নিতে নিলোই না এখন কেমন কষ্ট পাচ্ছে ।
তা তেলটা তুমিই দিয়ে দাও,, আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু দিতে পারিনি।
একি আপু তুমি কখন আসলে??
যখন তুমি আমার দেবর কে দেখছিলে তখন। তা বলছি কি এই যে আমি তেল গরম করে আনছি তুমিই না হয় দিয়ে দাও।
আমি??? না বাবা যদি রাগ করে।
আরে রাগ করবে কেনো আর ও তো ঘুমিয়ে আছে,,আর তাছাড়া তেল দিলে আরাম লাগবে আর ওতে ও আরো ভালো করে ঘুৃমাতে পারবে।
কিন্তু,,,
আরে দাও তো ও কিছু বললে আমি ওকে বকে দিবো। তুমি দাও
দিই তাহলে?? হুম দাও। তারপর ইয়ানা অন্তরার কাছ থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে আর্দ্রর মাথার কাছে বসে ওর দু হাতে তেল নিয়ে ঘষে আর্দ্র গলায় বুকে দিয়ে দিলো,, বুকে দেওয়ার সময় ইয়ানার মুখ আর্দ্রর মুখের খুব কাছে ছিলো, আর্দ্রর গরম নিশ্বাস সোজা গিয়ে ইয়ানার মুখে পড়ছিলো,, অন্তরা দূর থেকে তাকিয়ে ওদের দূজনকে দেখছিলো।
দুজনের মনেই দুজনকে নিয়ে কিছু একটা আছে কিন্তু কেউ কাওকে সেটা বলবে না, কেউ হার মেনে কারো কাছে মাথা নত করবে না,, তাহলে তো তাদের ইগো হার্ট হয়ে যাবে, হুমম আমাকেই কিছু একটা করতে হবে দেখছি,,,
চলবে,,,,,???