আমার_গল্পে_তুমি ২৪_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
,
ইগো, এই ইগো শব্দটি ছোট হলেও এটা অনেক কিছুই করতে পারে , যেমন ছোট্ট একটা সরি সম্পর্ক ভাঙ্গতেও পারে তেমনি আবার এই সরিই আবার একটা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে ও পারে,, ভালোবাসায় ইগো থাকতে নেই, ভালোবাসার মানুষের কাছে হাড় মেনে নিলে সেটা হেরে যাওয়া নয় বরং সেখান থেকে আরো ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। আর্দ্র চাইছে ইয়ানা আগে ওকে মনের কথা বলুক আবার ইয়ানা তো মেয়ে ও চাইছে আর্দ্র ওকে আগে ভালোবাসার কথাটা বলুক , কিন্তু দুজনের মধ্যে কেউ একজন যদি ইগোটাকে ছুঁড়ে ফেলে মনের কথাটা বলে দেয় তাহলেই কিন্তু সব সম্যসার সমাধান হয়ে যায় কিন্তু না সেটা কেউ করবেই না। অন্তরা সোফায় বসে নিজের হাতের নক কামড়াচ্ছে আর ভাবছে কীভাবে বিয়েটা আটকানো যায় তখনি ওখানে লিজার মম এলিনা এসে বলল।
হেই বলো না আমাকে কোন শাড়িতে বেশি ভালো লাগবে, আমার একটা মাএ বেবির বিয়েতে আমি আমার মন মতো সাজুগুজো করবো,, ভেবেছিলাম অনেক বড় করে অনুষ্ঠান আমার বেবির বিয়ে দেবো কিন্তু সেটা আর হলো না তবে সম্যসা নেই ওদের প্রথম এনিভার্সিরিতে একটা বড় করে অনুষ্ঠান করবো,, আচ্ছা এখন বলো আমায় কোন শাড়িতে ভালো লাগবে।
আমি মরছি আমার জ্বালায় এ আবার কিসের মধ্যে কি বলছে, আর ওতোবড় একটা মেয়েকে বেবি বলছে, আজ বিয়ে দিলে কালকেই বাচ্চার মা হয়ে যাবে সে নাকি বেবি।
আরে কি হলো তুমি ওমন চুপ করে আছো কেনো?? বলো বলো আর কিছুক্ষণ বাদেই তো বিয়ে,, আমার তো এখনো মুখে প্যাক লাগানোই হলো না।
বিয়ে ওনার মেয়ের নাকি ওনার কে জানে,,, আচ্ছা বলছি যে আন্টি আপনি আপনার পছন্দ মতো এখান থেকে যেকোনো একটা শাড়ি পরে নিন না আপনাকে সব শাড়িতেই সুন্দর লাগবে।
ইউ নটি গার্ল ,, তুমি তো দেখছি কিচ্ছু জানো না তোমার কোনো পছন্দই নাই, থাকো তুমি আমি আমার হাবি কে জিগাস করে আসছি।
এই হাফ মেন্টাল ফ্যামিলির মেয়েকে নাকি আর্দ্র বিয়ে করবে, ওহ আল্লাহ বাঁচাও।
এখন আল্লাহ আল্লাহ করছো কেনো? এই ঝামেলাটা বাঁধানোর আগে মনে ছিলো না,, তুমি জানো না এলিনা আন্টি লিজা ওরা কেমন।
আর কতো কথা শোনাবে অনিক ভালো লাগছে না আমার, একটা ভুল না হয় করেই ফেলেছি তাই বলে এতো কথা শোনাবে তুমি জানো না আমি অসুস্থ , মুখ ফুলিয়ে বলল অন্তরা।
আরে আমার বউ রাগ করছো কেনো আমি তো এমনি বলছি আচ্ছা এখন এটা খেয়ে নাও আমার আবার আর্দ্রর কাছে যেতে হবে।
তা তোমার সেই গুনধর ভাই কোথায় দেখছি নাতো কোথাও।
হয়ত রুমেই আছে তুমি খেয়ে নাও।
আর্দ্র রুমের একবার এপাশ তো আবার ওপাশ এক নাগাড়ে হেঁটেই যাচ্ছে আর হাতে হাত ঘষে নিজে নিজেই বলল,, কি ইডিয়ট মেয়ে বিয়েটা শেষ মেষ করেই ছাড়ছে আবার আমাকে কার্ড দেয় কত্তো বড় সাহস,,, আমার বিয়ের দিনই ওকে বিয়েটা করতে হলো একবার সামনে পাই তখন বোঝাবো মজা,, কিন্তু ও তো বলেছে আগামী সাতদিন অফিসে আসবে না ধ্যাত মাথাটা কাজ করছে না কি যে করবো, তখন ঝোঁকের বসে বিয়েতে কেনো যে হ্যাঁ বললাম।
হেই আর্দ্র বলোনা আমি আজকে কোনটা পড়বো লেহেঙ্গা নাকি বেনারসি, কোনটাতে আমায় বেশি সুন্দর লাগবে বলোনা বলোনা।
লিজা এখন এখান থেকে যা তো এমনিতেই ভালো লাগছে না তার উপর মাথা খাস না তো যা রুম থেকে।
এমন করছো কেনো বলোনা, আজকের পর থেকে তো আমার সবকিছু তুমিই পছন্দ করে দিবা আর তোমারটা আমি
তুই হঠাৎ করে আমায় তুই থেকে তুমি বলছিস কেনো?? ভ্রু কুঁচকে বলল আর্দ্র
তুমি তো দেখি কিচ্ছু বোঝো না নিজের হবু বরকে কি কেউ তুই করে বলে?? তাই আজ থেকে ঠিক করেছে আমি তোকে তুমি বলেই ডাকবো।
তুই যাবি এখান থেকে যত্তসব, মাথা খারাপ করে দেয়, গেট আউট ফ্রম হেয়ার, রেগে চিৎকার করে বলল আর্দ্র ,,,, আর্দ্রর চিৎকারে লিজা ভয় পেয়ে যলদি করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
,,,,,,
বাহ আমার মেয়েটাকে কত্ত সুন্দর লাগছে কারো নজর যেনো লেগে না য়ায়,, দাঁড়া একটা নজর টিপ লাগিয়ে দিই,, জানিস তো মা আমি আজকে বড় খুশি অবশেষে তুই যে সুহাগকে বিয়ে করতে রাজি হবি আমি তো ভাবতেই পারি নি।
এতোক্ষণে তো আপনার বিয়ে পরনো শুরু হয়ে গেছে মিস্টার আর্দ্র, হয়ত বিয়ে হয়েও গেছে,, আপনি যদি বিয়েটা করতে পারবেন তাহলে আমি নই কেনো আমিও আর কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য করো হয়ে যাবো,। ইয়ানার ভাবনার মাঝেই কেউ একজন বলল বর এসে গেছে বউকে নিয়ে ডয়িং রুমে যেতে বলছে রাত হয়ে যাচ্ছে তাই দেরি না করে বিয়েটা পরিয়ে দিলেই ভালো হয়, যেহেতু ঘরোয়া ভাবে বিয়ে হচ্ছে তাই বেশি মানুষ নেই।
এই তোরা ইয়ানাকে নিয়ে আয় আমি বরং বাইরে গিয়ে দেখি কার কি লাগবে,, এই বলে ইয়ানার মা বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
চল তোকে সুহাগ ভাইয়ের কাছে দিয়ে আসি,, সত্যি ইয়ানা তুই আজীবন জেদিই রয়ে গেলি, কি হতো নিজের মনের কথাটা আর্দ্র ভাইয়াকে বলে দিলে। রোজা সব জানত।
আমি কেনো বলবো ওনি বলতে পারে না? ওনার মুখ নেই, আর আমি একটা মেয়ে হয়ে কীভাবে আগে নিজের মনের কথা বলবো নিজেকে নির্লজ্জ মনে হয়।
আচ্ছা হয়েছে এখন চল আন্টি তোকে নিয়ে যেতে বলেছে৷
রোজা তুই যা আমি একটু পরে আসছি।
না তোকে আমার সাথেই যেতে হবে চল,,,আরে যাহ কারেন্ট চলে গেলো এই কারেন্ট এর এখনি যাওয়ার ছিলো, তুই একটু বস আমি মোমবাতি নিয়ে আসছি।
রোজা ইয়ানাকে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো বাইরে সরগোল শুনা যাচ্ছে হঠাৎ করে এভাবে কারেন্ট চলে যাওয়াই রোজা মোমবাতি নিয়ে রুমে আাসার আগেই কারেন্ট চলে আসছে,, রোজা মোমবাতি টা নিভিয়ে ইয়ানার রুমে গিয়ে দেখল বিছানা খালি রুমের কোথাও ইয়ানা নেই, তাই দেখে রোজা চিৎকার করে বাইরে এসে বলল, কে কোথায় আছো ইয়ানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
,,,,,,,,,,,,
আরে ছাড়ুন আমায় এভাবে গুন্ডাদের মতো তুলে এনেছেন কেনো আমায় মিস্টার আর্দ্র ??
উফ তুমি কি ভারি দেখে তো মনে হয় না তুমি এতো ভারি, কি খাও এতো আমার হাত বেথ্যা হয়ে গেছে।
তো আমি কি আপনাকে বলেছি যে আমায় তুলে আনুন, দেখি সরুন আমায় বাড়ি যেতে হবে আজকে আমার বিয়ে,, নিজে তো বিয়ে করে বসে আছেন এখন আমার বিয়ে আটকাতে এসেছেন কেনো।
না আমি বিয়ে করছি আর না তুমি, তবে এবার বিয়ে করবো তাও আবার তোমাকে।
কিহ?? আমি কখনোই আপনাকে বিয়ে করবো না মিস্টার ইগো ওয়ালা।
তুমি বিয়ে করবা সাথে তোমার ঘাড় বিয়ে করবে, এই বলে আর্দ্র কাউকে ফোন করলো, ফোন করার কিছুক্ষণ পর একটা কার আসলো ওদের সামনে আর কার থেকে যে নেমে আসল তাকে দেখে তো ইয়ানার চোখ কপালে,, একি আপনি??
জি কিউটিপাই না মানে থুরি পরশের কিউটিপাই আর আমার ভাবি,, কোথায় ভাবলাম তোমার সাথে লাইন মারবো কিন্তু আর্দ্র ভাই তা আর হতে দিলো কোথায়।
আকাশ বেশি বকবক না করে গাড়িতে গিয়ে বস আর গাড়ি স্টার্ট দে,,, কথাটা বলে আর্দ্র ফোনটা পকেটে রেখে আবার ইয়ানাকে কাঁধে তুলে নিলো,,।
ওকে ব্রো,
এই ছাড়ুন আমায় ডাকাত একটা,, ইয়ানা মুখে এতো চিৎকার চেঁচামেচি করলেও মনে মনে ভীষণ খুশি হয়েছে, তবে ও এটা বুঝতে পারছে না যে হঠাৎ করে মিস্টার আর্দ্রর কি এমন হলো যে ওনি লিজা ম্যাম কে বিয়ে না করে আমায় বিয়ে করার জন্য এমন করে তুলে আনলো।
অন্তরা আর অনিক ডয়িং রুমে দাঁড়িয়ে আছে, অবশ্য অন্তরা বসে আছে, কেননা বিয়েটা এখানেই হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে, অন্তরার মুখটা এমন করে আছে যেনো ওকে ধরে কেউ জোর এক গ্লাস করলার জুস খাইয়ে দিছে, তখনি অনিকের ফোন বেজে উঠল,, অনিক পকেট থেকে ফোন বার করে দেখলো আর্দ্র কল দিয়েছে।
কি অবস্থা রুমে থেকে আমায় কল দিচ্ছে এই ছেলে বিয়ে করার খুশিতে পাগল হয়ে গেছে,, অনিক কথাটা বলে ফোনটা রিসিভ করে কানে রাখল তারপর ফোনের ওপাশ থেকে যা বলল সেটা শুনে অনিক চিৎকার করে বলল,, ইয়েস,, অনিকের ইয়েস বলা দেখে সবাই ওর দিকে তাকালে অনিকের হাসি হাসি মুখটা চুপষে গেলো তারপর অনেকটা গম্ভীর মুখ করে বলল কিহ??
চলবে,,,,???