#আমার_শহরে_তোমার_আমন্ত্রণ
#পর্ব৯
#Raiha_Zubair_Ripti
-“ কিরে তুই নাকি রাজি না ভাইয়াকে বিয়ে করতে?
চিত্রা বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফোন স্ক্রোল করছিলো হঠাৎ রিয়ার কথা কর্ণকুহর হতেই দরজার পানে তাকায়। রিয়া রিমি কে কোলে নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে। চিত্রা শোয়া থেকে উঠে বসে। রিয়ার থেকে রিমি কে কোলে নিয়ে বলে-
-” হ্যাঁ রাজি নই।
-“ কিন্তু কেনো?
-“ আমি এখনই বিয়ে টিয়ে করবো না।
-“ তোকে তো ফোর্স করা হয় নি, যখন বিয়ে করতে চাস তখনই করবি এখন না হয় কাবিন করে রাখবে।
-“ আমি তো বলছি আমি বিয়ে করবো না।এতো জোর কেনো করছিস?
-“ বিয়ে না করার একটা রিজন দে?
-“ কি রিজন দিবো? রাতুল ভাইয়া কে দেখলে আমার কোনো ফিলিংস আসে না। যার প্রতি ফিলিংস আসে না তাকে কেনো বিয়ে করতে যাবো?
রিয়া সন্দেহজনক দৃষ্টি নিয়ে বলে-
-“ কাউকে পছন্দ করিস বা ভালোবাসিস?
চিত্রা বিছানা থেকে রিমি কে নিয়ে উঠলো। রিমির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল-“ যাকে ভালোবেসেছিলাম, যাকে পছন্দ করতাম তার সাথেই তো সংসার করছিস।
-“ কি হলো বল,কাউকে কি পছন্দ বা ভালোবাসিস?
-“ না কাউকে ভালোবাসি না পছন্দ ও করি না। রাতুল ভাইয়া কে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। দ্যাট’স ফাইনাল।
রিয়া তপ্ত শ্বাস ফেলে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেলো। রাতুলের জন্য এসেছিল রিয়া। রাতুল ফোন করে রিয়াকে বলেছে যেনো সে চিত্রা কে বুঝায়। কিন্তু চিত্রা তো না করছে বারংবার। যেখানের সম্পর্কের শুরুতেই না না করছে সেখানে সম্পর্ক শুরু না করাই শ্রেয় রিয়ার মতে।
রিয়া নিজের রুমে এসে বিছানায় বসতেই রায়ান রিয়াকে জড়িয়ে ধরে। রিয়া স্মিত হাসে। রায়ান রিয়ার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে বলে-
-“ কি বললো তোমার ননদী?
-“ কি আর বলবে আগে যেটা বলেছে সেটাই বললো। রাজি না।
-“ যেহেতু ও রাজি না তাহলে আর এই সম্পর্কের জন্য জোর না দেওয়াই ভালো।
-“ আমার ও সেটাই মনে হয়।
-“ হুমম,শুনো না।
-“ বলো শুনছি তো।
-“ বলছি বয়স হচ্ছে তো।
রিয়া বিস্ময় হয়ে তাকিয়ে বলে-
-“ বয়স হচ্ছে তো কি হয়েছে?
-“ না মানে রিমি ও তো বড় হচ্ছে।
-“ হ্যাঁ স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিতে হবে।
-“ ধূরু আমি স্কুলের কথা বলি নি।
-“ তাহলে?
-“ রিমির ও তো একটা ভাই বোনের দরকার।
রিয়া রায়ান কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে উঠতে যায়। আর ওমনি রায়ান রিয়ার হাত ধরে টান মেরে রিয়াকে নিজের কাছে টেনে নেয়। চিত্রা রিমি কে দেওয়ার জন্য এদিক টায় আসছিলো দরজার কাছে আসতেই এমন দৃশ্য দেখে পা থেমে যায় চিত্রার। কষ্ট লাগলো না তবে খারাপ লাগলো। এক সময় ভালোবাসতো,এখনও হালকা হালকা অনুভূতি আছে।যতোই হোক প্রথম অনুভূতি ছিলো তাকে ঘিরেই। ভুলতে চাইলেও ভুলা যায় না।
রিমি কে আর না দিয়ে নিজের রুমের দিকে ফিরে গেলো। রাফি এসেছে,সোফায় বসে চিত্রা কে হাক ছেড়ে ডাক দেয়। চিত্রা রাফির ডাক শুনে রিমি কে নিয়ে নিচে আসে। রাফির ওপর পাশে বসে বলে-
-“ এভাবে ডাকছো কেনো?
-“ তোমার সামনে বিয়ে চলে যাবা ভাই কে একটু আদর যত্ন করে কফি+রান্না বান্না করে কিছু খাওয়াও।
মুহূর্তে চিত্রার মাথা গরম হয়ে গেলো।
-“ কিসের বিয়ে বিয়ে করতেছো তোমরা বুঝতেছি না। একবার বলেছি না আমি বিয়ে করবো না। তবুও শুধু বারবার একই প্যাঁচাল করে যাচ্ছো।
রাফি অবাক হয়ে তাকালো চিত্রার দিকে। রাগার মতো তো তেমন কথা বলে নি।
-“ এতো রেগে যাচ্ছো কেনো? আমি তো মজা করেছি।
-“ সব সময় মজা ভালো লাগে না। কফি খেতে ইচ্ছে করেছে বললেই পারো কফি বানিয়ে দাও তা না করে বিয়ে নিয়ে কথা বলছো।
-“ আচ্ছা যাও কফি বানিয়ে নিয়ে আসো,রিমি কে দিয়ে যাও।
চিত্রা রিমি কে রাফির কাছে দিয়ে রান্না ঘরে চলে যায় কফি বানাতে। এরমধ্যে রাফির ফোনে ফোন আসে তুষারের। রাফি কেবলই তুষারের কাছ থেকে ফিরলো এর মাঝে আবার ফোন। রাফি ভাবলো হয়তো বাসায় ঠিক মতো পৌঁছিয়েছে নাকি সেজন্য ফোন দিয়েছে। ফোনটা রিসিভ করে কানে নিয়ে রাফি বলে-
-“ হ্যালো ব্রো আমি ঠিকমতো বাসায় এসেছি কোনো সমস্যা হয় নি।
তুষার রাফির এমন কথ শুনে বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে বলে-
-“ জাস্ট শাট-আপ, আমি তোর সমস্যার হয়েছে কি না বাসায় পৌঁছাতে সেটা শোনার জন্য ফোন করি নি। চিত্রা কি বিয়েতে হ্যাঁ বলেছে?
-“ আর বলো না ব্রো চিতাবাঘ তো রেগে ফায়ার। ন করে দিয়েছে।
তুষার ভ্রুকুটি করে বলল-
-“ না কেনো করেছে?
-“ সেটা জানি না।
-“ চিত্রা কোথায়?
-“ রান্না ঘরে কফি বানাচ্ছে।
-“ ফোন টা গিয়ে চিত্রা কে দে তো।
-“ কেনো ব্রো কিছু হয়েছে নাকি?
-“ এখনও হয় নি কিছু সামনে হবে।
-“ কি হবে?
-“ ফোন টা আগে দে চিত্রা কে।
-“ আচ্ছা দিচ্ছি হোল্ড করো।
রাফি ফোন টা নিয়ে রান্না ঘরে যায়। চিত্রা কফি বানাচ্ছিল রাফি কে দেখে বলে-
-“ তুমি আসলে কেনো আমি তো নিয়েই যাচ্ছিলম কফি।
রাফি ফোনটা চিত্রার সামনে ধরে বলে-
-“ না কফির জন্য আসি নি,তুষার ব্রো কথা বলবে তোমার সাথে নাও।
কথাটা বলে রিমি কে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে রাফি। চিত্রা হঠাৎ অবাক হলো তুষার কি কথা বলবে তার সাথে? ইতস্ত হয়ে ফোন টা কানে নিলো। মুহুর্তে ফোনের ওপাশ থেকে গম্ভীর কন্ঠে ভেসে আসলো-
-“ চিত্রা।
-“ হু বলেন।
-“ শুনলাম রিয়ার বাবা মা আর রাতুল এসেছিল?
-“ হ্যাঁ।
-” রাজি হলে না কেনো বিয়েতে?
-“ এমনি, মনে হলো রাজি না হওয়াটাই বেটার।
-“ কেনো?
-“ এমনি।
-“ গুড,শোনো একটা কথা।
-“ কি কথা?
-“ রাতুল কেনো পৃথিবীর অন্য কোনো ছেলে বা ছেলের মা বা আসলেও তুমি বিয়েতে রাজি হবা না।
চিত্রা তুষারের কথার মানে বুঝলো না। রাজি কেনো হবে না।
-“ রাজি কেনো হবো না?
-“ কারন তুমি অন্য কারোর জন্য তৈরি। সে ব্যাতিত অন্য কেউ আসলে রাজি হবা না।
-“ ধূরু কি বলেন আমি আবার কার জন্য তৈরি। আর সেই কেউ টা কে?
রাফি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চিত্রার কথা গুলো শুনছে। তার মাথায় আসছে না হঠাৎ তুষার ব্রো চিত্রার বিয়ে হওয়ার কথা শুনে এমন করছে কেনো?
তুষার তপ্ত শ্বাস ফেললো। তার ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলার অভ্যাস নেই।
-“ কাল কোচিং ছুটির শেষে বাহিরে দাঁড়াবে আমি আসবো কথা আছে।
-“ কি কথা?
-“ ফোনে বলা সম্ভব নয়। যা বলার কালই বলবো।
কথাটা বলে তুষার ফোন কেটে দেয়। চিত্রা একবার ফোনের দিকে তাকিয়ে ফোনটা রাফির হাতে দেয়। রাফি ফোন টা নিয়ে চিত্রার দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ চিতাবাঘ তোমার আর ব্রো এর মাঝে কি কিছু আছে?
চিত্রা কফির মগ টা রাফির হাতে দিয়ে বলে-
-“ আমার আর তুষার ভাইয়ার মাঝে কি থাকবে?
-“ না মানে ব্রো যেনো কেমন করছে না? তোমার বিয়ের খবর শুনে কেমন যেনো একটা হাবভাব করলো।
চিত্রা রাফির থেকে রিমি কে কোলে নিয়ে বলে-
-“ কেমন হাবভাব?
-“ ঐ তো গল্পে বা নাটকে বয়ফ্রেন্ড তার গার্লফ্রেন্ডের বিয়ের খবর হঠাৎ করে শুনলে যেমন রিয়াক্ট করে তেমন।
চিত্রা ভ্রু কুঁচকে বলে-
-“ মানে?
-“ মানে, আমার মনে হয় তুষার ব্রো তোমাকে অন্য নজরে দেখে,বোনের থেকেও বেশি কিছু ভাবে।
চিত্রা রান্না ঘর থেকে বের হয়ে যেতে যেতে বলে-
-“ ধূর ভাইয়া কি বলো, তুষার ভাইয়ার মনের মানুষ আছে।
তুষার কফি মুখে নিতে যাচ্ছিল চিত্রার কথা শুনে কফি আর খাওয়া হলো না। রাফি কফির মগ হাতে নিয়ে চিত্রার পেছন পেছন গিয়ে বলে-
-“ কি বলো এটা ব্রো এর মনের মানুষ আছে!
-“ হ্যাঁ।
রাফি সন্দেহজনক দৃষ্টি নিয়ে বলে-
-“ তুমি কিভাবে জানো?
-“ এই তো গতকাল রাতে বললো ভাইয়া।
-“ কি বললো?
-“ বললো তার মনের মানুষ আছে।
-“ তাকে চিনো?
-“ না তাকে চিনি না,তবে ভাইয়া বলছে পরিচয় করিয়ে দিবে।
-“ তুষার ব্রে তার মানে রিলেশন করে বাহ!
-“ আরে না রিলেশন করে না। মেয়েটা জানে না যে ভাইয়া তাকে পছন্দ করে।
রাফি অবাক হয়ে বলে-
-“ মানে!
-” মানে আর কি,ভাইয়া এখনও তার মনের মানুষ টিকে জানায় নি।
-“ ওয়ান সাইড লাভ?
-“ হ্যাঁ তেমন টাই।
-“ জাস্ট ইমাজিন, তুষার ব্রো ছ্যাকা খেলো কেমন লাগবে বিষয় টা?
কথাটা বলে রাফি হেসে উঠলো।
-“ আরে না ছ্যাকা কেনো খাবে সে? তার মতো হ্যান্ডসাম ড্যাশিং ছেলে যেই মেয়েকে প্রপোজ করবে সেই রাজি হয়ে যাবে।
-“ আমার মনে হয় ব্রো ছ্যাকা খাবে।
-“ এটা কেনো মনে হচ্ছে?
-“ আমার ষষ্ঠ ইন্দ্র জানান দিচ্ছে ব্রো ছ্যাকা খাবে। যাইহোক ঘুমাতে যাও গুড নাইট।
কথাটা বলে রাফি নিজের রুমে চলে যায়। চিত্রা রাফির যাওয়ার পানে তাকিয়ে রিমি কে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
————————–
কোচিং শেষে কোচিং এর বাহিরে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চিত্রা। মিনিট পাঁচেক হলো কিন্তু তুষারের আসার নাম নেই। বিরক্ত লাগলো,এভাবে দাঁড়িয়ে রাখার কোনো মানে হয়। মিনিট পাঁচেক ও মনে হচ্ছে ঘন্টা খানেকের মতো। এরমধ্যে একটা ব্লাক কালারের গাড়ি এসে থামলো চিত্রার সামনে। গাড়িটা দেখে চিন্তে অসুবিধে নেই গাড়ি টা কার। গাড়ির ভেতর থেকে তুষার বের হলো। পড়নে তার সাদা রঙের শার্ট, নিত্যকার দিনের মতো হাতেও সেই ব্র্যান্ডের ঘড়ি। দারুন লাগে এই গেটআপ টা চিত্রার। তুষার চিত্রার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছো?
-“ ঘন্টা খানেকের মতো।
তুষার হাত ঘড়ি টার দিকে তাকায়। এখন বাজে নয় টা চল্লিশ মিনিট। চিত্রার কোচিং শেষ হয় নয়টা ত্রিশ মিনিটে। সেখানে মেয়েটা ঘন্টা খানেক কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।
-“ তুমি আজ কোচিং করো নি?
-“ করেছি।
-“ তাহলে ঘন্টা খানেক কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকো? কোচিং তো শেষ হয় নয়টা ত্রিশ মিনিটে, আর এখন বাজে চল্লিশ।
-“ কিহ! আমার কাছে তো মনে হলো আমি ঘন্টা খানেক ধরে দাঁড়িয়ে আছি।
-“ আচ্ছা চলো ওদিক টায় যাই।
চিত্রা হ্যাঁ জানায়। কোচিং এর মেয়ে গুলো কেমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। মনে হয় কখনও ছেলে মেয়ে দেখে নি। তুষার চিত্রা কে নিয়ে কোচিং এর পাশে একটা ছোট পার্কে ঢুকে। পার্ক টাকে একটা খোলা উদ্যান ও বললে চলে।
চিত্রার ভালে লাগলো জায়গা টা। সামনে বসার জন্য একটা বেঞ্চ দেখতে দেয়ে সেখানে গিয়ে বসলো। তুষার চিত্রার পেছন পেছন আসলে কিন্তু বসলো না। চিত্রা তুষার কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বসার জন্য বলে। তুষার চিত্রার পাশে বসে। কোনো রকম হেয়ালি ছাড়া চিত্রার দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ দেখো চিত্রা আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে পারি না তাই সরাসরি বলছি,উইল ইউ ম্যারি মি?
তুষারের কথাটা চিত্রার কর্ণকুহর হতেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। তুষারের দিকে অবাক হয়ে বলে-
-“ এসব কি বলছেন আপনি!
-“ যা বলেছি সত্যি বলছি।বিয়ে করতে চাই আমি তোমাকে।
-“ আপনি আমাকে বিয়ে করতে চান মানে! আমাদের সম্পর্ক কি সেটা কি ভুলে গেছেন?
-“ না কিচ্ছু ভুলি নি।
-“ তাহলে এসব কিভাবে পোষণ করেন?
-“ তুমি আমার মায়ের পেটের বোন নও যে এটা পোষণ করা পাপ।
-“ আপনার না মনের মানুষ আছে?
-“ হ্যাঁ।
-“ তাকে না বলে আমাকে বলছেন কেনো?
-“ সেই মানুষ টা তুমি তাই তোমাকে বলছি।
-“ সেই মানুষ টা আমি!
-“ হ্যাঁ।
-“ কিভাবে?
-“ মনে আছে ক্লাস এইটে থাকা কালীন তুমি টেস্ট এক্সামে ফেল করেছিলে বলে মামি আমাকে বলেছিলো তোমায় এক মাস প্রাইভেট পড়াতে। আমার নিজের ও পড়াশোনা ছিলো বলে মামি তোমাকে আমাদের বাসায় দিয়ে গিয়েছিল। তোমাকে আর তৃষ্ণা কে রোজ বিকেলে পড়াতাম। তুমি অংকে ভীষণ কাঁচা ছিলে,সামান্য মুনাফার অংক পারছিলে না বলে তোমাকে দুটো ধমক দিয়েছিলাম সেজন্য পুরোা দেড় টা ঘন্টা কেঁদেছিলে। সেদিন তোমার জন্য মা আমাকে বকেছিলো। মায়ের বকা টা অতো গায়ে মেখেছিলাম না। কিন্তু তোমার কান্না দেখে আমার বড্ড হাসি পাচ্ছিল। এতো বড় একটা মেয়ে সামান্য একটা ধমকে এভাবে কেঁদে দেয় ভাবা যায়? আর কাউকে কাঁদলে যে এতো কিউট লাগে আগে জানা ছিলো না। এরপর থেকে তুমি সবসময় আমাকে এড়িয়ে চলতে। তোমার ইগনোর টা আমার ইগো তে লাগছিলো।তুষার কে কোনো মেয়ে ইগনোর করছে! তোমার সাথে সেধে কথা বলতে গেলেও তুমি এড়িয়ে চলতে। কিন্তু তোমার সাথে কথা না বললে আমার হাসফাস লাগতো,দম বন্ধ লাগতো। এরপর তুমি পনেরো দিনের মাথায় বাসায় চলে গেলে,এরপর প্রতিদিন বিকেল হলে মনে পড়তো এই টাইমে তোমাকে পড়ানোর কথা আমার,মাঝে মাঝে তৃষ্ণার রুমে গিয়ে বলেও ফেলতাম পড়তে আয়। তৃষ্ণা আসতো কিন্তু যখন দেখলাম তুমি আসো নি তখন তৃষ্ণা কে বলে বসতাম চিত্রা কোথায়? তৃষ্ণা তখন খিলখিল করে হেসে বলে উঠতো-“ ভাইয়া চিত্রা তো বাসায় চলে গেছে ভুলে গেছো? আমি তখন চুপ হয়ে যেতাম। পনেরো টা দিন অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছিলে তুমি।তোমাকে দেখার জন্য কয়েক দিন পর ছুটে যেতাম তোমাদের বাসায়। বুঝে গেলাম আমার সুস্থ ভাবে বাঁচার জন্য হলেও তোমাকে চাই। ভেবেছিলাম তুমি যখন এসএসসি পাশ করবে তখন মা কে জানাবো। কিন্তু যখন দেখলাম নিজের প্রিয়তামর চোখে অন্য এক পুরুষের জন্য এক আকাশ সম ভালোবাসা ট্রাস্ট মি সেদিন নিজেকে এতো অসহায় মনে হচ্ছিলো যা বলার বাহিরে। বুকের এই বা পাশ টায় এতো ব্যাথা করছিল যে…..
চিত্রা চুপচাপ এতোরক্ষণ কথা গুলো শুনছিলো। লাস্টের কথাটা শুনে চিত্রার বুক ধক করে উঠলো। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠে-
-“ আপনি জানতেন সব?
তুষার স্মিত হেসে বলে-
-“ যেখানে তোমার চোখের দিকে তাকালে আমি পুরো রচনা,উপন্যাস পড়ে ফেলতে পারি আর সেখানে তুমি অন্য একজন কে দিনের পর দিন ভালোবেসেছো,তার জন্য তোমার চোখে যে মুগ্ধতা ছিলো সেটা বুঝতে পারবো না!
( দুঃখিত এতো দেরি করে দেবার জন্য, সকাল থেকে কারেন্ট ছিলো না,তার উপর ফোনে চার্জ ও ছিলো না। কারেন্ট এসেছে ছয়টার দিকে,ফোন চার্জ দিয়ে তারপর লিখতে হলো। কেমন হলো আজকের পর্ব জানি না,হয়তো অগোছালো লেগেছে।)
#চলবে?