#আমি_তোমাকে_ভালোবাসি
#লেখনীতে_সুরঞ্জীতা_সুর
#অষ্টাদশ_পর্ব
২৬.
চন্দ্রা?
কী?
জানালা দিয়ে দেখো কী সুন্দর জোছনা!
চন্দ্রা তাকিয়ে দেখলো চারদিকে থইথই করছে জোছনায়। উথালপাতাল জোছনায় ভেসে যাচ্ছে পৃথিবী। চন্দ্রা নিজের অজান্তেই রাশোদের কাঁধে মাথা দিলো। রাশেদ চন্দ্রা একহাত দিয়ে জড়িয়ে রইলো।
চন্দ্রা আনমনে বললো, হ্যাঁ। দেখেছি। এতো সুন্দর কেন! জোছনায় ঝকমক করছে চারদিকে।
রাশেদ হাসলো। এই মেয়ে মাঝে মাঝে ছেলেমানুষের মতো কথা বলে।
রাশেদ বললো, কারন আমার পাশের রয়েছে আরেকটি চাঁদ। সেই চাঁদেরও যে নিজস্ব আলো আছে কিন্তু সেটা সে নিজেও জানে না। দুই চন্দ্র আজ জোছনা বিলাচ্ছেন যে।
ইসসস! মাঝে মাঝে সান্ত্বনা পুরষ্কারটা পেতে ভালোই লাগে।
বলেই চন্দ্রা লজ্জা মাখা হাসি হাসলো। সান্ত্বনা পুরষ্কার হোক আর যাই হোক চন্দ্রার ভালো লাগলো। সে রাশেদের বুকের বাম পাশে নিজের মাথা রাখলো। হয়তো নিজের ইচ্ছায় নয়তো নিজের অজান্তে। রাশেদ অবাক হয়ে গেল। এই প্রথম সজ্ঞানে চন্দ্রা তার এতোটা কাছে এলো। রাশেদ কীভাবে যেতে দেয় তাকে! সে দুই হাত দিয়ে আগলে নিলো। একহাত দিয়ে চন্দ্রার চুলে হাত বুলালো। চন্দ্রা চোখ বন্ধ করে নিঃশব্দে রাশেদের বুকের ভেতর হওয়া লাবডাব শব্দ শুনছে।
রাশেদের আদুরে স্বরে বললো, চন্দ্রাবতী?
হুম।
তুমি কী আমাকে ভালেবাসো?
নিঃশব্দ চন্দ্রা আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো রাশেদকে। স্পর্শ দ্বারা রাশেদকে উত্তর দিলো রাশেদ কী সেটা বুঝতে পারলো? হ্যাঁ। রাশেদ তার উত্তরটা জানে। শুধু আরেকটু নিশ্চিত হলো। রাশেদ চন্দ্রার চুলের উপর চুমু খেলো। চন্দ্রা কেঁপে উঠলো একটু।
কিছু বলতে হবে না তোমায়। আমি উত্তরটা জানি।
বেশ কিছুক্ষণ পর রাশেদ গাঢ় স্বরে আবার ডাকলো চন্দ্রাকে।
চন্দ্রা?
হুম।
তোমাকে কী আমি আরেকটু কাছ থেকে ভালবাসতে পারি? তোমাকে ভালবাসতে ইচ্ছে করছে বিপদসীমা পেরিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
কথাটার গভীরতা বুঝতে চন্দ্রার কিছুক্ষণ সময় লাগলো। সে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। রাশেদের কিছুটা ভয় করছে। সে কী খুব বেশি কিছু চেয়েছে? আরেকটু সময় কী দেওয়া উচিত ছিল? চন্দ্রা কী রাগ করলো? রাগ করে কী সেই আগের মতো হয়ে যাবে? হঠাৎ করে রাশেদ খেয়াল করলো চন্দ্রা অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে আর রাশেদর বুকের বামপাশ ভেজা ভেজা হয়ে আছে।। সে রাশেদের টিশার্ট শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে। রাশেদের ভেতর অপরাধবোধে ছেয়ে গেল। এই কয়দিনের কাছাকাছিতে রাশেদ কী করে ভুলে গিয়েছিল যে সে রাশেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। শরীরের সাথে জরিয়ে আছে তারপরও তাদের মধ্যে এক আলোকবর্ষ সমান দূরত্ব। আশা নেই তাকে আপন করে পাবার। কোনদিন পাবে কীনা সেটাও জানা নেই। প্রতীক্ষা ছাড়া আর সে কী-ই বা করতে পারে। থাক সব কিছুর পূর্ণতা পাবার দরকার হয় না। ভালোই তো ছিল সে। কেন সে বলতে গেল? অপরাধবোধ তাকে ঘিরে ধরেছে।
সে চন্দ্রাকে আস্তে আস্তে বললো, রিলাক্স চন্দ্রা। এতো কাঁপছো কেন? কিছু হয়নি তো। আম স্যরি। প্লিজ স্বাভাবিক হও।
চন্দ্রা কোন উত্তর দিলো না।
রাশেদ আবার বললো, আমি চলে যাচ্ছি চন্দ্রা। ঘর থেকে চলে যাচ্ছি। প্লিজ তুমি শান্ত হও।
রাশেদ চন্দ্রাকে ছাড়িয়ে নিতে গেল। চন্দ্রা ছাড়লো না। চন্দ্রা রাশেদকে আরো গভীরভাবে ধরলো। রাশেদ কিংকর্তব্যবিমূর হয়ে গেল। এই প্রথম সে বুঝতে পারছে না চন্দ্রা কী চাইছে? চন্দ্রার দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। এতো আবেগ দিয়ে কেউ ভালোবাসার আহ্বান করতে পারে বলে চন্দ্রার জানা ছিল না। রাশেদের আহ্বান সে ফিরিয়ে দিবে কী করে? এতোটা পাষাণ হওয়া কী আসলেই সম্ভব চন্দ্রার পক্ষে? রাশেদ কী একবারও বুঝতে পারছে না চন্দ্রার নীরব সম্মতি? এতোটা অবুঝ সে?
ভেজা গলায় চন্দ্রা বললো, রাগ করিনি আমি।
রাশেদ অবাক হয়ে বললো, তাহলে কাঁদছো কেন?
সব কিছু বুঝতে পারেন আর এটা বুঝেন না?
না বুঝি না। তুমি বুঝিয়ে বলো।
এতোটা আবেগ নিয়ে বললে যে কারো চোখে জল চলে আসবে।
বিস্ময়ে রাশেদ কথা বলতে ভুলে গেল। চন্দ্রার নীরব সম্মতি তার বুঝতে এতো সময় লাগলো কেন? আরেকটু হলেই তো চন্দ্রার কাছ থেকে সরে পড়তো সে। খুশিতে রাশেদ আত্মহারা। সে দুইহাত দিয়ে চন্দ্রার মুখ তুলে ধরলো। ভেজা চোখের পাতায় চুমু খেল। একবার, দুইবার, অজস্রবার। তারপর আবার বুকের পাশে জড়িয়ে রাখলো শক্ত করে। তারপর কানে কানে ফিসফিস করে বললো জহির রায়হানের সেই কালজয়ী উক্তি।
“আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো। ”
বাইরে আজ দোল পূর্নিমার উথাল-পাতাল অপরুপ জোছনা। সেই উথাল-পাতাল জোছনা জানালা দিয়ে ঘরে এসে ম্লান হয়ে গেল। কারন ঘরের ভেতর এক জোড়া দম্পতি নিজস্ব আলোয় আলোকিত। যে আলোর নাম ভালবাসার আলো। আলোয় ফুটে রয়েছে তাদের ঘর। হয়তো বাহ্যিকভাবে সেই আলোর নিজস্ব আলো নেই, দেখ যায় না কিন্তু তারপর তারা একে অপরের সাথে সেই আলোয় মিশে আছে। অবশেষে ভালবাসার রং লাগলো তাদের জীবনে।
২৭.
পহেলা ফাল্গুন, ১৪২৮। ফাল্গুন মাস কবি লেখকদের খুবই পছন্দের মাস। কত কবিতা, গান, উপন্যাস রচিত হয়েছে এই মাসে। আরেকটি ছোট্ট গল্পের সূচনা হয়েছিলো এই ফাল্গুনেই। চন্দ্রা আর রাশেদের ভালবাসাময় ছোট্ট গল্পটা। সেই ফাল্গুন পেরিয়ে আজ আরেক ফাল্গুন। চন্দ্রা আর রাশেদ কী সত্যিই দিগুণ হয়েছিলো?
ছোট্ট একটা বারান্দা সেই বারান্দার ভরে আছে বিভিন্ন ফুলের গাছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে বসন্ত পুরোপুরিভাবে চলে এসেছে তাদের ঘরের বারান্দায়। চন্দ্রা আর রাশেদ দাঁড়িয়ে গল্প করছে। দুজনের সম্পর্কটা যে খুব ভালো যাচ্ছে তা যে কেউ বুঝতে পারবে।
রাশেদ বললো, চন্দ্রা আমি তোমার গল্পের সূচনায় থাকতে পারিনি এটাই আমার আফসোস। যদি থাকতাম তাহলে আরো আগে থেকেই তোমাকে আরেকটু বেশি সময় ভালোবাসতে পারতাম।
তাতে কী আমার গল্পের উপসংহারে শুধুই তুমি আছো। আমার। আর ভাগ্যিস ছিলে না দ্বিতীয়বার হারানোর সহ্য ক্ষমতা আমার নেই। ছেড়ে যেও না। একবারও নিজেকে সামলে নিয়েছি তোমার জন্য আবার নতুন করে পারবো না।
রাশেদ চন্দ্রাকে গভীর ভালবাসায় জড়িয়ে ধরলো। তারপর বললো,
চন্দ্রাবতী ভালবাসা বুঝো? আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমার মধ্যে আমার ভাল থাকা নিহিত সেই ভালো থাকাকে নিজের থেকে ছেড়ে যাব ততটা মহান আমি নই। আমার ভালবাসার কারাগারে তেমাকে বন্দী করে রাখবো। অবশ্য সেই কারাগার চৌদ্দ শিকের নয় ইটপাথরের তৈরি চারদেয়ালের মাঝে ছোট্ট নীড়। ভালবাসায় মাখামাখি একটা সংসারে তোমাকে বন্দী থাকতে হবে। আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে আছে আমার ভালোবাসা। সেই ভালবাসার অর্ধেক আমার পরিবারকে দিয়ে দিয়েছি। বাকি অর্ধেক রাশেদ আহমেদ তার একমাত্র স্ত্রী চন্দ্রা আহমেদ ওরফে চন্দ্রাবতীর নামে লিখে দিলো। খুব ফিল্মি ডায়ালগ হয়ে গেলো তাই না?
বলেই রাশেদ হাসলো।
মোটেই না। তবে ডাক্তার বাবু আপনার স্ত্রীকে দেওয়া সম্পত্তিতে যে ভাগ বসালে অন্যকেউ চলে এসেছে। কিছু ভালবাসা তার জন্য রাখুন।
মানে?
চন্দ্রার এবার রাগ উঠলো। সে কী এতোই অবুঝ সামান্য কথাটা বুঝতে পারলো। চন্দ্রা জোর করে রাশেদের বাহুডোর থেকে নিজেকে ছাড়াতে লাগলো। রাশেদ এক মুহুর্তের জন্য থমকে গেল। কথাটা এতো ভালোভাবে সে খেয়াল করে নি। কথাটা বুঝতেই চন্দ্রা ছাড়াতে শুরু করলো। রাশেদ শক্ত করে জড়িয়ে রইলো। বিস্ময়ে তার চোখে জল চলে এলো। এতোটা সুখী হয়তো সে হয়তো মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর হয়েছিল।
চন্দ্রা তুমি সত্যি বলছো?
রাশেদের গলা কাঁপছে। চন্দ্রা মুখ তুলে তাকিয়ে দেখলো।
সে রাশেদের চোখ মুছিয়ে বললো, কাঁদছো কেন?
জানি না। কান্না পাচ্ছে তো কী করবো?
আচ্ছা কান্না পেলে কাঁদো। আটকাতে হবে না।
চন্দ্রা আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার সবসময় ইচ্ছে ছিলো আমার ছোট একটা বেবি হবে। ফোলা ফোলা গাল, ছোট্ট পাতলা ঠোঁট, মাথাভর্তি চুল, ছোট্ট ছোট্ট হাত পা।
আমারও ইচ্ছে ছিলো।
কবে জানতে পারলে?
আগে থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল। আজ কনফার্ম হলাম। কাল একবার হাসপাতালে গিয়ে চেক করালেই পুরোপুরি সিউর হবো।
তোমার সন্দেহ আমাকে জানালে না কেন?
কী ছেলেমানুষের মতো কথা বলছো? পরে এটা সত্যি না হতো তাহলে কষ্ট পেতে। তাই জানাইনি।
আর কাকে বলেছো?
কেউ না। শুধু ভাবীকে বলেছিলাম লক্ষণগুলো। পরে ভাবীই বলে দিয়েছে কী করতে হবে।
মাকে, বাবাকে জানাই?
জিজ্ঞেস করার কী আছে? অবশ্যই জানাবে।
নাকি তুমি বলবে?
না আমার লজ্জা লাগে।
আচ্ছা আমিই বলবো। এখন রেডি হয়ে নাও।
কেন? কোথায় যাবো?
হাসপাতালে। একবারে সিউর হই। তারপর বলবো।
আচ্ছা।
তারপর রাশেদ চন্দ্রাকে নিয়ে হাসপাতালে গেল। সেখানে চেকআপ করে জানা গেল তিন সপ্তাহ। সেখান থেকে চন্দ্রাকে নিয়ে বাসায় গেল। তারপর তার মাকে ফোন করে জানালো। তার মা ফোনে শুনে সেদিনই চন্দ্রাকে বগলদাবা করে তাদের বাড়ি নিয়ে গেল। চন্দ্রার কোন বারনই কেউ শুনছে না। এতে চন্দ্রার খারাপ লাগছে না। বরং ভালো লাগছে। খুব ভালো লাগছে এই শাসন, বারনগুলো। কত ধরনের টিপস দিচ্ছে রিমা আহমেদ!
দেখতে দেখতে ডেলিভারীর সময় এগিয়ে এলো। যত সময় এগিয়ে এলো চন্দ্রা নিজেকে গুটিয়ে ফেললো। তার ধারনা হয়ে গেল সে আর থাকবে না। একদিন বিকেলে রাশেদ তার পাশে বসে ছিলো৷ হুট করে চন্দ্রা বললো,
রাশেদ আমি তোমার কাছে অপরাধী। তাই না? এই অপরাধবোধ আমার কখনো যাবে না।
রাশেদ চন্দ্রাকে গভীর ভলোবাসায় জড়িয়ে ধরলো। তারপর কপালে চুমু দিয়ে বললো, কোন অপরাধ করোনি তুমি।
করেছি।
কী করেছে?
বিয়ের পর কতবার বলেছো তোমার সাথে ঘুরতে যেতে আমি যাইনি।
এটা কোন অপরাধের মধ্যে পড়ে বুঝি? আর তখন যাওনি ভালো কথা। এখন যাব তুমি,আমি আর আমাদের বাবু।
আমি বাঁচবো না রাশেদ।
চন্দ্রা কিছু হবে না তোমার।
না। তুমি শোন আমার কথা একটু।
শুনবো না। এসব বললে আমি ঘর থেকে বের হয়ে যাব।
চন্দ্রা আরো জোরে রাশেদকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর বললো, প্লিজ না কোথাও যাবে না। একটু শোন না প্লিজ।
আচ্ছা বলো।
তোমার সাথে বিয়ের পর ঘুরতে গেলে আমি আমার সাথে করে কয়েকটা বেশি স্মৃতি নিয়ে যেতে পারতাম। তোমার সাথে আমার এতো কম স্মৃতি কেন?
চন্দ্রাকে ছেড়ে রাশেদ দাঁড়িয়ে পড়লো। চন্দ্রা চোখে জল নিয়ে তাকিয়ে আছে।
রাশেদ ঠান্ডা গলায় বললো, তোমাকে নিষেধ করেছিলাম এসব বলতে। শুনো নি। এখন আমি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছি আর আসবো না।
বলেই রাশেদ ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে চন্দ্রা উঠে দাঁড়ালো তার বহুকষ্টে। প্রেগন্যান্সির কারনে শরীর ভারী হয়ে গেছে হাঁটাচলা করতে খুবই কষ্ট হয়। সে দৌড়ে গিয়ে রাশেদকে আটকাতে চাইলো। চন্দ্রার সেইফটির জন্য কার্পেট বিছানো ছিল। সেই কার্পেট কিছু কিছু জায়গায় ফাঁকা হয়ে রয়েছে। রাশেদ পেছনে একবার ফিরে তাকাতেই দেখলো চন্দ্রার পা কার্পেটের ফাঁকা জায়গায় ঢুকে গেছে আর সে পড়ে যেতে চলেছে। রাশেদ চোখের পলকে জাপ্টে ধরলো চন্দ্রাকে।
চন্দ্রা ফোঁপাচ্ছে আর বলছে, রাশেদ আমার বাবু।
রাশেদ চন্দ্রাকে শান্ত করছে, কিছু হয়নি চন্দ্রাবতী আমাদের বাবু ঠিক আছে তাকাও আমার দিকে।
চন্দ্রা চোখ বন্ধ করে এখনো কাঁদছে। আর বিড়বিড় করে কথা বলছে। কিছুক্ষনের মধ্যে সে জ্ঞান হারালো। রাশেদ চন্দ্রাকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো তারপর তার মাথা বুকে চেপে ধরলো। কিছুক্ষণ পর চন্দ্রার জ্ঞান ফিরলো সে নিজেকে রাশেদের বুকে আবিষ্কার করলো। চন্দ্রা তার পেটে হাত বুলাতে লাগলো।
রাশেদ খেয়াল করে চন্দ্রার হাতের উপর নিজের হাত দিয়ে তাকে আশ্বাস দিয়ে বললো, চন্দ্রাবতী দেখো এই জায়গায় আমাদের বাবু আছে আর একদম ঠিক আছে। কারন তার পাপা তার মাকে পড়ে যাবার আগেই ধরে নিয়েছে।
চন্দ্রা রাশেদের বুকে মুখ গুঁজে কাঁদছে। রাশেদ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে তার মাথায়। সে ভেবেছিল বড়সড় একটা ধমক দিবে চন্দ্রাকে কিন্তু সে তো নিজেই কাঁদছে। ধমক দেবার আগেই।
তাই ধমক না দিয়ে আদুরে গলায় বললো, কিছু হয় নি তো কাঁদছো কেন?
সরি।
ফর হোয়াট?
এইযে উল্টোপাল্টা কথা বলে তোমার মাথা গরম করে দিলাম তাই।
সরি আমার বলা উচিত। এই সময় এমন হয়ে থাকে আমি সেটা ভুলে গিয়েছিলাম।
চন্দ্রা আরো জাপটে ধরলো। তারপর রাশেদকে বললো, রাশেদ আমি আমার বাবু, তুমি আর সবার সাথে থাকতে চাই।
থাকবো তো সবাই একসাথে থাকবো। সবাই তোমার পাশে আছে।
তাহলে আমার ভয় লাগছে কেন?
এমন হয় সবার। তোমাকে আগেও বলছি এখনও বলছি চন্দ্রা তোমার প্রেগন্যান্সিতে কোন কমপ্লিকেশন নেই। বাবু, তুমি দুইজনই ঠিক আছো।
চলবে……..
এই গল্পটার নাম চন্দ্রকথা হলে মানাতো। তাই না? কিন্তু এই নামটা আমার মনে পড়েছে চারপাঁচ পর্ব আপলোড করার পর।
আর একটি মাত্র পর্ব বাকি রয়েছে গল্পটির।