#আমি_তোমাকে_ভালোবাসি
#লেখনীতে_সুরঞ্জীতা_সুর
#নবম_পর্ব
১৪.
দিন বিশেক কেটে গেল। এর মধ্যে রাশেদ আর চন্দ্রার সম্পর্কে অনেকটা বদল এসেছে। ইমারজেন্সি থাকায় আজকে রাশেদের ফিরতে প্রায় মাঝরাত হয়ে গেল। চন্দ্রা জেগে বসে আছে। টুকু প্রতিদিন নয়টা বাজতেই ঘুমে ঢুলতে থাকে। তাই ওকে খাবার দিয়ে দিয়েছে খাওয়া হয়ে যাওয়ার ওর ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে ঘুমাতে। চন্দ্রা বসে বসে অপেক্ষা করছে রাশেদের। রাত আড়াইটা নাগাত রাশেদ এসে চন্দ্রাকে কল দিলো গেইট বন্ধ। চন্দ্রা চাবি নিয়ে গেইট খুলে দিল। রাশেদ খুবই ক্লান্ত দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চন্দ্রার দিকে তাকিয়ে রাশেদ হাসলো। চন্দ্রাও হাসলো। রাশেদ ভেতরে ঢুকে চন্দ্রার হাত থেকে তালা চাবি নিয়ে গেইট বন্ধ করলো। তারপর রাশেদ চন্দ্রা পাশাপাশি হাঁটতে লাগলো।
চন্দ্রা জিজ্ঞেস করলো, এতো দেরি হলো কেন?
ইমারজেন্সি ছিলো তাই। চলে আসবে এই সময় পেশেন্ট এলো। খুবই খারাপ অবস্থা ফেলে রেখে তো আর চলে আসতে পারি না।
ও আচ্ছা।
কথা বলতে বলতে ঘরে চলে এলো। রাশেদ ফ্রেশ হতে গেলো। এই ফাঁকে চন্দ্রা সবকিছু গরম করলো চুলায় তারপর টেবিলে সাজিয়ে দিল। রাশেদ এসে বসলো। চন্দ্রা খাবার বাড়তে লাগলো।
রাশেদ বললো, টুকু কী ঘুমিয়ে পড়েছে?
হ্যাঁ।
খেয়েছে?
হ্যাঁ।
তুমি খেয়েছো?
এইতো এখন খাবো।
রাশেদ বেশ রাগী গলায় বললো, এখন খাবে কেন? এতসময় কী করেছো?
খেতে ইচ্ছে করে নি তাই খাইনি।
যেদিনই দেরি করে আসি তুমি না খেয়ে থাকো। এমন করার কী দরকার? তোমাকে তো আগেই বলেছি আমি গেইটের চাবি, বাসার চাবি নিয়ে যাব। তোমার কষ্ট করে উঠতে হবে না।
আমার ইচ্ছেতেই করছি। কষ্ট হবে তা তো বলি নি।
ঠিক আছে গেইট খুলে দাও। কিন্তু আর কোনদিন না খেয়ে থাকবে না।
সে দেখা যাবে। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। মুখে নিন তাড়াতাড়ি।
হ্যাঁ খাচ্ছি।
চন্দ্রা কোন দিনই রাশেদকে ছেড়ে খাবে না সেটা রাশেদ জানে। রাশেদ একদিন বলেছিল একা একা খেতে পারে না। যখন ওরা কথা বলতো না তখন রাশেদ দেরি করে আসলে কখনোই ভাত খেতো না। চা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তো। কিন্তু যেদিন থেকে বললো একা খেতে পারে না তখন থেকে চন্দ্রা বসে থাকে। রাশেদ এলে একসাথে খায়। তাছাড়া রাশেদ প্রতিদিন লেট করে না। মাঝেমধ্যে বেশি দেরি হয়ে যায়। অপেক্ষা করতে চন্দ্রার খারাপ লাগে না। বরং ভালোই লাগে। রাশেদ খেয়ে ঘরে চলে গেল। চন্দ্রা সব গুছিয়ে চা নিয়ে গেল। ঘুমানোর আগে এই লোক চা খায় কীভাবে কে জানে? ঘুম চলে যায় না?
রাশেদের হাতে চা দিয়ে চন্দ্রা বিছানা ঠিক করছে৷ রাশেদ চন্দ্রাকে বললো, চন্দ্রা?
চন্দ্রা কাজ করতে করতে উত্তর দিলো, কী?
তুমি আর পড়বে না?
চন্দ্রার হাত থেমে গেল সে বললো, হঠাৎ এই কথা কেন?
আমার কথার উত্তর চাইছি কিন্তু তুমি তো নিজেই প্রশ্ন করছো।
না আর পড়বো না। অনার্স কমপ্লিট তো করা আছেই।
কেন?
ইচ্ছে নেই। তাছাড়া এখন সময় চলে গেছে। ভর্তির ডেট আগেই চলে গেছে।
তাহলে নতুন ব্যাচে হবে।
হঠাৎ পড়া নিয়ে এতো কথা কেন?
কারন আমি ভেবেছিলাম তোমার সময়ের প্রয়োজন তাই দেরি করছো কিন্তু এখন তো দেখছি তোমার ইচ্ছেই নেই।
না নেই।
কেন?
জানা নেই।
চন্দ্রা?
কী?
তোমার সাথে তোমার বাসার সবার কথা হয়?
হ্যাঁ।
তোমার বাবা আজকে আমাকে কল করেছিল।
আমি এটাই সন্দেহ করেছিলাম।
তুমি জানতে?
না আজ বাবাও আমাকে কল দিয়ো বললো আবার শুরু করতে পড়াশোনা। কিন্তু আমি না করে দিয়েছিলাম। সে জন্য হয়তো আপনাকে বলেছে যাতে আমি রাজি হই। তাই না?
কিছুটা সেইরকমই। তুমি পড়াশোনা করতে চাইছো না কেন?
প্রশ্নটা তোলা থাক। পরে কোনদিন বলবো। রাত তিনটার উপর বাজে। ঘুমিয়ে পড়ুন।
রাশেদ আর কিছু বললো না। চুপচাপ শুয়ে পড়লো। থাক বেশি ঘাটাঘাটি করলে ব্যাপারটা ভালো হবে না। একবার যখন বলেছে বলবে তার মানে পরে নিশ্চয় বলবে। তিন দিন ধরে প্রতিদিন খুব সকালে হাসপাতালে যায় আর গভীর রাতে ফিরে। ঘুম ঠিকমতো হয় না। কালকের দিনটা ছুটির দিন তাই রাশেদ ঠিক করলো হাসপাতালে খুব দরকার না হলে যাবে না। বাসায় থেকে ঘুমাবে।
১৫.
রাশেদের ঘুম ভেঙে গেল নয়টার দিকে। সে ভেবেছিল তিন দিনের ঘুম আজকে ঘুমিয়ে পুষিয়ে নিবে। কিন্তু তা আর হলো না। ঘুম তার প্রতি বিদ্রোহ ঘোষনা করে দিয়ে শরীরকে জাগিয়ে দিলো। মিনিট দশেকের মতো বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দেখে চন্দ্রা দক্ষ হাতে বিছানা গোছাচ্ছে। ভেজা চুলগুলো সারা পিঠময় ছড়িয়ে আছে। বেশ লাগছে দেখতে। আজকে রাশেদের বাইরে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু চন্দ্রা রাজি হবে কিনা বুঝতে পারছে না। চন্দ্রা কখনোই তার সাথে বাইরে যায় না। তারপরও জিজ্ঞেস করতে ক্ষতি কী!
চন্দ্রা?
হুম।
চলো বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
হাসপাতালে যাবেন না?
আজ ছুটির দিন।
ও ভুলে গিয়েছিলাম। কখন যাবেন?
যখন তোমার ইচ্ছে।
তাহলে বিকেলে যাই। সাড়ে তিনটা চারটার দিকে।
বিস্ময়ে রাশেদ কথা বলতে পারলো না। সে নিজের মনকে প্রশ্ন করলো, চন্দ্রা কী সত্যিই যাবে নাকি ভুল শুনছে?
চন্দ্রা কাজ করতে করতে বললো, এখন আমার অনেক কাজ আছে। সেগুলো শেষ করতে করতে দুপুর হয়ে যাবে। সব কিছু শেষ করে বিকালে বের হবো। এখন চলুন ঝটপট খেয়ে নিবেন।
তুমি যাও আমি আসছি।
আচ্ছা।
চন্দ্রা চলে গেল। রাশেদের খুব খুশি হয়েছে। চন্দ্রা তার সাথে ঘুরতে যাবে বলেছে। এই প্রথম ওরা একসাথে সময় সময় কাটাবে। একান্ত ব্যাক্তিগত সময়। যেখানে কারো হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। রাশেদ খুশিমনে নাস্তা করতে গেল।
বিকেল সাড়ে তিনটায় সবকিছু গুছিয়ে চন্দ্রা ঘরে এসে দেখে রাশেদ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সে কাছে গিয়ে বললো,
রেডি হবো?
হ্যাঁ। তৈরি হয়ে নাও। তোমার হয়ে গেলে আমাকে বলো আমি তখন রেডি হবো। মেয়েদের তো সময় বেশি লাগে।
আচ্ছা।
বলেই চন্দ্রা আগ্রহ নিয়ে চলে গেল। রাশেদ এই চন্দ্রাকে দেখে অবাক। এটাই কী সেই চন্দ্রা যাকে শত বলার পরও সে বাইরে নিয়ে যেতে পারে নি? সেই চন্দ্রা হলে তো এতো আগ্রহ নিয়ে তৈরি হতে যেত না। আচ্ছা চন্দ্রা কী সব জোর করে মনের বিরুদ্ধে করছে? যদি করে থাকে তাতে রাশেদ সবথেকে বেশি কষ্ট পাবে। ও চায় চন্দ্রা নিজের মন থেকে সব করুক। নিজেই উপলব্ধি করুক এই সংসার তার, একান্ত তার নিজের। তা উপলব্ধি করে সে সব কিছু মেনে নিক। সময় যত প্রয়োজন তাকে দেওয়া হবে। কিন্তু দিনশেষে সব কিছু মন থেকে মানবে। না হলে এক সময় এই সম্পর্ক, সংসার তার কাছে গলায় কাঁটার মতো বিঁধবে। না পারবে গিলতে, না পারবে উগরে ফেলতে। এই কাজ গুলো চন্দ্রা কারো কথায় করছে কিনা তাও বুঝতে পারছে না রাশেদ।
চন্দ্র দশ মিনিটের মধ্যে চলে এলো। এসে রাশেদকে ডাকলো। রাশেদ অবাক হলো এতো তাড়াতাড়ি সে কীভাবে তৈরি হলো? সে ভেতরে গিয়ে তাকিয়ে দেখে হালকা কমলা রংয়ের সুতি তাঁতের শাড়ি পড়েছে। মুখে কোন প্রসাধনী নেই। কিন্তু খুব সম্ভবত ক্রিম দিয়েছে তা হাত দিয়ে মাখছে আর অন্য হাতে ফেস পাউডার। একহাতে সোনার চিকন চারটা চুড়ি অন্য হাতে ঘড়ি। চন্দ্রার বোধহয় ঘড়ি খুব পছন্দ সে সবসময় হাতে ঘড়ি পরে বাইরে যায় তা রাশেদ খেয়াল করেছে। চুড়ি খুব কমই দেখা যায় তার হাতে। রাশেদ তৈরি হয়ে গেল। হালকা আকাশী রংয়ের শার্ট তার গায়ে চমৎকার মানিয়েছে। চন্দ্রা বিছানায় বসে ফোন দেখছে। রাশেদ ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল ব্রাশ করতে করতে বললো, চন্দ্রা তুমি কী তৈরি?
হ্যাঁ।
চন্দ্রা দিকে রাশেদ তাকালো আয়নার মধ্য দিয়ে। সে একটুও সাজেনি। শুধু সেই সময় দেখা পাউডার আর ক্রিমই বোধহয় দিয়েছে আর ঠোঁটে লিপবাম। তার কী সাজার কিছু নেই নাকি দেয়নি ইচ্ছে করে নাকি সে সাজেই না? তার মনে প্রশ্ন জাগছে। বিয়ের সময়ই যা সাজতে দেখেছে তারপর কখনোই দেখে। অবশ্য সে বাইরেই যায় না শুধুশুধু সাজবে কেন?
চন্দ্রা চলো বেরিয়ে যাই। টুকুকে বলে আসো আসতে দেরি হলে সে যেন ভয় না পায়।
চন্দ্রা টুকুকে এই কথা বলতেই সে জ্ঞানী স্বরে বললো, আফামনি আফনে আমি থাকতে কোন টেনশন নিয়েন না।
চন্দ্রা হাসতে হাসতে বললো, তুই আছিস তাই তো টেনশন। ভয় পাবি না তো। সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে।
এইডা কী কইন আফা? মাঝরাইত ওইলেও ভয় পাইমু না। আমি টুকু থাকতে আফনের কোন ডর নাই।
আচ্ছা। কিছু খাবি? নিয়ে আসবো?
জ্বে না।
মন চাইলে বল নিয়ে আসবো।
তাইলে কেক বিস্কুট নিয়া আয়েন।
তুই কী ড্রাই কেকের কথা বলছিস নাকি কেক কোনটা?
ড্রেরাই কেক।
আচ্ছা। দরজা লাগিয়ে রাখ। নিজে নিজে চুলা ধরাতে যাবি না। ঠিক আছে?
আইচ্ছা।
যদি ক্ষিদে পায় ঘরে কোথায় কী আছে তোর তো জানাই আছে খেয়ে নিস।
চন্দ্রা টুকুর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেল। রাশেদ নিচে অপেক্ষা করছে। চন্দ্রা নিচে গিয়ে দেখে রাশেদ রিকশা দাঁড় করিয়ে রেখেছে। চন্দ্রা হাসিমুখে রিকশায় উঠলো। রাশেদ রিকশায় উঠে চন্দ্রাকে বললো, চন্দ্রা কোথায় যাবে বলো?
আপনি যেখানে নিয়ে যাবেন।
তোমার কোন ইচ্ছে নেই?
না।
কাছেই একটা দিঘী আছে। যাবে?
যাবো।
আচ্ছা সেখানেই চলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে তারা সেখানে পৌঁছায়। চারপাশটা গোধূলির আলোতে রাঙা। দীঘির টলটলে জল দেখে চন্দ্রার ইচ্ছে করছে ঝাপ দিয়ে পড়ে সাঁতার কাটতে৷ আজ বেশ গরম। গ্রীষ্ম এখনো আসে নি। মাত্র ফাল্গুন মাস। এখনোই এতো গরম। তাই আরো বেশি ইচ্ছে করছে সাঁতার কাটতে। সে পানি দেখতে এতই ব্যস্ত হয়ে গেল যে খেয়ালই করলো না রাশেদকে পিছনে রেখেই সে সামনে এগিয়ে এসেছে। রাশেদ রিকশা ভাড়া মিটিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে চন্দ্রা এগিয়ে গেছে।
রাশেদ চন্দ্রা পাশে গিয়ে বললো, কী দেখছো এতো মনোযোগ দিয়ে?
দীঘির জল। কী সুন্দর তাই না?
হ্যাঁ খুব সুন্দর। তুমি এর আগে আসো নি কখনো?
না। এই জায়গাটার নাম কী?
ছয়সিড়ি দীঘি।
এটা কত বড়ো?
অনেক বড়। এখান থেকে হাঁটা শুরু করলে বেশ খানিকটা যেতে হবে তারপর দীঘির শেষ সীমানা।
তাহলে চলুন যাই।
চলো।
বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে চন্দ্রা বললো, রাশেদ আমার দীঘির জলে পা ভেজাতে ইচ্ছে করছে।
তাহলে ভেজাবে। না করেছে কে?
আছাড় খেয়ে যদি পড়ে যাই।
সেক্ষেত্রে আমি হেল্প করতে পারি। করবো?
অবশ্যই।
জুতো খুলে আমার সাথে এসো।
চন্দ্রা জুতা খুলে এগুলো দীঘির জলের দিকে। রাশেদ তার হাত বাড়িয়ে চন্দ্রার হাত শক্ত করে ধরলো। কী প্রচন্ড অধিকারবোধ থেকে সে হাত ধরেছে! কোথাও না কোথাও চন্দ্রার ভালো লাগা কাজ করলো। ভাল লাগার রেশ ততক্ষণ রইলো যতক্ষণ রাশেদ হাত ধরে রাখলো। চন্দ্রা মনে মনে গুনলো ১, ২, ৩……….৬০। পাক্কা একমিনিট পর রাশেদ হাত ছাড়লো। চন্দ্রার কিছুটা খারাপ লাগলো। এতো তাড়াতাড়ি ছাড়লো কেন সে হাত? চন্দ্রা পা এখন দীঘির টলটলে জলের উপর। এতো স্বচ্ছ সেই জল যে পা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দীঘির পাড়ের মতো জায়গাটায় চন্দ্রা বসলো। পাশে রাশেদকে ইশারায় বললো বসতে। রাশেদ পাশে বসলো। রাশেদ চন্দ্রার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকালো। কনে দেখা আলোয় এই মেয়ের রুপ যেন বেড়েই চলেছে।
সে চন্দ্রাকে জিজ্ঞেস করলো, চন্দ্রা?
হুম।
চন্দ্রার কাছে তার নামটা খুব প্রিয়। কেউ যখন তার নাম ধরে ডাকে তার কাছে সেটা তার কাছে আরো লাগার সৃষ্টি করে। রাশেদ যতবার তার নাম ধরে ডাকে কানে সংগীতের মতো বাজতে থাকে। মনে হয় সে শুধু ডেকেই যাক চন্দ্রা বলে।
রাশেদ আবার বললো, তুমি কী জানো এই বিকেলের রোদকে কী বলে?
হ্যাঁ। গোধূলি।
আরেকটা নাম আছে? সেটা জানো?
না তো সেটা কী?
কনে দেখা আলো।
ও হ্যাঁ ভুলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ এই কথা কেন?
তুমি জানো কেন এই আলেকে কনে দেখা আলো বলে?
না। কেন বলে?
কনে দেখা আলো কথা শুনতে যতটা সুন্দর তার পিছনের কারণটা খুব দুঃখের। বঙ্গদেশীয় কন্যারা কখনোই খুব ফর্সা হয় না। শ্যামলা হয় বেশিরভাগ মেয়েই৷ আগের যুগে শ্যামলা মেয়েদের বিয়ে দিতে বাবা মায়ের খুব কষ্ট করতে হতো। তাই যখন পাত্রপক্ষ আসতো কনেকে কুসুম রঙের শাড়ি পরিয়ে বাড়ির উঠোনে পশ্চিম দিকে মুখ করে বসানো হতো ঘটকের পরামর্শে । বিকেলের পশ্চিম দিকে অস্ত যাওয়া সেই সূর্যের আলোর কনের মুখ উজ্জ্বল দেখাতো। তাই এই আলোকে কনে দেখা আলো বলে।
এর পেছনে এতো মন খারাপ করা গল্প আছে জানলে শুনতামই না।
এমন ছেলেমানুষী কথা শুনে রাশেদ হাসলো।
চলবে…………