#আমি_শুধুই_তোমার🌺
#পর্বঃ২৪
#Arshi_Ayat
আদ্রি আয়াশের ঘরে ঢুকতেই দেখলো ওর খালাতো বোন মুন আয়াশের সাথে ঘেঁষে বসে আছে।এই দৃশ্যটা দেখেই মন চাইছে মুনের গালে কষে একটা থাপ্পড় দিতে।রাগ সংযত করে আদ্রি গিয়ে ইনশিরার পাশে বসলো।আদ্রিকে দেখে আয়াশ বলল
“আয় বস তোর ভাবীর সাথে পরিচিত হয়ে নে।”
আয়াশের এই খোচা মারা কথা আদ্রির একদম পছন্দ হচ্ছে না।তবুও আদ্রি মুনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল
“হাই মুন।”
“হাই।”
এবার আয়াশ আবার খোঁচা মেরে বলে উঠলো
“কি রে মুন বলছিস কেনো ভাবি বল।”
আদ্রি অনেক রাগ উঠছে আয়াশের ওপর বহু কষ্টে নিজেকে সামলে মুনকে বলল
“ভাবি কেমন আছেন?”
“এই তো ভালো।তুমি?”
“আমিও ভালো।”
ওদের কথার মাঝে ইনান বলল
“তোদের কি শপিং করা শেষ?”
“হুম আম্মুরা প্রায় শপিং করা শেষ করেছে।কাল আমি আর মুন যাবো গহনা আনতে।”
এবার মুন বলল
“আয়াশ বেবি চলো আমাদের আবার পার্টিতে যেতে হবে।আমার ফ্রেন্ডরা অপেক্ষা করছে।”
আয়াশ শয়তানি হেসে বলল
“ইয়া বেবি চলো।”
এই বলে ইনশিরা ইনান আর আদ্রির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।আয়াশ আর মুনকে একসাথে দেখে আদ্রি মন খারাপ হয়ে গেলো।আদ্রি কিছু না বলে চলে যেতে নিলেই ইনশিরা জিগ্যেস করলো
“কোথায় যাচ্ছিস আদ্রি?”
“বাসায় যাচ্ছি।আপু আমার জন্য মনে হয় অপেক্ষা করছে।আজকে আবার অর্ণব ভাইয়া আসবে তাই যেতে হবে।”
আদ্রিও চলে গেলো।আদ্রি যাবার পর ইনান বলল
“জানি না শেষ পর্যন্ত কি হবে!!আয়াশ যদি মুনকে বিয়ে করে তবে আদ্রি সারাজীবন আফসোস করবে।”(ইনান)
“হুম।ওর জন্য কষ্ট হচ্ছে আমার।”(ইনশু)
“আমাদের হাতে তো কিছুই নেই।এখন যদি একটা মিরাকল হয়ে যায় তাহলে ভালো হবে।”(ইনান)
“আচ্ছা চল বের হই।” (ইনশু)
“কোথায় যাবি?” (ইনান)
“বাসায় যাবো।”(ইনশু)
” আচ্ছা একটা কাজ করলে হয় না আজ আমরা আমাদের বাসায় যাই।”
“আমাদের বাসা মানে?”
” তোর আর আমার বাসা মানে তোর শ্বশুর বাড়ি।আব্বু আম্মু কেউ নেই বাসায়। চল আজ ওইখানে থাকবো আমরা।”
“আচ্ছা চল।”
ইনান আর ইনশিরা ওদের বাসায় গেলো।ইনানের ঘরে ঢুকেই ইনশিরা বলল
“আল্লাহ এইখানে কি মানুষ থাকে!!এই অবস্থা কেনো ঘরের?”
ইনান বত্রিশ দাত বের করে হেসে বলল
“এমনি থাকে আমার ঘর।তবে এখন থেকে তো এটা তোরও ঘর।নিজের ঘর নিজে ঠিক করে নে।”
ইনশিরা তেড়ে ইনানকে মারতে আসতেই ওর সাথে ধাক্কা লেগে দুজনেই খাটে পড়ে গেলো।ইনশিরা মাথা ইনানের বুকের সাথে লেগে আছে।আর ইনান ওকে জাপটে ধরে আছে।ইনশিরা এবার ইনানকে বলল
“হচ্ছে কি?ছাড় আমাকে।ঘরটা তো গোছাতে হবে।”
“আরে পরে দুজনে মিলে গোছাবো এখন তুই চুপ করে থাক তো একটুখানি।”
ইনশিরা নিজেকে ছাড়ানোর একটা বুদ্ধি পেলো।চট করে ইনানকে সুড়সুড়ি দিলো আর ইনান ইনশিরা কে ছেড়ে লাফিয়ে উঠলো।আর ইনশিরা উঠেই দৌড়।
ওকে ধরার জন্য ইনানও ওর পিছনে দৌড় লাগালো।দুজনেই ছুটাছুটি করছে।একপর্যায়ে ইনান ইনশিরাকে দেয়ালের সাথে আটকে ফেললো।তারপর বলল
“এবার পালাবি কোথায়?”
ইনশিরা মুচকি হেসে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রেখে বলল
“এখানে।”
ইনান হেসে ওর মাথায় হাত বুলালো।তারপর দুজনে মিল রুম গোছানো শেষ করলো।এবার ইনশিরা বলল
“চল গিয়ে রান্না করি।”
ইনান শুনে লাফিয়ে উঠে বলল
“না না রান্না করার দরকার নেই।আমি অর্ডার করে দিচ্ছি।”
কে শোনে কার কথা ইনশিরা ইনানের কথা উপেক্ষা করে রান্না ঘরে গেলো।ইনান ও পিছু পিছু এলো।তারপর ওর পাশাপাশি দাড়িয়ে বলল
“আচ্ছা বল কি রান্না করবি?”(ইনান)
“আপাতত খিচুড়ি কেমন হয়?”(ইনশু)
“হুম ভালোই হবে।”(ইনান)
“আচ্ছা তুই ঘরে যা আমি রান্না করি।” (ইনশু)
“না আমি তোকে হেল্প করবো।বল কি করতে হবে।”
“বলছি না ঘরে যেতে।”
“প্লিজ।”
“আচ্ছা যা চাল,ডাল ধুয়ে দে।”
ইনান চাল, ডাল ধুয়ে ইনশিরার কাছে আনলো।তারপর বলল
“এবার কি করবো?”
“আর কিছু করা লাগবে না।এবার তুই ঘরে যা।”
“যাবো না।এখানেই দাড়িয়ে থাকবো।”
ইনশিরা ভেংচি দিয়ে সবজি কাটতে লাগলো।হঠাৎ কাটা বন্ধ করে আঙুল ধরে বসে রইলো।ইনান দৌড়ে এসে ওর সামনে বসে জিগ্যেস করলো
“কি হইছে তোর?”
ইনশিরা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে বলল
“না না কিছু না।”
“দেখি তোর আঙ্গুল দেখা।”
“বললাম তো কিছু হয় নাই।”
“দেখাইতে বলছি তোরে।”
ইনশিরা ভয়ে ভয়ে দেখালো।ইনান দেখেই বলল
“শর্বনাশ, ঘরে চল এন্টিসেপটিক লাগাতে হবে।”
“আর কিছু হয় নাই তো।সামান্যই কাটছে।”
ইনান কিছুই বলল না সোজা কোলে নিয়ে ঘরে চলে এলো।ইনশিরা ইনানের কান্ডে অবাক।ইনশিরাকে খাটে বসিয়ে এন্টিসেপটিক লাগিয়ে দিলো।তারপর বলল
“তুই বসে থাক আমি খিচুড়িটা বসিয়ে দিয়ে আসছি।”
“আমি যাই প্লিজ।”
ইনান চোখ গরম করে তাকাতেই ইনশিরা চুপ হয়ে গেলো।তারপর ইনান চুলায় খিচুড়ি বসিয়ে এসে বাবা মায়ের সাথে কথা বলল।ইনশিরাও শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে ভালোই কথা বলল।তারপর খিচুড়ি রান্না শেষে।দুজনেই খেয়ে নিলো।
এখন রাত ৯.০০ টা…..
ইনশিরার গলায় মুখ গুজে শুয়ে আছে ইনান।দুজনেই চুপ।হঠাৎ ইনান বলল
“চল আজকে হরর মুভি দেখি।”
ইনশিরা চোখ বড় বড় করে বলল
“না না।”
এবার ইনান হেসে বলল
“ও তুই ভয় পাস।ধূর ভেবেছিলাম বিয়ের পর বউ নিয়ে ভুতের মুভি দেখবো।”
“কিহ!!বিয়ের পর মানুষ রোমান্টিক মুভি দেখে আর তুই ভুতের মুভি দেখবি?
” হুম দেখবি কি না বল?”
এবার ইনশিরা বলল
“আচ্ছা দেখবো। কিন্তুু কখন?”
“রাত ১২ টায়।”
ইনশিরা চিল্লিয়ে বলল
“কিহ!!ঘুমাবো কখন?”
“এখন। ”
এই বলে ইনশিরাকে জাপটে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।যখন ওরা ঘুম থেকে উঠলো তখন রাত ১১ টা..
এদিকে আদ্রি আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিলো।হঠাৎ মনে হলো কারো ছায়া পড়ছে জানালায়।..
চলবে……
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আর প্রতিদিন না দিতে পারার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।তবে কালকে ২৫,২৬ পর্ব একসাথে দেওয়ার চেষ্টা করবো।ধন্যবাদ।)