#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 2
রাতে কাদতে কাদতে স্তব্ধ ওর পাশের রুমেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম আমি। কিন্তু সকালে ঘুম ভাঙতেই একটা সুন্দর চেয়ারে হাত পা বাধা আবিষ্কার করলাম নিজেকে৷ আশপাশে তাকিয়ে বুঝলাম না আমি কই আছি?? একটা ভীষণ বড় রুম চারপাশেই গ্লাস ধারা আবরণ করা ফলে আমি বাহিরের মুগ্ধ একটা দৃশ্য দেখতে পেলাম৷ গ্লাস ভেধ করে দেখা যাচ্ছে দূরে একটা পাহাড়ের মাঝখানে দিয়ে পানি পড়ছে অসম্ভব সুন্দর ঝরনা।এই সিন দেখে আমার হাতপা বাধা অবস্থায় ও আমার বেশ আনন্দ হচ্ছে কিন্তু মুহূর্তে সব সাইডে রেখে। আমি চিন্তা করতে শুরু করলাম হলো টা কি আমার সাথে?? স্তব্ধ কি আমায় মেরে ফেলবে বলে বিয়ে করে এনেছে। হায় আল্লাহ কেনো যে বাবা মার কথা শুনিনি? একটা সেকেন্ড হেন্ড মাল এর জন্য আমি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের উপর ভীষণ আফসোস ছাড়া কিছুই হচ্ছেনা আমার। আবার এসব ভাবতেও কেমন লাগছে৷ আচ্ছা স্তব্ধ এমন টা করতে পারলো আমার সাথে???সতীন এর সাথে একদিন সংসার করতে দিলোনা?? তার আগেই আমায় মেরে ফেলে দিতে এখানে বেধে রেখেছে??? আম্মু, পিউউউউ, প্রত্যয় কোথায় তোমরা বাঁচাও প্লিজ। আমি বাঁচতে চাই প্লিজ এ্যায়া। আমার ভ্যা ভ্যা কান্না শুনেও কেউ এলো না। আমি একা একাই বক বক স্টার্ট রাখলাম। কিন্তু বুঝলাম না আমার এতো কথা কথা পাচ্ছে কেনো?? বসেই আমি ঢুলুঢুলু করছি কেমন জেনো মাথা ঘুরছে আমার। যাই হোক আমার কথা থামলোনা৷ পটর পটর চলতেই থাকলো
.
রাতে স্তব্ধ দেখেছিলো টিয়া তার রুমে এসেছে। স্তব্ধ কিছুক্ষণ পড় তার স্ত্রী জেসিয়া কে রেখে পিছু গিয়েছিলো টিয়ার দেখেছিলো টিয়া কাদছে৷ কিন্তু কিছুই বলেনি সে বাঁকা হেসে স্টাডি রুমে গিয়ে ড্রিংক্স করেছে তারপর আর কিছুই স্তব্ধের মনে নেই সে জ্ঞান হারায়৷
.
সকালে ঘুম থেকে এক প্রকার তড়াক করে উঠে ফ্লোর থেকে নিজে নিজেই বলে উঠে৷
.
— আমি ফ্লোরে ঘুমুচ্ছিলাম?? লাইক সিরিয়াসলি!! কি এমন ড্রিংক্স করলাম আমি?? শুধু ১ প্যাগ এ অজ্ঞান?? ওহহহ শিট…
.
এটা বলে স্তব্ধ লাফ দিয়ে উঠে দৌড়ে জেসিয়ার রুমে যায় দরজায় দাড়িয়েই ঘুমন্ত জেসিয়া কে দেখে স্তব্ধ স্বস্তির নিশ্বাস নেয়। একটা হাফ ছেড়ে চুলে হাত চালাতে চালাতে স্তব্ধের মাথায় আশে টিয়ার কথা সে ছুটে পাশের রুমে যায় যেখানে টিয়াকে রাতে দেখেছিলো৷ টিয়াকে না দেখে স্তব্ধ। নিজেই কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রয়৷ তারপর কি ভেবে দৌড়ে টিয়াকে যেই রুম টা স্তব্ধ দিয়েছিলো সেই রুম টায় যায়৷ স্তব্ধ হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলে রুমে ঢুকে দেখে নেই এখানেও টিয়া। রুম টা যেমন ছিলো তেমনি আছে!! স্তব্ধ এর হাত রুম খালি পেয়ে অটমেটিক মাথার পিছনে চুলে চলে গেলো। সে এক মাথা থেকে অন্য মাথা হাটতে লাগলো। নিজেই একা বিরবির করছে।
.
— নো নো আমি আমার কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে কিছু ভাববোনা টিয়াকে ওরা নিয়ে গেলেও আমার কিছু করার নেই!! বাট……..
.
স্তব্ধ প্রচণ্ড দিধায় পড়ে গেলো সে ভালো করেই জানে টিয়া কোথায় কি হয়েছে তার সাথে। কি হতে পারে তার সাথে। কিন্তু সে কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।
.
— টিয়ার কোন দোষ নেই আই নো….. ওকে বিয়ে করে আমার লাইফে জরিয়ে ভুল করে ফেলেছি তাও তাও বাঁচাতে পারবোনা তোমায় সরি টিয়া। আ্যম হ্যাল্প লেস!
.
প্রায় ১ ঘণ্টা পর আমার নিজেকে কেমন জেনো স্বাভাবিক লাগছে কিন্তু আশেপাশের কিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছেনা। আবার চিৎকার করে ডাকা ডাকি করতেও কেমন ইচ্ছা হচ্ছেনা মহাবিপদ!একটু পাশ ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম কেউ। গ্লাস দিয়ে আবরণ করা রুম টার বাইরে দাড়াতেই দুপাশ দিয়ে গ্লাসটা খুলে গেলো আর একটা লোক গটগট করে আমার সামনে আসছে। আমার লোকটাকে লোক থেকে বেশী কালো পতাকা মনে হলো। কারণ লোকটা এতোটাই কালো।
.
লোকটা আমার সামনে এসেই প্রশ্ন করলো।
.
— নাম কি মিস!!
–……
— কিছু জিজ্ঞেস করছি??? মিস??
–…….
.
লোকটার কর্কশ স্বর শুনে আমার কাপাকাপি অবস্থা৷ লোকটা ইয়া লাম্বু তারপর ইয়া কালো পতাকা তার উপর হচ্ছে ভয়ংকর মুখমন্ডল আবার কর্কশ স্বর। আমি ভয়ে চুপসে বসে আছি। আমার কথা কথা পাচ্ছে ভাবটা জেনো চিরকাল এর জন্য চলে গেলো। কারণ হাজার চেয়েও নিজের নাম টা লোকটাকে বলতে পারছিনা। আমার এতোটা ভয় করছে। লোকটা আমার কোন প্রকার জবাব না পেয়ে কাকে জেনো কল লাগালো। তার কথা গুলা ছিলো এমন।
.
— স্যার মিস কথা বলছেনা৷ বাট আমার মনে হচ্ছে এটাই স্তব্ধ খানের প্রাণ। নেক্সট কি করবো স্যার?
–…….
— ওকে স্যার!!
.
লোকটা ফোন রেখে। আমার দিকে শকুনের মতো করে তাকিয়ে বাঁকা একটা হাসি দিলো।তারপর আবার আগের মত যেভাবে এসেছিলো সে ভাবেই চলে গেলো!! লোকটা তার কুতসিত হাসি আমায় দেখিয়ে গেলেও আমার হাসি সে দেখলোনা৷ লোকটা বুঝলোইনা আমি ভেতরে ভেতরে হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছি৷ আমার গরিয়ে হাসতে ইচ্ছা করছে। হায় আল্লাহ ভাবা যায় আমি নাকি স্তব্ধের প্রাণ??? হাহা আমি আজ মরেই যাবো হাসতে হাসতে। লোকটা কত বোকা আমায় স্তব্ধের প্রাণ ভাবছে খোজ নিলে দেখা যাবে আমি হারিয়ে গেছি শুনেও স্তব্ধের কিছু এলোগেলোই না। তখন এই লোক গুলা শক খাবে। আহা কি হবে দেখতে ওদের ফেইস গুলো ভাবতেই। আমার আরো বেশী হাসি পাচ্ছে।
.
হাসির মাঝেই মাথার টনক একটু নড়ে উঠলো আমার। ওরা স্তব্ধের প্রাণ কে কিডনাপ করতে চায় আমি তো স্তব্ধের প্রাণনা। তাহলেকে?? ওর প্রথম স্ত্রী ওর প্রাণ? তার মানে ওর স্ত্রী কে কিডনাপ করতে গিয়ে ভুল করে আমায় কিডনাপ করেছে ওরা??? শালা আফ্রিকান আমায় পেলি বলির পাঠা বানাতে?? আমার সতীন কেই তুলে আনতি আমার রাস্তা ক্লিয়ার হত৷ সুখে সংসার করতাম স্তব্ধের সাথে। কিন্তু হায় আমার কপালে কি আর এতো সুখ আছে। আমি তো সবার বলির পাঠা। ভীষণ কান্না পাচ্ছে এটা ভাবতে স্তব্ধ কি আমায় খুজে বের করবে?? নাকি ওর কিছুই যায় আসেনা আমার জন্য?? আমি জানি স্তব্ধ খুজবে না আমায় কোনদিন না!! তাহলে আমি এখান থেকে কিভাবে বাঁচবো??? নাকি সত্যি বলির পাঠা হয়ে প্রাণ টা সত্যি দিতেই হবে???ইয়া আল্লাহ আল্লাহ…..। মনে মনে হাজার চিন্তা কষতে আমি এতো টা ব্যাস্ত ছিলাম দেখিনি আমার সামনে সোফায় কেউ এসে বসছে।যখন বুঝলাম মাথা তুলে তাকালাম কে বসেছে দেখার জন্য!!
.
দেখলাম একটা বডিবিল্ডার টাইপ সুদর্শন ছেলে। সোফায় বসে পায়ের উপর পা উঠিয়ে এক হাত সোফার হাতায় রেখে আমার দিকে সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমার ভীষণ ভয় করছে ছেলের তাকানো দেখে আমার ভীষণ অস্বস্তি ও হচ্ছে।আবার অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে কেনো স্তব্ধের স্ত্রী কে কিডনাপ করতে চেয়েছে তারা?? ওরা কি জানে আমি স্তব্ধের প্রথম স্ত্রী নই? ভুল বুঝেই আমায় কি মেরে ফেলবে এই ছেলেটা?? এটা ভাবতে ভাবতে আমি প্রচুর সাহস জুটিয়ে বললাম।
.
— আমার বাধন গুলো খুলে দিন প্লিজ আমি পালাবোনা!!
.
আমার কথা শুনে ছেলেটা বাঁকা হাসলো। তারপর বললো।
.
— আমি না চাইলে এখান থেকে পিপড়াও বাইরে যেতে পারেনা!! তুমি তো তাও মানুষ!!
………
.
চলবে!
[কি বলবো বুঝতে পারছিনা আপনারা এতোটাই বেশী বুঝেন যে কি বলবো খুজে পাইনা! স্তব্ধ এতোদিন পর কেনো এলো টিয়ার লাইফে তা ভাবছেন একবারও?? টিয়া বিবাহিত ছেলেকে বিয়ে করছে সে খারাপ। স্তব্ধ বিয়ে না করলে সে করতে পারতো?? এক হাতে তালি বাজে?? যাইহোক এই গল্প আমি আরো অনেক ভাবে শুরু করতে পারতাম বাট এভাবেই লিখেছি৷ কিন্তু গল্পের ফাস্ট পার্ট এই গল্পের মূল কাহিনী নয়৷ মূল কাহিনী অন্য কিছু যা গল্প পরলে পুড়াটা বুঝতে পারবেন!! আমি ফাস্ট পার্টে মূল কাহিনী তুলে ধরিনি বিন্দু মাত্র ও না তুললে হয় তো এতো কথা হতোনা। তবুও ফাস্ট পার্টে যা লিখেছি তাও দরকারেই লিখা৷তাই পুড়াটা আগে পড়ুন৷ আর হ্যাঁ শুরুটা আমি অন্য ভাবে করলে গল্পটা আর ২/৪ টা গল্পের মতন ই হতো ভিন্নতা পেতেন না। আপনাদের ভিন্নতা দিতে গিয়ে সব সময়ি কথা শুনতে হয়। কিন্তু কি আর করা আমার লিখার অভ্যাস তাই লিখি ভুল ত্রুটির ক্ষমা করবেন অনেক কথা বললাম😑 আর হ্যাঁ ফাস্ট পার্ট অনেক আগেই লিখা ছিলো তাই আজ আরেক পার্ট দিতে পারলাম তাই কাল নাও দিতে পারি ওয়েট করবা না কেউ।]
Roja Islam