#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 22
পিউ কেন্টিনের এর এক কোণের টেবিলে বসে আছে। টেবিলে কুনুই ঠেকিয়ে! গালে হাত দিয়ে বসে আছে চেয়ারে! হঠাৎ পিউ এর বান্ধবী হূর পিউ এর সামনে একটা বার্গার, আর স্যান্ডউইচ, ডিউ আরো অনেক কিছু খাওয়া জন্য রাখে! আর নিজেও পিউ এর পাশে বসে!
হূর পিউ এর পাশে বসে পাশের টেবিলের এর এক ছেলের সাথে দৃষ্টি বিনিময় করছে। হূর হঠাৎ মুচকি হেসে পাশে তাকাতেই দেখে। বার্গার, স্যান্ডউইচ বাকি সব যেভাবে ছিলো সেভাবেই আছে! পিউ অন্যমনস্ক হয়ে টেবিলের মধ্যেই তাকিয়ে এক দৃষ্টিতে। হূর অবাক হলো। পিউ নিজের সামনে বার্গার রেখে অন্য দিকে তাকিয়ে কিভাবে সম্ভব? হু পিউ এর বার্গার হলেই হলো যা খুশী হয়ে যাক পৃথিবী উল্টো হয়ে যাক। বার্গার থেকে কেউ পিউকে আলাদা করতে পারেনা! সবাই এটা ভেবেই পায় না পিউ বার্গার এর মধ্যে কি এমন মজা পায় খেয়ে যার জন্য পিউ বার্গার পাগল! আর সেই পিউ আজ বার্গার সামনে রেখে অন্যমনস্ক? হাউ? হূর ভেবেই নিলো পিউ এর কিছু হয়েছে! শুধু হয়নি অনেক কিছু হয়েছে। তাই হূর এবার ভালো করে দেখলো পিউকে! চোখ লাল হয়ে আছে! চোখের নিচে কালো হয়ে আছে! ঠোঁট দুটো শুকিয়ে কাঠ! চোখ মুখ শক্ত প্রাণহীন!
হূর নড়েচড়ে বসলো! হূর চিন্তা করে নিলো পিউ এর কি হয়েছে সেটা ডাইরেক্ট জিজ্ঞেস করবে না। কারণ আমরা যখন বুঝতে পারি সামনের মানুষ টির হয়তো মন ভালো নেই অথবা সে কিছু নিয়ে চিন্তিত। তখন সেই মানুষ টিকে হুট করে কিছু জিজ্ঞেস করতে নেই। এতে চিন্তিত মানুষটি ঘাবড়ে যায় মন খুলে কথা বলতে পারে না। তাহলে তারা মনের কথা মনেই চেপে রাখে।
তাই হূর পিউএর সাথে নরমাল ভাবে কথা বলবে ভেবে নিলো ধীরে ধীরে তাকে জিজ্ঞেস করবে। পিউ ঠিকি নিজের প্রবলেম খুলে বলবে! তাই হূর ঐ ছেলেটার দিকে তাকিয়েই পিউকে বললো,
— কিরে খাচ্ছিস না কেন???
পিউ ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
— ইচ্ছে করছে না!
হূর ছোট্ট খাটো ধাক্কা খেলো পিউ এর কথায় তাও বললো,
— তোর ফেভারিট বার্গার এনেছি তো একটু খা?
পিউ এবার বার্গার আর স্যান্ডউইচ এর দিকে তাকিয়ে মন মরা হয়ে বললো,
— কোন খুশীতে বার্গার স্যান্ডউইচ খাওয়াচ্ছিস?
হূর খুশী হলো এই কথা শুনে ৷ কারণ এখন সে পিউ কে বলতে পারবে! এগুলা সে নয় তার বফ কিনে দিয়েছে তার আর পিউ এর জন্য। মানে হচ্ছে হূর এর বফ কত ভালো এটাই পিউকে বুঝানো! হূর বললো,
— এগুলা আমি নয় রুদ্র কিনে দিয়েছে তোকে!
— রুদ্র কে?
হূর পাশের টেবিলে দেখতে ইশারা করে!
পিউ এবার ঘাড় ঘুরিয়ে পাশের টেবিলের তাকায়।রুদ্র নামের ছেলেটা আড্ডা দিচ্ছে তার ফ্রেন্ডদের সাথে। পিউ এর দিকে তাকাচ্ছে না কেউ। কে জানে পিউ এলিয়েন কিনা। কেউ তার আর টিয়ার দিকে তাকায় না ভার্সিটির ভেতরে! সেই জন্যেই আস্ফি ছাড়া পিউ টিয়ার কোন ছেলে বন্ধু নেই।
হূর এর দিকে তাকাতে গিয়ে পিউ এর চোখে চোখ পড়তে রুদ্র দ্রুত সামনে তাকায়। তা দেখে পিউ হূরকে বললো,
— ছেলেটা হিন্দু হূর তোর ওর সাথে রিলেশনে যাওয়া ঠিক হচ্ছেনা!
হূর একটু ভাব দেখিয়ে বললো,
— আরে ছাড়তো এগুলা সিরিয়াস নাকি?? জাস্ট একটু খানা, পিনা, কথা, ঘুরাঘুরি এই তো!
পিউ মলিন হেসে বললো,
— যেদিন সিরিয়াস কিছু হয়ে যাবে তখন বুঝবি না নিজে মেনে নিতে পারবি না রুদ্র। না এই সম্পর্ক ফ্যামিলি মেনে নিবে না সমাজ তখন শুধু মরতে ইচ্ছে করবে!
হূর ভয়ে ঢোগ গিলে বললো,
— নারে সত্যি আমার এমন হবে না..
পিউ এবার রেগেই বললো,
— হবে না তুই কি করে জানিস? হিন্দু ছেলের সাথে প্রেম করবি এটা ভেবেছিস কখনো? বাট করছিস তো নাকি? এরকমই কিছু আমাদের হাতে থাকে না। তাই সময় থাকতে বুঝতে হয় সব কিছু। এই আমাকেই দেখনা। পুরো ভার্সিটি জানে আমি আস্ফিকে দুই চোখে দেখতে পারি না….কিন্তু!
এই টুকু বলেই থামলো পিউ! জোরে নিশ্বাস নিয়ে নিলো সে। হূর শক খেয়ে তাকিয়ে পিউ এর দিকে। পিউ এবার বার্গার হাতে নিয়ে কামোর বসিয়ে খেতে খেতে বললো,
— আমি ও কোনদিন ভাবিনি যাকে দুই চোখে দেখতে পারি না। তাকেই একদিন নিজের থেকে বেশী ভালোবাসবো। হ্যাঁ আই লাভ আস্ফি!
বলেই পিউ ঘনঘন শ্বাস নিয়ে বার্গার খেতে লাগলো। হূর পিউ এর মুখে লাস্ট কথাটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না বেচারি বসে থেকেই কোমায় চলে গেছে মনে হচ্ছে। হূরের মুখে কথা নেই! পিউ বার্গার খেতে খেতে বললো,
— দেখ ভালো কথা সাজেস্ট করছি এখনো সময় আছে সরে আয় ওর থেকে। পড়ে ভালোবেসে ফেললে। আমার মতো অবস্থা হবে। দেখবি তুই ওকে ছাড়া বাচবিনা। কিন্তু তার খবর নাই লাপাত্তা। সে দিব্বি ভালো আছে আর তুই জিন্দা লাশ হয়ে কেদে কেদে বালিশ ভিজাচ্ছিস ঠিক আমার মতো।
এবার হূর যা করলো। পুরো কেনটিনের মানুষ হূর আর পিউ এর দিকে বেকুব এর মতো তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষে। হূর লুঙ্গী ডান্স দিলো পিউকে নিয়ে এক প্রকার! পিউ লজ্জায় শেষ কি বিছিরি একটা অবস্থা!
ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে হাটছে হূর পিউ। হূর পিউ আস্ফিকে ভালোবাসে শুনে! নিজেই নিজেকে ট্রিট দিয়েছে ৫ প্লেট ফুচকা খেয়েছে সে। যদিও টাকা পিউকে দিতে হয়েছে! বেচারি পিউ এর রাগে গা জ্বালা দিচ্ছে। যাকে ভালোবেসে তার এতো কষ্ট। এই ভালোবাসার জন্য এই হতছারিকে ফুচকা খাওয়াতে হচ্ছে। হূর এমন খুশী হচ্ছে যে পিউ আস্ফিকে ভালোবাসে না। হূরের সাথে আস্ফির এর বিয়ে ঠিক করেছে তাই হূরের খুশী ঢোলে পড়ছে একদম! পারলে ঢাকঢোল পিটিয়ে সবাইকে জানাতো…
পিউ রাগে গজগজ করতে করতে হাটছে! হূর বুঝতে পেরে পিউ এর হাত ধরে রাস্তার সাইডে দাড় করালো পিউকে। পিউ হূর এর দিকে রেগে তাকিয়ে বললো,
— আরো ফুচকা খাবি তুই??
হূর হেসে বললো,
— আর খাবো না যা খেয়েছি তার টাকাও দিয়ে দিবো বলেছিই তো!!
পিউ সব কটা দাঁত বের করে বললো,
— জানি কতটা দিবি। কি বলবি বল৷
হূর এবার একদম শান্ত স্বরে বললো,
— পিউ আস্ফি অনেক ভালো ছেলে! তোকে খুব ভালোবাসে! আস্ফির তোর জন্য পাগলামি পুরো ভার্সিটি জানে। অনেক তো আমায় জ্ঞান দিলি এবার নিজের টা বুঝতে শিখ৷ আস্ফির মতন কাউকে আর তুই পাবি না। এখনও সময় আছে নিজের করেনে ওকে। না হলে সত্যি হারিয়ে যাবে দেখবি তাতে তোরি ক্ষতি। আজ আমি আশি তুই ও সাবধানে যাবি। কাল দেখা হচ্ছে..
পিউ এর চোখ ছলছল করছে৷ হূর যেতে নিলেই পিউ জরিয়ে ধরে হূরকে। হেচকি তুলে কাদছে পিউ! হূর পিউকে শান্ত করে রিকশায় তুলে দেয়। তারপর নিজেও নিজের বাড়ীর দিকে রৌনা দেয়! হূর এর গাল বেয়ে পানি পড়ছে৷ বারবার মুছে চলছে হূর তার চোখের পানি। আজ যেনো বেহায়া হয়ে গেছে চোখের পানি গুলো। কিন্তু সে বেহায়া হতে পারেনি বলতে পারেনি আস্ফিকে ভালোবাসি….। পিউ মনে মনে বললো,
— ভালো থেকো আস্ফি। তোমার মনের রানী তোমায় অনেক ভালোবাসে! তুমি খুব ভালো থাকবে আস্ফি খুব ভালো…..
🍁
🍂
দুপুর ১টা,
আস্ফি, মুগ্ধ,দিয়ান আর বাকী গার্ডসরা সাথে কবির আর পোর্টার! লেট নাইট পার্ট শেষ করে সকাল ৬টায় ঘুমিয়েছে এখনো ঘুম ভাঙেনি এই পিয়াক্কার দলের সব গুলির! যেমন কমদামী মদ খেয়ে নেশায় বুদ হয়ে ঘুমাচ্ছে এই ঘুম ভাঙার নয় কতো আরমের ঘুম! সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়! কিন্তু এই আবামের ঘুম বেশীক্ষণ রইলোনা আস্ফির কারণ! পোর্টার তো আর বিয়ার খায়নি না রাত জেগেছে। তাই সে সজাগ! সে কই থেকে এসে আস্ফির কানের কাছে বসে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো। আস্ফি তিড়িৎ গতিতে লাফিয়ে উঠে বসলো! পোর্টারকে ধমক দিয়ে বললো,
— চেচাচ্ছো কেনো পোর্টার আর একটু ঘুমুতে দাও প্লিজ..
উত্তর পোর্টার উঠে দাড়িয়ে লেজ খারা করে দিগুণ জোরে ঘেউ ঘেউ করলো! যার অর্থ,
— আমি তোমার ভাইয়াকে বলে দিবো তোমরা সারা রাত কুকর্ম করেছো।
পোর্টার চলে গেলো প্রায় দৌড়ে! আস্ফি বোকার মতো তাকিয়ে রইলো পোর্টার এর যাওয়ার দিকে! কিন্তু আস্ফি বুঝেছে পোর্টার এর তাদের পার্টি করা পছন্দ হয়নি সে রেগে আছে তাই৷ আস্ফি বিরবির করলো,
— একদম যেমন মালিক তেমনি তার সেয়ানা হুহ!
আস্ফি উঠে দাড়ালো আর ঘুমালো না। মাথা ভীষণ ভার লাগছে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হতে গেলো আস্ফি। আজ একটা কল দিবে ভাবলো তার ঝগড়ার মেশিনটাকে৷ অনেকদিন ঠিকঠাক কিছুই হয়না আস্ফির শুধু পিউ এর সাথে ঝগড়া হয়না বলে। ভেবে দেড়ি করলোনা আস্ফি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে একটা ট্রাউজার, ব্ল্যাক টিশার্ট পড়ে নিয়ে। পুড়ান ফোন হাতে নিলো। এই নাম্বার দিয়ে আর কল দেওয়া যাবেনা। নতুন ফোনে নতুন সিম লাগিয়ে কল লাগালো পিউ এর নাম্বারে রীতিমত পায়চারী করছে রুমে আস্ফি ফোন পিক করছেনা পিউ৷ ভয় হচ্ছে এখন কিছু হলোনা তো পিউ এর….
🍁
পিউ ড্রইং রুমে সোফায় বসে! তার পাশে তার বাবা বসে তিনি মেয়েকে বলছেন,
— কি হয়েছে আমার ঝগড়ার মেশিন টার?? হাসে না কথা বলে না। আগের মতন দৌড়াদৌড়ি করে না! কি হয়েছে বাবাকে বলবিনা?
পিউ এর চোখে আবারো পানি চলে এলো৷ আস্ফিও তাকে ঝগড়ার মেশিন বলেই তো ডাকে! তার বাবাও তাকে এই নামেই ডাকে কিভাবে মিলে গেলো দুজনের থিংকিং? জানে না পিউ। পিউ এর মুখে কথা নাই তাই তার বাবাই আবার বললো,
— পিউ বল না মা কি হয়েছে?
পিউ বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,
— বাবা তুমি কি চাও আমি সর্বক্ষণ হাসি? সর্বক্ষণ কথা বলি বাচালদের মতন? আমি কি ছোট বাচ্চা যে এখনো দৌড়াদৌড়ি করবো??
হতভম্ব হয়ে গেলো পিউ এর বাবা। মেয়ে বলে কি তার মেয়ে এসব করবেনা তো কে করবে। তিনি অবাক হয়ে বলে উঠে,
— কি বলছিস তুই এগুলা তোর মা তোকে কিছু বলেছে?? শোন ঐ ভেঙচি রানীর কথা একদম কানে নিবিনা তুই আমার বাচ্চা রাজকুমারী তুই সাদিন হাসবি, কথা বলবি, দৌড়াদৌড়ি করবি৷ কেউ কিছু বললে বলবি৷ আমার রাজকুমার আমায় এসব করতে বলেছে ব্যস হলো তো? এবার আর রাগ করে থাকিস না মা বাড়ীটাই যে রাগ করে থাকে তাহলে! আমার এমন একদম ভালোলাগেনা বাবার কষ্ট বুঝবিনা?
পিউ বাবার চোখে মুখে নিজের জন্য এতো ভালোবাসা দেখে কেদে দিলো। কাদতে কাদতেই বললো,
— বাবা আমি রাগ করিনি মা কিছুই বলেনি! আমার মা এতো টাও খারাপ নয়। সরি বাবা এভাবে কথা বলার জন্য..
হাসলো একটু পিউ এর বাবা তারপর বললো,
— তাহলে মন খারাপ কেনো আমার রাজকুমারীর?
পিউ আমতা আমতা করে বললো,
— আসলে বাবা টিয়ার জন্য খারাপ লাগছে কিছুদিন যাবত। আন্টি আংকেল খুব অসুস্থ! আর টিয়া কোনও খবর নেই!
পিউ এর বাবা চিন্তিত কণ্ঠে বললো,
— তুমি খাবার নিয়ে যাও তো অদের বাসায়?
— হ্যাঁ বাবা তুমি মা বলার পড়ে প্রতিদিন যাই। আমি না গেলে ওদের কেউ কিছু করেনা। আরাফ তো আমি বললেও খায় না। আন্টি শুধু আমার হাত ধরে কাদে৷ আংকেল একদম নিরব হয়ে গিয়েছে ভেঙে গিয়েছে উনি!
পিউ এর বাবা বুঝলেন টিয়ার বাবা মার কষ্ট তারও তো একটা মেয়ে আছে। বাবা মেয়ের কথার মধ্যে পিউ এর রুম থেকে তার ফোন বাজার শব্দ আসছে। চিন্তিত পিউ এর বাবা বললো,
— চিন্তা করিস না মন খারাপ করলে হবে আল্লাহ কাছে চাও টিয়া যেনো ফিরে আসে সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে। আর যেনো মন খারাপ না দেখি। যাও কল আসছে ধরো গিয়ে দরকারী হতে পারে৷ আর হাসি খুশী দেখতে চাই তোমায়। ঠিক আছে?
পিউ বাবাকে জরিয়ে ধরে বললো,
— আচ্ছা আমার বাবাই তুমি একদম আমায় নিয়ে ভেবো না আমি ঠিক আছি৷।
বলেই পিউ রুমের দিকে ছুটে গেলো যদি আস্ফি ফোন দিয়ে থাকে?? পিউ এর হার্ডবিট দ্রুত চলতে লাগলো কথাটা ভেবেই… সে কিমা পুড়ি বানাবে আজ আস্ফির ফোনের মধ্যেই।
🔥
টিয়া গার্ডেনে দাড়িয়ে আছে৷ বাইরে আসার জন্য স্তব্ধই খবর পাঠিয়েছে টিয়ার কাছে একটা মেয়েকে দিয়ে সকাল সকাল৷ টিয়া তো এই কথা শুনে হেটে না… উঁড়ে এসে পড়ে বাইরে! টিয়া বাইরে এসে বুঝলো সে এখনো আমেরিকাতেই আছে৷ টিয়া মন খুলে শ্বাস নিলো হাত মেয়ে দিয়ে ঘুরলো কিছুক্ষণ যেনো টিয়া বাচ্চা হয়ে গিয়েছে। গার্ডেন ঘুরে ঘুরে দেখলো টিয়া। কিন্তু ঘুরে ঘুরে দেখে যেমন মন ভরছেনা টিয়ার উঁড়ে দেখতে পারলে ভালো লাগতো। আপসোস হচ্ছে টিয়ার। তার নাম টিয়া? কিন্তু টিয়ার পাখির মতো দুইটা ডানা হলোনা কেনো? কেনো? কেনো? তবুও আজ টিয়ার নিজেকে ঐ ডেনিয়ালের বন্দী খাচা থেকে মুক্ত মুক্ত লাগছে! এতেই টিয়া অনেকটা রিলেক্স ফিল করছে..
টিয়ার গার্ডেনে এতো ছটফট ভাব স্তব্ধ তার রুমের বারান্দায় দাড়িয়ে দেখছে সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে। স্তব্ধের হাতে হট কফি যার থেকে ধোঁয়া উড়ছে! স্তব্ধ কফিতে বারবার চুমুক লাগাচ্ছে৷ স্তব্ধ বুঝতে পারছে টিয়া নিজেকে মুক্ত ভাবছে, অনেক দিন পড় এরকম বাইরে বেরিয়েছে!
টিয়া যতই নিজেকে মুক্ত ভাবুক..কিন্তু বিপদ এখনো কাটেনি টিয়ার। কায়রা ধরা পড়েছে ডেনিয়ালের হাতে এটা ১০০% সত্যি৷ আর এটাই বিপদে ফেলতে পারে টিয়াকে আবারো! ঐদিন বারের সেই মেয়েটা কায়রাই ছিলো! কায়রার জন্যই আজ টিয়া এখানে। স্তব্ধকে কায়রা হেল্প করেছে টিয়াকে ডেনিয়াল এর থেকে বাঁচাতে। এখন কায়রা যদি সব বলে দেয় ডেনিয়ালকে তো সব শেষ হয়ে যাবে। কারণ কায়রা স্তব্ধের বাড়ীটা ভালো করেই চিনে! ঐদিন কায়রা স্তব্ধের সাথে বারে কথা বলতে না পারেয়৷ গাড়ি নিয়ে পিছু এসে এই বাড়ী চিনে যায়… আর ভাবলো না স্তব্ধ!
স্তব্ধ বারান্দায় থেকেই গার্ডকে ইশারা করে টিয়াকে নিয়ে ভেতরে যেতে! গার্ড স্তব্ধের কথা মতো টিয়াকে নিয়ে ভিতরে চলে যায়। টিয়ার মুখটা একটু হয়ে যায়। তার যেতে ইচ্ছে করছে না কতদিন পড় সে বাইরে এলো আর এখুনি চলে যেতে হচ্ছে৷
আজ স্তব্ধ টিয়াকে নিয়ে এবাড়ী থেকে চলে যাবে। তানা হলে ডেনিয়াল যে কোন সময় টিয়া স্তব্ধের উপর হামলা করতে পারে তার ঠিক নেই৷
স্তব্ধ এখন টিয়াকে নিয়ে বিডিতেও ব্যাক করতে পারবেনা! ডেনিয়াল এর গার্ডরা নজর রাখছে এয়ারপোর্ট এ তাই ধীরে সুস্থে যা করার করবে স্তব্ধ…
স্তব্ধ টিয়ার সামনে কালকে রাতের পরে আর যায়নি৷ কিন্তু এখন যেতে হবে৷ স্তব্ধ একটা ব্যাগ নিয়ে টিয়ার রুম গেলো! টিয়া রুমে নেই! স্তব্ধ রুমে চোখ বুলালো৷ এতো সুন্দর গুছানো ছিলো কাল রাতেও রুমটা। আর এখন কাউয়ার বাসা মনে হচ্ছে স্তব্ধের৷ যা স্তব্ধের একটু পছন্দ হলো না। অগোছালো..
রুম দেখতে ব্যস্ত স্তব্ধের পিছনে দাড়িয়ে টিয়া বললো,
— আমরা কবে বিডিতে ফিরছি??
স্তব্ধের ত্যাড়া জবাব,
— কোনদিন না…
টিয়ার মাথায় বাজ পড়লো সে কেদেও ফেললো ছটফট করতে করতে বললো,
— মানে?? কি বলছেন আপনি?? আমি কেনো এখানে থাকবো?? আমি বাসায় যাবো এখুনি!! প্লিজ…
স্তব্ধ গম্ভীর গলায় বললো,
— প্রত্যয় এর কথা আমি শুনতে বলেছিলাম ?? প্লানিং করে বিয়ের অভিনয় করতে আমি বলেছিলাম??
টিয়া ভড়খে গেলো স্তব্ধের মুখে এই কথা শুনে! তার মানে স্তব্ধ সব জানে? টিয়া এবার ভয়ে ফুপিয়ে কেদে দিয়ে বললো,
— প্লিজ স্তব্ধ ভুল হয়ে গেছে। প্লিজ আমায় শুধু বাড়ী দিয়ে আসুন আর কোনদিন আপনার সামনেও আসবোনা!
স্তব্ধ ওর কপালের রগ মনে হয় ফুলে উঠলো টিয়ার কথা শুনে। স্তব্ধ এতো সময় সামনে তাকিয়ে কথা বলছিলো টিয়া তার পিছনে ছিলো। স্তব্ধ টিয়ার দিকে ঘুরে দাড়ালো। রক্তচক্ষু নিয়ে৷ টিয়া স্তব্ধের এই রূপ দেখে পিছাতে লাগলো আর স্তব্ধ টিয়ার দিকে এগুতে!
চলবে!
[ যাদের বড় গল্প পছন্দ না এই গল্প পড়া ছেরে দিন। তাড়াতাড়ি শেষ করুন বড় গল্প ভালোলাগেনা এসব বলে আমার লেখার উৎসাহ নষ্ট করবেন না। আপনার বড় গল্প ভালোলাগেনা সেটা আপনার প্রবলেম। আমি বড় লিখিতে পারি আমার কোন প্রবলেম নেই। এই গল্পের কাহিনী রহশ্য কিছুইতো বের করিনি এখনো… যাইহোক এই গল্প ৪০ পর্ব হবে। আর আমার লেখা এখন অব্ধি সব থেকে বড় গল্প হবে এটা 😋 যারা বড় গল্প পছন্দ করো কংগ্রেস মি 😷😇 বিরাট বড় কাজ করছি 🙆 আর হ্যাঁ কাল শুক্রবার আমার ছুটি মানে গল্প দিবোনা টাটা 😴]