#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 32
টিয়া ফিরে যায় আবার সে দিনে যেদিন স্তব্ধ ঘুমিয়েছিলো তার রুমে। কিন্তু নিজে ঘুম থেকে উঠে টিয়া স্তব্ধকে দেখতে পায়নি। বাকি সময়টা টিয়া নানান কিছু ভেবেই কাটিয়ে দেয়। এক সময় অন্ধকার হয়ে পৃথিবী জানান দেয় রাত হয়েছে! অন্ধকারে অতলে ডুব দেয় পৃথিবী! রাতের তীব্রতার সাথে টিয়া এক সময় আবার ঘুমিয়ে পরে …!
টিয়া ঘুম থেকে ইঠে দ্বিতীয়বারের জন্য তার জীবন বদলানো দিনটা শুভ একটা দিন বলেই ভেবেছিলো….। কারণ হয়তো এতো কষ্টের পর ও ওর প্রিয় স্তব্ধকে অন্তত পাবে! কেননা স্তব্ধ তো বলেই দিয়েছিলো কাল ওর স্তব্ধকে বিয়ে করতেই হবে। রাতটা কেটে পরদিনটা চলেই আসে।
টিয়ার দ্বিধাদ্বন্দ্ব কন স্তব্ধকে পাবে সেই খুশিতে আটকে থাকতে পারেনি। অতীত ভাবলে ও বুঝে উঠে যায় না কি করবে ও। বিয়েকি আসলেই করা ঠিক হবে স্তব্ধকে? এক সময় ওর খুতখুত মন যদিও সব দিক ভেবে স্তব্ধকে বিয়ে করবেনাই ঠিক করেছিলো। কিন্তু তাও সে জানতো স্তব্ধ যেহেতু বলেছে তাকে বিয়ে করবে মানে করবেই। তাই সে একদিক থেকে খুশীই ছিলো। সত্যি সে স্তব্ধকে হাসব্যান্ড হিসেবে পেতে চলেছে তার ভালোবাসা পরিপূর্ণ হতে চলেছে। হয়তো এই বিয়ে হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে তাদের সকল দুরত্ব শেষ হয়ে যাবে ভেবে টিয়া মনে মনে অনেকটা শান্তি অনুভব করে সেদিন ঘুম থেকে উঠেই এসব ভেবে। কিন্তু সেটা স্তব্ধকে বুঝতে দেয়নি টিয়া।
স্তব্ধ সকাল সকালি তার রুমে ঢুকে পরে নক না করেই। টিয়া তখনও বেডে কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে সুখ দুঃখের ভাবনায় বিভোর। স্তব্ধ রুমে ঢুকে টিয়াকে শুয়ে শুয়ে কিছু ভাবতে দেখে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ভ্রুকুটি করে তাকিয়ে ডেকে উঠে,
— ” টিয়া?? ”
টিয়া হঠাৎ স্তব্ধের কঠিন গলার স্বর পেয়ে চকিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে যায়! স্তব্ধের দিকে তাকিয়ে বলে,
— ” কিছু বলবেন?? ”
— ” হ্যাঁ! ”
টিয়া ধীরে জবাব দিলো,
— ” বলুন? ”
স্তব্ধ ধীরে এগিয়ে আসে টিয়া একদম কাছে। টিয়া মাথা নিচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে স্তব্ধের এতো কাছে আসা তাকে বরাবরের মতোই হীম করে দিয়েছে। স্তব্ধ ডান হাতের সাহায্যে টিয়ার মুখটা উচু করে ধরে! স্তব্ধের শান্ত চোখ হঠাৎ চঞ্চল হয়ে উঠে! ও টিয়ার মিষ্টিমুখটা মুগ্ধতার সাথে একদৃষ্টিতে কিছুটা সময় নিয়ে দেখে! তারপর হুট করে একটন মায়া নিয়ে টিয়ার কপালে একটা উষ্ণতায় ভরা চুমু খায়। যেন ওটা চুমু ছিলো না স্তব্ধতার জীবনের সব মায়া টিয়ার কপালে ঢেলে দিতে চেষ্টা করছিলো! টিয়া চোখ খিঁচে বন্ধ করে রাখে। স্তব্ধ বেশ সময় নিয়ে চুমু দিয়ে কপাল থেকে মুখ সরিয়ে আস্তে করে টিয়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে নরম স্বরে বলে উঠে,
— ” ভালোবাসি! খুব বেশি! ”
টিয়া বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে যায়! চোখ খুলে বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকে স্তব্ধের মুখ পানে। এই প্রথম এই প্রথম বুঝি এত ভালোবাসায় ভরিয়ে ভালোবাসি বললো স্তব্ধ! এই বুঝি টিয়া আজ মরেও শান্তি। ওর চোখ ছলছল করছে খুশিতে! স্তব্ধ কান থেকে মুখ সরিয়ে টিয়ার এমন বিস্ময় ভরা মুখ দেখে চোখের পানি খুব আলতো হাতে মুছে দিয়ে বাঁকা হেসে বলল,
— ” কাবার্ডে একটি প্যাকেট আছে। ঠিক ১১ টার মধ্যে রেডি হয়ে থাকবে। আই ওয়ান্ট মাই ব্রাইড পার্ফেক্ট। গড ইট? ”
টিয়া বিস্ময় কাটিয়ে বিয়ে করবে না! এ জাতির কিছু ভাষা প্রয়োগ করবে! তার আগেই স্তব্ধ রসিকতার সাথে বলে বসে,
— ” আই নো তুমি আমাকে বিয়ে করতে পাগল হয়ে আছো। বাট ডিয়ার হবু বৌ আমার ‘১১’ টার আগে তো বিয়ে করা সম্ভব নয়! আই আ্যম সো স্যরি! একটু ওয়েট তো করতেই হবে আমার খাঁচায় বন্দি টিয়া পাখি!”
এটুকু বলেই টিয়ার হঠাৎ লাল হয়ে উঠা গালে স্তব্ধ ঝুকে পরে কিছু চুমু খেলো! তারপর ওর দিকে তাকিয়ে সেই বিখ্যাত বাঁকা হাসিটা দিয়ে বলল,
— ” লিসেন আর ড্রামা করতে হবে না। এন্ড ওয়ান মোর থিংক ভালোবাসি বলার রিটার্ন জবাব কিন্তু রাতে শুনবো বি রেডি মাই লেডি!”
সব এক নাগারে বলে স্তব্ধ হন হন করে চলে গেলো। টিয়া বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে অপলক স্তব্ধের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো কী কী করে গেলো গম্ভীর শান্ত ছেলেটা হুট করে। স্তব্ধে চোখের দৃষ্টি আজ এতটাই ভিন্ন ছিলো টিয়া তাকাতেই পারছিলোনা ওর মুখ পানে। কিছু বলবে দূর! আর ওর কথা গুলো…ওই মুহূর্তটাভভাবতেই ওর গাঁ কাঁপছে। বিস্ময় ভাব কিছুটা কাটতে ও বিছানায় ধপ করে বসে পরলো! বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরে বিড়বিড়িয়ে বললো,
— ” এই ছেলেটার ঠিক কতগুলো রূপ আরো দেখার বাকি আছে? আর কত শক দিবে আমাকে! আল্লাহ সেভ মি! এত রোমান্টিক হতে কে বলেছে ওকে? এই গুন্ডা হ্যান্ডসাম টা গম্ভীরমুখেই ঠিক আছে! ওফফ জান যাচ্ছিলো আমার! ”
কথাটা বলেই টিয়া ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ১০ টা অলরেডি বাজে! আজব স্তব্ধ তাকে আগে কেন ডাকলোনা? ১ ঘণ্টায় বৌ সাজা যায়? বিয়ে তো টিয়া একবারি করবে স্তব্ধ সব মাটি করে দিলো! টিয়ার রেডি হতে চলে গেলো।
যখন স্তব্ধের দেওয়া হেভি লেহেঙ্গাটা পরে আয়নায় দেখছিলো নিজেকে। তখন সব থেকে মিস ও পিউকে করলো। এখন ও থাকলে নিশ্চয়ই ওকে লাল টুকটুকে বৌ সাজিয়ে দিতো? ইশ কতকিছুই না মিস হয়ে গেলো ওর বিয়েতে! কেউ আনন্দ টুকু পর্যন্ত শেয়ার করবার নেই ওর আজ। সব তো ওর জন্যেই হয়েছে কি হতো যদি একটু বিশ্বাস ও স্তব্ধ ওর প্রিয় মানুষটার উপর করতো? সব ওর বাড়াবাড়ির ফল! সব ওর দ্বিধা ভরা মনের ফল। যা ও হারেহারে টের পাচ্ছে! ভেবেই চোখে জলেরা টলমল করতে লাগলো! ঠিক তখনি স্তব্ধ পাঞ্জাবীর হাতা ফোল্ড করতে করতে রুমে ঢুকলো। চঞ্চল এলোমেলো দৃষ্টি থমকে গেলো ওর টিয়াকে দেখে! এত স্নিগ্ধ, এত স্নিগ্ধ নববধূ স্তব্ধ আর একটি দেখেনি! এই মেয়েটা.. এই মেয়েটাই তার বৌ হবে কিছু সময় বাদে? ভেবেই বুকে হীমশিতল হাওয়া বয়ে গেলো ওর! ধীরে ধীরে টিয়ার দিকে এগুলো ও। টিয়ার নববধূবেশে সাজ বলতে স্তব্ধের পছন্দ করা ডার্ক রেড কালারের ডিজাইনার লেহেঙ্গা! সাথে সব গোল্ড জুয়েলেরি চুজ করেছে স্তব্ধ! বেশ হেভি সব গুলো। টিয়ার ফর্সা গায়ে গলার হার,চুরি,কানের দুল,সব থেকে সুন্দর সিম্পল টিকলিটা একদম চিকচিক করছে! সব কিছু যেন আঙুল তুলে চিৎকার করে বলছে। টিয়ার আর কোনও সজ্জার প্রয়োজন নেই স্তব্ধ এটুকুতেই ঘায়েল!
সত্যি স্তব্ধ ঘায়েল এত স্নিগ্ধ নববধূ দেখে ও ঘায়েল। মনে হচ্ছে এত স্নিগ্ধ টিয়ার রূপ হাজার বছর দেখলেও স্তব্ধের তৃষ্ণা মিটবেনা! টিয়া বিড়াল চঞ্চল চোখগুলোতে মুগ্ধতার আভা স্তব্ধ আজকেও সাদা পাঞ্জাবী পরেছে! আচ্ছা স্তব্ধকি জানে তাকে এই সিম্পল সাদা পাঞ্জাবীতে কতটা ভয়ংকর লাগে? যদি এই বিষয় টা স্তব্ধ সামান্য আঁচ ও করতে পারতো টিয়ার রূঢ় ধারণা স্তব্ধ কখনওই তবে হোয়াইট পরতো না! স্তব্ধ টিয়া সামনে দাঁড়াতেই টিয়া হাসি মুখে বলল,
— ” সাদা পাঞ্জাবীতে এত ভয়ংকর লাগে ছেলেদের? ”
স্তব্ধ ম্লানমুখে বলল,
— ” খুব বাজে লাগছে খুলে ফেলবো? ”
টিয়া চমকে গেলো,
— ” একদম না আপনি আমাকে হাজার বার বিয়ে করবেন বুঝলেন? আর হাজার বার এই সাদা পাঞ্জাবীই পরে আসবেন! অন্যকিছু পরে গেলো কিন্তু বৌ ছাড়া বরযাত্রী ফেরত! কেন যানেন? কারণ সাদা পবিত্র! এবং আপনাকে সাদায় ভয়ংকর পবিত্র ও সুন্দর লাগে! ”
স্তব্ধ এবার বিষয়টা বুঝলো! ও হেসে দিলো ওর বৌটা ওকে এভাবে দেখতে পছন্দ করে! নিশ্চয়ই ওকে অনেক ফলো করেছে মেয়েটা। কারণ স্তব্ধ হোয়াইট পাঞ্জাবী ছাড়া কখনো অন্য কালার পাঞ্জাবী পরে না! সবাই ওকে বলতো সাদাতে কি আছে? সবাই প্রশ্ন করলেও সাদার গভীরতা ধরতে পারেনি টিয়া পেরেছে! হয়তো ওর অর্ধাঙ্গিনী বলেই পেরেছে! কিন্তু ও মেয়েটাকে অতীতে খুব কষ্ট দিয়েছে বুঝেনি এই মেয়েটাই ওর সর্বোচ্চ দখল করে বসে থাকবে আর ও কিছুই করতে পারবেনা! আর এখন এই মেয়েটার কষ্টেই ও পুড়ে ছারখার হয়ে যায়! জীবন কত পরিবর্তনশীল স্তব্ধ সেটাও হারে হারে টের পাচ্ছে। টিয়ার প্রতি ওর ডেস্পারেটনেস দেখে ও নিজেই অবাক হয়ে যায়। স্তব্ধের হাসি মুখ দেখে টিয়া ওর বুকে আলতো ভাবে একটা হাত রাখলো! প্রচন্ড জোরে হার্ডবিট করছে! টিয়া চোখ তুলে অবাক চোখে স্তব্ধের দিকে তাকাবে সেই সময় ও পেলোনা স্তব্ধ ওর শীতল হাতে টিয়াকে দুহাতে ঝাপটে ধরলো নিজের বাহুডোরে! চোখ বুঝে ঠোঁট ছোঁয়ালো টিয়ার কপালে! টিয়া নিজেও চোখ বন্ধ করে উপভোগ করছিল স্তব্ধের উষ্ণ স্পর্শ গুলো! ও প্রে করছে সময়টা জাস্ট এখানে থেমে যাক…কেউ আর অদের মধ্যে বাধা সৃষ্টি না করুক। কিন্তু ভাগ্যে হয়তো অন্যকিছুই ছিলো যা টিয়া তখনও আঁচ করতে পারেনি! হঠাৎ টিয়া চমকে গেলো স্তব্ধর শীতল কণ্ঠে ও চোখ বন্ধ অবস্থায় টিয়াকে ঝাপটে ধরেই মিহি স্বরে বলছে,
— ” আই আ্যম স্যরি টিয়া পাখি এটাই আমার দেওয়া লাস্ট কষ্ট তোমাকে। ক্ষমা করে দিও আমাকে… প্লিজ, প্লিজ..আই আ্যম সো হেল্পলেস! ”
স্তব্ধের কথা টিয়া পুরো পুরি স্পষ্ট শুনতে পায়নি। শুধু ক্ষমা করে দিও সেটুকুই ওর কানে গিয়েছে তাতেই হতভম্ব টিয়া কিছু বলবে সেই সুযোগ দেয়নি স্তব্ধ ওকে টিয়ার হাত ধরে টেনে ওকে নিচে নিয়ে যাওয়া হয়! স্তব্ধের প্ল্যান ছিলো বিয়েটা দূরে কোথাও হবে কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি! একদম সাদামাটা ভাবে বিয়েটা ঐ বাসাতেই হয় যেখানে স্তব্ধ টিয়া ছিলো! বিয়ের সময় টিয়া প্রচন্ড ভয়ে থাকলেও স্তব্ধ হাসিখুশিই ছিলো অস্বাভাবিক ভাবে। অস্বাভাবিক বলার কারণ সমস্তটা জীবন গম্ভীর মুখো ছেলেটা আজ এত হাসিখুশী এটা নিশ্চয়ই স্বাভাবিকতার লক্ষ্মণ না? অন্তত টিয়ার কাছে! কারণ টিয়া কখনও স্তব্ধকে হাসতে দেখেনি…টিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলল! এই ভেবে স্তব্ধ অন্যসব মানুষের মতো নরমাল নয় কেন?
বেশি সময় পেলোনা টিয়া স্তব্ধকে নিয়ে ভাববার। কারণ টিয়াকে অবাক করে দিয়ে বিয়ে শেষ হতেই স্তব্ধ ওকে নিয়ে গাড়ীতে বসে পরে এবং খুব ভয়ংকর ফুল স্পীডে ড্রাইভ করতে থাকে! যেন কেউ ওর পিছু নিচ্ছে! স্তব্ধের হাসিখুশী শীতল ঠাণ্ডা মুখটা গাড়িতে উঠতেই যেন রেগে আগুনের মতো লাল হয়ে গিয়েছে। ফর্সা কপালের রোগ গুলো যেন ধাউ ধাউ জ্বলছে! বিস্ময় হতভম্ব টিয়ার তখন স্তব্ধের হাবভাব দেখে কি হলো কে জানে? ও কাঁদো কাঁদো গলায় স্তব্ধের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে তখন একটা কথাই বলে উঠে,
— ” স্তব্ধ আপনাকে এভাবে পেয়ে হারাতে চাইনা আমি! প্লিজ! আর কষ্ট সহ্য করতে পারবোনা আমি প্লিজ কিছু করুণ! আর ঝামেলা চাইনা আমি! প্লিজ নিজের রাগ কমান প্লিজ! ”
স্তব্ধের অশান্ত মনটা তখন এতোই শান্ত হলো টিয়ার কথা শুনে ও ড্রইভিং করা বন্ধ করে দিলো কষে ব্রেক করলো গাড়ি রাস্তায় ঠিক মাঝখানে! শহর ছাড়িয়ে রাস্তাটা হওয়ায় কোনও সমস্যা সৃষ্টি হয়নি! না আশেপাশে কোনো বাড়ি ও চোখে পরলো টিয়ার ও শুধু লম্বা চিকন চিকন গাছ দেখতে পেলো! জায়গাটা কেমন যেন ঘোলাটে অন্ধকার এবং খুব শান্ত পরিবেশ! কিন্তু গাড়ির ভেতর দুটি মানুষের মনে ঝড় বয়ে যাচ্ছে শান্ত পরিবেশ টা যেন টিয়ার আরো ভয়ংকর লাগছে! ও আশেপাশে চোখ বুলিয়ে স্তব্ধকে কিছু বলবে তার আগেই স্তব্ধ টিয়াকে হ্যাঁচকা টানে কাছে টেনে নিলো! এবং কোলে বসিয়ে একহাতে জড়িয়ে ধরলো ওকে শক্ত করে! দৃষ্টি সামনে রেখে শক্ত কণ্ঠে বলল,
” আমার সাথে থাকতে হলে তোমাকে কিছু সেক্রিফাইজ করতে হবে টিয়া…..! ”
অতীতের কাহিনী পুরোপুরি কল্পনা করতে পারলোনা টিয়া…
স্তব্ধের কথাগুলো স্পষ্ট স্মৃতি পাতায় বাজার আগেই টিয়ার কাধে কেউ স্পর্শ করলো! টিয়া চকিতে পিছনে ফিরে তাকিয়ে পেছাতে চেষ্টা করলো! কিন্তু পারলোনা কারণ ওর পিছনে বিশাল আয়না! ও ভীষণ ভয়ে ভয়ে সামনের ব্যাক্তিটিকে দেখে কিছুটা ধাতস্থ হলো! সামনের ব্যাক্তি বুঝতে পারলো টিয়া ভয় পেয়েছে তাই বলল,
–” ভয় পাবে না ইটস মি টনি!
টিয়া আতংকিত কণ্ঠে বলল,
–” তুমি এখানে! ডেনিয়াল মেরে ফেলবে তোমাকে চলে যাও প্লিজ!”
টনি টিয়ার কথায় পাত্তা না দিয়ে বলল,
–” স্যার কী বলেছে মনে আছে? ”
টিয়া শুধু মাথা দুলালো বলল,
–” স্তব্ধ…! ও কি বলেছিল তুমি কী করে যানো?”
টনি টিয়াকে পুরোটুকু বলতে না দিয়ে বলল,
–” আমি জানিনা কিছু তোমাকে কী বলেছিলো স্যার! কিন্তু সে এমন কিছু একটা হবে জানতেন। তাই তোমাকে এখান থেকে বের করার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন!”
টিয়া বিস্ময়ের সাথে জবাব দিলো,
–” আমি এখান থেকে সত্যি বেরুতে পারবো?”
টনি রহস্যময় হাসলো বলল,
–” তোমার ভালোবাসায় কতটুকু জোর সেটাতে এখনো অনেক কিছু ডিপেন্ড করে। সেই সাথে এখান থেকে বেরুতে পারবে কি পারবেনা সত্যি মিথ্যে প্রমান করবে! এখন যেটা বলতে এখানে এত এত রিস্ক নিয়ে আসা সেটা আগে বলি। ডেনিয়াল তোমাকে এক্সট্রা করে ড্রিংকস বা পানি কিছু খেতে দিলে তুমি যেভাবেই পারো সেটা খাবে না…. ”
টনি এতটুকু বলতেই নিচ থেকে শব্দ হলো টনি এক সেকেন্ড আর দাঁড়ালো না! টিয়া বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তাকিয়ে রইলো টনির যাওয়ার দিকে। কিছু ক্ষণ পর ও বুঝলো ওর রুমেই কেউ আসছে! ও দ্রুত ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো! শাওয়ার নিতে নিতে ও শুধু এটাই ভাবলো কি হতে যাচ্ছে? ও সত্যি ডেনিয়ালের হাত থেকে ছাড়া আদৌও পাবে? ও তো আশাই ছেড়ে দিয়েছিলো ও আর কোনদিন বাংলাদেশ যেতে পারবে! যেখানে স্তব্ধ পারেনি সেখানে টনি পারবে ওকে বাংলাদেশ পৌঁছে দিতে? অসম্ভব!
টিয়া সেই ঘুরে ফিরে স্তব্ধকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে শাওয়ার শেষ করে রুমে ঢুকলো। এলোমেলো বেখেয়ালি দৃষ্টি বেডে পরতেই টনক নড়ে ওঠলো। ডেনিয়াল বেডে বসে আছে পায়ের উপর পা তুলে ফোনে মুখ গুজে।পাশেই টনি দাঁড়িয়ে। টিয়া ভয়ে কাঁপতে লাগলো। ডেনিয়াল কি তবে যেনে গেলো টনি ওর সাথে দেখা করেছে? ওর ভয়ার্ত মন বারবার বলছে ডেনিয়াল এখনি ওর সামনে টনিকে স্তব্ধের মতো রকতাক্ত করবে! তাহলে টিয়াকে কে হেল্প করবে এই নরক থেকে বের হতে! ক্রন্দিত টিয়া ভয়ে টনির দিকে তাকালো। টনি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে! ও চোখ ঘুরিয়ে ডেনিয়ালের দিকে তাকালো। ঠিক তখনি ফোন রেখে ডেনিয়াল টিয়ার দিকে ওর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুড়লো। আর টিয়ার ভয়, কষ্ট, রাগ,দুঃখ সব ছাপিয়ে ডেনিয়াল তাকে এমন কিছু শোনাল যা শোনার জন্য টিয়া মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা কখনও না!
চলবে!
নিচে নতুন আইডির লিংক দেওয়া হল আলোয় অন্ধকার অন্ধকার গল্পের নতুন পর্ব আর নতুন সব গল্প ঐ আইডি তেই পাবেন এড হয়ে নিন যারা আমার গল্প পরতে চান!
https://www.facebook.com/profile.php?id=100067782351786
“