উত্তরণ পর্ব-২৮

0
778

#উত্তরণ
পর্ব_২৮

উজান: এতো বাড়াবাড়ির দরকার কি মিস মিত্র? ফোন টা দিয়ে দিলে আপনার পক্ষেই ভালো.

হিয়া: ভালো? কিরকম ভালো?

উজান: আপনি যদি প্রাণে বেঁচে যান সেটা আপনার পক্ষে ভালো নয় কি?

হিয়া: দেখুন এটা আমি বুঝতে পারছি যে যারা আমাকে মারতে চাইছে আপনি তাদের দলে নেই. তাদের দলে হলে অনেকদিন আগেই আমাকে মেরে ফেলতে পারতেন, সুযোগ তো কম ছিলনা আপনার হাতে. বরং বহুবার বাঁচিয়েছেন. এখন প্রশ্ন হলো আপনি কোন দলে?

উজান এবার হিয়ার উল্টো দিকের চেয়ারে বসে মাস্কটা খোলে.

উজান: যদি কথা শোনেন তাহলে আপনার দলে, আর কথা না শুনলে۔۔۔۔۔۔

উজানের না বলা কথাগুলো ওর চোখে পড়ে ফেলতে হিয়ার সময় লাগেনা.

হিয়া: মানে বলতে চাইছেন বন্ধুত্বের বিনিময়ে ক্যাপ্টেন কাশ্যপের জিনিসটা আপনাকে দিতে হবে۔۔۔۔তাই তো?

উজান: সব সম্পর্কের মধ্যেই বিনিময় প্রথা চলে মিস মিত্র۔۔ Sometimes it is cost, sometimes it is kind…

হিয়া: আপনি সেটা পাওয়ার উপযুক্ত কিনা না জেনেই বিনিময়ে রাজি হয়ে যাবো?

উজান: আর আমি উপযুক্ত কিনা সেটার বিচার আপনি করবেন? নিজেকে কি ভাবেন আপনি?

হিয়া: আচ্ছা আপনাকে জিনিস টা দিলে আপনি আমাকে যেতে দেবেন? আপনাদের ব্যাপারে জেনে গেছি জেনেও?

উজান: প্রথমত আপনি আমাদের ব্যাপারে কিছুই জানেন না, যেটুকু দেখছেন তাকে জানা বলেনা মিস মিত্র. দ্বিতীয়ত, আপনি জিনিসটা দিলেও আপনাকে ছেড়ে দিতে পারবোনা. এখানেই থাকতে হবে আপনাকে.

হিয়া: অসাধারন, আমাকে বন্দি রেখে আমাকে বাঁচাবেন? যত্তসব۔۔۔

উজান এবার হিয়ার পাশে এসে দাঁড়ায়۔۔

উজান: এখানের বন্দি দশাই একমাত্র আপনাকে বাঁচাতে পারবে মিস মিত্র.

হিয়া:۔۔۔۔۔

উজান: দেখুন, ভাই ওটা আপনাকে দিয়েছিলো যাতে আপনি ঠিক হাতে ওটা তুলে দিতে পারেন. এখনো সময় আছে, এরপর দেরি হয়ে গেলে আর কোনো লাভ হবেনা ওই কোড টা পেয়ে.

হিয়া উজানের কথা শুনে চমকে ওঠে, তড়িৎ গতিতে উঠে উজানের মুখোমুখি দাঁড়ায়۔۔۔

হিয়া: ক۔۔۔۔কি বললেন আপনি? ভাই?

উজান: হ্যাঁ۔۔۔ আপনার۔۔

হিয়া কঠিন গলায় : না۔۔۔۔ আপনার

উজান হিয়ার সামনে থেকে একটু সরে আসে, স্থির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় হিয়ার উপর۔۔

হিয়া: আপনিই۔۔۔۔ আপনিই ক্যাপ্টেন কাশ্যপের ভাই? ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট? ওহ মাই গড۔۔۔ আমি তো আপনাকেই খুঁজছি۔۔۔ আচ্ছা আপনি কি পাগল? এতদিন পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলেননি? শুধু কোড কোড করে মাথা খারাপ করে দিলেন۔۔۔(হিয়া দুই হাতে মাথা চেপে চেয়ারে বসে পরে)

উজান নিজের বিস্ময় কে কোনোক্রমে সামলে বলে: আমাকে খুঁজছিলেন মানে?

হিয়া: ক্যাপ্টেন কাশ্যপের সবচেয়ে কাছের মানুষ, ভরসার মানুষ ছিলেন আপনি. আপনি ওনার যতটা কাছের ছিলেন মিসেস কাশ্যপও ছিলেন না. উনি বলেছিলেন ওনার কিছু হলে আপনাকে জানাতে. জিজ্ঞাসা করেছিলাম কি ভাবে? উনি বলেছিলেন ওনার ভাই ই আমাকে খুঁজে নেবে۔۔۔۔۔ হি ওয়াজ অবসোলুটলি রাইট.

উজান বুঝতে পারে ও ক্রমশ আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছে. নিজের আবেগ কে বহু কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করলেও ওর চোখে তার প্রকাশ আটকাতে পারেনা۔۔۔

হিয়া: এতো নাটক না করে সত্যিটা বললেই তো ঝামেলা মিটে যেত. উফ۔۔۔۔۔ ইউ আর জাস্ট ডিসগাস্টিং ক্যাপ্টেন উজান চ্যাটার্জী۔۔

উজান রেগে যায় : হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ডিসগাস্টিং? আমি কি করে জানবো যে আপনি আমাকে খুঁজছিলেন? আমাদের মধ্যে এই নিয়ে কোনোদিন কথা হয়েছে? ইডিয়ট একটা۔۔ And by the way, currently the position that I held in my job is Wing Commander not Flight Lieutenant (উজান কোমরে হাত দিয়ে উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকে)

এবার হিয়া হেসে ফেলে. আবার সেই পুরোনো উজানকে বেশ লাগে ওর. পুরোনো ভালো লাগাটা আবার নতুন করে ফিরে আসে. কয়েকটা দিন পর আজ হিয়ার নিজেকে খুব রিলাক্স লাগে. অনেক খারাপ লাগা, অনিশ্চয়তা মুহূর্তে ঘুচে যায় আজ. বাইরের আকাশটা যদিও হিয়ার অগোচরে, তাও হিয়া জানে আজ সেটা নীল۔۔۔۔

দেখা যাক এই মিষ্টি-মধুর খুনশুটির মাঝেই—কি রয়েছে নতুন কিছুর পুর্বাভাস—!!

(আজকের পর্ব কেমন লাগলো–পাঠকগণ অবশ্যই মনে করে কমেন্ট করে জানাবেন🙂🙂🙂)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here