উনত্রিশ_ফেব্রুয়ারি #পর্বঃ চার(০৪)

0
408

#উনত্রিশ_ফেব্রুয়ারি
#পর্বঃ চার(০৪)

রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের অপজিট বিল্ডিংয়ের একটা জনপ্রিয় কফিশপে বসে আছে সাজু ভাই। সাজুর সামনে বসে আছে সাইমুন। সাইমুনের চোখ লাল টকটক করছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে সারারাত একফোঁটা ঘুম হয়নি। নিজের ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে গেলে মানুষ হারানোর কষ্ট সহজে কি মেনে নিতে পারে?

– থানায় পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে?
নীরবতা ভেঙ্গে প্রশ্ন করলো সাজু ভাই।

– চট্টগ্রাম থেকে ফিরে সরাসরি বাসায় যাই। সেখান থেকে থানায় গেছিলাম। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমার নুড়িকে ওরা হত্যা করলো। অথচ এরা আমার সঙ্গে কতো উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে।
খানিকটা আফসোসের সহিত বললো সাইমুন।

– তদন্তের জন্য কতকিছুই তো জিজ্ঞেস করতে হয় সাইমুন সাহেব। তাতে করে আসল অপরাধীকে খুঁজে পেতে সহজ হয়।
– অপরাধীকে ওনারা গ্রেফতার করেছে। ছাদের চিলেকোঠায় যারা থাকতো তারাই তো আমার নুড়িকে খুন করেছে।
– তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দেহ করে। সরজমিনে আমরা সবকিছু ঘাটাঘাটি করে তাদের বেশি সন্দেহ করেছি। পুলিশ এখন তাদের আরো ভালো করে জিজ্ঞেসাবাদ করবে।
– আপনি আমাকে কেন ডেকেছেন? এসআই লিয়াকত স্যার বলছিলেন আপনি নাকি জরুরি কথা বলতে চান।

সকালে ঘুম থেকে উঠে সাজু তার বন্ধুর কাছে কল দিয়ে মামলার আপডেট জিজ্ঞেস করে। লিয়াকত আলী জানান , সাইমুন সকাল সাতটার দিকে ঢাকা এসেছে। যশোর থেকে নুড়ির মা-বাবা দু’জনেই এসেছে। তারা সবাই থানায় গিয়ে কথা বলেছে। সাজু ভাই তখন বলেছিল সে সাইমুনের সঙ্গে একাকী একটু কথা বলতে চায়। তবে লিয়াকত চাইলে থাকতে পারে।
কিন্তু লিয়াকত সেটা করেনি। সাইমুনকে সে সাজুর সঙ্গে দেখা করতে বলেছে। এটাও বলে দিয়েছে স্ত্রীর হত্যার বিচার পেতে হলে কোনকিছু গোপন না করে যেন সাজুর সঙ্গে সব সত্যি বলে দেয়।
ভোররাতের মেসেজের কথা সাজু কাউকে বলেনি। এরকম নাম-পরিচয় বিহীন কোনো তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত না হয়ে কাউকে জানানো বোকামি।
তাছাড়া মেসেজ আসার পড় থেকে সেই নাম্বারটা বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
হতে পারে বিভ্রান্ত করার জন্য কেউ পথের দিক পরিবর্তন করে দিতে চাইছে।

টিস্যু নিয়ে সাইমুন চোখ মুছলো।
সাজু ভাই বললো ,
– আপনার সঙ্গে আমিও কিছু উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতে চাই। আশা করি বিরক্ত না হয়ে সেগুলোর জবাব দিবেন।
– নিজেই যদি মনে করেন সেগুলো উল্টাপাল্টা কথা, তাহলে কেন শুধু শুধু সেগুলো জিজ্ঞেস করবেন। আপনাদের কাউকে বোঝাতে পারবো না আমি নুড়ির জন্য কতটা কষ্ট পাচ্ছি।
– এতটা কষ্ট তো পাওয়ার কথা নয় সাইমুন সাহেব। কারণ আপনার স্ত্রী তো ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল। সে যে পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে সেরকম মানসিক প্রস্তুতি তো আপনার ছিল।
– আমার স্ত্রীর ক্যান্সারের কথা আপনি কীভাবে জানেন? পুলিশ বলেছে?
– নাহ, আপনার অফিসের বস তৃপ্তি বলেছে। মনে হয় আপনিই তাকে বলেছিলেন এইটা। তাই না?
– হ্যাঁ বলেছিলাম। প্রতিদিন অফিসে যেতে বিলম্ব হতো তাই সে কারণ জিজ্ঞেস করাতে আমি তাকে পরশু সত্যিটা বলেছিলাম।
– সত্যিটা নাকি মিথ্যাটা?
– মিথ্যা কেন বলবো? নুড়ি ক্যন্সারের সঙ্গে লড়াই করছে অনেকদিন ধরে। প্রতিদিন তার অসহ্য যন্ত্রণার কাতরানি আমি ছাড়া আর কেউ জানে না। কাউকে বলিনি আজও।
– সাইমুন সাহেব, মনে করেন কোনোভাবে পরীক্ষা করে কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমরা জানতে পারলাম আপনার স্ত্রী মানে নুড়ির কোনো ক্যান্সার ছিল না। তাহলে কি সেটা ভুল হবে?
– কিসব আজেবাজে কথা বলছেন? নুড়ির ক্যান্সার অনেক দিনের। আমাদের বাসায় ভালো করে তল্লাশি করলে আপনারা ওর সকল মেডিসিন প্রেসক্রিপশন টেস্ট রিপোর্ট দেখতে পেতেন।
– আমরা সবকিছুই দেখেছি। আপনি উত্তেজিত হবেন না। আমি আপনাকে মনে করতে বলেছি, পুরোপুরি মেনে নিতে বলিনি।

সাইমুন কিছু বললো না। সাজু সামনে রাখা ঠান্ডা কফিতে চুমুক দিল। সাইমুনের মনে হচ্ছে তার সামনে যিনি বসে আছে তিনি পৃথিবীতে একমাত্র ঠান্ডা কফি ছাড়া কিছু চেনে না। কারণ এখানে আসার পড় সে চার কাপ কফি খেয়ে ফেলেছে। প্রথম এসে একসঙ্গে চার কাপ ঠান্ডা কফির অর্ডার করতেই সাইমুন চমকে যায়। সে ভেবেছিল তারা দুজন ছাড়া আরো দুজন হয়তো আসবে। কিন্তু পরক্ষণেই সাজু তাকে বলেছিল ,
– নিশ্চয়ই সারারাত কিছু খাওয়া হয়নি। অনেক বেলা হয়ে গেছে, কি খাবেন?

সাইমুন কিছুই খেতে রাজি হলো না। গতকাল সকালে যে মানুষটা তাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছিল। যার হাতের খাবার খেয়ে সে বাসা থেকে বের হয়ে চট্টগ্রাম গেল। সেই মানুষটা আজকে হাসপাতালের মর্গে পরে আছে।

সাজু আবার বললো ,
– যেখানে পোস্টমর্টেম করা হবে সেখানে আমি বলে দিয়েছি যেন ব্রেইন ক্যান্সারের বিষয়টা ভালো করে পরীক্ষা করা হয়। সুতরাং সত্যিটা জানতে কোনো অসুবিধা হবে না।
– দেখুন ভাই, আমার নুড়ি ক্যন্সারে আক্রান্ত ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেই ডাক্তার দীর্ঘদিন ধরে ওর চিকিৎসা করছিল। আপনি চাইলে আমার সঙ্গে সেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে কথা বলতে পারেন।
– আমি তো সেটাই চাচ্ছি। যিনি আপনার স্ত্রীর চিকিৎসা করছিল তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।
– প্লিজ ভাই। আমার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা হত্যাকারীদের প্রমাণসহ গ্রেফতার করুন। সে তো ক্যান্সারে মারা যায়নি, ডাক্তারের কাছে গিয়ে কেন সময় নষ্ট করতে চাচ্ছেন?
– আমি আপনাকে আগেই বলেছি অযথা সময় নষ্ট করার মতো মানসিকতা আমার নেই। আমার সঙ্গে বাইক আছে, আপনি আমার সঙ্গে চলুন। আমরা দুজন মিলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবো।
– ঠিক আছে, চলুন তাহলে।
খানিকটা অনিচ্ছায় রাজি হলো সাইমুন।

কফিশপ থেকে বের হয়ে নিচে নামার সময় সাজু ভাই একা একাই বললেন ,
– নিজেকে শান্ত করুন। যা হয়েছে সেটা কখনো পরিবর্তন করা যাবে না। দুঃখ আছে বলেই সুখ এতটা মুল্যবান।

সাইমুনের কাছে ডাক্তারের নাম্বার সেইভ করা ছিল। তাকে কল দিয়ে জানা গেল তিনি এখন বাসাতেই আছেন। বাসার ঠিকানা নিয়ে তারা দুজন বাইকে করে উত্তরার ১৪ নাম্বারে সেক্টরের কাছেই প্রিয়াঙ্কা সিটিতে চলে এলো।
প্রিয়াঙ্কা সিটিতে এখনো পুরোপুরি ভবন নির্মাণ হয়নি। প্রচুর ফাঁকা প্লট পরে আছে। খানিকটা ভিতরে গেলে রাস্তাও অপছন্দের তালিকায় যেতে সময় লাগে না।
সেখানেই একটা বাড়ির সামনে এসে সাজু বাইক থামালো। দারোয়ানের সঙ্গে কথা বলে ভিতরে যাবার অনুমতি মিলে গেল।

ফ্ল্যাট , ফার্নিচার , আসবাবপত্র সবকিছুই নতুন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব বেশিদিন আগে তারা এখানে আসেনি। নীল রঙের ড্রেস পরিহিত যে মেয়েটা দরজা খুলে দিল সে সাজুর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ,
– আপনি সাজু ভাই না?

সাজু নিজেও খানিকটা অবাক হয়ে মেয়েটার কথার জবাব দিল।
– হ্যাঁ আমি সাজু। কিন্তু আপনি আমাকে চিনেন কীভাবে? আমি তো কোনো সেলিব্রিটি নয়।
– কে বলেছে সেলিব্রিটি নন? লেখক হিসেবে আপনি তো কতটা জনপ্রিয়। আপনার রহস্যময় গল্প গুলো আপনাকে কতটা পরিচিত করেছে আপনি জানেন না?

সাজু ভাই শুধু হাসলেন।
মেয়েটা বললো ,
– আপনি এভাবে আমাদের বাসায় আসবেন আমি তো কল্পনা করিনি।
– আমরা ডাক্তার ওবায়দুল মাসুদের সাথে দেখা করতে এসেছি।
– তিনি আমার মামা।
– গুড, তিনি কি বাসায় আছেন?
– হ্যাঁ বাসাতেই আছে , আপনারা বসেন আমি মামাকে এক্ষুনি ডেকে দিচ্ছি।

মেয়েটা ভিতরে চলে যাবার সময় দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে এলো।
– সাজু ভাই কি খাবেন আপনারা?
– কিছু খাবো না।
– কেন, আপনার পছন্দের ঠান্ডা কফি?
– না৷ ম্যালা ম্যালা ধন্যবাদ।

মেয়েটা চলে গেল , সাজু খানিকটা বিরক্ত। এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে এসে এরকম কারো মুখোমুখি হওয়া অস্বস্তি ছাড়া কিছুই দিতে পারে না। সাইমুন হয়তো আরো বেশি বিরক্ত হচ্ছে।
ডাক্তার ওবায়দুল মাসুদ ড্রইং রুমে এলেন। সাজু তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো ,
– রিহানুল ইসলাম সাজু। সাজু বললেই হবে।

ডাক্তার সাহেব হাতে হাত মিলিয়ে চমকে গিয়ে হাতের দিকে তাকালেন। বিষয়টা সাজু বুঝতে পেরে নিজেই বললো ,
– আমার শরীর সবসময় এমন তাপমাত্রায় থাকে। জটিল রোগ বটে , তবে কিছুতেই ঠিক হচ্ছে না।
– ভালো করে ডাক্তার দেখান। অবশ্যই ঠিক হবে।
– লন্ডনে চেষ্টা করেছিলাম, কোনো কাজ হয়নি তাই আর দেশের কোথাও চেষ্টা করিনি। যাইহোক, আপনার কাছে একটা জরুরি কাজে এসেছি।
– আপনার স্ত্রী কেমন আছে?
প্রশ্নটা সাইমুনকে করা হয়েছে।

– ওনার স্ত্রী গতকাল রাতে মারা গেছে।
পাশ থেকে উত্তর দিল সাজু ভাই।

– এতো তাড়াতাড়ি? আমি তো ভেবেছিলাম আর কিছুদিন বাঁচবে। রিপোর্ট তো সেরকমই ছিল।
– তিনি ক্যান্সারে মারা যায়নি। তাকে খুন করা হয়েছে, গতকাল রাতে নুড়ি ও নুড়ির ছোটবোন নিহা এবং সাইমুন সাহেবদের বাসার দারোয়ান একসঙ্গে খুন হয়েছে।
– অবিশ্বাস্য ব্যাপার। এতবড় একটা ঘটনা ঘটে গেল, ও মাই গড।

সাইমুন তখনও চুপচাপ বসে আছে। সাজুর দৃষ্টি গেল দরজার দিকে। একজোড়া চোখ সেখান থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গেল। সাজু বুঝতে পারলো নীল ড্রেস পরা মেয়েটা ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে।

সাজু বললো ,
– ওনার স্ত্রীর সকল রিপোর্ট কি আপনিই দেখতেন? মানে নুড়ির যে ক্যান্সার ছিল সেটা তো আপনি দেখছিলেন।
– হ্যাঁ আমি দেখছিলাম। কিন্তু মেয়েটা তো ক’দিন পরে এমনিতেই চলে যেতো। তাহলে তাকে খুন করার কি দরকার ছিল। আহারে।
– ডাক্তার সাহেব, আপনারা মানুষের সেবক। দিন দিন অসংখ্য অসুস্থ মানুষের সেবা করেন। আমি আপনার কাছে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে এখানে এসেছি।
– কি কথা? বলেন!
– নুড়ির কি সত্যি সত্যি ব্রেইন ক্যান্সার ছিল?

হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ডাক্তার ওবায়দুল মাসুদ। যেন এরকম অদ্ভুত কথা এ জীবনে আর কোনদিন শোনেন নাই। বললেন ,
– আপনি কি রসিকতা করছেন?
– নাহ, আমি জানার জন্য প্রশ্ন করছি।
– আপনাকে তো একটু আগেই বললাম যে ওনার স্ত্রীর সবকিছু রিপোর্ট আমিই দেখতাম।
– জ্বি আমার মনে আছে। কিন্তু তবুও আমি জানতে চাচ্ছি নুড়ি সত্যি সত্যি অসুস্থ ছিল কিনা।
– আপনি কি সব কথা বলছেন। সাইমুন সাহেব আপনি কি এজন্য আমার বাসায় দেখা করতে এসেছেন?
– তিনি আমার কথা বিশ্বাস করেছিল না তাই আপনার কাছে নিয়ে এসেছি।
– দেখুন মিঃ সাজু, আপনি এখন আসতে পারেন? আপনার এরকম উদ্ভট প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। তার স্ত্রী মারা গেছে, তাকে শান্ত হতে দিন।
– মারা যায়নি , মারা হয়েছে , মানে খুন করা হয়েছে।
– তো সেখানে আমি কি করবো? আমি তো আমার রোগীকে খুন করবো না, তাই না?

সাজু উঠে দাঁড়ালো। পকেট থেকে নিজের একটা কার্ড বের করে সেটা সামনে টেবিলের উপর রেখে সাজু ভাই বললো ,
– আমার ফোন নাম্বার ও ইমেইল এড্রেস আছে। আমি একটা তদন্তের জন্য আপনার কাছে এসেছি। আমার মনে হচ্ছে আপনার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারবো। যদি কিছু বলতে চান তাহলে ২৪ ঘন্টার যেকোনো সময় কল দিবেন।

কথাগুলো বলে সাইমুনকে নিয়ে বের হয়ে গেল সাজু ভাই। যাবার সময় আড়চোখে লক্ষ্য করলো দরজার কাছে মেয়েটা এখনো আছে। সাজু তার শেষ কথাগুলো মেয়েটার উদ্দেশ্যই বলেছে।

বাড়ি থেকে বের হয়ে সাইমুনকে বললো ,
– সরি সাইমুন সাহেব। আপনার মানসিক বিপর্যয় চলছে তবুও এরকম হয়রান করছি।
– আমি কি এখন যেতে পারি?
– আমি বাইকে করে আপনাকে পৌঁছে দেবো।
– নো থ্যাংকস , আমি বাইকে চড়তে পারি না। তখন এতটুকু আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে।

তবুও বাইকে করে সামনে এসে সাইমুন একটা রিকশা নিয়ে নিল। সাজু একা একা বাইক নিয়ে এগিয়ে চলছে। মোবাইলে কল আসাতে বাইকটা রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে কলটা রিসিভ করে।

– হ্যালো।
– সাজু ভাই আমি অন্তরা , একটু আগে যে ডাক্তার ওবায়দুল মাসুদের বাসায় এসেছিলেন। যে মেয়ের সঙ্গে দেখা হলো সেই মেয়েটা।
– টেবিলে কার্ড রেখে এসেছি সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে কল করেছেন তাই না?
– জ্বি।

সাজু মনে মনে ভাবলো তার প্ল্যান সাকসেসফুল। যেহেতু মেয়েটা তার ভক্ত তাই সে সাজুকে সাহায্য করবে এরকম একটা ভাবনা ছিল। তাই জোরে জোরে শেষের কথাগুলো বলে এসেছিল আর নিজের কার্ড রেখে আসে।

– হ্যাঁ অন্তরা বলো।
– সাজু ভাই, আপনি মামার সঙ্গে নুড়ি নামের কোনো মেয়ের বিষয় কথা বলছিলেন। আমার কাছে মনে হচ্ছে মামার মুখে অস্বাভাবিক ভাবে এই নামটার একটা যোগাযোগ শুনেছি।
– কিরকম যোগাযোগ?
– অনেকদিন আগের কথা , তখন আমরা টঙ্গীতে থাকতাম। একদিন রাতে আমি আমার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ছাদে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। হঠাৎ দেখি মামা ছাদে আসে। আমি কথা বন্ধ করে ছাদের সাইডে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন মামা কার সঙ্গে যেন ফোনে কথা বলছিল।
– কি কথা বলছিল?
– বলছিল যে নুড়ি মেয়েটার রিপোর্ট এমনভাবে তৈরি করেছি মেয়েটা সত্যি সত্যি ভেবেছে তার ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে। আর ওই মেয়ে মেডিসিনে এমন একটা ইনজেকশন দিযেছি যেটা নিলে সে এমনিতেই শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে যাবে। ব্রেইনে প্রচুর চাপ পড়বে তাই সহজেই ক্যান্সারের কথা বিশ্বাস করবে।
– আপনি এখন কোথায়?
– আমি…

এতটুকু বলার পড়ে সাজু শুনলো ওপাশে মেয়েটার কাছে আরো কেউ এসেছে। সাজু শুনতে পেল মেয়েটা কাকে যেন বলছে ,
– কে আপনি? আমার মোবাইল কেন…

তারপরই লাইনটা কেটে গেল। সাজু সঙ্গে সঙ্গে কলব্যাক করলো কিন্তু নাম্বার বন্ধ। সম্ভবত কেউ মোবাইল কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। সাজু দ্রুত বাইক ঘুরিয়ে ডাক্তার ওবায়দুল মাসুদের বাসার দিকে রওনা দিল।
মনে মনে ভাবলো ,
– তাহলে কি খুনি তাকে ফলো করেছে? অন্তরা নামের মেয়েটাকেও কি দারোয়ানের মতো কোনো পরিণতি উপহার দেবে?
.
.
.
চলবে…

সাজু ভাইকে কেমন লাগছে আপনাদের?
সবাই অবশ্যই মন্তব্য করবেন। করবেন তো?
অনুরোধ নয় , অধিকার।

লেখা-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here