#উপন্যাস_প্রপর্ণ(৩৭)
#কুরআতুল_আয়েন
চারপাশে রোদ একদম ঝিলিক মেরে উঠছে।তার উপর দুপুর।চারপাশ একদম নিস্তব্ধ।খুশি এখনো উল্টো হয়ে বসে আছে।সে বাহিরের পরিবেশ দেখতে ব্যস্ত।সামনের বট গাছটায় একঝাঁক পাখি এসে বসেছে।তাদের কিচিরমিচির আওয়াজ যেনো চারপাশে ভরপুর।এই ভরদুপুরে তাদের আওয়াজ টা বেশ লাগছে খুশির কাছে।
আর,রায়ান একধ্যানে তাকিয়ে আছে খুশির দিকে।খুশিকে যতোই দেখে ততই নেশায় চলে যায় রায়ান।ঠিক এখনো এমন মনে হচ্ছে রায়ানের।সে যেনো নেশায় চলে যাচ্ছে একটু একটু করে।রায়ান আচমকাই খুশিকে পেছন থেকে জাপটে ধরলো।এমন হওয়ায় খুশি চমকে উঠলো।রায়ানের স্পর্শ পেয়ে সে একদম রোবট হয়ে গিয়েছে।ঠিক সেদিনও এইরকম রোবট হয়ে গিয়েছিলো যেদিন ছাঁদে রায়ান তার হাতের তালুতে চুমু খেয়েছিলো।সেদিনের কথা ভাবতেই খুশির মনে অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে গেলো।তার খুব লজ্জা লাগছে।রায়ানের থেকে সরে আসতে নিলেই রায়ান খুশিকে আরো শক্ত করে জাপটে ধরে নেশায় জোড়ালো কন্ঠে বললো,
–“স্টপ খুশি।একদম নড়াচড়া করবে না।”
খুশি রায়ানের কথা শুনে থেমে যায়।কিন্তু তার বেশ অস্বস্তি হচ্ছে।আমতাআমতা করে বললো,
–“প্লিজ!আমাকে ছাড়ুন।আমার কেমন কেমন জানি লাগছে।”
রায়ান ছেড়ে দিলো।খুশির থেকে দূরত্ব রেখে বসে পড়লো।অপরাধীর কন্ঠে বললো,
–“সরি।”
খুশি রায়ানের দিকে একপলক তাকালো।রায়ানের মুখের মতিগতি দেখে খুশি কিছুই বুঝতে পারছে না।খুশির কথায় রায়ান কষ্ট পেয়েছে কিনা তা বুঝা খুশির জন্য নিতান্তই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।এইভাবে প্রায় অনেকটা সময় কেটে যায়।দু’জনেই নিশ্চুপ থাকে।আচমকাই রায়ানের ফোন টা খুব বিশ্রী ভাবে বেজে উঠায় খুশি চমকে গিয়ে রায়ানের হাত আঁকড়ে ধরলো।রায়ান খুশির দিকে একপলক তাকিয়ে ফোনের স্ক্রিনে মনোযোগ দিলো।ফোনের স্ক্রিনে অনা নামটা জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠেছে।তা দেখে খুশি সাথে সাথেই রায়ানের হাতের থেকে হাত সরিয়ে নিলো।মন খারাপ নিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইলো।খুশিকে সম্পূর্ণ খেয়াল করছে রায়ান।সে অনামিকার সাথে তেমন একটা কথা বলছে না শুধু হু হা করে যাচ্ছে।তার ধ্যানজ্ঞান যেনো সম্পূর্ণ খুশির উপর।খুশি অনেকক্ষণ ধরে বসেও যখন দেখলো রায়ান অনামিকার সাথে কথা বলে যাচ্ছে তখনই সে গাড়ি থেকে নেমে আসতে নেয়।কিন্তু তা আর হলো না।রায়ান খুশির হাতটা নিজের হাতের ভাঁজে ঢুকিয়ে নিয়েছে।খুশি নাড়াচাড়া করেও সরাতে পারছে না।তবে,তার বেশ ভালো লাগছে।এইভাবে থাকতে তার মন সায় দিচ্ছে।প্রথম প্রথম নাড়াচাড়া করলেও এখন সে চুপটি করে বসে আছে।রায়ানের লোমযুক্ত হাতটায় তাকিয়ে থেকে দেখছে আর হাসছে।যা রায়ানের চোখ এড়ায়নি।
—-
আর দুদিন পর বেলীর পরীক্ষা।তার মন টা খুব বিষন্নতায় আছে।টেবিলে বসেও কিছুতেই পড়ায় মন দিতে পারছে না।অনেক ভেবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিলো আজকে বিকেলে সে জাবেদার কাছে যাবে।অনেকদিন হলো সে তার আম্মার কাছে যায় না।সে নিজেও তো একজন মা।সন্তানের থেকে দূরে থাকতে গেলে যে দমবন্ধ হয়ে আসে তা বেলী ঠিকই বুঝে।
বেলীর এইসব ভাবনার মাঝেই বুরাগ শিউলিকে কোলে নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।শিউলির চোখ দুটো ফোলা ফোলা দেখে বেলী কিছুটা আঁতকে উঠলো।টেবিল ছেড়ে উঠে গিয়ে বুরাগের সামনে গিয়ে শিউলির দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই শিউলি জাপটে গিয়ে পড়লো বেলীর বুকের উপর।শিউলিকে বুকে পেয়ে বেলী যেনো প্রাণ পেলো।বুরাগের দিকে তাকিয়ে বেলী বললো,
–“কি হয়েছে শিউলির?কান্না করেছে বোধহয়।”
বুরাগ বিছানায় গিয়ে ধপাস করে বসে পড়লো।চুল গুলো পিছনে ঠেলে দিয়ে বেলীর কথার পিঠে জবাবে বললো,
–“হাসি আর খুশির কাছে বায়না ধরেছে এই সময় সে পার্কে যাবে।তাই,আমি জোর করে আনতে গেলেই কেঁদেকেটে অস্থির।”
বেলী দীর্ঘএকটা নিঃশ্বাস ছাড়লো।মেয়েটা যে তার জেদি হয়ে যাচ্ছে তা বেলী ঠিক বুঝতে পারছে।গুটিগুটি পা’য়ে বেলী বিছানার দিকে এগিয়ে গেলো।শিউলিকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।মেয়েটাকে ঘুম পাড়িয়ে পরে না হয় পড়া কভার করে নিবে।বেলীকে বিছানায় শুতে দেখে বুরাগ কিছুটা চেঁচিয়ে বললো,
–“বেলী তোমার না দু’দিন পর ফাইনাল এক্সাম।তুমি গিয়ে পড়ো।আমি ওকে সামলাচ্ছি।”
বেলী নাছোড়বান্দা হয়ে জবাবে বললো,
–“উঁহুহু!থাক আমার কাছে।পরীক্ষার থেকে আমার কাছে আমার সন্তান আগে।আর,তার থেকেও বড় কথা আপনি ওকে এখন আর সামলাতে পারবেন না।আমাকেই প্রয়োজন হবে।”
–“বুঝলে বেলী মস্ত বড় একটা ভুল করে ফেলেছি।”
বেলী পিছন ফিরে তাকিয়ে চমকিত হয়ে বললো,
–“কি ভুল করেছেন।”
বুরাগ বেলীর পাশের জায়গায় টা দখল করে নিলো।বেলীর কোমরে হাত গুঁজে দিয়ে বেলীর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,
–“পরের বাচ্চাটা এখনেই নেওয়া উচিত।তুমি তো পারবে সামলাতে তাই না।তো!এতো দেরি করার মানেই হয় না।আর,শিউলিরও একটা সঙ্গী দরকার।”
বেলী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে বুরাগের দিকে।বুরাগের এই কথাটা তার হজম করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।এমতাবস্থায় বেলী কিছুটা মিহি গলায় চিল্লিয়ে বলে উঠলো,
–“কি বলছেন আপনি!!আমি এখনো ছোট।মাত্র অনার্স শেষ করবো।আর,এখনেই আরো একটা বাচ্চা নিবো।আপনি তো আমাকে বুড়ি বানিয়ে দিবেন মশাই।”
বুরাগ বেলীর কথা শুনে একদফা হেসে নিলো।বেলীকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো,
–“তুমি ছোট হলে শিউলির এখন আসার কথা ছিলো না।আরো পরে আসার কথা ছিলো।আর,দেখো আমার চুল পেঁকে যাচ্ছে।আরো একটা সন্তানের মুখ দেখতে চাই আমি।”
–“আপনার জন্যই তো আমি আগে মা হয়েছি।আপনার নিজের উপর কন্ট্রোল ছিলো না।”
বুরাগ পিটপিট করে তাকালো বেলীর দিকে।বেলীর কথায় কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।সে তো ভেবেছিলো বেলী নিয়মিত পিল খাচ্ছে।তাই নিজেও কোনো প্রটেকশন নেয় নি।আর,এখন সব দোষ বেলী তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে।ভাবতেই বুরাগ বেলীর দিকে আড়চোখে তাকালো।বুরাগের চাহনি দেখে বেলী তাড়া দিয়ে উঠতে গেলেই বুরাগ বেলীকে পিছন থেকে জাপটে ধরলো।নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললো,
–“নিজের দোষ এখন আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছো বেলী।তোমাকে কি করা উচিত বলো তো।”
বেলী আমতাআমতা করে বললো,
–“ছাড়ুন আমাকে।আমি পড়তে যাবো।আর না হলে পড়ার সুযোগ পাবো না।”
–“ছাড়বো!!তার আগে একটা কথা দিতে হবে।”
–“কি কথা।”
–“কথা দাও!তুমি আমাকে আবার বাবা হওয়ার সুযোগ দিবে।”
বেলী খুব লজ্জা পায় বুরাগের কথার হাবভাব দেখে।বুরাগের বুকে মুখ লুকিয়ে লজ্জামিশ্রিত গলায় বললো,
–“এক্সাম টা শেষ হতে দিন।এর আগে এইসব কিছুই হবে না।”
বুরাগ কিছুটা রস মিশিয়ে বললো,
–“ঠিকাছে!তাড়াহুড়ো করে আমি কিছুই করতে চাই না।আস্তে ধীরে রিলেক্স মুড নিয়ে করবো।ওকে!!”
বেলী যেনো লজ্জায় নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।বুরাগের দিকে তাকাতেও পর্যন্ত পারছে না।আর,এদিকে বুরাগ নিজের মনের স্বাদ মিটিয়ে বেলীর হয়ে যাওয়া লজ্জামিশ্রিত মুখটা দেখছে।তবে,তা আর বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিলো না,শিউলি ঘুমের ঘোরে কেঁদে উঠায় বেলী বুরাগের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে শিউলির দিকে ফিরে পুনরায় নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়েছে।
—-
চারপাশ নিঃস্তব্ধ।বাহিরের কোলাহল বলতে গেলে একদমই নেই।পাঁচটা বছর এইরকম কোলাহলহীন,নিস্তব্ধতায় কাটিয়ে দিয়েছেন জাবেদা।তাও,যেনো এইরকম একটা পরিবেশে থাকতে উনার দমবন্ধ হয়ে আসে সেই প্রথমদিনকার মতো।জীর্ণ দেয়ালটায় জাবেদা মাথা ঠেকিয়ে বসে আছেন।আজকে,উনার সবার কথা মনে পড়ছে।বিশেষ করে অলি সাহেবের কথা।জাবেদা জানেনও না অলি সাহেবের সাথে কি হয়েছে।উনি শুধু জানেন তাঁর অগোচরে সবাই ঠিক আছে।
“আম্মা” আওয়াজ টা জাবেদার কানে বাজতেই জাবেদা চমকে উঠলেন।বুকটা কেমন ধকধক করছে উনার।পিটপিট করে সামনে তাকিয়ে বেলীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রথমে বিশ্বাস করলেন না।মনের ভুল ভেবে ধরে নিয়েছেন।কিন্তু,বেলীর “আম্মা” ডাকটা পুনরায় কানে পৌঁছতেই জাবেদা এবার বুঝতে পেরেছেন এইটা উনার মনের ভুল না।সত্যিই বেলী এসেছে।
বেলী ঝাপসা হয়ে আসা চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে জাবেদার দিকে।আগের চেহারার সাথে এখনের চেহারার বেশখানিকটা তফাৎ রয়েছে।সুন্দর মুখশ্রীতে কেমন একটা ছাপ পড়ে আছে।জাবেদা বেলীর গালে হাত রাখতেই ডুকরে কেঁদে উঠলেন।এখন উনার ইচ্ছে করছে,জেল থেকে বেরিয়ে আসতে।সবার সাথে আগের মতো থাকতে।
জাবেদা কিছুই বলতে পারছেন না সেই সাথে বেলীও।দু’জনেরেই কান্নার ফলে কথা যেনো গলায় আটকে গিয়েছে।শিউলি বেলীর শাড়ির আঁচল ধরে টেনে বললো,
–“তুমি কাঁদছো কেনো মা।”
বেলী চোখ দুটো মুছে শিউলিকে কোলে তোলে নিলো।জাবেদা শিউলির দিকে অপলক চেয়ে রইলেন।নাম টা যেমন শিউলি ঠিক চেহারা টাও শিউলির মতো।জাবেদার মনে হচ্ছে,উনি শিউলিকে দেখছেন।শিউলির দিকে হাত বাড়াতেই শিউলি বেলীর বুকে মুখ গুঁজে দিলো।যা দেখে বেলী অসহায়ের চোখে তাকালো জাবেদার দিকে।জাবেদা ব্যাপার টাকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন।তাই,তিনি বেলীকে চোখ দিয়ে আশ্বস্ত করলেন।
–“বেলী!তোর আব্বা কেমন আছেন রে?”
জাবেদার প্রশ্ন শুনে বেলীর মুখটা নিমিষেই মিহিয়ে গিয়েছে।কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।বলতে গেলে,তারা মাথা পুরোপুরি হ্যাং হয়ে আছে।
জাবেদা আবারও বললেন,
–“বললি না তো!!তোর আব্বা কেমন আছেন?মানুষ টা খুব অভিমান করেছে আমার উপর তাই না।আমার কথা কি জিজ্ঞেস করে তোদের কাছে?”
বেলীর ভিতর টা কষ্টে হু হু করে উঠছে।বেলী কি করে বলবে,আব্বা যে কথা বলতে পারে না।প্যারালাইজড হয়ে ঘরের এককোনায় পড়ে আছে।বেলী কিছু না বললেও চোখ দিয়ে তার পানি পড়ছে।জাবেদা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন বেলীর দিকে।জাবেদার এরূপ চাহনি দেখে বেলী ক্রন্দনরত গলায় বললো,
–“আব্বা ঠিক আছে আম্মা।তোমার কথা সবসময় বলে।তোমাকে ছাড়া থাকতে আব্বার খুব কষ্ট হয়।”
–“আমি জানতাম!মানুষ টা আমাকে ছাড়া একদন্ডও ভালো নেই।আমিই যে উনার আপন।”
বেলী অনেক চেষ্টা করেও চোখের পানিটুকু আটকে রাখতে পারছে না।জাবেদা বেলীর পানিটুকু মুছিয়ে দিয়ে বললেন,
–“কান্না করিস না বেলী।দেখবি সব একদিন ঠিক হয়ে যাবে।আগের মতো সবাই ভালো থাকবে।”
বেলী এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।ডুকরে কেঁদে উঠলো।জাবেদাও কাঁদছেন।কোলে থাকা শিউলি বেলীর কান্না দেখে ঠোঁট ভেঙে কেঁদে দিলো।তার অবুঝ মনটাও যেনো মা আর নানুর কান্নায় কাঁদছে।
___
বারান্দায় বেলীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুরাগ নিঃশব্দে সেদিকে এগিয়ে গেলো।বেলীর পিছন বরাবর দাঁড়িয়ে বললো,
–“মা’য়ের কাছে গেলে একবারও আমাকে বললে না তো।”
বেলী চমকে পিছনে তাকালো।সে তো বুরাগকে না জানিয়ে গিয়েছিলো।জানিয়ে গেলে বুরাগ কিছুতেই এখন যেতে দিতো না।তাই,তো সে বুরাগের আড়ালে জাবেদার সাথে গিয়ে দেখা করে এসেছে।কিন্তু,এখন বুরাগের প্রশ্নে কি উত্তর দিবে বেলী তাই বুঝতে পারছে না।শুধু আমতাআমতা করছে।
বুরাগ মুখে একটুকরো হাসি টেনে বললো,
–“আমাকে জানিয়ে গেলে কি হতো।আমি কি তোমাকে যেতে দিতাম না!”
বেলী অপরাধ বোধে মাথা নিচু করে নিয়েছে।এখন বুঝতে পারছে,সে বুরাগকে না জানিয়ে গিয়ে খুব বড় ভুল করেছে।বুরাগকে কিছু বলতে নিলেই বুরাগ একপ্রকার তাড়া দিয়ে বললো,
–“অনেক রাত হয়েছে।শুতে আসো।”
বুরাগ পাশ কাটিয়ে যেতেই বেলী একরাশ মন খারাপ নিয়ে তাকিয়ে রইলো বুরাগের যাওয়ার পানে।বুরাগ যে তার উপর অভিমান করেছে তা সে ঠিকই বুঝতে পেরেছে।নিজেই নিজেকে বকছে,কেনো বুরাগকে বলে গেলো না।
_____
স্নিগ্ধা ইফাতকে খাইয়ে দিচ্ছে আর সন্দেহের চোখে লিটনকে দেখছে।লিটন শার্ট খুলতেই পিঠের দিকে খামচির দাগটা স্নিগ্ধার চোখ এড়ায়নি।দাগটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে কোনো মেয়ের নখের দাগ।স্নিগ্ধা যা বুঝার তাই বুঝে গেছে।ইফাতকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে স্নিগ্ধা লিটনকে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“কবে থেকে অন্য মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছো।”
লিটন তখন ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছলো।স্নিগ্ধার কথা শুনে সে বেশখানিকটা ভয় পেয়ে যায়।স্নিগ্ধা লিটনের মুখের হাবভাব দেখে বললো,
–“কি হলো বললে না তো।কতোদিন হলো পরনারীর কাছে যাচ্ছো?”
লিটন ঠোঁট বেঁকিয়ে স্নিগ্ধার কথার পিঠে বললো,
–“পরনারীতে লিপ্ত ছিলাম অনেক আগে থেকেই।সে আর নতুন কি।তুমিও তো আমার কাছে পরনারী।আমাদের তো বিয়েও হয় নি।আর না করবো তোমাকে বিয়ে।”
স্নিগ্ধা অবাক হয়ে তাকালো লিটনের দিকে।লিটন যে এইভাবে পাল্টে যাবে সে কিছুতেই ভাবতে পারে নি।লিটনকে আর সাহস করে কিছুই বলে নি।গুটিগুটি পা’য়ে ইফাতের কাছে গিয়ে শুয়ে পড়লো।স্নিগ্ধা যেতেই লিটন ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।তার স্নিগ্ধা আর ইফাতের দিকে কোনো পাত্তাই নেই।সে এখন হাজারো নারী নিয়ে ব্যস্ত।বরং,স্নিগ্ধার থেকে তারা আরো বেশী আকর্ষণীয়।প্রত্যেক দিন লিটন এক একটা মেয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।এমনকি মাঝেমধ্যে পতিতালয়েও যায় মেয়ের খোঁজে।তার কাছে এই জীবনটা দিব্বি ভালো লাগছে।
চলবে..