#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১২
_________________
পুরুষালি কণ্ঠের নির্মম কথাটাতে বক্ষৎপঞ্জরে কাঁপন ধরলো। কাঁপন মূলত আগেই ধরে গিয়েছিল আকস্মিক ঘটে যাওয়া ঘটনায়। ইরতিজা একটা ভীতি ঘোর থেকেই বললো,
“কী?”
পিছন থেকে একটা মুখ তার কানের নিকটে এগিয়ে এসে বললো,
“তুমি চেনো না আমাকে, জানো না আমি কেমন। খুব ভংয়কর আমি! তোমাকে আঘাত করতে একটুও কষ্ট হবে না আমার।”
“তা কেনই বা হবে? তুমি তো একটা মনুষ্যত্বহীন অ…”
কথা শেষ করার আগেই মুখ ছুটে একটা মৃদু ব্যথার আর্তনাদ বেরিয়ে এলো ইরতিজার। ক্যানিয়ল তার মাথা আরও সজোরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেছে। একটুও নড়তে পারছে না সে। পিছন ফিরে একবার পাশবিক ক্যানিয়লকে দেখার চেষ্টা করছে।
“এটা আমার বাড়ি, তোমার বক্তৃতা দেওয়ার স্থান নয় এটা। আস্তে কথা বলো।” ইরতিজার কণ্ঠ উচ্চ হয়ে উঠছিল বিধায় সাবধান করলো ক্যানিয়ল।
ইরতিজাকে টেনে গ্যারেজে নিয়ে এসে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। নিজে বসলো ড্রাইভিং সিটে। পিছনের আসনে ইরতিজার দিকে তাকিয়ে বললো,
“এবার বলো, কী বলতে চাইছিলে তখন?”
ইরতিজার দৃষ্টি ক্রুর। পারলে দৃষ্টি দিয়েই ক্যানিয়লের সমস্ত অহংকার ধ্বংস করে দেয়। ক্রোধে কিড়মিড় করে বললো,
“আমি পারলে তোমাকে চ’ড় মারতাম।”
কথাটা বলতে একটু ভয় হলো না, গলাও কাঁপলো না।
কথাটা শোনার পর ক্যানিয়ল নির্বিকার রইল। ভাবলেশহীন বললো,
“এটা তুমি কখনোই পারবে না। আমার গায়ে হাত তোলা যেন-তেন ব্যাপার নয়। যারা আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করেছে প্রত্যেকের অবস্থাই খারাপ হয়েছে। এমন করার চেষ্টা করলে তোমারও অবস্থা খারাপ হবে। তোমার এই সুন্দর হাত, নখ, পা, সুন্দর চেহারার কিছুই আর সুন্দর থাকবে না।”
“সন্ত্রাসী না কি তুমি?” সন্দ্বিগ্ন কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো ইরতিজা।
ক্যানিয়ল ওষ্ঠাধর বাঁকিয়ে অদ্ভুত হেসে বললো,
“ওরকমই কিছু।”
ইরতিজার মাঝে ভয় ঝিলিক দিয়ে উঠলো। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল ক্যানিয়লের দিকে। ক্যানিয়ল গাড়ি স্টার্ট করলো।
আসার পথে ইরতিজাকে জিজ্ঞেস করেনি ওর বাসা কোথায়। ইরতিজা দেখলো ক্যানিয়ল নিজ থেকেই তাদের এরিয়ায় প্রবেশ করেছে। গাড়ি বাসার সামনে এলেই ইরতিজা বললো,
“এখানে থামাও।”
কিন্তু ক্যানিয়ল থামালো না। ইরতিজার কথা শুনতে পেল কি না বোঝা গেল না। সে গাড়ি থামালো আরও কিছুটা দূর এসে। ইরতিজা বললো,
“তুমি আমার বাসা অতিক্রম করে চলে এসেছো। আমার বাসা এখান থেকে একটু পিছনে।”
ক্যানিয়ল গাড়ি থেকে নামতে নামতে বললো,
“অতিক্রম করে আসিনি। ঠিক বাসার সামনেই এসেছি।”
ইরতিজা দ্রুত নেমে পড়লো।
ক্যানিয়ল হাতের ইশারায় সামনের বাড়িটা দেখিয়ে বললো,
“ইট’স মাই হাউজ।”
ইরতিজা চমকিত হলো। একবার বাড়িটা আর একবার ক্যানিয়লকে দেখে বললো,
“তোমার বাসা মানে?”
“আমার মানে আমার। এটা আমার নামে উইল করা। ভিতরে চলো।”
ইরতিজা অবাক! ক্যানিয়লের বাড়ি তাদের এরিয়ায়? তাও আবার তাদের বাসা থেকে এখানে হেঁটে আসতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগে। ঘুরে দেখেছিল তো পুরো এরিয়াটা। এই বাড়িটাও দেখেছে।
“কী হলো? দাঁড়িয়ে কেন? এসো।” সামনে থেকে ক্যানিয়লের গলা ভেসে এলো। সে নিজ বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দরজার লকও খুলে ফেলেছে ইতোমধ্যে।
ইরতিজা কিঞ্চিৎ বিস্মিত। ছেলেটা তাকে ডাকছে কেন? বললো,
“আমি কেন তোমার বাসায় প্রবেশ করবো? কোন প্রয়োজনে?”
“প্রতিদান দেবে। এতটা পথ যে তোমাকে গাড়িতে নিয়ে এলাম, প্রতিদান স্বরূপ আমাকে রাতের রান্না করে দেবে।”
“কী?”
“আমি একই কথা দুইবার বলি না। আর তোমাকেও দ্বিতীয়বার ডাকবো না। প্রথম ডাকেই এসো।”
ক্যানিয়ল ঘরের ভিতর প্রবেশ করলো। ইরতিজা চলে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু ক্যানিয়লের বাসাটা কেমন তা দেখতে ইচ্ছা হলো। সে কৌতূহল, জড়তা নিয়ে এসে পা রাখলো ঘরে। প্রথমেই চোখ গেল দেয়ালে। তার দ্বিধা হলো, এটা আসলেই পেইন্টিং তো? দেয়াল জুড়ে বিশাল একটা সমুদ্র পৃষ্ঠের চিত্র অঙ্কন করা। কে বলবে যে এটা পেইন্টিং? দেখে মনে হচ্ছে আসলেই সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে আছে।
সে আশপাশে একবার চোখ বুলালো। প্রথমেই যা নজরে পড়লো তা দেখে একটু শিহরিত হলো। দেয়ালের এক পাশে কতকগুলো হকিস্টিক রাখা। ইরতিজা কোন এক আকর্ষণ বলে যেন এগিয়ে গেল ওদিকে। কাছাকাছি এসে যেতেই পায়ের তলায় কী একটা চাপা পড়ে মৃদু আওয়াজ করলো। একটা হকিস্টিক পড়ে রয়েছে, সেই হকিস্টিকের উপর পা পড়েছে। ইরতিজা হাতে তুলে নিলো হকিস্টিকটা। হকিস্টিকের গায়ে লাল রঙের একটা দাগ প্রত্যক্ষ করে অন্তর কেঁপে উঠলো। এটা কী? রক্তের দাগ?
যে মুহূর্তে ইরতিজা এই প্রশ্নটা ভাবলো ঠিক তখনই তার হাত থেকে হকিস্টিক কেড়ে নিলো ক্যানিয়ল।
“আমার ঘরের কোনো জিনিসপত্র স্পর্শ করবে না।”
বলে হকিস্টিকটা অন্যান্য হকিস্টিকের মাঝে ছুঁড়ে ফেললো।
ইরতিজার মাঝে সুচারু একটা ভয় বিরাজ করছে। ক্যানিয়লের বাসায় এত হকিস্টিক কেন? আর তাতে রক্তই বা কেন? ওটা কি মানুষের রক্ত?
“ইজা…” ক্যানিয়লের ডাক ইরতিজার ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটালো।
ইরতিজা তাকালো। ক্যানিয়ল আর্মচেয়ারে বসে প্রশ্ন করছে,
“বাড়িতে থাকাকালীন যা যা বলেছিলাম তাতে কি তোমার খারাপ লেগেছে?”
ইরতিজার মস্তিষ্ক মুহূর্তে নিজের খেয়াল পরিবর্তন করলো। ক্যানিয়লের সদ্য বলা কথাটা মস্তিষ্কের সর্বত্র জাগ্রত হয়ে উঠলো তার। মনে পড়লো ক্যানিয়ল এবং নাইলা সালেমের কাছ থেকে পাওয়া অপমানগুলো। বিষাক্ত হলো মন। ক্যানিয়ল মূলত নাইলা সালেমের কারণে এমন অহংকারী আর বাজে হয়েছে! নাইলা সালেম তো ওর মা। মায়ের একটা ধারা সন্তান হিসাবে সে পেতেই পারে। কিন্তু ধারাটা তিনগুণ বেশি হৃষ্টপুষ্ট হয়ে বিরাজ করছে ক্যানিয়লের মাঝে। নিশ্চয়ই ক্যানিয়লের বাবা খুব ভালো মানুষ। যার কারণে সামুরা অমন ভালো হয়েছে। ক্যানিয়লের প্রশ্নের কী উত্তর দেওয়া যায় ভাবছে। এত কিছু বলে অপমান করে এখন জিজ্ঞেস করছে তোমার খারাপ লেগেছে কি না! আরে শুধু কি খারাপ? খারাপের চেয়েও বেশি খারাপ লাগা অনুভব হয়েছে। ইরতিজা কিছু উত্তর দেওয়ার আগে ক্যানিয়লই বললো,
“আসল কথা কি জানো? আমি মেয়েদের পছন্দ করি না। কোনো এক কারণে মেয়েদের অপছন্দ আমার। যাদের পছন্দ করি না তাদের সাথে আচরণ সুন্দর হবে না এটাই স্বাভাবিক!”
ইরতিজা বিস্মিত হলো! কেন মেয়েদের অপছন্দ করে ক্যানিয়ল?
“কেন মেয়েদের অপছন্দ করো?” প্রশ্নটা সরাসরি ক্যানিয়লকেই করলো।
“সবাই সব কিছু পছন্দ করে না। কিছু জিনিস পছন্দের হলে কিছু জিনিস অপছন্দের হবে। এটাই বাস্তবিক দিক।”
ইরতিজা কিছু বলতে পারলো না তার আগেই ক্যানিয়ল বললো,
“কিচেন ওইদিকে, যাও।”
“আমাকে কি তোমার নিজ বাসার মেইড মনে হয়?”
ক্যানিয়ল ফোঁস করে নিশ্বাস ত্যাগ করে বললো,
“নীচু মন মানসিকতার মেয়েরা প্রতিদান দিতে জানে না! তুমি প্লিজ বের হয়ে যাও আমার বাসা থেকে। তোমার পদচারণ পড়ায় আমার দামি ঘরটা হু হু করে কেঁদে উঠছে।”
“আমি নিজ থেকে তোমার বাসায় আসিনি। তুমি আসতে বলেছো।”
ইরতিজা বাকবিতন্ডা না করে চলে এলো। বাকবিতন্ডা যত এড়িয়ে চলা যায় ততই জীবন সুন্দর হবে বলে আশা করে সে। সে সব সময়ই ঝগড়া-বিবাদ পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করে।
আকাশ আজ একেবারে পরিষ্কার। কয়েকটা নক্ষত্রও নজরে পড়েছে। রাত তাই শীতের মাত্রা বেশি। এখান থেকেই তাদের বাসায় আলো জ্বলছে তা দেখা যাচ্ছে। ইরতিজা রাস্তায় পা রাখতেই হঠাৎ একটা কথা মনে পড়লো। এটা অত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়, তবে গভীর এক কৌতূহলের অংশ এটা। সে ফিরে এলো আবার ক্যানিয়লের কাছে।
“আবার এসেছো কেন? তুমি চলে যাওয়ার পর আবার হুট করে ফিরে আসো কেন বলো তো?” ক্যানিয়ল সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় ফ্লোরে উঠছিল। নিচে পদধ্বনির শব্দ শুনে তাকিয়ে ইরতিজাকে দেখে বললো কথাটা।
ইরতিজা ক্যানিয়লের কথা গ্রাহ্য না করে বললো,
“আচ্ছা, তোমাদের বাড়িতে অত মানুষজন কেন? তোমার মম বাদে আরও দুজন মহিলাকে দেখেছিলাম, ওনারা কি তোমার আন্ট?”
“অন্যের পরিবার নিয়ে না ভাবলেও চলবে তোমার। আমাদের বাড়িতে অত মানুষ কেন সেটা আমরা বুঝবো।”
ক্যানিয়ল সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে বললো,
“না, তারা আমার আন্ট নয়। তারা হলো আমার ড্যাডের স্ত্রী!”
“মানে?”
ক্যানিয়ল দাঁড়িয়ে বললো,
“আমার ড্যাড চারটা বিয়ে করেছে। তুমি যাদের দেখেছো তারা হলো আমার স্টেপমম। সামুরা আমার স্টেপব্রাদার। আমার মোট ছয়জন সৎ-ভাইবোন আছে। আপন কেউ নেই। আমার মমের শুধু একটি মাত্রই পুত্র সন্তান, আর সেটা আমি।”
ক্যানিয়ল আর না দাঁড়িয়ে চলে গেল। ইরতিজা সবটা শোনার পর বিস্ময়ে বিমূঢ়! এটা কী শুনলো সে?
________________
“আমাদের এরিয়ায় ক্যানিয়লের বাড়ি আছে এটা তুমি আগে কেন আমাকে বলোনি জুহি?”
“বলার মতো কোনো অবস্থার সৃষ্টি হয়নি দেখে বলিনি।”
“আমার বিশ্বাস হচ্ছে না ওর বাবা চার বিয়ে করেছে। এটা কি আসলেই সত্যি?”
“হুম এটা সত্যি। আমি একজনকে চিনতাম যে দশ বিয়ে করেছে!”
“দশ?” বিস্ময়ের গতি বাড়লো ইরতিজার।
“হুম। লোকটার নাম ছিল ওয়ার্নার ভেলি।”
“আচ্ছা, তুমি কি জানো ওই চারজনের ভিতর ক্যানিয়লের মা কে?”
“না, এটা জানি না। এটা নিশ্চিতভাবে তেমন কেউই বলতে পারবে না মনে হচ্ছে। এটা আমি জিজ্ঞেসও করিনি কারো কাছে কোনোদিন। তবে ধারণা করেছি মিসেস সোফিয়া ওর মা হতে পারে।”
ইরতিজার চোখে সোফিয়া রামির স্বচ্ছ মুখখানি ক্ষণিকের জন্য ধরা দিয়ে আবার অদৃশ্য হলো। ইরতিজার মন মানতে পারলো না ক্যানিয়ল সোফিয়া রামির ছেলে। মনের ভাব সে প্রকাশ করে ফেললো,
“আমি এটা মানতে পারছি না। ওই সুন্দর মহিলাটির ছেলে হতে পারে না ক্যানিয়ল।”
জুহি নীরব রইল। সময় গড়ালো খানিকটা। ইরতিজা বললো,
“আচ্ছা রাখছি। ক্যানিয়লের পরিবার নিয়ে ভেবে আমাদের কোনো লাভ হবে না।”
জুহির কিছু বলার অপেক্ষা না করেই কল কাটলো ইরতিজা। লাইব্রেরির কাচের দেয়াল দিয়ে বাইরে তাকালো। বৃষ্টি পড়ছে গুঁড়িগুঁড়ি। বিকেলের সময়টাও সন্ধ্যাক্ষণ মনে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে হেডলাইট জ্বলা গাড়িগুলো চলে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যে। কিছু মানুষ মাথায় ছাতা দিয়ে বৃষ্টি আড়াল করে হাঁটছে। প্রকৃতির যেন বিষণ্ণ রূপ। বিষণ্ণ প্রকৃতির মাঝে চিন্তাটা ধূসর মেঘের মতো বিরাজ করছে ইরতিজার অন্তঃকরণে। ক্যানিয়লের ফ্যামিলিটা কেমন তালগোল পাকানো। ওটা নিয়ে ভাবতে গেলে ভাবনা ক্রমশ জট পাকিয়ে যায়। তবে এই ভাবনার চেয়েও তার কাছে বড়ো ভাবনার বিষয় হলো, ক্যানিয়লের বাসায় অত হকিস্টিক কেন? আর তাতে রক্তই বা কেন? ক্যানিয়ল কি আসলেই একজন সন্ত্রাসী? ওই হকিস্টিক দিয়ে কি সে মানুষকে মারধর করে? শিরশিরে একটা অনুভূতি হলো ইরতিজার।
লাইব্রেরি থেকে যখন বের হলো তখন সন্ধ্যা ঝেঁকে বসেছে প্রকৃতিতে। বৃষ্টি থেমে গিয়েছে, কিন্তু সর্বত্র এখনও রয়ে গিয়েছে বৃষ্টির চিহ্ন। কালো পিচের রাস্তা বৃষ্টি ভেজা। ইরতিজা চরণ ফেলে হেঁটে যাচ্ছে। তাদের বাসা থেকে লাইব্রেরি মাত্র কিছু মিনিটের মতো পথ। ফুফু কল দিয়েছিল। এই মানুষটার সাথে এখন কথা বলতে ইচ্ছা হয় না তার। কথা বলতে গেলে কী একটা কাঁটার মতো যেন বক্ষে এসে বিঁধে। টুকটাক কথা বলেই কথা সমাপ্ত করেছে। নিশ্চিন্ত মনে হেঁটে আসছিল ইরতিজা। সামনে আকস্মিক একটা দুর্ঘটনা তার জন্য অপেক্ষারত সেটা কে জানতো! এরিয়ায় প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই অকস্মাৎ পিছন থেকে কেউ একজন মুখ চেপে ধরলো ইরতিজার। থেমে গেল তার হৃদস্পন্দন। প্রথম মুহূর্তে কিছু বুঝতে পারলো না। চিৎকার করার চেষ্টা করলে শুধু অদ্ভুত ধরনের আওয়াজই বেরিয়ে এলো মুখ থেকে। আশেপাশে কেউ নেইও যে ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করবে। মুখ চেপে ধরা লোকটা ইরতিজাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে জানে না ইরতিজা। বাধা দেওয়ায় চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না। লোকটার কাছে তার শক্তি অতি তুচ্ছ। ইরতিজা দু চোখে দেখছে শুধু অন্ধকার। তার মাথা ঘুরছে। মনে হচ্ছে মৃত্যু তার অতি সন্নিকটে। একটু পর কি সে মারা যাবে এই লোকটার হাতে? তার এমন কেন মনে হচ্ছে যে একটু পরই তার জীবনে মৃত্যু নামবে?
(চলবে)