একগুচ্ছ_ভালোবাসা লেখনীতে : আনিশা সাবিহা (ছদ্মবেশী) পর্ব : ৮

৮+৯
#একগুচ্ছ_ভালোবাসা
লেখনীতে : আনিশা সাবিহা (ছদ্মবেশী)
পর্ব : ৮
মায়ের গাল স্পর্শ করে হাউমাউ করে কাঁদলাম।আমি বারবার করে মায়ের উদ্দ্যেশে বললাম….
–“মা ওঠো না। দেখো তোমার অনুমা কাঁদছে। তুমি আমাকে বুকে টেনে নেবে না? আমার মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেবে না? বলবে না যে তোর মা তোর কাছেই আছে তাহলে কেন কাঁদছিস? তবে ওঠো না মা প্লিজ ওঠো!”
কিন্তু দুর্ভাগ্য….! আমার কথাগুলো মায়ের কান পর্যন্ত পৌঁছালো না। কারণ মা আমার সাথে এবং সবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং সম্পর্কের মায়া কাটিয়ে চলে গেছে সেই না ফেরার দেশে।যেখান থেকে কেউ ফিরতে পারে না। কিন্তু আমার এই ছোট্ট অবুঝ মনটা যে সেটা মানতে চাইছে না। মাকে শেষবারের মতো ঠিকঠাক দেখতেও পারলাম না। বাবা আমাকে কোলে তুলে নিল। বারবার হাত পা ছুঁড়ে নামতে চাইছিলাম। আমি কিন্তু পারলাম না। মাকে আবারও সাদা চাদরে মুঁড়ে দাওয়া হলো। আমি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম…..
–“এভাবে মায়ের মুখটায় কাপড় দিয়ে মুঁড়িয়ে দিও না। আমার মায়ের শ্বাস নিতে কষ্ট হবে।”
কেউ আমার কথা কানেই তুললো না। মাকে নিয়ে মামা এবং অন্য লোক জনেরা চলে গেল। বাবা আমাকে নামিয়ে দিল। তারপর নিজেও চলে গেল মায়ের পিছন পিছন। আমিও দৌড়ে বাবার কাছে যেতে নিলাম। কিন্তু বর্ণদা বাঁধ সাধলো। আমি বর্ণদাকে অনুরোধ করলাম। সেও আমার কোন কথা শুনলোনা। আমাকে জোর করে একটা ঘরে বন্ধ করে দিল। আমি খুব কাঁদলাম মা মা করে চিৎকার করলাম। কিন্তু আফসোস! মা আর আমার কান্না দেখে গলতে পারল না। এলোনা মা আমার কাছে। কাঁদতে কাঁদতে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়লাম। এক পর্যায়ে ঘুমিয়েও পড়লাম।

যখন ঘুম ভাঙলো, তখন চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। যেমন, আমার জীবনটাই অন্ধকার নেমে এসেছে! ঠিক তেমন! ঘুমটা ভাঙে বর্ণদার ডাকে।চোখ কচলে আশেপাশের তাকাই আমি। তার দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলি….
–“মা কোথায় আসেনি??”
বর্ণদা তার হাতে থাকা খাবারের প্লেটটি টেবিলে রেখে আমার পাশে এসে বসে আমার মাথায় নম্রভাবে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে…..
–“ফুপিমা আর নেই নুড়ি। আর তুই এই সত্যিটা যত তাড়াতাড়ি মেনে নিতে পারবি ততোই তোর পক্ষে ভালো।”
আমি সাথে সাথে চেঁচিয়ে উঠে সরে গেলাম।
–“কি বলছো তুমি বর্ণদা আমার মা আমার কাছেই আছে ডাকলেই চলে আসবে!”
কথাটা বলে চিৎকার করে মাকে ডাকতে শুরু করলাম। আমি কিন্তু মা এলো না। তবুও আমি থামলাম না ডাকতেই থাকলাম। বর্ণদা আমাকে বোঝাতে অনেক চেষ্টা করল। কিন্তু আমার পাগলামি আচরণের কারণে শেষমেশ না পেরে সে আমায় কষে একটা চড় মারল। সাথে সাথে আমি মা মা বলে কেঁদে দিলাম। বর্ণদা আমাকে জড়িয়ে নিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে বলল…..
–“এমন পাগলামো করিস না নুড়ি। ফুপিমা কিন্তু উপর থেকে সব দেখছেন। উনি কিন্তু রাগ করবেন।”
–“কেন আমাকে মা ছেড়ে চলে গেল বর্ণদা?
সে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো আমাকে নিজের বুকের সাথে ঠেকিয়ে বলল….
–“এটাই যে প্রকৃতির নিয়ম। সবাইকে একদিন না একদিন এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়।
বর্ণদার কথায় আমার মনের ভয় আরও বিস্তর হলো। এগিয়ে এসে বর্ণদার বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম। আষ্টেপৃষ্ঠে তাকে নিজের সাথে বেঁধে বললাম,,,
–“তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে নাতো? আমার মা তো আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। তুমি যেওনা প্লিজ! তুমি গেলে যে আমি বড্ড একা হয়ে যাব।
বর্ণদার ভারাক্রান্ত মুখে মলিন হাসি ফুটে উঠে। আমাকেও জড়িয়ে ধরে সে বলে….
–“জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোর হাতে হাত রেখে বাঁচবো নুড়ি। আমার শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমি তোরই থাকবো। তোর পাশেই থাকবো।”
বর্ণদার কথায় হালকা স্বস্তি পেলাম আমি। সে আমাকে উঠিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করল। ধমক দিয়ে দিয়ে কয়েকবার খাওয়াতে সক্ষম হলো। অতঃপর আমি বর্ণদার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কাঁদতে থাকলাম। সে আমাকে কিছুই বলে শান্ত করতে পারল না। কি করে শান্ত হব? আমি মা নামক অমূল্য জিনিস হারিয়ে আজ আমি নিঃস্ব….! রাত হয়ে গেল বাবা আমাকে একবারের জন্য দেখতে এলো না। হয়তো বাবা নিজেই নিজের শোক কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আমার চোখ সবে নিভু নিভু হয়ে এসেছে। ইতিমধ্যেই বর্ণদা আমাকে বালিশে শুইয়ে দিতে লাগলো। সাথে সাথে তার হাত চেপে ধরে বিনয়ের সুরে বললাম….
–“প্লিজ যেও না আমার একা ভয় করবে!”
বর্ণদা কিছু একটা ভাবতে থাকলো। আমাকে অস্থির ভঙ্গিতে বলল,,,
—“এমন করিস না নুড়ি। এভাবে আমাদের দুজনের একা থাকা ঠিক হবে না। তুই না হয় ছোট আছিস কিন্তু আমি বড় হয়েছি।”
–“তো কি হয়েছে? তুমি আমাকে ফেলে গেলে কিন্তু আমি কান্না করব।”
–“কিন্তু….”
বর্ণদা আর কিছু বলতে পারল না দেয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে বসে থাকল ঠাঁই।
আমি উকিঁ দিয়ে জানালার বাইরে তাকালাম আকাশের লক্ষ লক্ষ মিটিমিটি তারার দিকে। আচ্ছা এর মধ্যে কোনটা আমার মা?
মা চলে যাওয়ার পর আমার দিনগুলো কাটতে থাকলো ছন্নছাড়া। আমার যত্নের কোন কমতি হতো না। তবে মায়ের যত্ন মায়ের আদর এর সাথে কোন কিছুর তুলনা হয়? হয় না কখনো! সারাদিনরাত মনমরা হয়ে থাকতাম। কখনো কখনো হাউমাউ করে কাঁদতাম। আর বাবা সেতো কয়েক দিনের জন্য নিজেকে বন্দী করে ফেলেছিল। বর্ণদা মাঝে মাঝেই চলে আসতো আমার কাছে। সেও পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এভাবেই আমি পারি দিচ্ছিলাম দিনগুলো। মা চলে যাওয়ার ঠিক দুই মাস পর। কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিলাম আমি। আগের মত পড়াশুনা করতাম। স্কুলে যেতাম। কিন্তু হঠাৎ একদিন দাদিমার কথায় বাবা বিয়ে করে এক নতুন বউ নিয়ে হাজির হল বাড়ির সামনে। ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও সত্যি যে,,, যেই মানুষটা আমার মাকে পাগলের মত ভালবাসত মায়ের পরিবর্তে অন্য কাউকে মানতে পারত না। সেই মানুষটাই আজ মায়ের পরিবর্তে এক অন্য মহিলা নিয়ে হাজির হল।
দাদীমা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল আমার নাকি একটা মা দরকার আর সেই কারণেই বাবাকে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছে। তখন জানতাম না এটা শুধু একটা অছিলা মাত্র। সেদিন খানিকটা খুশি হয়েছিলাম বটে। নতুন মা পেয়েছি বলে কথা! নতুন মা কয়েকদিন আমার বেশ যত্ন নিল। কিন্তু আমি খেয়াল করলাম আমার বাবা আস্তে আস্তে আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আমি কেমন আছি না আছি সেটা জানার প্রয়োজনবোধ পর্যন্ত করত না সে। আস্তে আস্তে বাবাসহ নতুন মায়েরও চোখের বিষ হয়ে উঠলাম। নতুন মা আমায় সব সময় মারধোর করার বাহানা খুঁজত। যেই আমি নিজে এক গ্লাস পানি পর্যন্ত ধরে খেতাম না। সেই আমি কে রান্না করে খেতে হতো।

খাবার পুড়ে যাওয়ার কারণে একদিন খুব মারছিল নতুন মা। ঠিক সেই সময় মামা আর বর্ণদা এসে হাজির হয়। আমাকে মার খেতে দেখে তারা বাবাকে কল করে কিছু ঝাড়ি দিয়ে আমাকে সোজা নিয়ে যায়। তারা মামা বাড়ি ভেবেছিলাম হয়তো সেখানে একটু হলেও খুশি থাকব। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। মামি আমাকে মামা আর বর্ণদার অগোচরে কাজ করে নিত। আর কোন ভুল চুক হলে মারতো। এভাবে চলতে থাকে আমার জীবন। আস্তে আস্তে বড় হই। আমি আমার বোঝার মত বয়স হয়। বাবা তার দেওয়া খরচ বন্ধ করে দেয়। তখন মামিমা আরো অত্যাচার শুরু করে। আমার মত মেয়ে যে তুলোর বিছানায় ঘুমাত তার স্থান হল শক্ত চৌকিতে। কষ্ট কী জিনিস সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝলাম! মায়ের ছবি নিয়ে প্রতিদিন কাঁদতাম। আর বর্ণদা থাকলে তার সাথে কথা বলে সময় কাটাতাম। কিন্তু সেও যেন বেশ ব্যস্ত হয়ে পরলো নিজের ক্যারিয়ার গড়তে।
আস্তে আস্তে বুঝলাম ভালোবাসা কী জিনিস। এটাও বুঝলাম এই অনুভূতিটা আমি অলরেডি একজনকে দিয়ে ফেলেছি সে মানুষটি হলো বর্ণদা। কিন্তু মুখে বলিনি কখনো! সে আমার মুখ দেখে বুঝে যেত আমার মনের কথা। সে আমায় অপেক্ষা করতে বলেছিল। হুট করে মামিমা ঠিক করে ফেলল বর্ণদাকে বিদেশে পাঠাবে। বর্ণদা রাজী না হয়ে পারল না। বর্ণদা বিদেশে যাওয়ার দিন আমাকে জড়িয়ে বলেছিল অপেক্ষা করতে। সে আসবে আমাকে তার মনের রাণী বানাতে। কিন্তু সে যাওয়ার পরপরই মামীমা আমার ফোন কেড়ে নিল। যাতে বর্ণদার সাথে আমি কোনরকম যোগাযোগ না করতে পারি। আমাকে বলে ও দিল মামিমা যে আমি বর্ণদার যোগ্য নয়। আমি এই বাড়ির আশ্রিতা।সে তার ছেলেকে সে বড়লোক জায়গায় বড়লোক মেয়ের সাথে বিয়ে দেবে। সেদিন আমার নিঃশব্দে কাঁদা ছাড়া কোন রাস্তায় খোলা ছিল না। এভাবে একদিন মামাও স্ট্রোক করে মারা গেল। আপন জনের লিস্ট থেকে আরেকজন হারিয়ে গেল। তারপরেই তো দ্যা গ্রেট অনুরাগ চৌধুরীর সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলল মামিমা।

বর্তমান….
সব কিছু বলতে বলতে কখন যে অনুরাগের বুকে ঢলে পড়েছি তা নিজের ও অজানা। শুধু তাই নয় ফুঁপিয়ে কেঁদে আমি ওনার গেঞ্জি ভিজিয়ে ফেলেছি। হুঁশ আসতেই তড়িঘড়ি করে মাথা উঠাতে নিলাম আমি। অনুরাগ তা হতে দিলেন না। আমাকে আরো জোরে তার বুকের সাথে চেপে ধরলেন। মলিন কণ্ঠস্বর নিয়ে বলে উঠলেন….
–“কাঁদো আরো বেশি করে কাঁদো। কাঁদলে মন হালকা হয় অনুশ্রী…!”
আমি আরো জোরে জোরে কাঁদতে লাগলাম ওনাকে জড়িয়ে ধরে। সত্যিই এমন সৌভাগ্য হবে কখনো ভাবি নি! আমার নির্দয় স্বামী নামক মানুষটার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে পারবো কখনো ভাবি নি। আমি উনি যত্নের সাথে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
কাঁদতে কাঁদতে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিলাম আমি। কানে আবছা আওয়াজ কানে ভেসে এলো…
–“জানিনা তোমার প্রতি আমার এমন অনুভূতি কেন জাগছে। তবে আমি আমার অনুভূতিগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কারণ তুমি অন্য কারোর ভালোবাসা। অযথা তোমার উপর মায়া বাড়িয়ে লাভ হবে না। তবে তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে আজ বড্ড ইচ্ছে হলো! অনামিকা ঠিকই সেদিন বলেছিল তুমি প্রেমে পড়ার মত এক মেয়ে। খুব সহজে কাউকে প্রেমের জালে বন্দী করতে পারো। তুমি তবে আমি তোমার প্রেমে পড়বো না। ফিরিয়ে দেবো তোমাকে তোমার ভালোবাসা।”

সকালের প্রথম আলো এসে আমার চোখে পড়ল। আমি চোখ মুখ খিঁচে অন্য দিকে ফিরে শুয়ে পড়লাম। হাতের কাছে একটা ছোট হাতের স্পর্শ পেলাম। আমি চোখ বুঁজে ভালো করে হাতিয়ে দেখতেই মনে হলো এটা অদ্রিজার ছোঁয়া। চোখটা খুব জোর করে খুলে ফেললাম। ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখলাম অদ্রিজা আমার পাশে শুয়ে আছে। আশেপাশে তাকাতেই আতঁকে উঠলাম আমি। আমি বেডে শুয়ে আছি? ঘরে কখন এলাম আমি?
নিজেই নিজের মাথায় টোকা মেরে বললাম….

–“উফফ অনু তুই আজকে গেলি এই বদমেজাজি বর টা আজকে আমার উপর থেকে টর্নেডো নিয়ে যাবে!”

চলবে….🍀🍀
বি.দ্র. জানি ছোট হয়েছে🙃। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
____________________________________________
#একগুচ্ছ_ভালোবাসা
লেখনীতে : আনিশা সাবিহা (ছদ্মবেশী)
পর্ব : ৯
আশেপাশে চোরের মত উঁকি দিলাম আমি। সোফার দিকে চোখ যেতেই ধড়ফড় করে উঠলাম। অনুরাগের ভয়ে বেড থেকে তাড়াতাড়ি নেমে গেলাম। তারপর আবার উনার দিকে তাকালাম। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম আমি। অনুরাগ ঘুমোচ্ছেন গুটিশুটি হয়ে। তবুও মনের মাঝে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। আমি এখানে কেন? আর অনুরাগ কি আমার জন্য সোফায় ঘুমোচ্ছেন? কিছুক্ষণ ভেবে ও যখন উত্তরের কোন কূলকিনারা পেলাম না তখন গুটি গুটি পায়ে হেঁটে উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনি কি সত্যিই ঘুমিয়ে আছেন? একটা শুকনো ঢোক গিলে অনুরাগ এর দিকে একটু হেলে তাকালাম। সাথে সাথে নিজের বড় বড় চোখ গুলো মেললেন উনি। আমি চমকে সোজা হয়ে কয়েক ধাপ পিছিয়ে গেলাম। চোখ বন্ধ করে হাত সামনে রেখে জোরে জোরে বললাম….
–“আমি ইচ্ছে করে বিছানায় ঘুমোয়নি। ক…কি করে যে আমি সেখানে ঘুমিয়ে পড়লাম আমি জানি না। প্লিজ আমাকে কিছু বলবেন না।”
–“আমি তোমাকে ওখানে শুইয়ে দিয়েছিলাম।”
লোকটার কথায় হাত সোজা করে রেখে ওনার দিকে তাকালাম। আমি বিস্মিত কন্ঠে বললাম….
–“আপনি??”
–“হুম আমি।”
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। উনি আমাকে বিছানায় শুইয়েছেন? ব্যাপারটা যেন কোন মতেই হজম হলো না। আমার চোখ আরো বিস্মিত হল। যা দেখে অনুরাগও ভ্রু কুঁচকে তাকালেন। সূক্ষ্ম গলায় বললেন…
–“কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? আমার মুখে কি কিছু ভরে আছে? নাকি আজব লাগছে দেখতে?”
–“না কিছুনা। (থতমত খেয়ে)

উনি কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আমি হাবলাকান্ত হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলাম। এটা কি স্বপ্ন ছিল? আমার ভাবনার অন্ত না হতেই অদ্রিজার কান্না কানে এলো। ও ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। ফোলা আপেলের মত মুখটা সূর্যের আলোতে আরো লাল হয়ে যাচ্ছে। আমি মুচকি হেসে মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেলাম।
সকাল হতে না হতেই সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমি রান্না ঘরে ঢুকছি আর বের হচ্ছি। যেন ব্যস্ততার অন্ত নেই আমার। নৌশিনও টুকটাক আমাকে সাহায্য করে চলেছে। ওদিকে অদ্রিজা কে নিয়ে বসে আছে অর্ণব এবং অনুরাগ। বর্ণদা এখনও নিচে নামেনি। হয়তো এখনো পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে। কেননা ছোটবেলা থেকে বর্ণদার অভ্যেস দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা। হয়তো আজও সেই অভ্যাস রয়ে। গেছে এক সময় আমিও তার অভ্যাস ছিলাম। এখন হয়তো আমি নেই। তবে একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। বর্ণদা থাকলে ঠিকঠাক কাজ হয়তো আমার দ্বারা হবে না। ওর মুখোমুখি হতে আমার হাত-পা কাঁপে। তাই এই ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে। কিন্তু সুবিধা জিনিসটা বেশিক্ষন টিকলো না। শিস বাজাতে বাজাতে একপা দুপা করে এসে থেকে নেমে পড়ল সে। তার শিস বাজানোর শব্দ শুনে আমি বুঝে গেলাম সে ঘুম থেকে উঠেছে। নিজের কাজে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করলাম আমি।তবুও নিজের চোখ জোড়া থেমে থাকল না উকিঁ দিলাম রান্নাঘর থেকে ড্রইংরুমে। তবে বর্ণদার দিকে চোখ গেল না। চোখটা গেল অনুরাগ এর দিকে। চোখ জোড়া কি কনফিউজড হয়ে গেল? অদ্ভুত ব্যাপার স্যাপার….! চোখ ফিরিয়ে নিজের কাজে মন দিলাম।
রান্না বান্না সেরে নৌশিনকে বললাম সবাইকে যেন ডেকে নেয় খাবার টেবিলে। নৌশিন মাথা নাড়িয়ে রান্না ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে গেল।
আমি একে একে খাবারগুলো টেবিলে নিয়ে যেতে লাগলাম। সবাই ধীরে ধীরে খাবার টেবিলে এসে বসে পড়ল। আমিও সবশেষে ডিম ভাজির বাটিটা নিয়ে যেতে লাগলাম খাবার টেবিলের দিকে। টেবিলের কাছে যাওয়ার সাথে সাথে পায়ে হালকা চিনচিন ব্যাথা করে উঠলো। পায়ের দিকে মোচড় খেলাম আমি। হাত থেকে কাচের বাটি টা পড়ে গিয়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। পায়ের যন্ত্রণায় পড়ে গেলাম আমি ডান হাতটা গিয়ে কাঁচের টুকরোগুলো ওপরে পড়লো যন্ত্রণায় চেঁচিয়ে উঠলাম আমি। আমার চেঁচানো দেখে সবাই ছুটে এলো। ডান হাতটা উঠিয়ে দেখতেই চমকিত হলাম। হাতের ভিতর কাঁচের টুকরোগুলো লেগে আছে আর হাত থেকে রক্ত বের হতে শুরু করেছে। ভয়ে কেঁদে দিলাম। আমি আমার কান্না দেখে তড়িঘড়ি করে অনুরাগ ও বর্ণদা বসে পড়লো হাঁটু গেড়ে। বর্ণদা আমার হাত ধরার আগেই অনুরাগ আমার হাত ধরে ফুঁ দিতে থাকলো। বর্ণদার মুখটা একটু থমথমে হয়ে গেল। অনুরাগ তখনও খেয়াল করেনি বর্ণদাও তারই মত অস্থির হয়ে বসে আছে। উনি আমার হাত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অনুরাগ অস্থির কন্ঠে বললেন….
–“নিজের খেয়াল রাখতে শেখোনি অনুশ্রী?কি করলে সব বলতো?”
আমি কান্না থামিয়ে উনার অস্থিরতা দেখতে থাকলাম। আমার ব্যাথাতে কি মনে কষ্ট পাচ্ছেন? নৌশিন আমার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো….
–“এসব কি করে হলো? কিভাবে পড়ে গেলে…?”
–“তেমন কিছু না পা মোচর দিয়ে উঠেছিল তাই….”
অনুরাগ আমাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলেন।
আমাকে উঠিয়ে তড়িঘড়ি করে ওপরে নিয়ে চলে এলেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার হাত থেকে কাঁচের টুকরোগুলো বের করেন। আমি চোখ বন্ধ করে শুধু ব্যাথা অনুভব করছিলাম। এবার সত্যি সত্যিই আমার মনে হচ্ছে অনুরাগই তো এই লোকটা? উনি যে এতটা কেয়ার করবেন সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল। মুখটা হাঁ করে তাকিয়ে আছি আমি। লোকটার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি ওনার মধ্যে কি পরিবর্তন এসেছে?? সব কিছুই হয়তো মায়ার খেলা! বাড়িতে তো একটা পোষা প্রাণী থাকলেও তার প্রতি মায়া জন্মে তার খেয়াল রাখতে ইচ্ছা হয়। হয়তো এখানেও ঠিক আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।
আমার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে আমার দিকে চোখ তুলে তাকালেন অনুরাগ। এতক্ষণ যেন উনি একটা উত্তেজনার মাঝে দিয়ে যাচ্ছিলেন। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে উনি স্বস্তির কন্ঠে বলে উঠলেন….
–“ব্যাথা কমেছে…?
আমি তখনও চুপ। আসলে ওনার ভেতরকার পরিবর্তন দেখতে বড়ই ব্যস্ত। আমি মনে হচ্ছে অন্য অনুরাগ কে দেখছি।
এরই মাঝে উনার যেন হুঁশ ফিরে এলো। যেন নিজের কাছে নিজেই হতভম্ব উনি। এপাশ-ওপাশ তাকিয়ে বললেন,,,
–“আসলে তোমার লেগেছিল তাই একটা অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। সরি!”
–“এতে সরি বলার কী হলো? আপনি কি কোনো
অন্যায় করেছেন?
অনুরাগও হয়তো কয়েক সেকেন্ড তাই ভাবলেন। সত্যি তো সে কোন অন্যায় করেননি। থতমত খেয়ে কি করবেন সেটা ভেবে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। উনার কাজে আমি একটু হাসলাম। তারপর আমিও বের হয়ে গেলাম উনার পিছন পিছন। ড্রইং রুমে যেতেই সবাই আমাকে এটা ওটা প্রশ্ন করতে শুরু করল। আমি ঠিক আছে কিনা আমার বেশী লেগেছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি! কিন্তু আমার এই চোখ জোড়া চলে গেল বর্ণদার দিকে। সে এক পাশে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি সবার কথার প্রতিত্তোরে হু হা বললাম। সবাই স্বস্তি মনে গিয়ে আবারও খাবার টেবিলে বসলো। তবে বর্ণদা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকল এক কোনে। সবাই চলে গেলে অনুরাগও গলা খাঁকারি দিয়ে গিয়ে খাবার টেবিলে বসলেন। বর্ণদা গুটিগুটি পায়ে আমার কাছে এগিয়ে এলো। গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো…
–“এখন ব্যাথা কমেছে?”
আমি মাথা নাড়ালাম। সেও মাথা নাড়িয়ে বলল…
–“হ্যাঁ তা তো কমবেই। তোর বর ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে বলে কথা। অবশ্যই যত্নের সাথে ব্যান্ডেজ করেছে। হয়তো হাতে দু’একখানা চুমুও দিয়েছে। তাতে তো একবারে ব্যথা সেরে গেছে তাই না রে?”
আমি ভ্রু কুঁচকে তীক্ষ্ম গলায় বললাম….
–“খোঁচা দিয়ে কথা বলছ…?”
সে হাসলো তবে তার হাসিতে রস কষ নেই।
–“খোঁচা দিয়ে কথা বলার সাহস আছে? আমার দ্যা বিগ বিজনেসম্যান আজমাইন অনুরাগ চৌধুরীর স্ত্রী তুই। তোকে খোঁচা মেরে কথা বললে যদি তোর বর আমার নামে মান হানির কেস করে দেয় তখন তো জেলে যেতে হবে!”
–“তোমার সাথে কথা বলায় বেকার!”

কথাটা বলে ধুপধাপ করে এসে নাক ফুলিয়ে বসে পড়লাম চেয়ারে। অর্ণবের কোল থেকে অদ্রিজাকে নিয়ে নিলাম।
খাওয়াদাওয়া শেষে যথারীতি অর্ণব আর অনুরাগ অফিসের কাজে বেরিয়ে গেল। আমি বাম দিয়ে চামুচ দিয়ে খেতে শুরু করলাম। খেতে একটু সমস্যা হচ্ছে বটে। তবে কাউকে বলতে পারছি না। দুইবার খাবার মুখে দিয়ে সমস্যার চোটে উঠতে লাগলাম আমি চেয়ার থেকে। হঠাৎ কেউ আমার বাহুতে হাত রেখে বসিয়ে দিল। আমাকে চরম অবাক করে দিয়ে অনুরাগ আমার সামনে এলেন। চামুচ দিয়ে খাবার তুলে আমার মুখের সামনে তুলে ধরলেন উনি।
আমি বুঝতে পারছি না। উনি কি আমাকে অবাক করাতে করাতে স্ট্রোক করিয়ে মারবেন নাকি। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,,,
–“আপনি না…”
আর কিছু বলার আগেই আমার মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিলেন উনি। শান্ত গলায় বললেন,,,
–“খেতে সমস্যা হবে বললেই পারতে। অযথা নিজে কষ্ট করে খাওয়ার প্রয়োজন নেই তো।”
আমি মুখ ফুলিয়ে খেতে শুরু করলাম। মনে মনে রাগের ঠেলায় লুচির মতো ফুলছি আমি। বলতে ইচ্ছে করছে,’তুই জানিস না আমি কাটা হাত নিয়ে খেতে পারব না? জেনেও না জানার ভান করিস?’

তবে পেটে থাকলেও মুখ দিয়ে কথাগুলো বের হলো না। আমি খেতে থাকলাম। হঠাৎ মনে হলো কেউ আড়াল থেকে সরে গেল। তার ছায়া যেন আশেপাশেই ছিল তার উধাও হয়ে গেল। বর্ণদা কি এসেছিল?
আমাকে খাইয়ে অনুরাগ তড়িঘড়ি করে অফিসে চলে গেলেন।
আমিও অদ্রিজাকে নিয়ে সিঁড়ির দিকে এগোতে নিলেই বর্ণদা এসে আমার সামনে দাঁড়াল। আমি থেমে গেলাম। অদ্রিজার দিকে সে হাত বাড়িয়ে বলল,,,
–“ওকে আমার কোলে দে।”
–“তোমার কোলে কেন?”
আমার প্রশ্নে রাগান্বিত চোখে তাকাল সে। যেন আমি কোনো ভুল কিছু বলেছি।
–“সিরিয়াসলি? বাচ্চাকে কোলে নিতে কোনো কারণ লাগে? তার ওপর ও তোর মেয়ে। ওকে কোলে না নিলে হয়?”
কথাটা বলে আমার কোল থেকে অদ্রিজাকে নিয়ে নিল বর্ণদা। আমার চাহনি দেখে সে কিছু একটা বুঝে বলল,,
–“অবাক হচ্ছিস? অবাক হওয়ার তো কথা নয়। তোর মেয়েই তো ও। তুই তো নিজেই বলেছিস। আমিও মেনে নিয়েছি। তুই সম্পূর্ণ অন্যকারো!!”

আমার খানিকটা রাগ হলো। নিজের ভালোবাসার প্রতি বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই দেখছি তার। খিটমিট করে বললাম,,,
–“হ্যাঁ অদ্রিজা আমার মেয়ে। কারণ রক্ত কখনো সম্পর্কের একমাত্র সূত্র হতে পারে না। আমি অদ্রিজাকে কখনো জানতেই দেব না ও আমার মেয়ে নয়। ও আমার গর্ভে জন্মায়নি এটা কখনোই জানবে না ও। আর আমি অন্যকারো ঠিকই বলেছো। অন্যকারো হয়েছি কেন জানো? তোমার মা বাধ্য করেছে। আমাকে কিছু বলার আগে তোমার মাকে প্রশ্ন করো।”
কথাটা বলে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে থাকলাম আমি। পিছনে ঘাড় ঘুড়িয়ে আবারও বললাম,,,
–“আর হ্যাঁ অদ্রিজাকে কিছুক্ষণ পরেই দিয়ে যেও। ওকে কিছুক্ষণ পর পর খাওয়াতে হয়।”
কথাটা বলে তাড়াতাড়ি চলে এলাম আমি ঘরে। আর পুড়তে চাই না বর্ণদার আগুনে। নিজের মনো জ্বলা আগুনে নিজেই পুরে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে বর্ণদার আগুনে পুড়তে চাই না আর!

দুপুরের হালকা রোদে অদ্রিজাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার একমাত্র সারাদিনের সাথি সে। ওকে ছাড়া যেন সময়ই কাটতে চায় না। যেন খুব আপন কেউ আমার। সবে সবে অদ্রিজাকে গোসল করিয়ে দিয়েছি। ছোট্ট শরীরে যেন ঠান্ডা না লাগে তার কারণে দাঁড়িয়ে আছি রোদে। ও আমার গলার চেইন নাড়ছে আবার মুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি বার বার চেইন সরিয়ে নিচ্ছি তবুও একই কাজ করছে ও। আমি হাসছি ওর কর্মকান্ডে। ওর কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বললাম,,,
–“আমার মেয়েটার খিদে পেয়েছে বুঝি? খাবার খাবে?”
অদ্রিজা কিছু না বলে আঙ্গুল মুখে পুরে দিল। আমি কিছু বলতেই বাড়ির মেইন গেটে শব্দ হলো। আমি ওদিকে দেখতেই দেখলাম মেইন গেট দিয়ে আমার বয়সী একটা মেয়ে সাথে একজন বয়স্ক মহিলা বাগানে ঢুকছেন। তাদেরকে চেনার চেষ্টা করলাম। কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে বুঝলাম ওদেরকে চিনি না আমি। ওরা এগিয়ে এলো বাড়ির দিকে।

আমিও অদ্রিজাকে দোলনায় বসিয়ে ওরা কারা সেটা জানতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। নিচে পা রাখতে না রাখতে বয়স্ক গলার আওয়াজ জোরে জোরে ভেসে এলো আমার কানে।
–“কোথায় আমার নাতনি? কোথায় রেখেছো তোমরা? আমার কাছে দাও।”
বয়স্ক মহিলার কথার আগামাথা কিছুই বুঝলাম না। ওদের দিকে এগিয়ে যেতেই দেখলাম নৌশিন দাঁড়িয়ে ওদের কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা যেন বেশ জোরাজোরি করছে।

আমি নৌশিনের কাছে এসে ওর কানে ফিসফিস করে বললাম,,
–“উনারা কারা নৌশিন?”
–“এই বয়স্ক মহিলা অনামিকা ভাবির মা। আর ওই মেয়েটা অনামিকা ভাবির ছোট বোন সুনয়না। ওরা নাকি আজকে নাতনীকে নিয়ে নিজেদের বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছেন।” (কানে কানে)
আমি আঁতকে উঠলাম। না আমি আমার অদ্রিজাকে কিছুতেই নিয়ে যেতে দেব না। ওদের দিকে তাকালাম। ওরা আমাকে অদ্ভুত ভাবে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিল। আমি মহিলাটিকে সালাম দিতেই উনি বললেন,,,
–“ওহ তুমিই তাহলে সেই মেয়ে? যাকে অনুরাগ ঢ্যাং ঢ্যাং করে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে?”
মহিলাটির কথা বলার ধরণ একে বারেই ভালো লাগল না আমার। আমি কিছু বলার আগেই সুনয়না নামের মেয়েটা বলল,,
–“মা দেখেছো? মেয়েটাকে দেখেই মনে হচ্ছে ওর অন্তর বিষে ভরা। সৎমা হলে যা হয়। না জানি আমাদের অদ্রিজার কি অবস্থা করে রেখেছে!”

চলবে….🍀🍀
বি.দ্র. ইনবক্সে অনেকেই প্রশ্ন করছেন আমি কেন গল্প দিচ্ছি না নিয়মিত। তাদেরকে বলছি আমি অসুস্থ খুবই। জ্বরে বিছানা থেকে ওঠা দায় হয়ে পড়েছে আমার কাছে। আমি কি করে গল্প দেব এই অবস্থায়? আশা করি আমার সমস্যা বুঝবেন। আজকে হালকা ভালো লাগছে আগের থেকে। তবে আম্মু হাতে ফোন দিচ্ছে না জ্বরের কারণে। যার কারণে গল্প লিখতে পারছি না। কাল থেকে নিয়মিত গল্প দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here