‘ একদিন তুমিও ভালোবাসবে ‘ 🌸❤️
||পর্ব~৩৩||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
৪৯.
মৌমিতা চলে যেতেই আদিত্য নিজের গাড়ির সামনে এসে নিজের শার্টের হাতা গোটাতে শুরু করলো। আদিত্যকে ওভাবে দেখে যে কয়জন ছেলে এতক্ষন দাঁড়িয়ে ওদেরকে নজরে রাখছিলো তারা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের গাড়ি করে চলে গেলো একে অপরের দিকে তাকিয়ে। ওরা চলে যেতেই…. আদিত্য রাজকে ফোন করে,
আদিত্য: রাজ তুই কোথায়?
রাজ: কেন কিছু হয়েছে?
আদিত্য: তুই কিছু লক্ষ্য করিসনি? (গম্ভীর গলায়)
রাজ: করেছি দেখেই তুই থাকতে বেরিয়ে এসেছি। কারণ যতক্ষন তুই থাকবি ততক্ষণ ওরাও ওখানেই থাকবে আমার পিছন করতে পারবে না। এই পরেশবাবুর আমার সাথে খেলার জন্য আরো বেশি বুদ্ধির প্রয়োজন। এই বুদ্ধি নিয়ে পারবেন না আমাকে মারতে। (মজা মেরে)
আদিত্য: বাজে কথা বন্ধ কর। কি গ্যারেন্টি আছে ওরা এখন তোর পিছু নেবে না? কোথায় তুই? টেনশন হচ্ছে আমার বুঝিছিস না কেন? (চিন্তিত হয়ে)
রাজ: (হেসে) আই নো বাডি কিন্তু আমাকে অফিস আসতেই হতো। আমি না আসলে এদিকটা সামলানো যেতো না। টিনা এসেছিল আমাকে খবর দিতে ফোনে না পেয়ে। তুই টেনশন নিস না আমি চলে আসব।
আদিত্য: অফিস কোথায় তোর? আমি আসছি।
রাজ: পাগলামি করিস না ভাই আমার। কিচ্ছু হবে না আমার। নো প্যানিক অনলি টনিক! (হেসে, মজা করে)
আদিত্য: (হেসে) টনিক আর পাচ্ছি কোথায়? (আনমনে)
রাজ: কি বললি? (চমকে উঠে)
আদিত্য: ক..কিছু না। তুই সাবধানে আসিস।
আদিত্য সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিলো আর নিজের মনে মনে ব্লাশ করতে লাগলো। একবার উপরের দিকে জানলার দিকে তাকাতেই মৌমিতার সাথে চোখে চোখ পড়ে গেলো। আদিত্য ভাবেনি মৌমিতা জানলায় দাঁড়িয়ে আছে। আদিত্যের সাথে চোখে চোখ পড়তেই আদিত্য দেখে মৌমিতা মুখের সামনে বই তুলে ধরলো জানো ও পড়ছে। আদিত্য হেসে ফেললো সেটা দেখে।
মৌমিতা: (মনে মনে– উফ! এখনও দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আর ওই ছেলেগুলো? ওদেরকেও তো দেখতে পাচ্ছি না।) এই কোয়েল! ওই ছেলেগুলো এখন আর নেই।
আমার কথা শুনে কোয়েল ছুটে এলো। ও আসতেই আমি সরে গেলাম। ও জানলা দিয়ে কিছুক্ষণ উঁকি ঝুঁকি মেরে নিয়ে আমার দিকে ঘুরে বললো,
কোয়েল: হ্যাঁ ওই ছেলেগুলো নেই আর আদিত্যদাও বেরিয়ে গেলেন। ধুর! গেলেন কি বলছি গেলো। এই তোর আপনি আপনি শুনে আমি নিজেও আপনি বলে ফেলছি। (কপালে চাপড় মেরে)
মৌমিতা: হুহ! (ভেংচি কেটে চলে গেলো।)
মৌমিতা ওয়াশরুম যেতেই কোয়েলের ফোন বেজে উঠলো। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আদিত্য ফোন করছে।
কোয়েল: আদিত্যদা কেন ফোন করছে কেন হঠাৎ করে? রাজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে হয়তো। (ফোন রিসিভ করে) হ্যাঁ আদিত্যদা বলো।
আদিত্য: কোথায় গেছিলি আজকে রাজের সাথে?
কোয়েল: আব…
আদিত্য: বল, বল। লজ্জা পাওয়া লাগবে না।
কোয়েল: লজ্জা কেন পেতে যাবো? আসলে, আমাকে রাজ কিছুই বলেনি। বললো সব ঘটনা একে অপরের সাথে যুক্ত, জানতে গেলে প্রথম থেকে জানতে হবে নাহলে কিছুই বুঝতে পারবো না। শুধু এটুকু বললো যে, ওর কাছ থেকে ওর সবথেকে প্রিয় মানুষটাকে কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়েছেন।
আদিত্য কথাটা শুনে চুপ করে রইলো। কোয়েলও কিছু বলছে না। বুঝতে পারছে না নিজের মনে থাকা প্রশ্নটা কিভাবে জিজ্ঞেস করবে আদিত্যকে।
আদিত্য: তা প্রিয়জনটা কে রাজের? জিজ্ঞেস করিসনি?
কোয়েল: ন..না মানে….
আদিত্য: সব জেনেও না বোঝার ভান করিস না। এখন যা পরিস্থিতি তাতে যেকোনো সময় রাজের বিপদ হতেই পারে, এইবার যদি হারিয়ে ফেলিস তাহলে কিন্তু কোনোদিন ফিরে পাবি না।
কোয়েল: আদিত্যদা প্লিজ! কিসব আজে বাজে কথা বলছো তুমি? (রেগে, ভয় পেয়ে)
আদিত্য: (শান্ত গলায়) কিছুক্ষন আগে কে জানো বলছিল রাজের খবর রাখার কোনো দরকার নেই, ওকে নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই?
কোয়েল: (নিশ্চুপ)
আদিত্য: রাজ আমার বাড়ি ফেরেনি। কল করেছিলাম বললো আমি থাকতেই ইচ্ছা করে বেরিয়ে গেছে যাতে ছেলেগুলো ওর পিছন না করতে পারে। আমাকে পরেশবাবু কোনো ক্ষতি করবেন না শুধু নজরে রাখবেন সেটা আজকেই বুঝে গেলাম কিন্তু রাজের ক্ষেত্রে উনি কি চাইছেন আমি জানি না। মৌমিতাকে আমি আগলে রাখবো, ওর কোনো ক্ষতি আমি হতে দেবো না তেমন রাজও তোকে আগলে রাখবে কিন্তু রাজকে কে আগলাবে কোয়েল? আমি জানি তুই মৌমিতার ফোন থেকে রাজের নাম্বার নিয়ে রেখেছিস। রাখছি আমি।
আদিত্য ফোন রেখে দিলে কোয়েল ফোনটা কান থেকে নামিয়ে হাতে নিয়ে চুপ করে বসে থাকে। মনে মনে ভাবে,
কোয়েল: (মনে মনে– রাজ আজকে কিচ্ছু বললো না, বললো পরে বলবে। কিন্তু কবে? এতদিন আমি অপেক্ষা করছিলাম শুধুমাত্র যেদিন ও সামনে আসবে সেদিন ওর মুখ থেকে সবটা জানার জন্য। কি এমন কারণ ছিলো যার কারণে ও হুট করে কাউকে কিছু না জানিয়ে উধাও হয়ে গেলো? আদিত্যদা বললো ও বাড়ি যায়নি তাহলে কোথায় গেছে? আজকে তো অফিস আউটফিটে ছিলো, কিন্তু কেন?)
কোয়েল ফোনটা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে রাজকে ফোন করলো। রাজ ফাইল চেক করতে করতে ব্লুটুথ দিয়ে কল রিসিভ করে বললো,
রাজ: ইয়েস!
কোয়েল: কোথায় তুমি?
রাজ চমকে উঠে নিজের ফোনের দিকে তাকালো। দেখলো স্ক্রিনে “কুহুজান” নামটা স্পষ্ট। রাজ বিস্মিত হয়ে কিছুক্ষন একভাবে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইলো। ও ভাবতে পারছে না কোয়েল ওকে ফোন করেছে? অন্যদিকে কোয়েল কোনো উত্তর না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করলো,
কোয়েল: কি হলো, কোথায় তুমি?
রাজ: হ..হ্যাঁ? আ..আমি? আমি তো অ…
__রাজ আমার কাজ শেষ, চলো এবার। বাড়ি ফিরতে হবে তো নাকি? রাত হতে চললো।
রাজ নিজের জিভ কেটে চোখ বুজে রইলো কিছুক্ষন তারপর বলল,
রাজ: টিনা তুমি বেরিয়ে যাও, আমি আরেকটু পরে বেরোচ্ছি।
টিনা: কিন্তু রাজ রোজ তো তুমি আমাকে ড্রপ করে দাও, আজকে আমি একা যাবো?
রাজ: হ্যাঁ একা যাবে। কারণ আমি তোমাকে জাস্ট ওয়ান উইক ধরে ড্রপ করে দিচ্ছি এর আগে কি করতে? যেটা করতে এখনও সেটাই করো। কাওর উপর লাইফে ডিপেন্ড করা ঠিক নয় ওকেই? ইউ মে গো নাও!
টিনা আর কিছু না বলে চলে গেলে রাজ ফোন চেক করে দেখে কোয়েল এখনও লাইনে আছে।
রাজ: হ্যাঁ ব…
কোয়েল: মেয়েটা কে? আজকে বিকালে যাকে দেখলাম সেই?
রাজ: (মনে মনে– মনে হচ্ছে ভিতর ভিতর রাজরানী ভালোই জ্বলছে। (মনে মনে হেসে) হ্যাঁ, ও টিনা..
কোয়েল: তোমার সেই প্রিয়জন তাই না? যাকে পরেশবাবু কেড়ে নিতে চান? বুঝতে পে…
রাজ: হোয়াট রাবিশ! জেনে বুঝে কথা বল কোয়েল! (প্রচন্ড রেগে)
কোয়েল রাজের ধমকে একটু কেঁপে উঠলো।
রাজ: ওই জায়গাটা আমার জীবনে শুধুমাত্র ত..(থেমে) একজনের। ওই জায়গাটা নিয়ে অন্য কোনো ভুলভাল লোকের নাম জড়াবি না বারণ করে দিলাম আমি। (একনাগাড়ে)
কোয়েল: বাড়ি ফিরবে কখন? (শান্ত গলায়)
কোয়েলের এমন শান্ত গলায় প্রশ্ন শুনে রাজ একটা নিশ্বাস ছাড়লো। আস্তে করে বললো,
রাজ: একটু পরে।
কোয়েল: কয়েকদিন তাড়াতাড়ি আদিত্যদার সাথে বাড়ি ফিরলে খুব অসুবিধা হবে কি? আমার কথা না শোনো, আদিত্যদার কথা শুনে অন্তত চেষ্টা করো।(অভিমান করে)
রাজ: (চোখ বন্ধ করে মনে মনে– মান ভাঙাতে পারলাম না এখনও অবধি এর উপর অভিমান করে বসলো। নাহ আজকে আর কাজ করা যাবে না।) আমি বেরোচ্ছি এখনই। পৌঁছে তোমাকে কল করবো।
কোয়েল: কল রাখতেই হবে? (বিছানায় একপাশ হয়ে শুয়ে)
রাজ: (হেসে ফেললো) উহুম, দরকার নেই রাখার।
কোয়েল নিজেই বালিশে মুখ গুঁজে ফেললো রাজের কথা শোনা পর।
এদিকে,
আমি ওয়াশরুম থেকে এসে বই গুছিয়ে রাখার পরেও দেখলাম কোয়েল ফোনে কথা বলছে। কার সাথে এতো কথা বলছে ও? আগে তো কোনোদিন দেখিনি কাওর সাথে ফোনে কথা বলতে তাহলে আজ? আমি এগিয়ে গিয়ে কোয়েলকে কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবো তার আগেই আমার ফোন বেজে ওঠে। আদিত্য ফোন করেছে এইভেবে দৌঁড়ে ফোনের কাছে ছুটলাম। যা ভেবেছি তাই! আদিত্য ফোন করেছেন। ফোনটা নিয়ে বসে পড়লাম ডেস্কে।
মৌমিতা: বাড়ি পৌঁছে গেছেন?
আদিত্য: আজ্ঞে। ফ্রেশ হয়েই কল করলাম।
মৌমিতা: একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
আদিত্য: হম করো। (বালিশ কোলে নিয়ে)
মৌমিতা: ওই ছেলেগুলো কে ছিল?
আদিত্য: পরেশবাবুর লোক। আমার উপর, আমার উইক পয়েন্টের উপর নজর রাখছিলো। আঘাত করতে হবে কি না? (গম্ভীর ভাবে)
মৌমিতা: আপনি রাজদার কথা বলছেন? (মুখ টিপে হেসে)
আদিত্য: (দাঁতে দাঁত চেপে) হ্যাঁ! তো আর কার কথা বলবো? ওই তো মার উইক পয়েন্ট! আমার জানের জান।, পরানের পরান। আর কদিন পর বিয়ে করবো তো ওকে, তুমি এসে খেয়ে যেয়ো ভালো ভাবে।
আমি পারছি না জোরে হাসতে। কোনো মতে মুখ চেপে রেখেছি ওনার কথা শুনে। বাপ রে, এতো মজা আগে কোনোদিন পাইনি যা আজকে পেলাম। উফ, মন খুলে হাসতে ইচ্ছা করছে কিন্তু এখন সেটা করলে বোম্ব ব্লাস্ট হয়ে যাবে।
আদিত্য: রাখছি আমি ফোনটা। (রেগে)
মৌমিতা: (হাসি চেপে) আরে শুনুন, শুনুন। আপনারা কবে বিয়ে করছেন বললেন না তো? ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করবেন নাকি?
আদিত্য: বাড়াবাড়ি হচ্ছে এবার। (অতিরিক্ত রেগে)
মৌমিতা: আচ্ছা বাবা স্যরি! (হাসি থামিয়ে) কিন্তু হিহিহি…
আর পারলাম না নিজেকে সংযত করতে হেসেই ফেললাম। ওদিকে, আদিত্যও মৌমিতার হাসি শুনে আর রেগে থাকতে পারলো না হেসে ফেললো।
মৌমিতা: আদিত্য, আপনি মায়ের খোঁজ নিয়েছেন? পরেশবাবু বাবা-মার কোনো ক্ষতি করবেন না তো?
আদিত্য: হম, আমিও ভেবেছি বিষয়টা। দেখছি কি করা যায়, দরকার পড়লে মাকে এখানে এনে রাখবো।
মৌমিতা: আমারও মনে হয় এটাই ভালো হবে। বাবা তো এখন কাজের সূত্রে এখানেই থাকবেন এই সুযোগে পরেশবাবু মার ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারেন।
আদিত্য: হম। (নার্ভাস হয়ে)
মৌমিতা: আপনি এখন টেনশন করবেন না। আগামীকাল সকালে উঠেই মাকে এখানে আনার ব্যবস্থা করুন।
আদিত্য: তুমিও সাবধানে থাকো। হস্টেল থেকে বেরোবে না বেশি। কোয়েলকে তো বেরোতেই দেবে না।
মৌমিতা: কেন?
আদিত্য: তুমি কিছু বুঝতে পারনি? আমি যতদূর যা জানি তুমি বেশ বুদ্ধিমতী।
মৌমিতা: কোয়েল আর রাজদার মধ্যে কিছু একটা আছে এটা আমি জানি কিন্তু ওদের মধ্যে কি হয়েছে সেটা তো…
আদিত্য: জানবে, আস্তে আস্তে সব জানতে পারবে। রাজের বিষয়ে এখনও কোয়েল নিজেই কিছু জেনে উঠতে পারেনি। ও আগে জানুক, তুমিও জেনে যাবে। ও এখন রাজের সাথেই কথা বলছে প্রবাবলি।
মৌমিতা: আমারও তাই মনে হয়। আগে কোনোদিন দেখিনি এতক্ষন কাওর সাথে ফোনে কথা বলতে।
আদিত্য: মেয়েরা একটু বেশীই অবুঝ। কোনো কিছু সহজে বুঝতেই চায় না, স্যরি! পারে না। কি আর করা যাবে এতে? চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। (অসহায় ভাবে, দুঃখ করে)
মৌমিতা: (না বোঝার ভান করে) কি বলতে চাইছেন আপনি?
আদিত্য: বোঝোনি? নাকি বুঝতে পেরেও না বোঝার ভান করছো কোনটা?
মৌমিতা: ম..মানে? (আমতা আমতা করে)
আদিত্য: এই যে, রাজের কথা বলছিলাম। রাজের অবস্থাটা কোয়েল বুঝতেই চাইছে না। (বাঁকা হেসে)
মৌমিতা: (মনে মনে– বদ ছেলে, হুহ! কথাটা ঘুরিয়ে দিলো। ধুর!) ঠিক আছে আমি রাখলাম।
আদিত্য: (হেসে) কেন? হঠাৎ কি হলো?
মৌমিতা: কিছুই না। কি আবার হবে? (মন খারাপ করে)
আদিত্য: পরেশবাবু আমার আর রাজের দুজনেরই উইক পয়েন্ট এ আঘাত করতে চাইছেন কারণ আমি ওনার উইক পয়েন্টে আঘাত করেছি। রাজ যেমন চায় না কোয়েলকে হারাতে আমিও চাই না তো…
আমি আদিত্যের কথাটা শুনে চোখ বন্ধ করে নিলাম এদিকে আদিত্যও চুপ করে গেলেন। ওনার পরের কথাটা শোনার জন্য ভীষণ আগ্রহ হচ্ছে।
আদিত্য: (নিজেকে সংযত করে) আমিও চাই না যে আমার কারণে তোমার কোনো ক্ষতি হোক। জিয়া তোমাকে সহ্য করতে পারে না তাই তোমারও ক্ষতি করতে চাইবে পরেশবাবু।
মৌমিতা: ওহ! (মন খারাপ করে)
আদিত্য: (মনে মনে– আমি জানি তুমি কষ্ট পেয়েছো আমার কথায়। তুমি শুনতে চেয়েছিলে আমিও তোমাকে হারানোর ভয় পাই কিন্তু কেন? কেন শুনতে চাও এটা তুমি? কারণ তুমি আমাকে ভালোবাসো আর এটা তোমাকে বুঝতে হবে মৌ! আমি তোমাকে বোঝাবো এটা।) কে মেনে নিতে পারে নিজের সবথেকে দুর্বল জায়গায় আঘাত করলে? আমিও পারবো না মেনে নিতে যদি তোমার কোনো ক্ষতি হয়..আমার জন্য!
আমি এবার হেসে ফেললাম। উফ! এই ছেলেটা নিজের মনের কথাটা বলতে গিয়েও বলতে পারছে না? অবশ্য পারবে কিভাবে প্রেম-ভালোবাসায় অবিশ্বাসী ছিল কি না। বেশ মজাদার লাগছে এখন ব্যাপারটা, দেখি কতদিন সময় লাগায় নিজের মনের কথাটা বলতে।
আদিত্য: গুড নাইট! খেয়ে নিয়ে শুয়ে পরো। আমিও শুয়ে পড়বো খুব টায়ার্ড লাগছে।
মৌমিতা: হম, গুড নাইট।
আমি ফোন রেখে বিছানার কাছে যেতেই দেখলাম কোয়েল এখনও কথা বলছে। ওকে ডিস্টার্ব না করে খাওয়ার আনতে চলে গেলাম।
রাজ: পৌঁছে গেছি বাড়ি ম্যাডাম।
কোয়েল: আচ্ছা। যাও ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিয়ে শুয়ে পরো। আজকে অনেক খাটাখাটনি গেছে।
রাজ: (মনে মনে হেসে– এই মেয়ে নাকি আমার কথা ভাবে না। ভাবলেও হাসি পাচ্ছে।) আজ্ঞে। তুইও যা গিয়ে খেয়েনে।
কোয়েল: হম। গুড নাইট।
রাজ: রাতে ঘুমানোর আগে মেসেজ করে ঘুমাবি।
কোয়েল: যে আগে ঘুমোতে যাবে সে মেসেজ করবে।
রাজ: (হেসে) ওকে ডান!
কোয়েল: (হেসে) টাটা।
কোয়েল ফোন রেখে পিছন ঘুরতেই দেখে মৌমিতা খাবার নিয়ে বসে আছে।
কোয়েল: ও তুই খাবার নিয়ে চলে এসেছিস?
মৌমিতা: কেন? তুই কি ভাবলি আমি এখন ওয়াশরুম থেকে বের হলাম? (ঠোঁট চেপে হেসে)
কোয়েল: না, মানে ইয়ে…
মৌমিতা: থাক, থাক। খেয়েনে চুপচাপ এখন।
আমি আর কোয়েল খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে চলে গেলাম।
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]
আইডি- কোয়েল ব্যানার্জী
আপনার গল্পটা নিয়ে একটা নাটক হলে ভালোই হয়,, গল্পটা কিন্তু দারুন ভালো লেগেছে। আশা করি এমন আরো কিছু গল্প উপহার দিবেন।