এক_তুমিতে_আসক্ত #পার্টঃ০২ #Writer: #মারশিয়া_জাহান_মেঘ

0
917

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ০২
#Writer: #মারশিয়া_জাহান_মেঘ

কলিংবেল বাজতেই মিসেস মনিশা চৌধুরী দরজা খুলে দেন। দরজার ওপাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে অর্ষা। অর্ষাকে দেখেই মিসেস মনিশা জড়িয়ে ধরেন তাকে। কেমন আছিস মা? অর্ষা হাসিমুখে জবাব দেয়,”ভালো আছি খালামনি তুমি?
“হুম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আয় আয় ভেতরে আয়। আসতে কোনো সমস্যা হয়নিতো?
” না খালামনি কোনো সমস্যা হয়নি। খালুজান আর প্রিয়ন্তি কোথায়?
‘তোর খালুজান অফিসে। আর প্রিয়ন্তি ওর একটা ফ্রেন্ডের বাসায় গেছে। একটু পরই চলে আসবে। মামনি তোর গালে কি হয়েছে [ গালে হাত দিয়ে ]
‘ অর্ষা আমতা আমতা করে বললো, কই কিছুনাতো।
“মিথ্যে বলছিস কেনো মা? বল কি হয়েছে?
” আসলে খালামনি ভার্সিটিতে আমাকে যার্গ করেছে।
“কিইইই! তাই বলে এমন ভাবে? আসুক আমার ছেলে ওকে বলে দিবো। তুই শুধু ওকে দেখিয়ে দিস কে তোকে এমনভাবে যার্গ করেছে।
অর্ষা কথা এড়াতে বললো,খালামনি আমার অনেক ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও [ পেটে হাত দিয়ে ]
মিসেস মনিশা তড়িঘড়ি করে বললেন,হ্যাঁ হ্যাঁ চল..তোকে রুমটা দেখিয়ে দেয়। তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি খাবার রেডি করছি।

৮.

হে আম্মু বলো…
ওপাশ……..
কিন্তু আম্মু আমিতো
ওপাশ……
ইশ আচ্ছা আসছি। কলটা কেটে ফোনটা পকেটে রেখে প্রান্তিক বিরক্ত নিয়ে বললো, আম্মুর বোনের মেয়ে আসছে তাতে আমার কি আমি বুঝতেই পারছিনা আজব। কোন না কোন মহারাণীরে..উফ..বিরক্তির একটা হাফ ছেড়ে বাইক স্টার্ট দিলো প্রান্তিক।

৯.

দরজার ঠকঠক আওয়াজে অর্ষার ঘুম ভেঙ্গে যায়। বিছানায় আড়মোড় হয়ে মুখে হাত দিয়ে হাই তুলতে তুলতে দরজা খুলে সে। দরজা খুলতেই ভার্সিটির ওই বদমেজাজি ছেলেটাকে দেখে চোখ চড়গাছে উঠে যায় অর্ষার। অর্ষা ভীতভাবে চেয়ে বললো, আআআপ..
” হেই ইউ স্টপিড গার্ল তুমি এইখানে, আমার বাড়িতে, আমার রুমে কি করছো? আম্মু আম্মু… চিৎকার করে ডাকতে থাকে প্রান্তিক মিসেস মনিশাকে।

‘কি হয়েছে? চিৎকার করছিস কোনো?
এই মেয়ে এইখানে কি করছে?
“মিসেস মনিশা অর্ষার দিকে এক নজর তাকিয়ে হেসে বললো, আমার বোনের মেয়ে এইখানে না থেকে কি আকাশে থাকবে?
প্রান্তিক অবাক হয়ে বললো, কিইই! এই মেয়েটা তোমার বোনের মেয়ে অর্ষা!
” মিসেস মনিশা বিরক্ত নিয়ে বললো,হুম। ইশশ দিলিতো আমার লক্ষী মেয়ের ঘুমটা ভেঙ্গে। আচ্ছা তোরা কথা বল,আমি রান্নাঘরে যায় কড়াই বসিয়ে এসেছি। মনিশা চলে যেতেই অর্ষা মনে মনে জরিপ করতে থাকে, হাই আল্লাহ মালুম। অবশেষে কিনা এমন একটা বজ্জাত আমার কাজিন! নিমিষেই ভার্সিটির ঘটনাটা অর্ষার চোখে ভাসতেই মুখে মেঘের ছাপ দেখা যায়। প্রান্তিক বাঁকা হেসে মনে মনে বললো, Hey Stupid Girl You have to pay the price of long-term thirst.

অর্ষা মাথা নিচু করে আছে। প্রান্তিক ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললো, “এই যে মিস ভীতুর রাণী.. সবসময় কি এইভাবে মাথা নিচু করে রাখাই তোমার স্বভাব?
অর্ষা…. নিশ্চুপ।
এই মেয়ে শুনছোনা কি বলছি? আর তুমি আমার রুমে শুয়ে ছিলে কেনো? আর কোনো রুম পাওনি নাকি? ইশশ আমার বিছানার চাঁদরটা মেয়ের স্পর্শ পেয়েছে..অবশেষের কথাটা বেশ রসিকতা করে বলেছে প্রান্তিক।

প্রান্তিকের শেষের কথাটা অর্ষাকে বেশ লজ্জিত করে তুলেছে।

” না মানে..ইয়ে খা খাাালামনি..বলেছে তাই।
প্রান্তিক আড়চোখে অর্ষার দিকে তাকিয়ে হাতের ঘড়ি খুলতে খুলতে বললো, এইভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? যাও আমার রুম থেকে। ধমকের সুরে প্রান্তিকের কথা শুনে দৌড়ে রুম থেকে চলে যায় অর্ষা।

প্রান্তিক মিনমিনিয়ে বললো, আজব মেয়ে।

১০.

অর্ষাআআআআ…বলে চিৎকার করে দৌঁড়ে এসে অর্ষাকে জড়িয়ে ধরে প্রিয়ন্তি। অর্ষাও প্রিয়ন্তিকে মেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,কেমন আছিসরে?
“ভালো তুই?
” এইতো ভালোই আছি।
“সরি রে…আজ ভার্সিটি যেতে পারিনি৷ তোর একা আসতে কোনো প্রবলেম হয়নিতো?
” না না কোনো সমস্যা হয়নি।

প্রিয়ন্তি অর্ষার পাশে সোফায় বসে বললো, অবশ্য ভাইয়াকে আগে থেকে জানালে ভাইয়াই তোকে নিয়ে আসতো।
অর্ষা মিনমিনিয়ে বললো,হুম ওই বদমেজাজির জন্যইতো আজ কতো বড় ঘটনা ঘটলো।
“অর্ষা কিছু বললি?
” না না কই কিছু বলিনিতো।

১১.

প্রিয়ন্তি আর অর্ষা পাকন খাচ্ছে আর কার্টুন দেখে হাসাহাসি করছে। এমন সময় কেউ রিমোর্ট নিয়ে খেলার চ্যানেল দিতেই অর্ষা সামনে থাকা প্রান্তিক এর দিকে তাকায়। প্রান্তিক ডন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সেন্টার ফ্রুট চিবোচ্ছে আর সোফায় বসেছে একদম অর্ষার পাশে। অর্ষা হোট করেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
“প্রিয়ন্তি মন খারাপের ফেইস নিয়ে বললো, ভাইয়া তুমি চ্যানেল চেইঞ্জ করলে কেনো?
” এতো বড় হাতি হয়েছিস অথচ বাচ্চাদের মতো কার্টুন দেখিস? খেলা দেখ খেলা।
“প্রিয়ন্তি দাঁড়িয়ে দুই হাত কোমড়ে গুজে বললো, কিই আমি হাতি? আমি হাতি হলে..তুমি কি? তুমিতো বিড়াল।
” আমি বিড়াল হবো কেনো? আমি কি তোর কাজিন এর মতো ভীতু হয়ে থাকি নাকি? [ অর্ষার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ]
“অর্ষা মুটেও ভীতু নয় ভাইয়া। তোমার কাছেতো অতি সাহসী মেয়েও ভীতু। আল্লাহ এই জানে তুমি নিজেকে কি ভাবো [ মুখ বেংচি কেটে ]

এই তোরা থামবি???? হঠাৎ মিসেস মনিশা চিৎকার করে কথাটা বলতেই প্রিয়ন্তি চুপসে যায়।
” মা..তোমার মেয়ের কি পড়াশোনা নাই? খালি সারাদিন কার্টুন
“ওফ প্রান্তিক তুই থামবি? তোরইবা কি দরকার ছিলো মেয়ে দুইটার মাঝে এসে খেলা দেখার।

অর্ষা বললো, খালামনি,,আম্মু কল দিয়েছিলো? মিসেস মনিশা অর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, হুম মা দিয়েছিলো। তুই ঘুমে ছিলি তাইতো আার ডাকেনি।আচ্ছা যা এশারের নামাজটা পড়ে নে। অর্ষা প্রিয়ন্তিকে নিয়ে উপরে চলে গেলো৷ আর প্রান্তিক একটু অর্ষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।

১২.

অর্ষা,মামনি কেমন আছো?
” অর্ষা মুচকি হেসে বললো, জ্বি খালুজান ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
“হুম মা ভালো আছি।

খাবারের টেবিলে প্রান্তিক অর্ষার সামনা সামনি বসে যার ফলে অর্ষা মাথা নিচু করে খেতে থাকে। প্রান্তিক বাঁকা হেসে মুগ্ধ হয়ে দেখছে অর্ষাকে। মাথায় উড়নাটা দেওয়া। অতি সাধারণের মাঝেও কিছু একটা আছেই অর্ষার মাঝে যা অসাধারণ।

” তোমার ছেলে কি কিছু ভেবেছে? মিস্টার ফরহাদ চৌধুরীর কথায় প্রান্তিক এক পলক তার আম্মুর দিকে তাকিয়ে খেতে খেতে বললো, কি নিয়ে ভাবার কথা জানতে চাইছো আব্বু?
“তুমি কি সত্যিই বুঝছোনা নাকি বুঝতে চাইছোনা প্রান্তিক?
অর্ষা খেতে খেতে বাবা ছেলের কথা শুনে আড়চোখে একবার প্রান্তিক কে দেখলো।
” আব্বু আমি এখন বিজনেসে জয়েন করার কথা মাথায়ও আনছিনা।
“মিস্টার ফরহাদ এইবার কিছুটা গম্ভীর কন্ঠে বললো, তাহলে পড়াশোনা শেষ করিয়েছি কি এইভাবে বেকার থাকার জন্য?
” আমি বেকার থাকবো তাতো একবারো বলেনি আব্বু৷ আর আমি এখন চাইলে যে কোনো জায়গায় জয়েন করতে পারি৷ সেই সব কিছুর যোগ্যতা আমার আছে।..এইটা বলেই প্রান্তিক খাবারে হাত ধুয়ে চলে গেলো।
অর্ষা মাথা নিচু করে ফিসফিস করে প্রিয়ন্তিকে বললো, এই তোর ভাইয়ের ফরা শেষ!
“হুম কেনো তুই জানিসনা?
” না। তাহলে ওনি ভার্সিটিতে কি করে?
” আরে ভাইয়া ভার্সিটিতে যায় যেনো কেউ কোনো মেয়েকে যার্গ না করতে পারে
“অর্ষা অবাক হয়ে বললো,কিইই..আর মনে মনে ভাবলো,যেই ছেলেটা যার্গ কাউকে করতেই দেয়না। সে আমাকে যার্গ করিয়েছে!!

চলবে….

[ সবাই গণনামূলক কমেন্ট করে যাবেন। কারণ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে লিখতে উৎসাহী করে। ধন্যবাদ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here