#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৩
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
ওই পোলার কতো বড় সাহস আমার পোলারে মারে” হাক ছেড়ে ছেড়ে কথাগুলো বলছে আমির মিরা। সাহিল পাশ থেকে ক্ষিপ্ত ভঙ্গিতে বললো,বাবা তুমি চিন্তা কইরোনা। ওই অর্ষার জন্য এতোকিছুতো? দেইখো ওই অর্ষাকেতো আমি ছাড়বোইনা।
“কি করবা বাপ?
সাহিলা বাঁকা হেসে বলে,” আব্বা এমন কাজ করুম যে ওই মাইয়া আর সমাজে মুখ দপ্তরের দেখাইবার পারবোনা।
“কিন্তু…
” আব্বা কোনো কিন্তু না।
৯২.
বাইরে কি হয়েছিলো? অর্ষার প্রশ্নে প্রান্তিক অর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,”কিছুনা। প্যাক করে নাও কালকেই আমরা ঢাকা ফিরে যাবো। অর্ষা অবাক হয়ে বলে,মানে? এতো তাড়াতাড়ি কেনো? আমরাতো এইখানে ঘুরতে এসেছিলাম।
“সামনে এক্সাম অর্ষা। এতে ঘুরাঘুরির দরকার নেই। আর তোমাকে বললামইতো যে আভেশ চলে যাচ্ছে। তাই আমরা আজকে বিকেলে ঘুরাঘুরি করে কাল সকালেই রওনা দিবো ঢাকার উদ্দেশ্যে আর আভেশ..আভেশ নাম নিতেই একটা দীর্ঘশ্বষ ছাড়ে প্রান্তিক। অর্ষা বুজতে পারে যে প্রান্তিকের মন খারাপ হয়ে গেছে তাই এইটা নিয়ে আর কিছু বলেনি।
” আচ্ছা আমি তাহলে যায় প্যাক করি। প্রান্তিক মুচকি হেসে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বললো, “হুম যাও।
৯৩.
” মামনি…মামনি….ডাকতে ডাকতে তাইফা যায় তার মায়ের রুমে। মিসেস সাহেরা বেগম তাইফাকে দেখেই চোখের পানি মুছে ড্রয়ারে হাতে থাকা ছবিটা রেখে হেসে বললো,”কি হয়েছে আম্মু?
“মামনি তুৃমি আবার কাঁদছিলে? সাহেরা বেগম হেসে বললেন,কই নাতো।
” আমার থেকে লোকাতে পারবেনা তুমি মামনি”। আমার ক্ষুধা লেগেছে খেতে দাও। সাহেরা বেগম হেসে বললেন,”হুম আয়। তাইফা মনে মনে ভাবছে,”আর কতোবার মামনি এইভাবে একা একা কষ্ট পাবে?
৯৪.
অর্ষা যেতেই প্রান্তিকের ফোনে টুং টুং শব্দ বেজে উঠলো পকেটে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে দেখলো শৈবাল নামটা ভাসছে। প্রান্তিক কল ধরতেই উপাশ থেকে হোহো করে হেসে শৈবাল বললো,”প্রান্তিক জানিস? ছারিন শাঁকচুন্নিটার বিয়ে ঠিক হয়েছে। প্রান্তিক আনমনে হেসে বললো,”সেতো আমার আগেই জানা ছিলো। এইবার শৈবাল অবাক কন্ঠে বললো,”মানে?
“কিছুনা। আচ্ছা শোন আমি কাল ব্যাক করছি ঢাকায়। তখন সব বলবো। এখন রাখি। কলটা কেটে প্রান্তিক পা বাড়ায় আভেশের কাছে।
৯৫.
” কিরে প্রিয়ন্তি কাপড়চোপড় গুছাচ্চিসনা কেনো? ট্রলিতে কাপড় রাখতে রাখতে প্রিয়ন্তির দিকে চেয়ে আছে অর্ষা উত্তরের আশায়। কিন্তু প্রিয়ন্তির কোনো হেলদোল নেই। প্রিয়ন্তির মুখে স্পষ্ট মন খারাপের ছায়া। অর্ষা প্রিয়ন্তির কাছে গিয়ে প্রিয়ন্তির কাঁধে হাত রেখে আদুরে কন্ঠে বললো,”কিরে প্রিয় তোর মন খারাপ? কি হয়েছে তোর কখন থেকে দেখছি চুপচাপ। প্রিয়ন্তি জোরপূর্বক হেসে বললো,”নারে আমি ঠিক আছি। ঘুম পাচ্ছে। আমি যাই বিছানায় শুয়ে পড়ি..প্রিয়ন্তি যেতেই অর্ষা মনে মনে বিলাপ করছে,”হাসিখুশি মেয়েটার হঠাৎ কি হলো?
৯৬.
আভেশ আরেকবার ভালোভাবে ভেবে দেখ।
“আমি ভেবেই ডিসাইড নিয়েছি প্রান্তিক।
” ছারিনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। প্রান্তিকের কথা শুনে আভেশ অবাক হয়ে বললো,কিইই?
“হুম ঠিকি বলছি।
” কিন্তু প্রান্তিক আমি যতটুকু জানি ছারিনের বাবা এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবার মানুষতো নন। প্রান্তিক ডেবিল স্মাইল দিয়ে বললো,”মেয়ের আর নিজেদের মানসম্মান বাঁচাতেতো এমনটা করারই ছিলো।
“মানে? প্রান্তিক বিছানায় বসে আভেশের কাঁধে হাত রেখে বললো, “ইশতিয়াক কে চিনিস?
” হুম ওইতে আমাদের বেইচের ছিলোনা?
“হুম ওই ইশতিয়াকই।
” ইশতিয়াকের সাথে ছারিন কোথথেকে আসলো? প্রান্তিক হেসে বললো,”ওইটাইতো ব্যপার। ইশতিয়াকের সাথে ছারিনের শারীরিক সম্পর্ক ছিলো। আভেশ অবিশ্বাস্য চোখে বললো,”কি!
“হুম। তো ছারিনের এই সম্পর্কে আমি জেনে যায়। তাই ছারিনের সাথে ঘনিষ্ট অবস্থায় একটা ভিডিও আমাকে পাঠায় একজন। আর ওইটা আমি ছারিনের বাবা আর ইশতিয়াকের বাবাকে পাঠায়। এছাড়া কিছু করার ছিলোনা আমার। কারণ ছারিন প্রেগন্যান্ট। আর আমি চাইনা ওদের ভুলের মাশুল বাচ্চাটা দিক। আভেশ প্রান্তিকের কথা শুনে অবাকের শেষ পর্যায়। তাও অতি কষ্টে কথাগুলো হজম করে নিয়ে বললো,” অথচ লোক কে দেখাতে ছারিন তোর পিছে ঘুরঘুর করতো। প্রান্তিক শব্দ করে হেসে বললো,”লোক দেখানো নয়। আবেগ।
৯৭.
তাইফা কলেজ থেকে এসে বাসায় তন্ন তন্ন করে একটা এলবাম খুঁজছে কিন্তু সে পাচ্ছেইনা। তাইফার হঠাৎ মনে হলো যে তার মায়ের পার্সোনাল আলমারিতে থাকবে বোধহয়। তাইফা তড়িঘড়ি করে আলমারির চাবি খুঁজতে লাগলো। অবশেষে বালিশের নিচে পেলো৷ মুখে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে এলে,”Thank God” তাইফা আলমারি খুলতেই সবকিছু নাড়িয়ে এলবামটা খুঁজলো হঠাৎ চোখ যায় লাল পট্টি বাঁধা একটা কাপড়ে। কাপড় না ঠিক বলতে গেলে একটা ব্যাগ। তাইফা ব্যাগটা খুলতেই দেখলো কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি। তাইফা এলবামে থাকা প্রত্যেকটা মানুষের ছবিতে হাতিয়ে হাতিয়ে বললো,”কতে সুন্দর ছিলো পরিবারটা” এইভাবে না ভাঙ্গলেওতো পারতো। কতো মিশুক আর ভালোবাসা দিয়ে ঘেরা ছিলো ভাই বোনের সম্পর্ক। এইভাবে তারা আলাদা না হলেও পারতো। তাইফা বিরক্তকর কন্ঠে ভাবলো,”ইশশ এইখানেতো একটাও বড় হওয়ার পরের ছবি নেই ওদের তাহলে কিভাবে চিনবো?
৯৮.
প্রান্তিক ছাঁদে যাবে হঠাৎ মনে হলো অর্ষা কি করছে একবার দেখে আসি। প্রান্তিক অর্ষার রুমের সামনে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো প্রিয়ন্তু ঘুমাচ্ছে আর অর্ষা রুমে নেই। প্রান্তিক রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াবে হঠাৎ দেখলো অর্ষা ওয়াশরুম থেকে ভেজা সদ চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বের হচ্ছে। মুখে পানির শিশির। চুল বেয়ে টুপটুপ করে পিছে পানি পড়ছে৷ যার ফলে জামাটা ভিজে কিছুটা লেপ্টে গেছে৷ এ যেনো এক কেশবতী। প্রান্তিক আনমনে হেসে অস্ফুটে বললো,”মাশাল্লাহ”
চলবে….