এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ২৫

এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ২৫
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন

কারও মিহি কন্ঠ শুনে আমি পিটপিট করে চোখ খুলতেই দেখতে পেলাম আনভীরকে। উনি আমায় ঘুম থেকে তুলার জন্য খানিকটা ঝুঁকে ডাকছিলেন আমায়। আমি তৎক্ষণাৎ উঠে বসলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে ছয়টা বাজে। আজকে এডমিশন টেস্ট আমার। তাই ভয় আর চিন্তার সাথে উত্তেজনাটাও কাজ করছে। আনভীর বললেন,

-‘জলদি ফ্রেস হয়ে একটু রিভাইস করে নাও। অতিরিক্ত পড়তে হবেনা, জাস্ট পড়া টপিকগুলোতেই চোখ বুলিয়ে নিবে। আমি আর ভাবিমণি আজ তোমার সাথে যাচ্ছি এক্সাম হলে।’

আমি উনার কোনো কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে উঠে চলে গেলাম ওয়াশরুমের দিকে।গতরাতের কথপোকথনের পর আমার আর কোনো ইচ্ছে হলোনা উনার সাথে দু’দন্ড কথা বলার। তবে আমার এত ঠান্ডা ব্যবহারে আনভীর শুরুতে উদ্ভ্রান্ত হয়ে এলেও তেমন কিছু একটা বললেন না।

আজকে আকাশটা একটু মেঘাচ্ছন্ন। দক্ষিণা শীতল হাওয়ার আমেজে রুমটা কেমন যেন শীতল হয়ে গিয়েছে। আমি একেবারে ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসে পড়লাম পড়াগুলো রিভাইস দেওয়ার জন্য। আনভীরের ব্যবহারের জন্য উনার প্রতি আগেই আমার অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছি আমি। এখন আমার সব কনসানট্রেশন শুধুমাত্র মেডিক্যাল এক্সামটির জন্য। আমার লক্ষ্য ছিলো ডাক্তার হওয়ার এবং এ লক্ষ্যটি আমি চাই বাস্তবায়ন করতে। তার জন্য উনার মতো মরীচিকাকে ভুলে আমায় প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে। লক্ষ্য অনুযায়ী এগোনোর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। এর সবটাই করেছি আমি। এখন ভালোমতো পরীক্ষাটা দিতে পারলেই হবে। বাকিসব আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিবো ।

পড়া রিভাইস করার পুরোটা সময় আনভীর রুমে ছিলেন না। এককথায় আমায় পড়ার প্রতি মনোযোগ রাখা জন্য উনি আমায় একা রুমে রেখেছেন। এই সময়গুলো যে কিভাবে চলে গেলো টেনশনে খেয়ালই করিনি আমি। আসলে আমার প্রচন্ড রকম টেনশন কাজ করছে মাথায়। বারবার মনে হচ্ছে যে আমি যেগুলো পড়েছি সেগুলো ভালোমত পড়া হয়নি। পরীক্ষার হলে এগুলো ভুলে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে তাই রিভাইস করা পড়াগুলো বারবার চোখ বুলিয়ে যাচ্ছি আমি।

এরমধ্যে পেছন দিয়ে দরজা খুলে আনভীর এসে পড়লেন হঠাৎ। আমায় এত চিন্তিতভাবে একই পড়া বারবার পড়তে দেখে বললেন,

-‘একই পড়া বারবার পড়ছো কেনো?’

-‘আমার কেনো যেন মনে হচ্ছে পরীক্ষার হলে এগুলো ভুলে যাবো সব। তাই না ভুলার জন্যই এভাবে পড়ছি।’

আমি মলিন কন্ঠে প্রতিউত্তর দিয়ে আবার বইয়ে ডুব দিলাম। আনভীর ট্রাউজারর পকেটে হাত গুঁজে শীতল চোখে দেখলেন আমায়। তারপর দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন,

-‘এক ঘন্টা অলমোসন্ট হয়ে গিয়েছে আহি তুমি টেবিলে বসে আছো।এখন বই বন্ধ করো। মাইন্ডটাকে একটু রেস্ট দাও। নাহলে এক্সামে ভালো পারফরম্যান্স করতে পারবে না।’

আমি উনার কথায় তেমন একটা প্রতিক্রিয়া দেখালাম না। আনভীর বিরক্ত হচ্ছিলেন সকাল থেকে আমার এমন শীতল রূপ দেখে। যে আহি সবসময় উনার কথায় গুটিশুটি হয়ে থাকতো, কথায় কথায় নিজের ইমোশন প্রকাশ করে ফেলতো আজ সেই আহি এতটা নির্বিকার ! বিষয়টা শুধু উনাকে ন আমাকেও রীতিমতো ভাবাচ্ছে নিজের এমন বিরাট পরিবর্তন দেখে। তবে একটা জিনিস সম্পর্কে আমি ভালোভাবেই অবগত হয়েছি , পরিবেশ আর পারিপার্শ্বিক অবস্থা খুব সহজেই একজনকে পরিবর্তন করে ফেলে , যেমনটা আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে।

আনভীর আমায় এভাবে মানবমূর্তির মতো বসে থাকতে দেখে আমার চেয়ার ঘুরিয়ে নিজের মুখোমুখি করলেন। আমি অবাক ন্যায় কিছু বলতে যাবো তার আগেই উনি আমার হাতের কব্জি টেনে উঠিয়ে বারান্দার ডিভানে বসিয়ে দিলেন আমায়। আমি প্রতিক্রিয়াহীনভাবে প্রশ্ন করলাম,

-‘এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেনো আনভীর?’

আনভীর আমার বরাবর ছোট্ট টুলে নিয়ে বসলেন কিছুটা দুরত্ব ঘেষে। বললেন,

-‘আমার কথা শুনছো না তাই টেনে নিয়ে আসলাম। আজ তোমার এডমিশন টেস্ট আহি। তাই বলছি এত লং টাইম পড়ে মাইন্ডটা ক্লান্ত করে ফেলো না। পরীক্ষা দিতে হয় ঠান্ডা মাথায়। আর তুমি যদি এত চিন্তামগ্ন থাকো , তাহলে কখনোই সেটা ভালো রেজাল্ট আনবে না।’

আমি নীরব।

-‘আর তাছাড়া এই প্রিপারেশনের সময়টুকু আমি তোমায় না পড়ালেও তোমার সবকিছু নজরে রেখেছি আমি আহি। আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারবো তোমার প্রিপারেশন অনেক ভালো আর মেডিক্যালে চান্স পাওয়ার জন্য একটা হিউজ নম্বর তোমার হাতে আছে। এখন শুধু এটা দেখতে হবে যে ভাগ্য তোমায় ডিএমসিতে সুযোগ করে দেয় কি-না। তাই নিজে আগে কনফিডেন্ট রাখো।’

আমি তপ্তশ্বাস ছেড়ে মাথা নাড়িয়ে বুঝালাম যে উনার প্রতিটা কথাই মনোযোগ দিয়ে শুনেছি আমি। আনভীর আলতো হাসলেন। সুদর্শন মুখের এই হাসিটা নিমিষেই আমার ভারক্রান্ত মনে একটা অন্যরকম অনুভূতি জাগিয়ে তুললো। আনভীর নিঃসন্দেহে পারফেক্ট একজন হাজবেন্ড। আমার প্রতি সবধরনের খেয়াল আছে উনার। এমনকি আমায় উৎসাহ দেওয়ার জন্যও একজন নিঃসন্দেহে চমৎকার মানুষ। তবে এগুলো সবই উনার রেসপন্সিবিলিটি ছাড়া আর কিছুই না। আমি এটাও জানি যে আজ হোক বা আগামীকাল একদিন এখান থেকে আমায় চলে যেতেই হবে। আমার আর ইচ্ছে নেই কারও হাতের পুতুল হওয়ার। উনার কথামতো মুক্তি দিয়ে দেবো এই আহি নামের মানুষটি থেকে।

_______________________________________

আনভীর আমার এডমিট কার্ড নিয়ে খুজে চলছেন পরীক্ষার হলরুমটি। শিউলি ভাবিও সাথে আসতে চেয়েছিলেন তবে আজরান ভাইয়া না করে দিলো আসতে। কেন উনি না করেছিলেন কে জানে। পরীক্ষার কেন্দ্রে এমন স্টুডেন্টসদের সাথে কমবেশি প্রত্যেকেরই কেউ না কেউ একজন এসেছে। আমি কিছুটা নীরব। মনে মনে অসংখ্যবার সূরা পড়ে ফেলছি। ছোটবেলায় আমার দাদি সবসময়ই বলতো যে বেশি কথা বললে পরীক্ষার সময় নাকি সব পড়া ভুলে যায়। তখন আমার বয়স ছিলো ৭ কি ৮ বছর! তবে দাদির এই ছোট্ট কথাটি আমার জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলেছিলো। এরপর থেকে পরীক্ষার দিন পরীক্ষা না দেওয়ার আগ পর্যন্ত খুব বেশি একটা কথা বলতাম না আমি।যার অস্তিত্বটা এখনও রয়ে গেছে। আমি তাই কোনোরূপ কোনো কথা না বলে উনার পিছু পিছু হাটতে লাগলাম।

বেশ কিছুক্ষণ পর পেয়েও গেলাম হলরুম। এই রুমে আমি আমার কোচিং সেন্টারের দু’তিনজন পরিচিত মানুষদেরও দেখতে পেয়েছি। তবে আচমকা অবাক হলাম ধ্রুব ভাইয়াকে দেখে। ধ্রুব ভাইয়া আমাদের কোচিং এরই একজন স্টুডেন্ট এর সাথে কথা বলছিলেন। আমায় দেখে মুচকি হাসলেন উনি। জিজ্ঞেস করলেন,

-‘কি অবস্থা আহি? পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত তো!’

-‘অবশ্যই। তবে আপনাকে এখানে দেখে প্রচন্ড অবাক আমি।’

-‘এইতো তোমাদের সাথেই দেখা করতে এসেছি। আর ভুলে যেও না, আমি কিন্ত এই ডিপার্টমেন্টেরই একজন। ‘

ধ্রুব ভাইয়া আরও কিছু বলতে যাবেন তার আগেই আনভীর হাত চেপে ধরলেন আমার। ধ্রুব সেটা দেখে আর কথা বাড়ালেন না। আনভীর মেকি হেসে বললেন,

-‘থ্যাংকস টু ইউ ধ্রুব, একজন স্যার হিসেবে স্টুডেন্ট দের প্রতি তুমি খুব লয়াল এন্ড আই লাইক ইট। তবে এখন আহির সাথে আমি আছি তো, তাই ওকে নিয়ে তোমার এত চিন্তা না করলেও চলবে।’

ধ্রুব একটা সুক্ষ্ম হাসি দিলেন বিনিময়ে। অন্যত্র যাওয়ার আগে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,

-‘শুভাকামনা থাকলো।’

আনভীর সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নম্বর খুজে সিট দেখিয়ে দিলেন আমায়।হলে অনেক মানুষ গিজগিজ করছে৷ আনভীর শান্ত কন্ঠে বললেন,

-‘লিসেন, মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দেবে। কোনো কিছু না পারলে বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ো না৷ কেননা মেডিক্যাল এডমিশন এক্সামে এমন অনেক প্রশ্ন দেয় যা অনেক হার্ড হয়। সবার সেগুলো উত্তর দিতে পারবে না৷ তাই ওগুলো নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে যেগুলো পারবে ওগুলোর উত্তর আগে দিবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর স্কিপ করো না। যা উত্তর দিবে সব সিউর হয়ে দিবে। বুঝেছো?’

-হুম।

আনভীর দৃষ্টি গম্ভীর করলেন এবার।তারপর জড়ানো গলায় বললেন,

-‘ভালোমতো পরীক্ষা দিও তাহলে। বেস্ট উইশেস ফর ইউ!’

হল থেকে সবাইকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতেই চলে গেলেন আনভীর।

পরীক্ষাটা আমার এক্সপেক্টেশনের বাহিরে মোটামুটি ভালোই হয়েছে।

আমি পরীক্ষা শেষ করে এবার হল থেকে বাহিরে বেরিয়ে এলাম। আজ সকালটা যেমন মেঘাচ্ছন্ন ছিলো সেই পুঞ্জীভূত কালো মেঘগুলো এবার বৃষ্টিতে রূপান্তর হয়েছে। আমি এতে ভিজে যাচ্ছি একটু। এত মানুষ আর ছাতার সমাগমে আনভীরকে খুঁজে পেতেও কষ্ট হচ্ছে বেশ।একটা লম্বা সময় পর ধীরে ধীরে খালি হতে লাগলো পরীক্ষা কেন্দ্রটি, কিছু স্টুডেন্ট তাদের পরিচিতদের দেখা পেয়ে চলে গিয়েছে কেন্দ্র ছেড়ে। আর কিছু স্টুডেন্ট আমার মতো খুঁজে চলছে তাদের পরিচিতদের। এর মধ্যেই কোথেকে ধ্রুব ভাইয়া হাজির হলো আমার কাছে৷ উনার হাতে নীল রঙের একটি ছাতা। এভাবে আধভেজা হয়ে থাকতে দেখে উনি চিন্তাগ্রস্থভাবে বললেন,

-‘তুমি দেখি পুরো ভিজে গিয়েছো। আনভীর কোথায়? ‘

-‘আসলে, উনাকে খুঁজে পাচ্ছি না ভাইয়া। ‘

-‘না পাওয়াটাই স্বাভাবিক এত মানুষের মধ্যে। ‘

আমি নীরব রইলাম। ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা আমায়। ধ্রুব ভাইয়া তা দেখে বললেন,

-‘আচ্ছা আমিও দাঁড়াই এখানে। আনভীর এসে পড়বে, টেনশন করো না।’

বলেই আমার মাথার ওপর ছাতা নিয়ে আসতেই আচমকা আনভীর এসে নিজের কোর্ট খুলে আমার গায়ে জরিয়ে দিলেন।উনার তৎক্ষনাৎ কাজে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি। আনভীর গহীন দৃষ্টি নিবদ্ধ আমার দিকে। আড়ষ্ট কন্ঠে বললেন,

-‘তোমার শরীর ভিজে যাচ্ছে বৃষ্টির জন্য। বাসায় চলো এখন। পরীক্ষার কথা বাসায় গিয়ে করবো।’

বলেই উনি ধ্রুব ভাইয়ার দিকে তাকালেন। স্মিত হেসে বললেন,

-‘আহির জন্য আমি আছি ধ্রুব। তোমায় এত টেনশন না করলেও চলবে।’

বলেই উনি আমার হাত একহাত দিয়ে চেপে ধরলেন আর একহাতে আমাদের দুজনের মাথার ওপর নিয়ে নিলেন ছাতা। আমি মৌনভাবে উনার কাজকর্ম দেখে যাচ্ছি। উনার পরনে নিজের কোটটি আমার গায়ে জড়িয়ে দেওয়াতে আমার প্রচন্ড অস্বস্তি হচ্ছে। সেই সাথে কাজ করছে নানা ধরনের চিন্তা।উনার চোখে আমার জন্য একরাশ সুপ্ত অনুভূতি দেখতে পারছি তবুও কেন উনি বলেন যে আমি শুধু উনার দায়িত্ববোধ ?
আনভীর এবার দ্রুত আমার হাত টেনে বেরিয়ে এলেন পিচঢালাই পথের মধ্যে। বৃষ্টির কারনে মানুষজন কমে গিয়েছে আশপাশে। আমি অবাকমিশ্রিত চাহিনীতে পরখ করে নিলাম এই গহীন সৌন্দর্যবান মানুষটিকে। বৃষ্টির গতি বাড়াতে যেই না আমার ডান পাশ ভিজে যাচ্ছিলো উনি আমার বাহু চেপে নিজের কাছে নিয়ে আসলেন ছাতার মধ্যে। আমি কেপে উঠলাম। বুকের দ্রিম দ্রিম শব্দ বেড়ে গিয়েছিলো হঠাৎ করে। না আহি ! এই মানুষটার প্রতি এত দুর্বল হওয়া চলবে না তোর। কেননা তোকে আনভীর মানুষটিকে ছেড়ে যেতে হবে।

চলে যেতে হবে- বিষয়টি ভাবতেই আমার হৃদয় খা খা করে ওঠলো।কেননা আজই চলে যাবো আমি। এখানে কারও দায়িত্ব হয়ে থাকার ইচ্ছেটা আমার মরে গিয়েছে। আমি এখন শুধু শান্তি চাই । চাই , এসব কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতে। এই #এক_শ্রাবণ_হাওয়ার মতো আনভীরের প্রতি আমার দুর্বলতাটি কঠোর থাকলেও তা স্মৃতির কোঠায় বন্দী করে রাখতে চাই।
তাই আমি উনার থেকে রাগবশত একটু দূরে সরে আসতেই উনি ক্ষীপ্তভাবে চেপে ধরলেন আমায়। গম্ভীর স্বরে বললেন,

-‘ভুলেও আমার কাছে থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করোনা আহি!’

আমি নির্বাক। উনার ব্যবহার আমায় সর্বত্র প্রহেলিকার জালে ঘিরে ধরেছে। তবে এবার আপনার কথা প্রথমবারের মতো অমাণ্য করবো আমি। আমিও দেখতে চাই আমি চলে যাওয়ার পর আপনি ঠিক কেমন অনুভব করেন।
.
.
.
.
~চলবে……….ইনশাআল্লাহ !!

ভুলক্রুটি ক্ষমাসুলভ চোখে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here