এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ২৭

এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ২৭
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন

-‘বিছানায় দাপাদাপি করা হয়েছে তোমার? এখন উঠো তাহলে, তুমি আজই আমার সঙ্গে ঢাকায় ব্যাক করছো?’
আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম এই কথায়।মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছি। এটা আদৌ স্বপ্ন নাকি আসলেই এই আনভীর পাগলটা এসেছেন আমায় নিয়ে যেতে? আমি অপ্রস্তুত কন্ঠ বলে উঠলাম,

-‘আ আপনি ক কি আসলেই আনভীর?’

-‘কোনো ডাউট আছে?’

আনভীরের কাট কাট গলা। আমি শুকনো ঢোক গিললাম ক্রমাগত। মনে মনে এটাই ভাবছি যে এটা যেন দুঃস্বপ্ন হয়, আনভীর যেন এখানে না থাকে, কিন্ত এমন কিছুই হলো না। কেননা আমার চোখের সামনে সত্যি সত্যিই আনভীর আছেন যার প্রমাণ আমি আরও ভালোমতো পেলাম উনার কথায়,

-‘তুমি যেহেতু আমায় ওয়াইফ সে হিসেবে তোমায় আমার বেডে ঘুমানো উচিত ছিলো, বাট তোমায় আমি সেখানে না পেয়ে পেলাম তোমার মামুবাড়িতে, ব্যাপারটা স্ট্রেইন্জ না মিসেস আহি আনভীর খান?’

আমার শরীর দিয়ে একপ্রকার ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো উনার মুখে ‘মিসেস আহি আনভীর খান’ সম্বোধনটি শুনে। তবে এতটুকু বুঝতে পেরেছি উনি আমার ওপর ভয়ঙ্কর রেগে আছেন। চোখ মুখ টকটকে লাল , যেন সারারাত ঘুমাননি। উনার চেহারা দেখে এমন মনে হচ্ছে যে উনার শরীরের ওপর দিয়ে একটা বিশাল ঝড় বয়ে গিয়েছে যার জন্য উনি এতটা উদ্ভ্রান্ত। আমি কয়েকবার নিঃশ্বাস ফেললাম এখন। তারপর জিজ্ঞেস করলাম,

-‘আপনি এখানে কেনো এসেছেন?’

-‘আমার বউ যেহেতু এখানে আছে, আমার এখানে আসাটা অস্বাভাবিক কিছু না।’

উনার মুখে এসব কথাশুনে রীতিমতো গা জ্বলে যাচ্ছে আমার। আমায় এভাবে বিছানায় বসে থাকতে দেখে উনি ভ্রু কুচকে বললেন,

-‘হোয়াট হ্যাপেন্ড? কি বলেছিলাম কানে যায়নি? ফটাফট ফ্রেস হয়ে নেও। আজই আমরা ঢাকা ব্যাক করছি।’

-‘আপনি চলে যান। আমি আমার মামুবাড়ি থেকে একপাও নড়বো না।’

উনি আমার কথা শুনে আচমকা সোফা থেকে উঠে আমার কাছে এসে আমায় বিছানার সাথে চেপে ধরলেন এবার। উনার হঠাৎ আক্রমণে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি।গলার স্বর কেমন যেন বন্ধ হয়ে আসছে। আমি শুকনো ঢোক গিললাম। উনি আড়ষ্ট গলায় বললেন,

-‘লিসেন আহি, খুব কষ্ট করে আমি নিজের রাগ সামলে রেখেছি। এখন তোমার এধরনের কথায় আমি রাগের বশে তোমার সাথে কি করে ফেলবো তা আমি নিজেও জানিনা।,,,,,,(নিঃশ্বাস ফেলে),,,,,তোমার স্পর্ধা দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না। হাউ ডেয়ার ইউ আহি উইদআউট মাই পার্মিশন এখানে এসেছো তুমি? একটাবার ভেবেছো যে তোমায় খুঁজে না পেয়ে কি অবস্থা হয়েছিলো আমার? মা’কে আমি বারবার জিঙ্গেস করছিলাম যে তুমি কোথায় বাট মা কিছুই বললোনা। শেষ পর্যন্ত ভাবিমণি বললো যে তুমি তোমার মামুর বাসায় গিয়েছো। তারপর আমি না চাওয়া সত্বেও তোমার বাবাকে কল দিতে বাধ্য হই শুধুমাত্র তোমার ঠিকানা পাওয়ার জন্য। আমি তারপর সময় নষ্ট না করে তখনই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাই এখানে আসার জন্য।যেখানে আমি সারাটারাত তোমার জন্য ছটফট করছিলাম সেখানে তুমি দিব্যি মামু বাড়িতে হাত-পা মেলে ঘুমাচ্ছো।’

উনার প্রখর কন্ঠ শুনে আমি চোখ নামিয়ে ফেললাম। তবে অবাকও হয়েছি বেশ কথাগুলো শুনে। আমি তো ভেবেছিলাম আমি চলে আসাতে উনি বড্ড খুশিই হবেন। তবে এভাবে যে আমায় ছাড়া একরাতেই পাগল হয়ে এখানে ছুটে এসে পড়বেন তা ছিলো আমার ধারনার বাহিরে। আমি উনার চোখে চোখ রেখে এবার দৃঢ় কন্ঠে বললাম,

-‘কেন ছটফট করবেন আপনি আমার জন্য। আমি তো আপনার কাছে জাস্ট দায়বদ্ধতা ছাড়া আর কিছুই না? তাহলে এত ছটফটানি কেনো?’

-‘কারন তোমাকে আমার প্রয়োজন।’

উনি তৎক্ষণাৎ বলে ফেললেন মিহি কন্ঠে। আমি যেন থমকে গিয়েছি উনার এই কথাতে। আনভীর নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। চশমাবিহীন চোখের কালচে বাদামী মণিগুলো অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। উনিনিঃশ্বাস ফেলছেন বারবার। কেমন যেন অস্থির দেখাচ্ছে মানুষটাকে। উনি আবার বলে ওঠলেন,

-‘এর বেশি আর কিছু শুনতে চাও তুমি আহি, তুমি আমার দায়িত্ব না, তুমি আমার প্রয়োজন। এই উত্তরটা কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়?’

-না নয়।

আমি থমথমে কন্ঠে উনাকে এই কথা বলে সরিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। কেননা আনভীরের আর কোনো কথাতেই দুর্বল হচ্ছি না আমি। এবার উনি যাই বলুক না কেনো, আমি উনার সাথে ফিরে যাবো না, কিছুতেই যাবো না। আনভীর উঠে আমার ঠিক কাছাকাছি দাঁড়ালেন এবার। পকেটে হাত গুজে শান্ত চাহিনী দিয়ে বললেন,

-‘তাহলে তুমি সিউর যে আমার সাথে আসছো না।’

-‘হাড্রেট পার্সেন্ট সিউর।’

আমি কাটকাট গলায় প্রতিউত্তর দিলাম। আনভীর আমার উত্তর শুনে খানিকটা হেসে বললেন,

-‘ওকে ফাইন।’

আমি এতে তাজ্জব বনে গেলাম। আনভীরের এত ঠান্ডা ব্যবহারের সাথে রীতিমতো আমার প্রথম সাক্ষাত এটা। আমি তো ভেবেছিলাম উনি আরও চিল্লাচিল্লি করবেন, জোর করবেন আমায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্ত সেসব না করে উনার সম্মতি জানানোটা রীতিমতো ভাবিয়ে তুলছে আমায়। তবুও আমি নিজেকে আশ্বস্ত করে বললাম,

-‘তাহলে চলে যান এখান থেকে।’

-‘ওয়েট অ্যা মিনিট, আমি কি একটাবারও বলেছি যে আমি এখান থেকে ফিরে যাবো?’

-‘মানে?’

আনভীর খানিকটা কাছে এসে দাঁড়ালেন আমার। বললেন,

-‘আমার বউ যতদিন এখানে , আমিও ততদিন এখানে। ইউ নো হোয়াট ! বউ ছাড়া আমি আবার ঘুমাতে পারি না।’

আমার পুরো মুখমন্ডল জুড়ে রক্তিম আভা ছাড়িয়ে পড়লো। ঘুম থেকে উঠে যদি এরকম অস্বস্তির চরম মাত্রায় চলে যাই….আমার মনে হয়না পৃথিবীতে এর থেকে বিদঘুটে জিনিস আর আছে। লাইক সিরিয়াসলি ! যেদিকে বিয়ের এতদিন উনি শুধু আমায় দায়িত্ব , এগ্রিমেন্ট এসব বুলশিট বলে রীতিমতো ডিপ্রেসড করে রেখেছেন সেদিকে উনার এতদিন পর মনে হলো আমি উনার বউ? এই লোকটা তো বিছানায় রীতিমতো বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত বানিয়ে রাখেন, তাহলে কোন মুখে বলেন যে আমায় ছাড়া উনি ঘুমাতে পারেন না? আমি তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললাম,

-‘সকাল সকাল কি আমার সাথে আপনি মজা করছেন আনভীর? বারবার আমায় নিজের বউ বলে সম্বোধন করছেন কেন? আমি তো আপনার চুক্তিবদ্ধ বউ। জাস্ট একপ্রকার দায়বদ্ধতা। আপনি এতদিন বলেছেন আর যাই হোক আমায় আপনি ভালোবাসতে পারবেন না, এই বিয়ে আপনি জাস্ট পরিস্থিতির চাপে করেছেন ব্লা ব্লা ব্লা তাহলে এখন আমার প্রতি এত দরদ কেনো?আমি তো আপনাকে মুক্ত করে দিয়েছি।’

আনভীর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠলেন আমার কথায়। আমার বাহু টেনে তাই সজোরে চেপে নিয়ে আসতেই আমি ‘আহ্’ শব্দ করে উঠলাম। কেননা উনি খুব কড়াকড়িভাবেই আমায় চেপে ধরেছেন যার দরুন আমি ব্যাথা পাচ্ছি। উনি বললেন,

-‘মুক্ত করতে হবেনা আমায় শুনেছো? আমি দরকার পড়লে আজীবন তোমার আবদ্ধে বন্দী থাকবো। পুড়ে ছারখার হয়ে যাক ওই এগ্রিমেন্ট। আই ডোন্ট কেয়ার।আমি তোমায় ওয়ার্ন করলাম আহি ফার্দার তুমি কখনোই আমার থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করবে না। এতে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো একটাবার খবর নাও তুমি? এখানে আসার পর ফোন সুইচড অফ করে রাখার পর অন করে চেক করেছো কতোগুলো কল করেছি আমি তোমায়?আরে হাফ মেন্টাল হয়ে গিয়েছিলাম আমি।’

-‘কেনো আমার জন্য আপনি এত তৎপর হয়ে ওঠবেন? এত চিন্তা কেনো আমার জন্য?’

উনি কিছু বলতে গিয়েও বললেন না।আমি উনার থেকে ছাড়িয়ে নিলাম নিজেকে। খুব কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম আনভীরের থেকে আঘাত পাওয়ার পর। কিন্ত একরাতের ব্যবধানেই মানুষটা ফিরে এসে সব তছনছ করে দিলো। আমার কাছে সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো মনে হচ্ছে। আমার ধারনা হয়ে গিয়েছে যে এই মানুষটা আমায় না নিয়ে ঢাকায় ফিরবেন না।

____________________

ডাইনিং টেবিলে আমি খাচ্ছি কম রাগের বসে ঠোঁট কামড়াচ্ছি বেশি। আমার অসভ্য বরটা আমার পাশেই কোনোমতে খেয়ে চলছেন। মামাশ্বশুড় বাড়িতে মহাশয় যেহেতু প্রথম এসেছেন তবে সবার আপ্যায়ন তো করাই লাগে। সেই সুবাদে মামা-মামী, নীলু , খালামণি সবাই তৎপর হয়ে ওঠেছেন উনাকে নিয়ে। এসব অতিরিক্ত ভক্তি দেখে জাস্ট বিরক্তি লাগছে আমার। আর এই লোকতো এসেই নিজের কথার জালে সবাইকে হাত করে নিলো। ছোটমামার মতো মানুষকেও সে নিজের পরম ভক্তও বাধিয়ে ফেলেছে। আমি শুধু ভাবছি যে আমার সকালে এই কিছুক্ষণ ঘুমের ফলাফল যে এমন পাবো তা জানলে আমি সারারাত সকাল একবিন্দুও ঘুমাতাম না। আমি প্রচন্ড রাগ নিয়ে প্লেটের দিকে মনোনিবেশ করলাম। ছোট মামু আমার এমন কান্ড দেখে বললো,

-‘কিরে আহি ! খাচ্ছিস না ক্যান?’

কথাটি বলেই মামু গপাগপ খাওয়াতে মন দিলো। এমন বিস্ময়কর মামু এই পৃথিবীরইতিহাসে মনে হয় আমারই আছে। দাঁতে দাঁত চেপে তাই বললাম,

-‘তুমি যেই হারে খাচ্ছো, আমার খাওয়ার সাধ মিটে গিয়েছে।’

আমি মামীর দিকে তাকালাম এবার । জিজ্ঞেস করলাম,

-‘মামী , এই লোকটাকে খাইয়ে দাইয়ে বিদায় করো। আমার জাস্ট সহ্য হচ্ছেনা।’

মামী তাজ্জব হয়ে বললেন,

-‘ছিঃ ছিঃ আহি, বরকে কেউ এভাবে ডাকে? তাছাড়া বেচারা সেই সাতটা বাজে তোর জন্য ঢাকা থেকে এসে পড়েছে। আর তুই পড়ে পড়ে ঘুমিয়ে উঠলি সাড়ে আটটা বাজে। তোর ঘুম থেকে উঠার জন্য কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলো তুই জানিস?’

আমি আনভীরের দিকে তাকাতেই উনি অগোচরে চোখ টিপ মারলেন আমায়।আমি সাথে সাথে খাওয়াতে মনোযোগ দিলাম। এক রাতের ব্যবধানে আমায় না পেয়ে উনি নিশ্চিত মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। এমন রসকষহীন মানুষটাকে এমন রূপে দেখবো তা আমি কল্পনায়ও আনতে পারিনি।খালামণি এবার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

-‘তুই এত মনমরা হয়ে আছিস কেনো রে আহি? বল আমাকে?’

-‘আমি যাবো না।’

-‘মানে?’

-‘আমি উনার সাথে যাবো না এখন ব্যস। এই এডমিশন এডমিশন টেস্ট করে এই লোক আমার মাথার খুলি উড়িয়ে ফেলেছে। এখন আমি তোমাদের সাথে টাইম স্পেন্ড করতে চাই। উনাকে ফিরে যেতে বলো। আমি আরও কিছুসময় এখানে থাকবো।’

আমি পুরোপুরি সত্যটা বললাম না কাউকে। কেননা আমার প্রথমে বড় মামুর সাথে কথা বলতে হবে।আমার কথা শুনে হেসে দিলেন সবাই। আনভীর এবার খাওয়া শেষ করে বললেন,

-‘এই মেয়েকে নিয়ে মহা জ্বালায় আছি খালামণি ! পরীক্ষার আগের দিন একটু মনোমানিল্য হয়েছিলো জাস্ট। এতই ক্ষেপে গিয়েছে যে না বলে এসে পড়ছে এখানে।আমার কি অবস্থা হয়েছিলো এই পিচ্চির ধারনা আছে? ওকে বলে দাও আমি ওকে ছাড়া যাচ্ছি না ব্যস !’

ছোট মামু সাবাসি দিয়ে বললেন ,

-‘এই নাহয় আমাদের জামাইবাবু , এভাবেই বউকে পটিয়ে যাও মশায়। একটাবার আমার বিয়েটা হোক , আমিও এভাবে বউরে মানাবো।’

-‘তোমার এই জন্মেও বিয়ে হবেনা চাচ্চু।’

নীলু মুখ চেপে কথাটি বলতেই হেসে দিলেন সবাই। আমি এবার আনভীরকে বললাম,

-‘আপনি কেনো থাকবেন এখানে? এটা আমার মামু বাড়ি। আপনার মামু বাড়িতে গিয়ে আপনি থাকেন।’

-‘আমি আগেই বলেছি যে আমি তোমায় নিয়েই ঢাকায় ব্যাক করবো। আফটার অল্ , শ্বশুড়বাড়ির আদর তো আর পেলাম না।এবার নাহয় মামশ্বশুড় বাড়ির আদরটা পেয়ে যাই?’

মামী খুশিতে গদগদ হয়ে বলে ওঠলেন,

-‘তোমার যতদিন ইচ্ছে ততদিন থাকো। আর আহি তো এমনিতেও ফুলের মতো মেয়ে। ওর রাগ ভাঙতে কষ্ট হবেনা তোমার। তবুও আহিকে আরও কিছুদিন এখানে থাকুক কেমন? বেচারি এমনিতেও এখানে বেশি আসতে পারেনা।’

আমি কথা না বাড়িয়ে খাওয়া ছেড়ে রুমে চলে গেলাম এবার। কেননা আনভীর থাকলে সর্বোচ্চ একদিন থাকবেন। তারপরদিনই এখান থেকে নিয়ে যাবেন আমায়।যা আমি মোটেও চাচ্ছিনা। আমার এমন কান্ড দেখে আমার পিছু পিছু খালামণি, মামী , নীলু এমনকি আনভীরও এসে পড়লেন। আমি দরজা লাগিয়ে গুমশুম হয়ে বসে রইলাম এখন। মামী জিজ্ঞেস করলেন,

-‘আহা আহি ! বরের সাথে এত রাগ করতে নেই গো মামণিটা। ‘

-‘তুমি উনাকে ফিরে যেতে বলো মামী। আমি বললাম না আরও কিছুদিন এখানে থাকবো। তাছাড়া উনারও তো ভার্সিটিতে ক্লাস আছে। তাহলে থাকবেন কিভাবে এখানে? উনারে তোমরা চিনো না। কাল হুট করে ধমকি-ধামকি দিয়ে নিয়ে যাবে আমায়।’

ছোট মামু বললেন,

-‘কার এত সাহস তোরে ধমক দিবে? কেউ কিচ্ছু বলবেনা তোকে। তোর যতদিন ইচ্ছে ততদিনই থাকিস।এখন দরজাটা খোল রে।’

পরে আমায় ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে যেমনভাবে বললেন আমি আশ্বস্ত হয়ে দরজাটা খুলাম। বস্তুত আনভীর চাচ্ছিলেন আজই আমায় নিয়ে যেতে। কিন্ত পরে বাধ্য হয়ে রাজি হলেন আমায় এখানে আরও কিছুদিন থাকার অনুমতি দেওয়ার জন্য। আমি যেহেতু এখানে থাকছি তাই উনিও বললেন যে একপাও আমায় ছাড়া উনি নড়বেন না। সবাই উনার এ সিদ্ধান্তে আনন্দে থাকলেও গোমরামুখ করে থাকলাম আমি। বাকিরা চলে যাওয়ার পর উনি বাকা হেসে আমার কানের কাছে ঝুঁকে এলেন। বললেন,

-‘ওসব এগ্রিমেন্টের কথা ভুলে যাও আহি। বিয়ে যেহেতু আমরা করেছি, তাই সেটা মেনে নিতে হবে আমাদের। আফটার অল এত সুইট , কিউট বউটাকে তো আর হাতছাড়া করা যায় না? আজরান ভাইয়া ঠিকই বলতো , এমন বউ রাগারাগি করার জিনিস না ; আদর করার জিনিস।এখন তুমি যেহেতু গতকাল আমায় পাগল করে দিয়েছো এখন তোমায় শাস্তি দেবো নাকি আদর করবো?’
.
.
.
~চলবে……..ইনশাআল্লাহ !

নোটবার্তা: গল্পটাকে নিজেদের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে চিন্তা না করে আহি বা আনভীরের পয়েন্ট আফ ভিউ থেকে চিন্তা করুন। তাহলে মনে হবেনা যে ওরা দুজন দুজনের চরিত্র থেকে কোনোরূপ কোনো ভুল করছে। আহি নিজের ক্ষেত্রে সঠিক তাই প্লিজ কেউ আমা জোর করবেন না গল্পটাকে অন্য দিকে নেওয়ার জন্য। গল্পটা নিজস্ব ফ্লোতে আমি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকের পর্বটা কেমন লাগলো জানাবেন। হ্যাপি রিড়িং।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here