এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়
পর্ব_৫
#কায়ানাত_আফরিন
-সমস্যা কি তোমার?সকালবেলায় ভেজা চুলের মতো এখন আমায় তোমার কথাবার্তা দিয়ে আকর্ষণ করতে চাও? বউ হতে না হতে ভালোই অধিকার ফলাচ্ছো দেখছি। লিসেন,,,,আমার যা মন চায় আমি তাই করবো। তবুও তোমায় কৈফিয়ত দিতে আমি বাধ্য নই।সো নেক্সট টাইম আর এই বউগিরি দেখাতে আসবে না। আর হ্যাঁ,,,,,(কিছুটা কাছে এসে),,,বারবার আমার সামনে ঠোঁট কামড়াবে না। এতে আমার মাথা ঠিক থাকে না। যদি উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলি তবে দোষ আমার হবেনা,,,…বুঝেছো?
প্রথম কথাগুলো শুনে যতটাই না অবাক হয়েছিলাম শেষ কথাগুলো শুনে একেবারে হতভম্ব হয়ে পড়লাম আমি। কি বললেন এগুলো? আমি ঠোঁট কামড়ালে উনার মাথা খারাপ হয়ে যায়? এই একবার বলে উনার পার্সোনাল লাইফে দখল না দিতে আবার এই উনি নিজে আমার ব্যাপারে দখল দিতে যায়,,,ব্যাপারগুলো আমার সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
আমি উনার বুকে হাত দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেও উনাকে এক বিন্দু সরাতে পারলাম না। আবার চেষ্টা করতেই আমায় চেচিয়ে বলে উঠলেন,,
-ডোন্ট টাচ মি।
মহা জ্বালায় পড়েছি তো ! এদিকে উনি ঘেষে দাঁড়িয়ে আছেন আমি আমি সরানোর চেষ্টা করলেই হুংকার দিয়ে উঠেন। আনভীর আবার বলে ওঠলেন,,,
-আমি তোমায় ফার্স্ট এন্ড লাস্ট ওয়ার্নিং দিলাম আহি যে আমার পার্সোনাল লাইফে ইন্টারফেয়ার করতে আসবে না। আমি কি করি না করি সেগুলো তোমায় জানাতে আমি বাধ্য নই। আর তুমি আসলে চাচ্ছোটা কি একটু বলবে?,,,,সকালে ভেজা চুলের পানি সারা ঘরে ছিটানো , নীল শাড়ি পড়ে বউ হয়ে থাকা , আবার ঘন ঘন ঠোঁট কামড়ানো এসব দেখিয়ে কি করতে চাও তুমি? ভাবছো যে আমি পাগল হয়ে যাবো তোমার জন্য? তারপর দুজন মিলে সুখের সংসার করবো?,,,,,,সে সামথিং ড্যাম !!!
শেষ কথাটি উনি এতই জোরে বললেন যে কেঁপে উঠলাম আমি। আমার হাতের কব্জি চেপে ধরাতে হাতে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।আমি ভয়ে আছি যে বাবা শুনে ফেলবেন নাতো? তাহলে বিষয়টা খুবই খারাপ দেখাবে। আনভীর নিঃশ্বাস ফেললেন বারকয়েক । অতঃপর শীতল কন্ঠে বললেন,,,
-হয়তো আমি তোমায় ভালোবাসতে পারতাম আহি যদি আমাদের বিয়েটা আর সম্পর্কটা অন্য চার-পাঁচজনের জন্য স্বাভাবিক হতো। কিন্ত না। তুমি জানো তোমার বিয়ে অন্যজনের সাথে হওয়ার কথা ছিলো কিন্ত হলোটা কি,,,,,,,আমাদের দুজনকে এক ঘরে দেখে সবাই ভেবে নিলো আমাদের প্রেমের সম্পর্ক।তোমার বিয়েতো ভাঙলোই,,,,সাথে আমার চরিত্রেও দাগ লাগলো যে,,,,,(নিঃশ্বাস ফেলে) আমি নাকি তোমায় ভোগ করেছি। আমার এতদিনের সম্মান নিমিষেই ধুলিসাৎ হয়ে গেলো শুধুমাত্র তোমার বোকামির জন্য।
আমি নিশ্চুপ। উনার কথাগুলো আমার বুকে উথাল পাতাল ঝড় তৈরি করছে। আনভীর তো আর ভুল কিছু বলেননি। উনার জীবনে এত বড় পরিবর্তনের মূলে যে আমি আছি। আনভীর ঝুঁকে এলো আমার দিকে খানিকটা। চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ। নিজের রাগ-ক্ষোভ-কষ্ট নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বারবার। এবার তিনি থমথমে গলায় বললেন,,,
-আই জাস্ট হেট ইউ আহি। হয়তো একজন হাজবেন্ড হিসেবে তোমার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারবো,,,,,,তবে কখনোই ভালোবাসতে পারবো না।
উনার শেষ কথাটি ঝংকারের ন্যায় কর্ণকুহরে বাজতে লাগলো আমার। চোখ বেয়ে টুপ করে গড়িয়ে পড়লো একফোটা নোনাজল। আনভীরের তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে ছেড়ে দিলেন আমায়। দুর্লভাবে বিছানায় গা এলিয়ে লাইট বন্ধ করে দিলেন এবার। আমি তখনও পাথর হয়ে আছি। রাতের আধাঁর ক্রমশ গ্রাস করে ফেললো আমাকে। আমি শুধু একটা জিনিসই অনুধাবন করতে পারলাম,,,,এই আনভীর সেই আনভীর না। নবম শ্রেণী পড়াকালীন মফস্বল শহরের সেই শান্তশিষ্ট আনভীর উনি হতেই পারেন না। আমার বিয়ের দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনায় আকস্মিক পাল্টে গিয়েছেন তিনি। হয়তো এটাই স্বাভাবিক। আনভীরের আত্নসম্মানবোধ অনেক বেশি ছিলো । নিজের ক্যারিয়ার গঠন আর স্ট্রং পার্সোনালিটি তৈরির জন্য নিজেকে অনেক সময় দিয়েছিলেন তিনি। তাই সেদিন সবাই যখন উনার ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বললো সে উনি কিছুতেই মানতে পারননি। আনভীর হয়তো ঠিকই বলেছেন। দোষটা আমার !!! উনার বিরাট পরিবর্তনের দায়ভারটাও আমার!!!
.
.
.
দেখতে দেখতে একসপ্তাহ পার হয়ে গেলো এভাবেই। আনভীর বরাবরের মতো সকালে উঠেন,,,,ভার্সিটিতে ক্লাস থাকলে ভার্সিটি চলে যান ; নতুবা ঘরে বসে রিসার্চের কাজ চেক করেন। শুনেছিলাম বাবা আর আজরান ভাইয়ার ব্যবসার পুরো হিসাবের কাজ উনাকেই করতে হয় তবে এমাসের পুরো হিসেবের দায়ভার আজরান ভাইয়ার ওপর চাপিয়ে দিলেন তিনি। বাবা অনিচ্ছা সত্বেও কিছু বললেনি আনভীরকে। আনভীর প্রায়ই ক্লাস ডিসমিস করে এদিক সেদিক চলে যান। বাসায় ফিরেন অনেক রাত করে। বাবা-মা’র সাথে আগের মতো তেমন একটা কথাও বলেন না।
বাবা প্রায়ই জিজ্ঞেস করেন যে আমাদের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক আছে কিনা। আমি কিছু না বলে একটা ফিচালো হাসি দেই। যেদিকে উনি আর আমার নামেমাত্র বাবা বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাদের বিয়ে করিয়ে দিলেন,,,একবারও ভাবেননি যে আমি বা আনভীর রাজি আছি কি-না,,,,,তাহলে বিষয়গুলো এখন বলাই বেকার। আজ নিজের পরিবার থাকলে আমি হয়তো চলে যেতাম অনেক আগে ,,,,হয়তো আনভীরই আমায় পাঠিয়ে দিতো।আজ নিজের পরিবার নেই বলেই এখনও এখানে থাকতে হচ্ছে,,,,,,এভাবে আর কতদিন চলবে জানিনা।
.
.
আজকে রাতে এমনিভাবে রান্নাঘরের কাজকর্ম শেষ করে রুমে ফিরে আসলাম আমি। দেখি আনভীর রুমে পায়চারী করছেন আনমনে। আমার কিছু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করলেও ভয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। আল্লাহ জানে আবার কি উল্টাপাল্টা বলে বসবে,,,,আমি এসব নিতে পারবো না । হঠাৎ আনভীর আমার হাত টেনে খাটে বসিয়ে দিতেই আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আনভীরও চেয়ার টেনে বসলেন আমার ঠিক বরাবর। চোখে মুখে কিছুটা প্রশ্ন ভাসা। আনভীর মৃদু গলায় জিজ্ঞেস করলেন,,,
-সারাদিন তো বাড়ির কাজই করতে থাকো। পড়ালেখা করতে ইচ্ছে করে না?
আমি চুপ হয়ে গেলাম। আসরে বিয়ে ঠিক হওয়ার পরই আব্বু আমার পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে বরপক্ষের লোকজনের কথামতো। আমি তাই মাথা নাড়িয়ে বললাম,,
-বাবা,,,,,,,,,পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছিলো আমার। তাই,,,,,,,
-মানে? পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বললেই তুমি বন্ধ করে দিবে?তোমার কি নিজের স্বাধীনতা নেই? নাকি নিজেরই পড়াশোনা করার কোনো ইচ্ছে ছিলো না।
আমি চুপ। আমায় নীরব হতে দেখে আনভীর দমে গেলেন। শান্ত কন্ঠে বললেন,,
-কোন ভার্সিটি পড়ো তুমি?
-আমার তো এইচ এস সি রেজাল্ট বের হলো সবেমাত্র। এবার ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিলো।
আমার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো আনভীর। তাই তটস্থ গলায় বললো,,
-হোয়াট? তুমি এইচ এস সি দিলে? কিন্ত তোমায় যখন আমি প্রথম দেখেছিলাম তখন তো তুমি ক্লাস নাইনে পড়তে। সে হিসেবে তোমার অনার্স ফার্স্ট ইয়ার থেকে সেকেন্ড ইয়ারে ওঠার কথা । তাহলে?
-আসলে………আমার টাইফয়েড জ্বরের জন্য এস.এস.সি একবার দিতে পারিনি। তাই এক বছর পিছিয়ে গিয়েছিলাম।
আমার কথা শুনে আনভীর তপ্ত শ্বাস ছেড়ে চেয়ার ঠেলে উঠে পড়লো এবার । জড়ানো কন্ঠে বললো,,,
-তোমাকে যতটা পিচ্চি ভেবেছিলাম এর থেকেও পিচ্চি তুমি।
উনার মুখে পিচ্চি না শুনে আমি তাজ্জব না হয়ে পারলাম না। তাই বলে ফেললাম,,
-এখনও আমায় পিচ্চি বলছেন কেনো? আমি কি সেই নাইনে পড়ুয়া মেয়ে নাকি? আমার বিয়ে হয়ে গেছে,,,,বরও আছে।
বলেই মুখ চেপ ধরলাম আমি। আনভীর ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। চোখের দৃষ্টি অস্বচ্ছ। এমন চাহিনীতে আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম । উনি বলে উঠলেন,
-বিয়ে করে তুমি মহাপুণ্য করলেও তোমার এই বরটার হয়েছে যত ঝামেলা। লিসেন,,,,এভাবে পড়ালেখা না করলে চলবে না। যতই হোক , তুমি আমার ওয়াইফ। লোকজনকে কি বলবো যে আমার বউ ইন্টার পাশ করেই ঘরে বসে বরের পিন্ডি চটকাচ্ছে?
এই লোকটা আসলেই অসভ্য। এককথায় চরম অসভ্য। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় বিন্দুমাত্র ধালনা নেই এই মানুষটার। মুখ ফুলিয়ে রইলাম আমি। আনভীর আবার জিজ্ঞেস করলেন,,
-কোন গ্রুপ পড়েছো তুমি?
-সাইন্স।
-তো কি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাও?
-হার্ট সার্জন হওয়ার ইচ্ছে ছিলো অনেক। সেই হিসেবেই পড়াশোনা এগোচ্ছিলাম। এইচ এস সি তে ভালো গ্রেডও পেয়েছিলাম। কিন্ত বাবা মেডিক্যাল কলেজে পড়াতে চাননি।ব্যস বিয়েতে বসিয়ে দিলো।
আনভীর এবার বললেন,,’ওকে তাই-ই হবে। এখনও সময় যায়নি। আমি তোমার ভর্তি ফরম পূরন করে দিবো। আর আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষার জন্য বই কিনতে যাবে আমার সাথে নীলক্ষেতে।’
উনার তাৎক্ষণিক কয়েকটি কথায় হতভম্ব হয়ে রইলাম আমি। মানে ,,,,,,উনি সত্যিই আমায় পড়াতে চাইছেন? হঠাৎ বিষয়গুলো আমার স্বপ্নের মতো মনে হতে লাগলো। মাথা ভনভন করছে কেমন যেন। তবুও ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করলাম,,,
-মানে?
আনভীর বিরক্ত হলেন প্রচন্ড। বলে ওঠলেন,,
-আমি কি চাইনিজ ভাষায় বলেছিলাম স্টুপিড? তুমি ঢাকা মেডিকেলে অ্যাপ্লাই করবে,,,,,,দ্যাটস ইট। আমার ফ্রেন্ড আছে, মেডিকেল স্টুডেন্টদের পড়ায়, সে ট্রেইন করবে তোমায়। আমি জাস্ট তোমায় গাইড দেবো।এই কথার একবিন্দুও নড়বড় হবে না। ফাইনাল?
উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন নির্ঘাত। তাই আমি এবার মৃদু কন্ঠে বললাম,,
-আপনি ঠিক আছেন তো? হঠাৎ আমায় পড়াশোনা করানোর ভুত চাপলো কিভাবে?এই না বললেন আমরা ছয় মাস একসাথে থাকবো। তারপর সব শেষ । তাহলে?
দমে গেলো আনভীর। আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে গহীনভাবে। আড়ষ্ট কন্ঠে বললেন,,,
-ওটা জাস্ট এগ্রিমেন্ট পেপার আহি,,,ডিভোর্স পেপার না। তাছাড়া আমি চাইনা যে তুমি আমার বা তোমার বাবার ওপর নির্ভর হয়ে থাকো। তাই তুমি পড়াশোনা করবে,,,,,,,,আমার কথা মানার জন্য না;শুধুমাত্র নিজের জন্য।
আনভীরের এই কথাটি শোনামাত্রই শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো আমার। উনার কথাগুলো একেবারে যেন বুকে গিয়ে লেগেছে। আমি ঠোঁট চেপে হালকাভাবে সম্মতি জানালাম। উনি কোনো অনুভূতি প্রকাশ করলেন না বিনিময়ে । শুধু মৃদু কন্ঠে বললেন,,
-ঘুমিয়ে পড়ো। আগামীকাল সকালে উঠবে তুমি।’
বলেই উনি টেবিল দেকে এক বান্ডিল পরীক্ষার খাতা নিয়ে লাইব্রেরি রুমে চলে গেলেন লাইট অফ করে। আজকেও তাহলে রাত পর্যন্ত খাতা দেখবেন উনি। আমিও তাই এবার ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিলাম।
.
.
_____
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম আনভীর বিছানায় নেই। আমি একটু অবাক হলাম এতে। বিছানা দেখে তো মনে হচ্ছেনা যে এখানে কেউ শুয়েছিলো। তাহলে কি এটাই ভাববো যে উনি রাতে এ রুমে আর আসেনি। ব্যাপারটা আমার আজব লাগলেও কিছু করার ছিলনা। এই মানুষটাই একটা আজবের গোডডাউন। তাই আড়মুড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে জানালার পর্দা সরিয়ে দিলাম এবার। সামনের পার্কের থেকে পাখির কিচিরমিচির এর শব্দ ভেসে আসছে। আমি এবার তাই ধীর পায়ে পা বাড়ালাম লাইব্রেরি রুমে। সকাল অনেক বিধায় নুড়ী আপা ছাড়া কেউই উঠেনি।
লাইব্রেরির দরজাটা খুলতেই একটা সরু কড়কড় শব্দ তৈরি হলো। ভেতরে বিশাল বইয়ের বাহারে এককোণে দেখতে পারলাম আনভীরকে। উনি স্টাডি টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। চশমাটা খুলে রাখা। আমি উনার দিকে এগিয়ে গেলাম। মিহি গলায় বললাম,,
-এইযে শুনছেন?
আনভীর ঘুমে মগ্ন। তাই কোনো প্রতিউত্তর দিলেন না। আমারও ডাকতে ইচ্ছে করছেনা এই মানুষটাকে। আমি উনার দিকে ঝুঁকে গেলাম খানিকটা।কিছুটা মনোযোগ দিয়ে দেখছি তাকে। ইসসস! ঘুমালে তাকে কতটাই না নিষ্পাপ দেখায়। যেন দুনিয়ার সমস্ত মায়াটাই আল্লাহ উনার মুখে দিয়ে দিয়েছেন। আর জেগে থাকলে মনে হয় একটা আস্ত চলাফেরা করা এটম বোম্ব। সারাদিন শুধু হৈ হৈ করতে পারে। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলো উনার। চোখ খুলে আমাকে দেখতেই একটু অবাক হয়ে যায়। আমি এবার যেন স্তব্ধ। উনি যে হুট করে চোখ খুলবেন আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আনভীর ভ্রু নাচিয়ে বললো,
-কি ম্যাডাম? এভাবে আমার দিকে ঝুঁকে ছিলে কেনো? গতকালের মতো আবারও আমার ঘুমের ফায়দা উঠাতে ইচ্ছে হয়েছে?ইয়া মাবুদ ! এই মেয়ে আবারও আমায় নাপাক বানিয়ে দিলো।
আমার মাথা ঘুরাচ্ছে এবার উনার কথা শুনে। এই মানুষটা যে কতটা অসভ্য হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। লজ্জায় না পাচ্ছি সরতে না পারছি কিছু বলতে। আনভীরের সদ্য ঘুম থেকে উঠা মুখটাতে কৌতুহলতার ছাপ। আল্লাহ ! আমায় তুলে নিয়ে যাও।
.
.
.
~চলবে………ইনশাআল্লাহ
ভুলক্রুটি ক্ষমাসুলভ চোখে দেখবেন।