“এখনো_ভালোবাসি”💖
Writer:TaNia
Part-01
“এলোমেলো চুল,ধূলোয়ভরা কাপড় আর চেহারায় বিষণ্ণতা নিয়ে একটি ১৯ /২০ বছরের মেয়ে CGI(chowdhury group of Industry) তে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করলো।দারোয়ান ও গার্ড মেয়েটিকে আটকানোর চেষ্টা করেও আটকাতে পারলো না,তার আগেই মেয়েটি সবাইকে ফাঁকি দিয়ে সোজা আয়নের মিটিং রুমে প্রবেশ করলো।”
—প্রিয়ুকে দেখে আয়ন হাতের ইশারায় সবাইকে মিটিং রুম থেকে চলে যেতে বললো।সবাই চলে যাওয়ার পর প্রিয়ু গিয়ে আয়নের পা ধরে বলে,”প্লিজ আয়নদা আরভিনকে বাঁচাও।কিছুক্ষণের মধ্যে অপরেশন না হলে,আরভিন নাকি বাঁচবে না।প্লিজ আরভিনকে বাঁচাও আয়নদা।ও ছাড়া আমার আর কেউ নেই এই দুনিয়ায়। প্লিজ।”
আয়ন মুচকি হেসে,চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে কলমটা হাতের দু আঙ্গুল দিয়ে ঘুড়িয়ে জিঙ্গেস করলো,কতো লাগবে।”
—ত ততিন ললাখ।
“উম!ওকে।চল আমার সাথে।আয়ন গাড়ীতে গিয়ে বসলো,পিছে পিছে প্রিয়ুও গাড়ীতে উঠলো।প্রিয়ু জানতো আয়ন কখনো ওকে খালি হাতে ফেরত দিবে না।তাইতো আজ এতো বড় বিপদে প্রিয়ুর শুধু একটা নামই মনে পড়েছে।তা হলো আয়নদা।
গাড়ী থামলো একটা পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেলে।প্রিয়ু চারদিকে তাকিয়ে হোটেলটা দেখে,আয়নকে প্রশ্ন করলো, আমরা এখানে কেনো এসেছি আয়নদা।”
…………..
“আয়ন এবার প্রিয়ুর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রিয়ুকে পুরো স্ক্যানিং করে নিলো চোখ দিয়ে।প্রচণ্ড গরমে প্রিয়ু ঘেমে কামিজটাও ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে আছে।কোমড়ের নিচ পর্যন্ত ছাড়া চুল,কাজল কালো চোখ আর গোলাপের পাপড়ীর মতো ঠোঁট দুটো বারং বার আকর্ষন করতো আয়নকে প্রিয়ুকে একটু কাছে পাওয়ার জন্য।তাইতো এতো আয়োজন।প্রিয়ুকে আজ বাধ্য করলো স্বেচ্ছায় আয়নের খাঁচায় আসার জন্য।
—আ আআমরা এখানে কোনো আয়নদা।আমাদের তো হোসপিটালে যাওয়ার কথা ছিলো।”
“ওয়াট!রিয়েলি। আমি হোসপিটালে যেয়ে কি করবো।”
—তাহলে এ এখানে কেনো।’
“দেখ প্রিয়ু,এখন ছোট না তুই,বেশ বড়ও হয়ে গিয়েছিস।নিশ্চয়ই সব ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝাতে হবে না।একটা ছেলে একটা মেয়ে হোটেলে কেনো আসে,আর কি করে নিশ্চয়ই জানা আছে।আর আমি কি তোকে এতোগুলো টাকা এমনেই এমনেই দিবো।কি লাভ আমার।আমাকে আগে খুশি কর।তার পর যতো টাকা লাগে আমি দিয়ে দিবো।ডোন্ট ওয়ারি।”
—প্রিয়ুর মাথায় যেনো আসমান ভেঙ্গে পড়লো আয়নের মুখে এসব শুনে,ছিঃ আয়নদা!
আমার ভাবতেই লজ্জা হচ্ছে তুমি আমার সেই আয়নদা।তুমি এতো জগন্য কথা কিভাবে বলতে পারলে আমাকে।”
“আয়ন এবার রেগে,প্রিয়ুর গালটা চেপে ধরে।আমি এখানে আমার গুণগান শুনতে আসেনি, রাজি থাকলে বল,না হলে গেট লস্ট।এই আয়নের জন্য মেয়ের অভাব হবে না।
—-প্রিয়ু আয়নের কথায় রেগে ঘৃর্ণায় চলে যেতে নিলে,হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠে।ওপর পাশ থেকে একজন মহিলা কাঁদছে।প্রিয়ু মা কোথায় তুই।তারাতারি আস।অপারেশন না হলে নাকি আরভিনকে বাঁচানো যাবে না।প্লিজ মা কিছু একটা কর।প্রিয়ুর হাত পা কাঁপছে। কাপাকাপা গলায়ই বললো,তুমি চিন্তা করো না খালা।আমি তারাতারি আসছি।”
“একমাত্র ভাই প্রিয়ুর।কিছুদিন ধরে শরীর অনেক অসুস্থ ছিলো। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসাও করাতে পারছিলো না।আজ সকালে হঠাৎ ই আরভিন জ্ঞান হারিয়ে সিড়ি থেকে পরে মাথায় ইনজুরি হয়।পাশের বাড়ীর এক খালাকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসে আরভিনকে তারাতারি।
ডাক্তার সব দেখার পর বলে, আজই অপারেশন করতে হবে।তানা হলে রোগিকে বাঁচানো যাবে না।কাউন্টারে তিন লাখ টাকা জমা দিতে বলে,ডাক্তার চলে যায়।প্রিয়ু পাগলের মতো অনেক জায়গায় যায়।কিন্তু কেউ সাহায্য করতে রাজি হয়না।তাই বাধ্য হয়ে অনেক আশা নিয়ে আয়নের কাছে আসে।কিন্তু!”
—আয়নের ডাকে প্রিয়ুর ধ্যান ভাঙ্গে।কি হলো,তুই এখনো বসে আছিস কেনো।আমার সময় নষ্ট হচ্ছে।গেট লস্ট।
“প্রিয়ু ফোনটা ব্যাগে রেখে,কিছুক্ষণ নিরব থেকে মাথা নিচু করেই বললো।মিস্টার মাহবুভ আ আআমি রাজি,বলুন কি করতে হবে।”
—আয়ন কিছুটা অবাক হলো,কারন প্রিয়ু ওকে আপনি বলে সম্ভোন্ধন করছে।তার উপর মাহবুভ বলে।সাধারণত প্রিয়ু সবসময় ওকে আয়নদাই বলে।
____________
“কারণ আয়ন এক হিসেবে ওদের বংশের বড় ছেলে,ওর ভাই আর কাজিন সবই ওর থেকে এক দুবছর হলেও ছোট।ছোটদের মধ্যে কেউ কেউ আয়নকে দাদা বলে ডাকে,বড় ভাইকে অনেকে দাদা বলে,বিশেষ করে কলকাতার বাঙ্গালিরা।আর আয়নের পূর্ব পুরুষরা নাকি আগে ইন্ডিয়াই ছিলো।তাই ওখান কার কিছু কালচার ওরা বংশগতো পেয়েছে।
প্রিয়ু যেহেতু সম্পর্কে আয়নের কাজিন হয়,তাই ও আয়নকে আয়নদা বলেই ডাকতো।
-আয়ন ইশারা করলো নিজের সাথে আসতে।প্রিয়ুও গাড়ী থেকে নেমে আয়নের পিছে পিছে চলে গেলো।হোটেলের রুমের দরজা খুলে প্রিয়ুকে ভেতরে ডুকতে বললো আগে।আয়নও ভেতরে ঢুকে কোটটা খুলে পাশের সোফায় রাখলো।হাত দিয়ে নিজের টাইটা খুলতে খুলতে বললো,তুই ফ্রেস হয়ে আসতে পারিস।প্রিয়ু কোনও জবাব দিলো না।”
—কাস্টমারকে কিভাবে খুশি করাতে হয় তা কি জানিস,নাকি এটাও শিখিয়ে দিতে হবে।
“প্রিয়ু ভালো করে বুঝে গেছে,আয়ন ওকে অপমান করার একটা বাহানাও ছাড়বে না।তাই নিজেই নিজের শরীর থেকে ওড়নাটা খুলে ফেললো।কামিজের ফিতাটা খুলে,চেইনটাও খুলে দিলো।আয়ন শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে,পেন্টের পকেটে হাত রেখে।”
—এর পর প্রিয়ু আয়নের সামনে এসে,ওর শার্টটের বোতাম গুলো খুলতে লাগলো।প্রিয়ুর চোখের জল দেখে আয়ন চোয়াল শক্ত করে দাঁতেদাঁত চেপে বললো,এক ফোটা জলও জাতে আর না পরে তোর,পরিণাম ভালো হবে না।আর আমি তোকে জোর করছি না।তোর ইচ্ছায় তুই এখানে,তাহলে এতো ঢং করছিস কেনো।
এর আগেও তো তোর অনেকের সাথে সম্পর্ক ছিলো।হয়তো কাস্টমার ছিলোনা,তাতে কি।
“প্রিয়ু একহাত দিয়ে জলটা মুছে,আম স সরি।এমন হবে না আর।”
—প্রিয়ু কে আর কোনও কথা বলতে না দিয়ে ওর ঠোঁট দুটো দখল করে নিলো আয়ন।ডুব দিলো প্রিয়ুর মাঝে।ব্যাথায় প্রিয়ু মাঝে মাঝে কুঁকড়িয়ে উঠলেও সে দিকে আয়নের বিন্দু মাত্র ইন্টেরেস্ট নেই।ওতো নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত।দুবছর পর প্রিয়ুকে আয়ন এতো কাছে পেয়েছে।এই দুবছরে প্রিয়ুর জন্য আয়ন হাজারবার মরেছে।আজ সব রাগ,অভিমান, জিদ সব প্রিয়ুর মাঝেই শেষ করবে।নিজের এতো দিনের চাওয়াটা আজ পূরণ করবে।
‘-প্রিয়ু কে এভাবে পেতে হবে,তা আয়ন কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।প্রিয়ুর প্রতি বরারবই দূর্বল ছিলো আয়ন। তাইতো প্রিয়ুকে নিজের করে নিতে চেয়েছে।তবে এভাবে না প্রিয়ুকে নিজের বউ হিসেবে।কিন্তু ভাগ্যের লীলা।যে মেয়েকে আয়ন এতো ভালো বেসেছে,সেই মেয়েই অবশেষে আয়নকে ধোকা দিলো।প্রিয়ুর ধোকা আয়নকে আগের থেকে বেশি জেদি ও হিংস্র করে তুলেছে।এখন আয়নকে কন্ট্রোল করা কারো পক্ষে সম্ভব হয়না।’
—প্রায় দুঘন্টা ধরে চলে আয়নের এই ভালোবাসা নামক প্রতিশোধের অত্যাচার।ক্লান্ত আয়ন উঠে পরে প্রিয়ুকে ছেড়ে।বালকানিতে দাঁড়িয়ে একটা সিগেরেট ধরিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছাড়ে বাতাসে।প্রিয়ু উঠতে গিয়ে বুঝতে পারে,আয়ন নিজের সব রাগ ঝেড়েছে আজ ওর শরীরে।প্রচণ্ড ব্যাথা থাকা সত্যেও প্রিয়ু উঠে নিজের কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো।
“ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে প্রিয়ু আয়নের সামনে দাঁড়ালো টাকার জন্য।আয়ন আড় চোখে একবার প্রিয়ুকে দেখে বললো,তুই চাইলে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারিস।আমি রবিনকে দিয়ে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি হাসপাতালে।”
—প্রিয়ুর কড়া জবাব,তার প্রয়োজন নেই মিস্টার মাহবুভ।আমার কাজ শেষ,আমাকে এখন যেতে হবে।”
“আয়ন কথা না বাড়িয়ে তিনটা বান্ডিল বের করে দিলো প্রিয়ুর সামনে।যা ও আসার সময় নিয়ে এসেছে সাথে করে।প্রিয়ু টাকাগুলো ব্যাগে ভরে,যাওয়ার সময়,বলে গেলো,
আশা করি আমি আমার প্রথম কাস্টমারকে খুশি করতে পেরেছি।একথা বলেই প্রিয়ু চলে গেলো।একবার পিছে তাকালে হয়তো দেখতে পেতো ওই দুটো চোখ আজও বলে বার বার,এখনো_ভালোবাসি।”
—কিন্তু প্রিয়ুর এধরনের কথায় আয়নের রাগ আরো বেরে গেলো।প্রিয়ুকে এবার আরো কঠোর শাস্তি পেতে হবে।তবে আমার স্টাইলে।বাঁকা হেসে।
‘পকেট থেকে ফোনটা বের করে রবিনকে কল করলো আয়ন, হ্যালো রবিন।
—জি স্যার।
‘তোমার প্রিয়ু ম্যাডামের সব আপডেট আমার চাই।জানোই তো প্রিয়ুর পালানোর অভ্যাস আছে,তাই কেয়ার ফুল এবার যাতে কোথাও যেতে না পারে।’
—ওকে স্যার।
চলবে……।
[এধরনের গল্প এই প্রথম লিখছি।ভালো হলে সামনে বাড়বো,তা না হলে বন্ধকরে দিবো।কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।]